গত এক যুগে যে পজিশনের খেলোয়াড়ের অভাবে ব্রাজিলকে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয়েছে সেটা অবশ্যই স্ট্রাইকার পজিশন। শেষ তিন বিশ্বকাপেই ব্রাজিল যে অনুপাতে আক্রমণ করেছে, সেই অনুপাতে গোলের দেখা তারা পায়নি শুধুমাত্র একজন পারফেক্ট স্কোরারের অভাবে। অথচ এমনটা কিন্তু হওয়ার কথা ছিল না, এই সময়ের মধ্যে এমন দুজন সম্ভাবনাময় স্ট্রাইকার এসেছিলেন, যারা নিজেদের সম্ভাবনার কুঁড়ি ঠিকভাবে প্রস্ফুটিত করতে পারলে শুধু বিশ্বসেরা স্ট্রাইকার নয়, হয়তো বিশ্বসেরা খেলোয়াড় হিসেবেই নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন। এদের মধ্যে একজন হচ্ছেন আদ্রিয়ানো যার ক্ষয়ে যাওয়ার গল্প আমরা আগেই বলেছি। আর অন্যজন হচ্ছেন আলেকজান্দ্রে পাতো, আজ তার নষ্ট হয়ে যাওয়ার গল্পটাই জানানোর চেষ্টা করবো।
ব্রাজিলের ব্রাঙ্কোতে ১৯৮৯ সালের ২রা সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন পাতো, পুরো নাম আলেকজান্দ্রে রদ্রিগুয়েজ ডা সিলভা পাতো। অসাধারণ প্রতিভাবান হওয়ায় ২০০৬ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ইন্টারন্যাসিওনালের হয়ে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক ঘটে তার। শুরুটাও হয় দুর্দান্ত, পালমেইরাসের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোল করেন তিনি। ঐ ম্যাচের পুরোটা সময় জুড়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের নাচিয়ে দুটি গোলে অ্যাসিস্ট করে প্রমাণ করে দেন এত অল্প বয়সে তাকে পেশাদার ফুটবলে এনে কোনো ভুল করেনি ইন্টার।
২০০৬ সালে ক্লাব বিশ্বকাপে খেলতে যায় ইন্টারন্যাসিওনাল, আর সেখানেও দলের সাথে ছিলেন পাতো। সেমিফাইনালে সেই সময়ে আফ্রিকার চ্যাম্পিয়ন আল-আহলির বিপক্ষে মাত্র ১৭ বছর ১০২ দিন বয়সে গোল করে ফিফা আয়োজিত কোনো টুর্নামেন্টের কনিষ্ঠতম গোলদাতা হয়ে যান তিনি, ভেঙে দেন ৪৮ বছর আগে পেলের গড়া রেকর্ড। সেবার বার্সেলোনাকে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপাও ঘরে তোলে পাতোর দল।
ইন্টারন্যাসিওনালে নজরকাড়া পারফরম্যান্স উপহার দেওয়ায় ইউরোপের বড় বড় ক্লাবগুলো পাতোকে দলে ভেড়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে, অবশ্য তেমনটা হওয়াই ছিল স্বাভাবিক। দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ের সাথে চিতার মতো দ্রুতগতিসম্পন্ন হওয়ায় তিনি সেন্টার ফরোয়ার্ডের পাশাপাশি উইঙ্গার হিসেবেও খেলতে পারতেন। ডান পায়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেও বাঁ পায়ে শট নিতেও পটু ছিলেন তিনি। তাছাড়া হেডিংয়ের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট ভালো ছিলেন।
