একজন ফুটবলারের জীবন মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। মাঠে কাটানোটা হলো জীবনের প্রথম ভাগ। আর তারপরের অংশ কেউ কাটায় মাঠের কিনারায় আবার কেউ মাইক্রোফোন হাতে। অনেক ভালো কোচেরই বলার মতো কোনো ক্যারিয়ার ছিল না খেলোয়াড় হিসেবে, আবার অনেক দারুণ ফুটবলারেরই অবসরের পর বলার মতো কিছু থাকে না। কিন্তু এমন অনেকে আছেন, যারা জীবনের দুই অংশেই সমান সফল। আজ এই লেখাটি এমনই কিছু নির্বাচিত ফুটবল ব্যক্তিত্বকে নিয়ে, যারা খেলোয়াড় জীবনে এবং বুট তুলে রাখার পরেও সমানভাবেই সফল।
ফ্যাবিও কাপেলো
কোচ হিসেবে আধুনিক প্রজন্মের কাছে তিনি প্রধানত পরিচিত হলেও, খেলোয়াড়ি জীবনেও বেশ সফল ছিলেন ফ্যাবিও ক্যাপেলো। মূলত রোমার খেলোয়াড় হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু। সেখান থেকে তিনি যান জুভেন্টাসে। আর সেখানেই তার আসল সাফল্য, তিনটি লিগ জেতেন সেই ক্লাবে, সাথে আরো কিছু ঘরোয়া কাপ। সেই আমলের অন্যতম সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ছিলেন তিনি, ইতালির জাতীয় দলেও ছিলেন নিয়মিত। খেলেছেন ১৯৭৪ এর বিশ্বকাপে। শেষদিকে এসি মিলানে যোগ দেন তিনি। এই মিলানেই তার কোচিং ক্যারিয়ারের হাতেখড়ি। আরিগো সাচ্চির একসময়কার গ্রেট মিলান দলটাকে পড়ন্ত বেলায় পেলেও সবার ধারণাকে ছাপিয়ে গিয়ে পাঁচ বছরে চারটি লিগ জেতান ক্যাপেলো। দলকে নিয়ে যান তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে, যার মধ্যে একটি ক্রুয়েফের অদম্য বার্সেলোনাকে ৪-০ তে হারিয়ে জিতে নেন। দু’বার আলাদা আলাদাভাবে রিয়ালকে কোচিং করিয়ে দু’বারই লিগ জেতান তিনি। রোমাকে ১৮ বছর পর লিগ জেতান আর জুভেন্টাসকে জেতান টানা দুই লিগ। অনেকের মতেই তিনি ইতালির সবচেয়ে কার্যকর ট্যাকটিশিয়ান।
ইয়ুপ হেইঙ্কেস
জার্মান লিগের ইতিহাসের ৩য় সর্বোচ্চ গোলস্কোরার তিনি। স্টুটগার্টের মতো দলকে জিতিয়েছেন ইউরোপিয়ান কাপ, চারটি লিগ সহ আরো ট্রফি। কিন্তু তার সময়ে জার্মানির ইতিহাসের সেরা স্ট্রাইকার গার্ড মুলার খেলতে থাকায় তার অতিমানবিক খেলার কথা প্রায়ই আড়ালে পড়ে যায়। জিতেছেন ১৯৭৪ এর বিশ্বকাপও। খেলোয়াড়ি জীবনে মুলারের ছায়ায় থাকলেও কোচ হিসেবে তিনি যে ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা! ৩৩ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ৩টি লিগ, ৫টি কাপ সহ রয়েছে বায়ার্ন ও রিয়ালকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর কৃতিত্ব। বর্তমানে তিনি অবসর ভেঙে বায়ার্নে আবার ফিরেছেন কোচিং করাতে আর টালমাটাল দলটিকে নিয়ে আবারও তিনি রয়েছেন লিগ জয়ের পথে!
ভিসেন্তে দেল বস্ক
স্পেন ও রিয়ালের ইতিহাসে দেল বস্ক এক কথায় অতুলনীয়। বলা চলে, কোনো স্প্যানিশ কোচের সাফল্যই দেল বস্কের সমপর্যায়ের না। আপাদমস্তক মাদ্রিদিস্তা তিনি, মাদ্রিদ একাডেমিতেই তার বেড়ে ওঠা। খেলোয়াড়ি জীবনে রিয়ালের হয়ে চারটি কোপা দেল রে সহ জিতেছেন ৫টি লিগ। খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শেষে আসেন রিয়াল যুব একাডেমিতে কোচিং করাতে। দলের দুরবস্থার সময় ডাক পেয়ে সবাইকে অবাক করে রিয়ালকে জিতিয়ে দেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। দুটি লিগ ও দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতান রিয়ালকে, মাত্র ৪ বছরে। ২০১০ সালে স্পেন জাতীয় দলের দায়িত্ব পেয়ে স্পেনকে এনে দেন তাদের ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০১২ ইউরোতে ইতালিকে ৪-০ তে হারিয়ে তার নিজের ট্রফি ক্যাবিনেটকে করেন আরো ঐশ্বর্যময়।
কেনি ডালগ্লিশ
