রঙিন পোশাকে দ্রুত রান তোলার বড় হাতিয়ার বাউন্ডারি। চার হোক কিংবা ছয়। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ব্যাটসম্যানরা দ্রুত রান সংগ্রহ করেন। শতক, অর্ধশতক রানের ইনিংসে চার-ছয়ের মার থাকা স্বাভাবিক ঘটনা। টেস্ট ক্রিকেটে বাউন্ডারি হাঁকানোর খুব একটা তাড়া থাকে না। এই ফরম্যাটে ধীরে-সুস্থে ব্যাট করে উইকেটে টিকে থাকাই মূল লক্ষ্য। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের তুলনায় ওয়ানডেতে চার-ছয় হাঁকানো ছাড়া বড় ইনিংস খেলেছে, এমন ঘটনা বেশি।
টেস্ট ক্রিকেটে সম্পূর্ণ ইনিংসে এখন পর্যন্ত সাতবার কোনো চার-ছয় হাঁকানো ছাড়া অর্ধশত রান করার ঘটনা ঘটেছে। ওয়ানডেতে যার সংখ্যা ২৮টি। ওয়ানডেতে বাউন্ডারি হাঁকানো ছাড়া অর্ধশতক রয়েছে মাহেলা জয়াবর্ধনে, রিকি পন্টিং, ডেসমন্ড হেইন্স, মাইকেল বেভান, সাঈদ আনোয়ার, শোয়েব মালিক, জেপি ডুমিনি এবং মাহেন্দ্র সিং ধোনির মতো ব্যাটসম্যানদের। মোট ২৭ জন ব্যাটসম্যানের এমন কীর্তি রয়েছে। আজহারউদ্দীন একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে দুবার চার-ছয় হাঁকানো ছাড়া অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন।
চলুন, জেনে আসা যাক ওয়ানডেতে এক ইনিংসে চার-ছয় ছাড়া সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহ করা সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানদের সম্পর্কে।
অ্যাডাম প্যারোরে – ৯৬ রান
নিউ জিল্যান্ডের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অ্যাডাম প্যারোরে ১৭৮টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। যার মধ্যে একটি শতক এবং ১৪টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন। ওয়ানডেতে ৩,৩১৪ রান করতে ১৬৯টি চার এবং ৩৬টি ছয় হাঁকিয়েছেন। তখনকার পরিস্থিতি অনুযায়ী তার ক্যারিয়ার বেশ সফল। টেস্ট ক্রিকেটেও উইকেটরক্ষক হিসেবে তার অবস্থান বেশ উঁচুতে। তিনি আরও একটি কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ওয়ানডেতে চার-ছয় না হাঁকানো সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহের কীর্তি তার দখলে।
১৯৯৪ সালের ২৮শে অক্টোবর। ভারতের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ইয়াংয়ের উইকেট হারায় তারা। এরপর ক্রিজে আসেন অ্যাডাম প্যারোরে। তিনি চতুর্থ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক কেন রাদারফোর্ডের সাথে ১৮০ রানের জুটি গড়েছিলেন। রাদারফোর্ড ১০২ বলে ১০৮ রান করে রান আউট হয়ে গেলেও প্যারোরে উইকেটে দাঁত কামড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ২০৩ মিনিট ব্যাট করে ১৩৮ বলে ৯৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তার ৯৬ রানের ইনিংসের কোনো চার-ছয়ের মার ছিল না।
শেষপর্যন্ত নিউ জিল্যান্ড চার উইকেটে ২৬৯ রান সংগ্রহ করেছিল। শচীন টেন্ডুলকারের ১১৫ রানের ইনিংসের উপর ভর করে যা ভারত ৭ উইকেট এবং ১১ বল হাতে রেখেই টপকে যায়। প্যারোরে বাউন্ডারি হাঁকানো ছাড়া ৯৬ রানের ইনিংস ছাড়াও ৪৬ এবং ৪৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেছিলেন, যেখানে তিনি কোন চার-ছয় হাঁকাননি।
জহির আব্বাস – ৮৪ রান
পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান জহির আব্বাস ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ আক্রমণাত্মক ছিলেন। ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ওয়ানডে ক্রিকেট খেলা এই ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট তা-ই বলে। এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান পাকিস্তানের হয়ে ৬২টি ওয়ানডেতে সাতটি শতক এবং ১৩টি অর্ধশতকের সাহায্যে ২,৫৭২ রান সংগ্রহ করেছেন। তার ব্যাটিং গড় ৪৭.৬২ এবং স্ট্রাইক রেট ৮৪.৮০। তার সময়ের তুলনায় যা বেশ ভালো স্ট্রাইক রেট।
১৯৮২ সালের ৯ই জানুয়ারি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেলবোর্নে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। এই ম্যাচে জহির আব্বাস চার-ছয় হাঁকানোর চেয়ে উইকেটে টিকে থেকে দলের রান সংগ্রহ বাড়ানোর দিকে মনোযোগী ছিলেন। প্রথমে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান তাদের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মানসুর আখতারের উইকেট হারায় দলীয় দশ রানের মাথায়। এরপর তিন নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে দলের হাল ধরেন জহির আব্বাস। মেলবোর্নের বড় মাঠে চার-ছয় হাঁকানোর চেয়ে সিঙ্গেলস এবং ডাবলসের প্রতি বেশি মনোযোগ দেন তিনি।