এ কারণে ব্রাজিলিয়ান লিগে মাত্র এক বছর খেলেই ১৭ বছর বয়সে ইউরোপে পাড়ি জমান তিনি। ২০০৭ সালে ২৪ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে তাকে দলে ভেড়ায় ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান, তবে তার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় মিলানের হয়ে অফিসিয়াল ম্যাচ খেলার জন্য তাকে ২০০৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ইন্টারন্যাসিওনালের মতো মিলানের হয়ে অভিষেক ম্যাচেও গোল পান পাতো। সেই ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল নাপোলি। মিলানের হয়ে নিজের প্রথম মৌসুমে ২০ ম্যাচে ৯ গোল ও ২ অ্যাসিস্ট করে শুরুটা দারুণভাবে করেন তিনি।
২০০৮-০৯ মৌসুমে নিজের সেরাটা দিয়ে জ্বলে ওঠেন আলেকজান্দ্রে পাতো, ১৮ গোল করে সেই মৌসুমে ক্লাবটির সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি। এই পারফরম্যান্সের কারণে তৎকালীন ব্রাজিল কোচ দুঙ্গা তাকে ২০০৯ সালের কনফেডারেশন্স কাপের দলে রাখেন। সেই আসরে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ ছিল মিশরের বিপক্ষে, সেই ম্যাচে তিনি লুইস ফ্যাবিয়ানোর বদলি হিসেবে মাঠেও নামেন। তবে সেই আসরের কোনো ম্যাচেই তাকে আর নামানো হয়নি।
এই মৌসুমের পরেই মিলানের সেরা খেলোয়াড় কাকা দলবদল করে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন। ফলে পাতোর উপর প্রত্যাশার চাপটা আরেকটু বেড়ে যায়। সেই প্রত্যাশা পূরণের শুরুটা অবশ্য বেশ ভালো হয়েছিলো। সেবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জোড়া গোল করে দলকে ৩-২ গোলের জয় এনে দেন তিনি। তাছাড়া লিগেও ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে যাচ্ছিলেন তিনি। এমন অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য পাতোকে সিরি আ ইয়াং ফুটবলার অফ দ্য ইয়ার পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
চমৎকার পারফরম্যান্সের কারণে ২০১০ বিশ্বকাপের ব্রাজিল দলে পাতোকে রাখার জন্য দুঙ্গার উপর অনেক চাপ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু দুঙ্গা পাতোকে দলে না নিয়ে নিলমারকে দলে নেন। ফলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সত্ত্বেও সেবার আর বিশ্বকাপ খেলা হয়নি তার। তবে ২০১০ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার দায়ে দুঙ্গা চাকরি হারালে নতুন কোচ হিসেবে আসেন মানো মেনোজেস। তার অধীনে ব্রাজিলের নাম্বার নাইন জার্সিতে প্রথমবারের মতো মূল একাদশে সুযোগ পান পাতো। এখানেও শুরুতে বাজিমাত, যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে গোল করে জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবার মূল একাদশে জায়গা পাওয়াটা স্মরণীয় করে রাখেন তিনি।
জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া সাথে মিলানে নিজের জায়গা সুসংহত করা– সবমিলিয়ে মনে হচ্ছিলো পাতোর সামনের পথটা খুবই মসৃণ হতে যাচ্ছে। ২০১০-১১ মৌসুমের শুরুটাও করেন দুর্দান্তভাবে, লিগের প্রথম ম্যাচে লিসের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করেন তিনি। তবে পরের ম্যাচেই ইনজুরিতে পড়ে তিন ম্যাচ মিস করেন এই স্ট্রাইকার, ইনজুরি থেকে ফিরে শিয়েভোর বিপক্ষেও করেন জোড়া গোল। কিন্তু কিছুদিন পর আবারো হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়েন পাতো, এই দফায় মাঠের বাইরে থাকেন ছয় সপ্তাহ।
