আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে বর্তমানে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের মালিক ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার অপরাজিত ৪০০* রানের ইনিংসটি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম এবং একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসাবে কোয়াড্রুপল সেঞ্চুরি হাঁকান ব্রায়ান লারা। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান সেঞ্চুরি হাঁকান। উইলিয়াম মারডক প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান। ইংল্যান্ডের অ্যান্ডি স্যান্ডহাম প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকান। অগ্রগতি অনুযায়ী টেস্ট ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের রেকর্ডধারী ক্রিকেটারদের নিয়ে আজকের লেখা।
চার্লস ব্যানারম্যান – ১৬৫* রান
১৮৭৭ সালের ১৫ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেট মাঠে গড়ায়। ইতিহাসের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে দুর্দান্ত ব্যাট করছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার চার্লস ব্যানারম্যান। চার্লস ব্যানারম্যান টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শেষপর্যন্ত ১৬৫* রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ২৪৫ রানের মধ্যে ব্যানারম্যান একাই করেন ১৬৫* রান। মেলবোর্নে ইতিহাসের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস খেলেছেন হ্যারি জুপ। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ইংলিশ ওপেনার হ্যারি জুপ ৬৩ রান করেন। চার্লস ব্যানারম্যান ১৬৫* রানের ইনিংস না খেললে হ্যারি জুপই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসের মালিক থাকতেন।
উইলিয়াম মারডক – ২১১ রান
চার্লস ব্যানারম্যানের ১৬৫* রানের ইনিংসটি টেস্ট ক্রিকেটে প্রায় সাত বছর পর্যন্ত সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস ছিলো। ১৮৮৪ সালে ১১ই আগস্ট দ্য ওভালে শুরু হওয়া ম্যাচে তার স্বদেশী বিলি মারডক প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তার রেকর্ড ভাঙেন।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি ১৬তম ম্যাচ ছিলো। এবারও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক বিলি মারডক। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৫৫১ রান সংগ্রহ করে। যার মধ্যে অধিনায়ক বিলি মারডক তৎকালীন রেকর্ড ২১১ রান করেন। তিনি ৫২৫ বলে ২৪টি চারের মারে ২১১ রানের ইনিংস খেলেন। দ্য ওভালে শেষপর্যন্ত ম্যাচটি অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়।
টিপ ফস্টার – ২৮৭ রান
১৯০৩ সালের ১১ই ডিসেম্বর সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে টিপ ফস্টারের। নিজের অভিষেক টেস্ট ইনিংসেই বিশ্বরেকর্ড গড়েন ফস্টার। সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ২৮৫ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নেমে ১১৭ রানে চার উইকেট হারায়। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের খুব একটা সুযোগ দেয়নি ফস্টার। পাঁচ নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে ৪১৯ মিনিট ক্রিজে ৩৭টি চার হাঁকিয়ে ২৮৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। টিপ ফস্টার নিজের অভিষেক ইনিংসেই বিলি মারডকের ১৯ বছরের রেকর্ড ভেঙে টেস্ট ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলার কৃতিত্ব অর্জন করেন। তার ২৮৭ রানের অনবদ্য ইনিংসের সুবাদের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ উইকেটের জয় পেয়েছিলো ইংল্যান্ড।
অ্যান্ডি স্যান্ডহাম – ৩২৫ রান
টেস্ট ক্রিকেট প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ানের জন্য পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করেছিলো। কিংস্টনে ১৯৩০ সালের এপ্রিলের ৩ তারিখে শুরু হওয়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ইংল্যান্ডের ম্যাচের মধ্য দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংলিশ ওপেনার অ্যান্ডি স্যান্ডহাম ৬৪০ বলে ২৮টি চারের মারে ৩২৫ রানের ইনিংস খেলেন। টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান স্যান্ডহামের এটিই শেষ আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ ছিলো। শেষবেলায় টিপ ফস্টারকে টপকে টেস্ট ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। টিপ ফস্টারের ২৮৭ রানের ইনিংসটি ২৭বছর পর্যন্ত ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিলো।
