সাধারণত যেকোনো খেলোয়াড়ই একটি বয়সসীমা পর্যন্ত তার দেশে প্রচলিত সব খেলাতেই অংশ নেন। একটা সময় পর যখন তিনি খেলাটিকে পেশা হিসেবে নেন, তখন যেকোনো একটি খেলাকে বেছে নিয়ে সেদিকে গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশের কিংবদন্তী অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের সম্পর্কে জানা যায় যে, তিনি একটা সময় ফুটবল বেশ ভালো খেলতেন। তার বাবা খুলনা বিভাগের হয়ে এবং তার একজন ভাই সম্পর্কীয় বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে ফুটবল খেলতেন। এরকম ফুটবল পাগল পরিবার থেকে ফুটবলার হওয়াটাই তার জন্য স্বাভাবিক ছিল। সেরকম হলে তিনি হয়তো জাতীয় ফুটবল দলেও সুযোগ পেতেন। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য যে, তিনি ক্রিকেটটাকেই বেছে নিয়েছিলেন।
আজকের লেখায় আমরা এমনই কয়েকজন বরেণ্য খেলোয়াড়ের সম্পর্কে জানবো, যারা একটি খেলাতে প্রতিষ্ঠিত হলেও অন্য খেলাটিতে নূন্যতম একটি পর্যায় পর্যন্ত যেতে পেরেছিলেন। তাহলে শুরু করা যাক।
উইলিয়াম ফৌলকে
ছয় ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার জন্য ইংলিশ এই খেলোয়াড় বিখ্যাত ছিলেন। এমনকি তাকে William Fatty Foulke নামেও ডাকা হতো। অবসর নেওয়ার সময় তার ওজন ছিল ১৫২ কেজি! এই খেলোয়াড় ১৯০০ সালের দিকে ৪টি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছিলেন ডার্বিশায়ারের হয়ে। তবে তিনি মূলত পরিচিত ছিলেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের গোলকিপার হিসেবে ২৯৯টি ম্যাচ খেলার কারণে। পরবর্তীতে তিনি চেলসি ক্লাবের অধিনায়কও হন। তিনি ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়েও একটি ম্যাচ খেলেন ওয়েলসের বিপক্ষে, ১৮৯৭ সালে। ১৮৭৪ সালের ১২ই এপ্রিল জন্ম নেওয়া এই খেলোয়াড় মারা যান ১৯১৬ সালের পহেলা মে, মাত্র ৪২ বছর বয়সে।
জিওফ হার্স্ট
জিওফ হার্স্টের নাম শোনেননি? কী ভয়ংকর কথা! তিনি ফুটবল ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি কিনা বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন। তবে হার্স্ট কিন্তু তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ক্রিকেট দিয়ে। এসেক্সের হয়ে খেলা সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে তিনি অপরাজিত থাকেন শূন্য রানে, দ্বিতীয় ইনিংসে আবার আউট হন শূন্য রানে। এরপরেই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এসেক্সের দ্বিতীয় বিভাগে। সেখানে তিনি ১৯৬২ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত ২৩টি ম্যাচে উইকেটকিপার হিসাবে খেলেন। তবে সেসময়ে ক্রিকেটে ভবিষ্যত না দেখে ফুটবলে মনোনিবেশ করেন হার্স্ট। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের ভাগ্য ভালো যে হার্স্ট সিদ্ধান্ত পাল্টেছিলেন। ইংল্যান্ডের জেতা একমাত্র বিশ্বকাপে ১৯৬৬ সালে জার্মানির বিপক্ষে ফাইনালে ৪-২ গোলে জেতা ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। এছাড়া ক্লাব ফুটবলে ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডের হয়ে ৫০০ ম্যাচে ২৪২টি গোল করেন তিনি।
গ্যারি লিনেকার
ফুটবলার লিনেকারকে কে না চেনে? ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের হয়ে ৮০ ম্যাচে ৪৮টি গোল করা এই ফুটবলার ক্রিকেটটাও ভালো খেলতেন। ১৯৯২ সালে লর্ডসের মাঠে ইউরোপিয়ান কাপ ক্রিকেটের ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে খেলতে নামেন লিনেকার, তবে মাত্র ১ রান করেই আউট হয়ে যান। সেই সময় তিনি মজা করে বলেন, “আমি সবসময় জার্মানির বিপক্ষে ১ স্কোরই করতে পারি।” উল্লেখ্য, ফুটবলে তিনি জার্মানির বিপক্ষে চারটি ম্যাচ খেলেছেন, যার মাঝে দুইটি ম্যাচে তিনি একটি করে গোল করতে পেরেছেন।