তবে ইনজুরি থেকে ফিরে আবারো স্বরূপে আবির্ভূত হন পাতো। গুরুত্বপূর্ণ সব গোল করে মিলানকে লিগ জয়ের রেসে টিকে থাকতে বড় ভূমিকা রাখেন। বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় সেবারের মিলান ডার্বির কথা। লিগ রেসের মূল লড়াইটা এই দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যেই হচ্ছিলো, তাই সেই ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পাতোর জোড়া গোলে ইন্টারকে ৩-০ গোলে হারিয়ে লিগজয়ের দিকে একধাপ এগিয়ে যায় এসি মিলান। শেষপর্যন্ত সেবারের সিরি আ এর শিরোপা মিলানের ঘরেই ওঠে। রবিনহো ও ইব্রাহিমোভিচের সাথে যুগ্মভাবে সেবার লিগে মিলানের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন পাতো।
লিগজয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে সেবার ব্রাজিলের হয়ে কোপা আমেরিকা খেলতে যান পাতো, কিন্তু গ্রুপপর্বে ইকুয়েডরের বিপক্ষে দুই গোল ছাড়া বলার মতো আর কিছু করতে পারেননি এই স্ট্রাইকার। ব্রাজিলকেও সেবার বিদায় নিতে হয় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই।
২০১১-১২ মৌসুম থেকেই মূলত পাতোর হারিয়ে যাওয়া শুরু। এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে মাত্র ২৪ সেকেন্ডের মাথায় গোল করা ছাড়া উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই করতে পারেননি তিনি। সেই মৌসুমে লিগে ১১ ম্যাচ খেলে করেছিলেন মাত্র এক গোল! আগের মৌসুমেই নিজের সেরা সময় পার করা পাতো কেন পরের মৌসুমেই এমন বিবর্ণ হয়ে গেলেন?
এর মূল কারণ ছিল ইনজুরি। মাত্র দুই বছরের মধ্যে পাতো মোট আটবার হাঁটুর ইনজুরির শিকার হয়েছিলো! যেখানে তার খেলার মূল শক্তিই ছিল গতি, সেখানে এতবার ইনজুরিতে পড়ায় সেই গতি কমে যাওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। এত ঘন ঘন ইনজুরিতে পড়ার মূল কারণ ছিল ফিটনেস ধরে রাখতে না পারা। মিলানে যোগদানের পর তার ওজন প্রায় আট কেজি বেড়ে যায়। এই অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধির চাপ তার শরীর নিতে পারছিলো না, ফলে বারবারই ইনজুরির শিকার হতে হয়েছিলো তাকে।
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগবে, এত অল্প বয়সে কীভাবে আনফিট হয়ে গেলেন পাতো? এর মূল কারণ অতিরিক্ত নারী আসক্তি। দেখতে দারুণ সুদর্শন এই খেলোয়াড় পেশাদার ক্যারিয়ারে ভালো খেলার আগে থেকেই প্রেমের মাঠে আরো বেশি ভালো খেলছিলেন! ২০০৭ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ব্রাজিলিয়ান অভিনেত্রী স্টেফানি ব্রিটোর সাথে সম্পর্কে জড়ান। ২০০৯ সালে সেই সম্পর্কটা বিয়েতে পরিণত করেন এই দুজন। কিন্তু বিয়ের পরেও পাতো অন্য মেয়েদের সাথে সম্পর্ক রাখায় মাত্র দশ মাস পরেই ভেঙে যায় তাদের সংসার!