স্যার ডোনাল্ড ব্রাডম্যান – ৩৩৪ রান
অ্যান্ডি স্যান্ডহাম ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকানোর মাত্র তিন মাস পরেই সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান ডন ব্রাডম্যান ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকায়। ম্যাচের হিসাবে মাত্র দুটি ম্যাচ পর। স্যান্ডহাম টেস্ট ক্রিকেটের ১৯৩তম টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন এবং ব্রাডম্যান ইতিহাসের ১৯৬তম টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকান।
১৯৩০ সালের অ্যাশেজে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন ডন ব্রাডম্যান। ঐ অ্যাশেজে ১৩৯.১৪ ব্যাটিং গড়ে ৯৭৪ রান করেছিলেন ডন। ১৯৩০ সালের ১১ই জুলাই লিডসে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। দলীয় দুই রানের মাথায় ওপেনার জ্যাকসন আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলে ক্রিজে আসেন ডন ব্রাডম্যান। ডন ব্রাডম্যান যখন আউট হন, তখন তার নামের পাশে ৩৩৪ রান। তিনি ৪৪৮ বলে ৪৬টি চারের মারে টেস্ট ক্রিকেটের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। অ্যান্ডি স্যান্ডহামের ৩২৫ রানের ইনিংসটি মাত্র তিনমাস শীর্ষে ছিলো।
ওয়ালি হ্যামন্ড – ৩৩৬* রান
সে সময়কার সর্বকালের সর্বাধিক রান সংগ্রাহক হওয়ার দৌড়ে ডন ব্রাডম্যানকে পিছনে ফেলে দেওয়া ওয়ালি হ্যামন্ড ডন ব্রাডম্যানের ৩৩৪ রানের ইনিংসটিও টপকে যায়। ডন ব্রাডম্যানের ৩৩৪ রানের ইনিংসটি প্রায় তিন বছর পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস ছিলো।
১৯৩৩ সালের ৩১শে মার্চ অকল্যান্ডে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩৬* রানের ইনিংস খেলে রেকর্ডটি নিজের দখলে নিয়ে নেন হ্যামন্ড। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা নিউ জিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানে গুটিয়ে যায়। জবাবে ইংল্যান্ড সাত উইকেটে ৫৪৮ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ালি হ্যামন্ড ৩৩৮ মিনিট ক্রিজে থেকে ৩৪টি চার এবং দশটি ছয়ের মারে অপরাজিত ৩৩৬* রানের ইনিংস খেলেন।
লেন হাটন – ৩৬৪ রান
ওয়ালি হ্যামন্ডের ৩৩৬* রানের রেকর্ড ভাঙেন তার স্বদেশী লেন হাটন। লেন হাটনের বিশ্ব রেকর্ডের ম্যাচে ওয়ালি হ্যামন্ড অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৩৮ সালের ২০শে আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্য ওভালে ৩৬৪ রানের ইনিংস খেলেন ইংলিশ ওপেনার লেন হাটন।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক ওয়ালি হ্যামন্ড। ব্যাট করতে নেমে লেন হাটনের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে রানের পাহাড় গড়ে ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে সাত উইকেটে ৯০৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা দেয় তারা। লেন হাটন ৭৯৭ মিনিট ক্রিজে থেকে ৮৪৭ বলে ৩৫টি চারের মারে ৩৬৪ রান করেন। তার অসাধারণ ইনিংসের উপর ভর করে অস্ট্রেলিয়াকে ইনিংস ও ৫৭৯ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে ইংল্যান্ড।
গ্যারি সোবার্স – ৩৬৫* রান
টেস্ট ক্রিকেটের আগের সব সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসগুলো ইংল্যান্ড অথবা অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের দখলে ছিলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তী ক্রিকেটার গ্যারি সোবার্স চলমান রীতি থামিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিকে ট্রিপল সেঞ্চুরিতে রূপান্তরিত করেন সোবার্স। লেন হাটনের ৩৬৪ রানের ইনিংসটি ২০ বছর পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসের তালিকায় শীর্ষে ছিলো। ১৯৫৮ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি কিংস্টনে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুখোমুখি হয়।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার ইমতিয়াজ আহমেদের ১২২ রানের উপর ভর করে প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। জবাবে পাকিস্তানের বোলারদের কোনো সুযোগ না দিয়ে রানের পাহাড় গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। ওপেনার কনরাড হান্টের ডাবল সেঞ্চুরি এবং গ্যারি সোবার্সের ট্রিপল সেঞ্চুরির উপর ভর করে তিন উইকেটে ৭৯০ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কনরাড হান্ট ২৬০ রান ও গ্যারি সোবার্স ৩৬৫* রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান ২৮৮ রানে অল আউট হয়ে গেলে কিংস্টন টেস্টে ইনিংস ও ১৭৪ রানে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ব্রায়ান লারা – ৩৭৫ রান