উইলি ওয়াটসন
মাত্র ১৭ বছর বয়সেই মিডফিল্ডার হিসেবে অভিষেক হয় হাডারসফিল্ড টাউন এএফসি ক্লাবের হয়ে। পরবর্তীতে সান্ডারল্যান্ড ক্লাবের হয়ে সাত সিজনে ২১১টি ম্যাচ খেলেন, এই ক্লাবের হয়ে ১৬টি গোলও করেন। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়েও চারটি ম্যাচ খেলেছেন। ১৯৫০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সদস্য ছিলেন, যদিও ব্রাজিলে হওয়া সেই টুর্নামেন্টে কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি। পরবর্তীতে তিনি ক্রিকেটে মনোনিবেশ করেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তার ৫৫টি সেঞ্চুরিও আছে, সর্বোচ্চ স্কোর ২৫৭। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়েও ২৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তিনি, যাতে দুইটি সেঞ্চুরি আর তিনটি হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসও রয়েছে।
ডেনিস কম্পটন
আর্সেনালের হয়ে উইঙ্গার পজিশনে খেলতেন তিনি, ১৯৫০ সালে এফএ কাপ জিতেছিলেন, এছাড়া ১৯৪৮ সালে লিগ টাইটেলও জিতেছেন। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে ১২টি ম্যাচও খেলেছেন কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে হওয়া ম্যাচগুলো অফিসিয়াল ম্যাচের স্বীকৃতি পায়নি।
ক্রিকেটার হিসেবে মিডলসেক্স ক্লাবে খেলেছেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে মাত্র ২৫ জন ব্যাটসম্যান ১০০টি সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন, কম্পটন এর মাঝে একজন। ইংল্যান্ডের হয়ে ৭৮টি টেস্টও খেলেছেন, ১৭টি সেঞ্চুরির সাহায্যে ৫০.০৭ গড়ে রান করেছেন ৫,৮০৭ রান, সর্বোচ্চ স্কোর ২৭৮।
১৯৪৬ সালের একটি ম্যাচে তিনি ক্রিকেট মাঠে তার ফুটবলীয় স্কিল দেখান। মিড অন থেকে বলকে কিক মেরে স্ট্যাম্প ভেঙে রান আউট করেন বিজয় মার্চেন্টকে।
ক্রিস বালডেরস্টোন
ক্রিস বালডেরস্টোন হচ্ছেন সেই স্বল্প সংখ্যক খেলোয়াড়দের একজন যারা একইসাথে সফলভাবে ফুটবল আর ক্রিকেট খেলা চালিয়ে গিয়েছেন। হাডারসফিল্ড টাউন, কার্লাইল ইউনাইটেড, ডনকাস্টার রোভারস এবং কুইন অব দ্য সাউথের হয়ে প্রায় ৫০০ ম্যাচ খেলেছেন। এছাড়া ক্রিকেটার হিসেবে ১৯০টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন যাতে ৩২টি সেঞ্চুরি সহ রান ১৯,০৩৪ এবং উইকেট ৩১০টি। লিস্টারশায়ার এবং ইয়র্কশায়ারের মতো ক্লাবে তিনি তার ক্যারিয়ার কাটিয়েছেন। এছাড়া ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়েও দুটি টেস্ট খেলেছেন।
তার ক্যারিয়ারের একটি বিখ্যাত ঘটনা বলা যাক। ১৯৭৫ সালে লিস্টারশায়ারের হয়ে ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে ম্যাচে অপরাজিত ৫১ রান করে দিন শেষ করেন। সেদিন রাতেই তিনি ডনকাস্টার রোভারের হয়ে ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করেন এবং ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র ম্যাচে পারফর্ম করেন। এরপর পরের দিন ক্রিকেট ম্যাচে সেঞ্চুরি করার সাথে সাথে তিন উইকেট নিয়ে লিস্টারশায়ারকে তাদের প্রথম কাউন্টি শিরোপা জিততে সাহায্য করেন। ১৯৯৪ আর ১৯৯৮ সালে দুটো ওডিআই ম্যাচে আম্পায়ারিং করার অভিজ্ঞতাও আছে তার। মাত্র ৫৯ বছর বয়সেই তিনি মারা যান।
ইয়ান বোথাম