তিনি যখন দলীয় ১৯৩ রানের মাথায় রান আউট হয়ে দলের ৫ম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন, তখন তার নামের পাশে ৮৪ রান জমা হয়েছিল। ১১৩ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলতে তিনি কোনো চার-ছয় হাঁকাননি। চার-ছয় ছাড়াও তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৭৪.৩৩। তার ইনিংসের উপর ভর করে পাকিস্তান ৬ উইকেটে ২১৮ রান সংগ্রহ করেছিল। এই রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার চার ব্যাটসম্যান রান আউটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরে গেলে পাকিস্তান ২৫ রানের জয় তুলে নেয়। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছিলেন ৮৪ রান করা জহির আব্বাস।
কিম বার্নেট – ৮৪ রান
১৯৮৮ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর। লন্ডনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একমাত্র ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড। ৫৫ ওভারের ওয়ানডে ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে ২৪২ রান সংগ্রহ করে। ইংল্যান্ড ২৪৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৯ রানের মাথায় অধিনায়ক গ্রাহাম গুচের উইকেট হারায়। তিন নাম্বারে ব্যাট করতে নামা কিম বার্নেট ক্রিজে এসে দলের হাল ধরেন। তিনি ধীরগতিতে ব্যাট করলেও নিজের উইকেট হারাননি। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তিনি অ্যালান লাম্বের সাথে ১১৮ রান যোগ করেছিলেন। লাম্ব ৭০ বলে ৬৬ রান করে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন।
কিম বার্নেট দলীয় ২১৩ রানের মাথায় রান আউট হওয়ার আগে ১৪৬ বল খেলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তার ইনিংসে কোনো চার-ছয়ের মার ছিল না। আলতো হাতে খেলে রান তোলার দিকেই বেশি মনোযোগী ছিলেন তিনি। তার বিদায়ের পর জয় পেতে সমস্যা হয়নি ইংল্যান্ডের। ১৪ বল এবং ৫ উইকেট হাতে রেখে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একমাত্র ওয়ানডেতে জয় তুলে নেয় তারা। ৮৪ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলার কল্যাণে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছিলেন বার্নেট।
ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে রানের মধ্যে থাকা কিম বার্নেট ইংল্যান্ডের হয়ে ঐ একবারই ওয়ানডে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন চারটি। এর মধ্যে দুটি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন। ১৯৮৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পণের পর সময়টা ভালোই যাচ্ছিলো তার। ১৯৮৯ সাল উইজডেনের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের অ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন। এরপরই বদলে যায় তার দুনিয়া। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে মাইক গ্যাটিংয়ের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড একাদশের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্রোহী সফরে যান তিনি। তখন দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত ছিল। এই সফরে যাওয়ার কারণে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন বার্নেট। এরপর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা হয়নি তার।
ডেসমন্ড হেইন্স – ৭৬ রান
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ডেসমন্ড হেইন্স তাদের সোনালী যুগের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন। টেস্ট এবং ওয়ানডে, দুই ফরম্যাটেই সমানভাবে সফল ছিলেন তিনি। ক্যারিবিয়ানদের হয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটে ম্যাচ খেলেছেন ২৩৮টি। এর মধ্যে ১৭টি শতক এবং ৫৭টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৪১.৩৭ বোলিং গড়ে ৮,৬৪৮ রান সংগ্রহ করেছেন। তিনি ওয়ানডেতে মোট ৭৪ বার পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন, যার মধ্যে একবার কোনো বাউন্ডারি না হাঁকিয়েই পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেন।