গ্যারি সোবার্সের ৩৬৫* রানের ইনিংসটি টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসের তালিকায় প্রায় তিন যুগ ধরে শীর্ষে ছিলো। তিন যুগ পর তার স্বদেশী, ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারা ৩৭৫ রানের ইনিংস খেলে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেন।
১৯৯৪ সালের ১৬ই এপ্রিল সেন্ট জোন্সে সিরিজের পঞ্চম টেস্টে মুখোমুখি হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ড। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২ রানেই দুই ওপেনারের উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর আর ইংলিশ বোলারদের চালকের আসনে বসতে দেয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা, যার গুরুদায়িত্ব পালন করেন ব্রায়ান লারা। ব্রায়ান লারা ৭৬৬ মিনিট ক্রিজে থেকে ৫৩৮ বলে ৪৫টি চারের মারে ৩৭৫ রান করেন, যার সুবাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেটে ৫৯৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। জবাবে ইংল্যান্ডও প্রথম ইনিংসে ৫৯৩ রান করলে ম্যাচে কোনো ফলাফল আসেনি।
ম্যাথিউ হেইডেন – ৩৮০ রান
ব্রায়ান লারার ৩৭৫ রানের ইনিংস খেলার নয় বছর পর হেইডেন ৩৮০ রানের ইনিংস খেলে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন। ২০০৩ সালের ৯ই অক্টোবর পার্থে জিম্বাবুয়ের বোলারদের কোণঠাসা করে কোয়াড্রুপল সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন হেইডেন, শেষপর্যন্ত ৩৮০ রানে থামেন তিনি।
পার্থে টসে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় জিম্বাবুয়ে। তারা হয়তো ভাবতে পারেনি তাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে। হেইডেন মাত্র ৪৩৭ বলে ৩৮টি চার এবং ১১টি ছয়ের সাহায্যে ৩৮০ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়া অ্যাডাম গিলক্রিস্টও মাত্র ৯৪ বলে ১১৩ রান করেন। হেইডেন ৩৮০ রান করে সাজঘরে ফিরলে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। ততক্ষণে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছয় উইকেটে ৭৩৫ রান। গড়ে ওভার প্রতি পাঁচের উপরে রান করেছে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ২৩৯ রান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২১ রান করলে পার্থ টেস্টে ইনিংস ও ১৭৫ রানে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
ব্রায়ান লারা – ৪০০* রান
নিজের রেকর্ড হাতছাড়া হওয়ার মাত্র সাত মাস পরেই প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে কোয়াড্রুপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নিজের সিংহাসন পুনরুদ্ধার করেন ব্রায়ান লারা। এখন পর্যন্ত ব্রায়ান লারাই একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে চারশো রানের ইনিংস খেলার কৃতিত্ব অর্জন করেন। ক্রিকেটের গতিময় এ যুগে তার রেকর্ডটি কেউ ভাঙতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।
ব্রায়ান লারা ২০০৪ সালের ১০ই এপ্রিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেন্ট জোন্সে এই মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেন। নিজ দেশের মাটিতে সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে পরাজিত হয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিলো ব্রায়ান লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সিরিজের চতুর্থ টেস্টে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক নিজেই। ৭৭৮ মিনিট ক্রিজে থেকে ৫৮২ বলে ৪৩টি চার এবং চারটি ছয়ের মারে ৪০০* রানের ইনিংস খেলে নিশ্চিত করেন এই ম্যাচটি অন্তত হারতে হচ্ছে না তাদের। চার্লস ব্যানারম্যান থেকে শুরু করে পালাক্রমে ব্রায়ান লারা ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের তালিকায় শীর্ষে আছেন। এক যুগের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ব্রায়ান লারার আশেপাশে কেউ ঘেষতে পারেনি।
ফিচার ইমেজ– Cricket.com.au