ইংলিশ অলরাউন্ডার স্যার ইয়ান বোথামের নাম কোন ক্রিকেটপ্রেমী না জানে? ইংল্যান্ডের হয়ে ১০২টি টেস্টে ৫,২০০ রান আর ৩৮৩টি উইকেট দখল করে অলরাউন্ডারদের অভিজাত ক্লাবের খুব উঁচু অবস্থানেই আছেন। তবে তার ফুটবল প্রতিভাও যে অসাধারণ ছিল, সেটি হয়তো অনেকেরই জানা নেই। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৫ সালের মাঝে সেন্টার ব্যাক হিসেবে খেলেছেন। কিন্তু একটা সময় যখন ক্রিকেট আর ফুটবলের মাঝে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়ার সময় হলো, তখন তিনি বুঝতে পারলেন যে দুটোর মধ্যে ক্রিকেটটা তিনি একটু বেশি ভালো খেলেন। তখনই ফুটবল ছেড়ে ক্রিকেটে মনোযোগী হলেন বোথাম।
ভিভ রিচার্ডস
টেস্ট গড় ৫০.২৩ আর ওয়ানডে গড় ৪৭.০০; শুধুমাত্র এই তথ্য দিয়ে ভিভ রিচার্ডসের কোনোকিছুই আপনাকে বোঝাতে সক্ষম নন। ক্রিকেটে সচরাচর দেখা যায়, যেসকল ব্যাটসম্যানের গড় বেশি তাদের স্ট্রাইক রেট কম, আবার যেসকল ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট বেশি তাদের গড় কম। এটি মোটেও অস্বাভাবিক নয়, কারণ, ব্যাটসম্যান যত দ্রুতগতিতে রান তুলতে চাইবে তার আউট হবার সম্ভাবনা তত বেড়ে যাবে। এ কারণে আফ্রিদি (২৩.৫৭ গড় ও ১১৭ স্ট্রাইক রেট), শেবাগ (৩৫.০৩ গড় ও ১০৪.৩৩ স্ট্রাইক রেট), গিলক্রিস্ট (৩৫.৮৯ গড় আর ৯৬.৯৪ স্ট্রাইক রেট) আর জয়সুরিয়াদের (৩২.৩৬ গড় আর ৯১.২০ স্ট্রাইক রেট) স্ট্রাইক রেট বেশি হলেও গড় তুলনামূলক কম। সবচেয়ে বড় কথা, ‘৭৫ থেকে ‘৯০ পর্যন্ত টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইকে রেট একটু কমই ছিল। পাওয়ার প্লে ছিল না, ডেসমন্ড হেইনস (৪১.৩৭ গড় আর ৬৩.০৯ স্ট্রাইক রেট), মিয়াদাদ (৪১.৭০ গড় আর ৬৭.০১ স্ট্রাইক রেট), ডিন জোন্সদেরকে (৪৪.৬১ গড় আর ৭২.৫৬ স্ট্রাইক রেট) তাই বল খরচ করার জন্য দোষ দেওয়া হতো না।
১৯৮৫/৮৬ সালে ভিভ মাত্র ৫৬ বলে করেন টেস্টের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। রেকর্ডটি গত বছর ভেঙেছেন ব্রায়ান ম্যাককালাম, ৫৪ বলে। সেই সময় ওডিআইতে কম বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল ৭২ বলে, সেটিও ভিভের ছিল। ক্রিকেটে একমাত্র তাকেই ‘কিং’ উপাধিতে ডাকা হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে তিনি ১৯৭৫ আর ১৯৭৯ এর দুটো বিশ্বকাপ জিতেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক হিসেবে কখনো টেস্ট সিরিজ হারেননি। ওয়ানডের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবেই গণ্য করা হয় তাকে।
তবে এসবের বাইরেও ভিভের একটি রেকর্ড আছে। ভিভই একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি ফুটবল আর ক্রিকেট দুটোরই বিশ্বকাপে অংশ গ্রহণ করেছেন। যদিও ফুটবল বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলেছিলেন তিনি, মূল পর্বে তার দল এন্টিগুয়া যেতে পারেনি।
ওয়ালি হরডিনগ
১৯০৫ সালে নিউক্যাসেল ইউনাইটেডে যোগ দেবার আগে হরডিনগ সৌখিন দল এলথাম, টন্টব্রিজ এবং মেইডস্টোন ইউনাইটেডের হয়ে খেলতেন। পরবর্তীতে তিনি আর্সেনালে যোগ দেন। আর্সেনালের হয়ে ৫৫টি ম্যাচে তিনি ১৪টি গোল করেন। এছাড়া ১৯১০ সালে তিনি ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচও খেলেন। ক্রিকেটে তিনি কেন্ট ক্লাবের হয়ে খেলে ৬২৩ ম্যাচে ৭৫টি সেঞ্চুরি সহ ৩৩,৫১৯ রান করেন এবং ৩৭১টি উইকেট পান। তিনি ইংল্যান্ড টেস্ট দলের হয়ে একটি ম্যাচ খেলেন। এছাড়া তিনি ১৯১৫ সালের ‘বর্ষসেরা উইজডেন ক্রিকেটার’ নির্বাচিত হন।
ফস্টার
ফস্টারের নাম শুনেছেন? না শুনলে আপনাকে দোষ দেওয়া যাবে না। লোকটি এমন কিছু করে ফেলেনি যে আপনাকে তার নাম শুনতে হবে।
১৯০৩ সালে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে নেমে ২৮৭ রানের একটা ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। তা ডবল সেঞ্চুরির ইনিংস তো কত ব্যাটসম্যানই খেললেন, এরপর টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরিও হলো, ৪০০ রানের ইনিংসও টেস্ট ক্রিকেট দেখেছে। এটাতে তেমন বিশেষত্বের কী আছে?