এরপর ডেবোরা ল্যরার সাথে কিছুদিন সম্পর্কে থাকলেও মূলত বারবারা বার্লুস্কোনির সাথে সম্পর্কে জড়ানো পাতোর ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় প্রভাব রেখেছিলো। এসি মিলানের মালিক সিলভিও বার্লুস্কোনির মেয়ে নিজেও ক্লাবের একজন পরিচালক ছিলেন। তাই রাজকন্যার সাথে প্রেমে মজে গিয়ে খেলোয়াড়ি সাম্রাজ্যে নিজের রাজত্ব গড়ার ব্যাপারটাই বেমালুম ভুলে যান পাতো। অধিকাংশ সময়েই এই প্রেমিকাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় দলের অনুশীলন আর জিম সেশনেও অনিয়মিত হতে থাকেন এই প্রতিভাবান স্ট্রাইকার। এদিকে ক্লাব মালিকের মেয়ের সাথে প্রেম করায় এসব অনিয়ম সত্ত্বেও পাতোকে বলার মতো কেউ ছিল না। আর এ কারণেই পাতোর ওজন বেড়ে যায় এবং আনফিট হওয়ার দরুণ বারবার ইনজুরিতে পড়তে থাকেন।
অবশ্য প্লে বয় পাতো এই সম্পর্কেও শেষপর্যন্ত থিতু হতে পারলেন না। বারবারার সাথে সম্পর্কে থাকাকালীনই ক্যামিলা অলিভেইরা নামক এক মেয়ের সাথে তার সম্পর্কে জড়ানোর কথা সংবাদমাধ্যমে এলো। এর কিছুদিন পর বারবারাকেও অন্য এক ছেলের সাথে রেস্টুরেন্টে দেখতে পাওয়া যায়। সবমিলিয়ে পাতো আর বারবারার সম্পর্ক শেষ হওয়া নিয়ে গুঞ্জন ডালপালা মেলতে থাকে, কিন্তু দুজনই তখন সেই কথা অস্বীকার করে আসছিলেন।
এমন একসময় হুট করে মিলান ছেড়ে ১৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে করিন্থিয়াসে যোগ দেন পাতো। তখন এই দলবদলের কারণ স্পষ্ট না হলেও মাসখানেক পর যখন জানা গেলো যে, পাতো আর বারবারার সত্যিই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে, তখন সবকিছুই জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। যে প্রেমিকার ক্ষমতার জোর দেখিয়ে অনুশীলনে না এসে অভিসারে মত্ত থাকতেন পাতো, সেই প্রেমিকার সাথে ছাড়াছাড়ির সূত্র ধরেই তাকে মিলান ছাড়তে হয়।
এরপরের গল্পটা বড্ড মলিন, করিন্থিয়াসে এক বছর খেলার পর ধারে খেলতে যান সাও পাওলোতে। এরপর আবার ধারে খেলতে যান চেলসিতে, সেখানে স্থায়ীভাবে থাকতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু কোনো এক অদ্ভুত কারণে পাতোকে দলে নেওয়ার জন্য কোনো ইউরোপীয় বড় ক্লাবই সেভাবে আর আগ্রহ দেখায়নি! অথচ তার যা বয়স ছিল তাতে আবারো নতুন রূপে ফিরে আসার একটা সম্ভাবনা অবশ্যই ছিল। ধারণা করা হয়, অতীতে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণেই বড় ক্লাবগুলো তার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি।
এরপর ভিয়ারিয়ালে যোগ দিলেও সেখানে থেকেছেন মাত্র অর্ধেক মৌসুম। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে চলে যান চীনা লিগে। দুই মৌসুম চীনে কাটানোর পর এই বছর আবারো নিজের পুরনো ক্লাবে ফিরে এসেছেন পাতো। যার কি না বিশ্বসেরা স্ট্রাইকার হওয়ার কথা ছিল, তিনি আজ ভবঘুরের মতো এক ক্লাব থেকে অন্য ক্লাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন!
প্রতিভার সঠিক বিকাশের জন্য শৃঙ্খলা ও পরিশ্রম যে কতটা জরুরি তার যথার্থ উদাহরণ আলেকজান্দ্রে পাতো। প্রেমের খেলায় না মজে যদি ঠিকমত অনুশীলনটা করতেন, তবে হয়তো সুয়ারেজ, লেভান্ডস্কি, কেইন, আগুয়েরোর মতো স্ট্রাইকারের পাশে তার নামটাও থাকতো। যে প্রেমের নেশায় বুঁদ হয়ে মিলানে নিজের সোনালি সময় নিজ হাতে নষ্ট করেছেন, সেখানেও তিনি চূড়ান্ত ব্যর্থ। পাতো যদি আদর্শ প্রেমিক হতেন তবে ‘এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়’ গানটা তার জন্য গাওয়া যেত। কিন্তু জীবনের সর্বক্ষেত্রে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়ে নিজ হাতে ক্যারিয়ারটা বিসর্জন দেওয়ার অপরাধের দায় মেটাতে ‘ক্ষমা করে দিও আমায়’ বলে পাতো আজীবন চিঠি পাঠালেও সেই চিঠির উত্তর হয়তো আর আসবে না।