১৯৮৫ সালের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে ত্রিদেশীয় সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হওয়া এই সিরিজে অস্ট্রেলীয় এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাইনাল খেলে। এই সিরিজে ফাইনাল ছিল তিন ম্যাচের। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজে জয়লাভ করলে তৃতীয় ম্যাচ সত্যিকার অর্থেই ফাইনালে পরিণত হয়।
১৯৮৫ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি। সিডনিতে তৃতীয় ফাইনালে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ পেয়ে ব্যাট করতে নেমে মাইকেল হোল্ডিংয়ের বোলিং তোপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। হোল্ডিং ২৬ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট শিকার করলে অস্ট্রেলিয়া ১৭৮ রানে গুটিয়ে যায়। জবাবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যান রিচি রিচার্ডসন এবং ল্যারি গোমেসের উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুজনই সমান তিন রান করে সাজঘরে ফিরেছিলেন।
এই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন ডেসমন্ড হেইন্স এবং ভিভ রিচার্ডস। তারা তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১২৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ভিভ রিচার্ডস ৭৬ রান করে ফিরে গেলেও হেইন্স অপরাজিত ৭৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান। কোনোরকম তাড়াহুড়ো না করে ১৩৩ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন হেইন্স। তার ইনিংসে কোনো চার-ছয়ের মার ছিল না। সিডনিতে তার ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জেতে।
আশিষ বাগাই – ৭৪ রান
২০০৭ সালের ৩০শে জানুয়ারি। নাইরোবিতে আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লিগের প্রথম বিভাগের দ্বিতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয় কানাডা। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা কানাডা শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। রায়ান টেন ডেসকাট এবং বিলি স্ট্যালিংয়ের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ২০০ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ডেসকাট চারটি এবং স্ট্যালিং তিনটি উইকেট শিকার করেন।
কানাডাকে দু’শো রানের পুঁজি এনে দিতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান আশিষ বাগাই। তিনি দলের বিপর্যয়ের মুখে একপ্রান্ত আগলে রেখে ১১৭ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলেন। কোনো চার-ছয় না হাঁকিয়ে শুধুমাত্র সিঙ্গেলস এবং ডাবলসের উপর ভর করে তিনি ৭৪ রান করেন। নেদারল্যান্ডসের অবশ্য এই রান তাড়া করতে কোনো বেগ পেতে হয়নি। টপ-অর্ডারদের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ১৫ ওভার এবং ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় তারা।
ওয়ানডেতে চার-ছয় হাঁকানো বিহীন সর্বোচ্চ রানের ইনিংস সমূহ
১. অ্যাডাম প্যারোরে – ১৩৮ বলে ৯৬ রান
২. জহির আব্বাস – ১১৩ বলে ৮৪ রান
৩. কিম বার্নেট – ১৪৬ বলে ৮৪ রান
৪. ডেসমন্ড হেইন্স – ১৩৩ বলে ৭৬* রান
৫. আশিষ বাগাই – ১১৭ বলে ৭৪ রান
৬. জেপি ডুমিনি – ৯৩ বলে ৭১ রান
৭. মার্ক গ্রেটব্যাচ – ১০০ বলে ৬৮ রান
৮. ডেভিড বুন – ৯৮ বলে ৬৪ রান
৯. সাঈদ আনোয়ার – ৬৭ বলে ৬২ রান
১০. জাভেদ মিয়াঁদাদ – ৮৩ বলে ৫৯* রান
১১. ব্রেন্ডন কুরুপ্পু – ৯৩ বলে ৫৮* রান
১২. মারভান আতাপাত্তু – ১০০ বলে ৫৮ রান
১৩. মাইকেল বেভান – ৮৩ বলে ৫৮ রান
১৪. রিকি পন্টিং – ৮২ বলে ৫৩ রান
১৫. ড্যামিয়েন মার্টিন – ৭৮ বলে ৫৩ রান
১৬. মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন – ৮৭ বলে ৫২ রান
১৭. মহিন্দর অমরনাথ – ৬২ বলে ৫১ রান
১৮. শোয়েব মোহাম্মদ – ৮৫ বলে ৫১ রান
১৯. ইজাজ আহমেদ – ৬৮ বলে ৫১ রান
২০. মাহেলা জয়াবর্ধনে – ৭৪ বলে ৫১ রান
২১. মোহাম্মাদ আজহারউদ্দীন – ৭৯ বলে ৫০* রান
২২. দিলীপ ভেংসরকার – ৮১ বলে ৫০* রান
২৩. রোশন মাহানামা – ৭৮ বলে ৫০* রান
২৪. ইয়ান হিলি – ৫৫ বলে ৫০* রান
২৫. মহেন্দ্র সিং ধোনি – ৬৮ বলে ৫০* রান
২৬. কেপলার ওয়েসলেস – ১০৩ বলে ৫০ রান
২৭. সেলিম মালিক – ৯১ বলে ৫০ রান
২৮. শোয়েব মালিক – ৬০ বলে ৫০ রান