কিছুটা আছে। কারণ, সেই ২৮৭ রানের ইনিংসটি টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস হিসেবে টিকে ছিল ২৭ বছর। শুধু তা-ই নয়, আজ পর্যন্ত তবে কোনো ব্যাটসম্যানই তার অভিষেক ম্যাচে এত রান করতে পারেননি। এই রেকর্ডটি এখনো ফস্টারেরই আছে। তবে ফস্টার শুধু এই কারণেই বিখ্যাত নন, অন্য আরেকটি বিষয়ও আছে। ফস্টার সেই গুটিকয়েক ক্রিকেটারের মাঝে একজন, যিনি টেস্ট খেলার সাথে সাথে আন্তর্জাতিক ফুটবলেও দেশের হয়ে পারফর্ম করেছেন।
ফস্টারই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ইংল্যান্ডের হয়ে ফুটবল আর ক্রিকেট দুটোতেই অধিনায়ক ছিলেন। ইংল্যান্ডের হয়ে পাঁচ ম্যাচ খেলে তিনি দুটি গোলও করেছেন। ফুটবল আর ক্রিকেটার দুই রূপেই তার দক্ষতা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কোনটিতেই তার ক্যারিয়ার দীর্ঘ না হবার প্রথম কারণ হচ্ছে ব্যবসায়িক ব্যস্ততা। এর সাথে আরেকটি কারণ হচ্ছে তার অসুস্থতা ও অকাল মৃত্যু। মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই তিনি মারা যান ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে।
সি বি ফ্রাই
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩৯০টি ম্যাচ খেলে ৫০.২২ গড়ে ৩০,৮৮৬ রান এবং ১৬৬টি উইকেট তার সংগ্রহে আছে। এছাড়া ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে ২৬ টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি সহ ১,২২৩ রান করেছেন। এই ক্রিকেটার ফুটবলেও মাঠ কাঁপিয়েছেন। ১৯৫০ সালের এফএ কাপের ফাইনালেও খেলেছেন।এগুলো ছাড়াও লং জাম্পে তার বিশ্ব রেকর্ড গড়া হয়েছিল।
এলিস পেরি
তালিকার এই মানুষটি অন্যান্য সবার চেয়ে তিনি একটু আলাদা। প্রথম কারণ হলো তিনি একজন নারী, দ্বিতীয় কারণ, এই আধুনিক যুগেও তিনি ফুটবল এবং ক্রিকেট দুটি খেলাতেই সমানভাবে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই অস্ট্রেলিয়ান এই খেলোয়াড়ের ফুটবল আর ক্রিকেট দুটোতেই অভিষেক হয়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এখন পর্যন্ত সাতটি টেস্ট খেলে ৬১.৭১ গড়ে রান করেছেন ৪৩২, সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ২১৩। উইকেট পেয়েছেন ২৭টি। ইতোমধ্যেই ‘উইমেনস ওয়ার্ল্ড কাপ’ এবং ‘ওয়ার্ল্ড টি২০’ (৩ বার) জিতে ফেলেছেন।
২০১১ সালের ফিফা উইমেনস ওয়ার্ল্ডকাপেও অংশ নিয়েছেন। ডিফেন্ডার হিসেবে খেলেও সেই বিশ্বকাপে সুইডেনের বিপক্ষে একটা দর্শনীয় গোলও করে ফেলেছেন পেরি। ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’ প্রবাদটি পাল্টে দিয়ে ‘যে নারী ফুটবল খেলে সে ক্রিকেটও খেলে’ প্রবাদ লেখার সময় হয়তো এসে পড়েছে।
ফিচার ইমেজ: Sportskeeda.com