বার্সেলোনার জন্য মেসি যেমন, খেলোয়াড়ি জীবনে কেনি ডালগ্লিশও ছিলেন লিভারপুলের জন্য তেমনই। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে সেল্টিককে জিতিয়েছেন ঘরোয়া লিগ। এরপর আসেন লিভারপুলে। সেই সময়কার অদম্য লিভারপুলের অন্যতম চালিকাশক্তি ছিলেন তিনি। তার মতো গোলমেশিনে ভর করেই লিভারপুল ছয়টি লিগ, চারটি কাপ সহ তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতে। অবাক করার মতো ব্যাপার হলো, প্লেয়ার-কাম-কোচ হিসেবে লিভারপুলকে এফএ কাপ ও লিগ জেতান, তা-ও ফাইনালে তার নিজেরই জয়সূচক গোল ছিল! এছাড়াও আরো দুটি লিগ জেতেন পুরোদস্তুর লিভারপুল ম্যানেজার হিসেবে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ব্ল্যাকবার্ন রোভারসের মতো ক্লাবকেও লিগ জেতান তিনি। আপাদমস্তক এই লিভারপুল-ম্যান খেলোয়াড় বা কোচ দুই ক্ষেত্রেই ইংল্যান্ড দাপিয়ে গেছেন তার পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে।
কার্লো আনচেলত্তি
বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি জয়ের অধিকারী এই কোচ খেলোয়াড় হিসেবেও ছিলেন দারুণ সফল। সবচেয়ে বড় কথা, আরিগো সাচ্চির সেই ইতিহাসের অন্যতম সেরা মিলান দলের মাঝমাঠের ভিত্তি ছিলেন উনি। সাচ্চির দলের টানা দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার অন্যতম কারিগর তিনি, জিতেছেন তিনটি ইতালিয়ান কাপ সহ আরো অনেক ট্রফি। ১৯৮৬ ও ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপেও খেলেছেন সেই সময়ের বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার। কোচ হিসেবে মিলানকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে তোলেন তিনবার, জিতিয়েছেন দু’বার। ইতালি, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও জার্মানি সব দেশের লিগই জিতেছেন তিনি। ২০১৪ সালে রিয়ালকে এনে দেন তাদের বহুল আরাধ্য লা ডেসিমা। বর্তমানে কোচিংয়ে আছেন এমন কোচদের মধ্যে তাকেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মানা হয় দুরন্ত সাফল্যের জন্য।
ব্রায়ান ক্লো
তর্কযোগ্যভাবে তিনি ইংলিশ লিগের সেরা স্ট্রাইকার। মাত্র ২১৩ ম্যাচে ১৯৭ গোল মিডলসব্রোর হয়ে আর সান্ডারল্যান্ডের হয়ে ৬৩ ম্যাচে ৫৪ গোল- অদম্য এক স্ট্রাইকার ছিলেন তিনি। তর্কের সামান্য অবকাশটুকুও থাকতো না, যদি বড় ইনজুরিতে না পড়তেন। ম্যানেজার হিসেবে তাকে ব্রিটিশ বেস্ট কোচ বলা যায় অনায়াসেই। দ্বিতীয় বিভাগের দল ডার্বির দায়িত্ব নিয়ে তাদের প্রথম বিভাগে এনে রাতারাতি বানিয়ে ফেলেন শিরোপা জয়ের দাবিদার হিসেবে। সর্বদা সুন্দর ফুটবলের পূজারী ক্লো সেই আমলের সবচেয়ে শক্তিশালী দল লিডসের আধিপত্য ভেঙে একসময়কার দ্বিতীয় বিভাগের দল ডার্বিকে লিগ জেতান। এরপর সেই লিডসেই কোচ হওয়ার ডাক পান, মাত্র ৪৪ দিন টেকেন নানা বৈরিতার মাঝে। এরপর আবার নটিংহ্যাম ফরেস্ট নামে এক দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাবের দায়িত্ব নেন। সেই ছোট দলটিকে প্রথম বিভাগে এনে সেখানে লিগ জেতান। সাধেই কী তার এত মাহাত্ম্য! তিনি সেই পুঁচকে নটিংহ্যামকে টানা দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতান। ক্লো ক্লাব ছাড়ার পর ফরেস্ট সেই আগের জায়গাতেই ফিরে যায় আর মাঝের রূপকথা কেবল সম্ভব হয় এই এক ব্যক্তির জন্যই।
পেপ গার্দিওলা
হালের সবচেয়ে জনপ্রিয় তর্কের বিষয় হলো গার্দিওলা আর মরিনহো? কিন্তু অনেকেই গার্দিওলার খেলোয়াড়ি জীবন সম্পর্কে অবগত না। তিনি ছিলেন বার্সেলোনা একাডেমির প্রথম ‘জুয়েল’। তার খেলোয়াড়ি স্টাইল ছিল জাভির মতো, ক্রুয়েফের সেই ‘ড্রিম টিম’ এর ভিত্তি ছিলেন তিনি। বার্সার প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতায় তার ভূমিকা ছিল অনন্য। ৬টি লা লিগা আর ৫টি কোপা দেল রে জিতে বার্সা ছাড়েন তিনি। কোচ হিসেবে তার শুরুটা হয় স্বপ্নের মতো। এসেই বার্সায় ফিরিয়ে আনেন তাদের বিখ্যাত টিকিটাকা স্টাইল, সম্ভাব্য ৬টি ট্রফির সব জেতান বার্সাকে। একাডেমির খেলোয়াড়দের প্রাধান্য দিয়ে গড়ে তোলা বার্সা ছিল সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে অদম্য দল। বার্সা থেকে বায়ার্ন হয়ে এখন ম্যানসিটিতে আছেন তিনি। অনধিক ১০ বছরে ৬টি লিগ, ২টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সহ জিতেছেন আরো অনেক ট্রফি। সময়ের অন্যতম সেরা এই কোচের সব অর্জনই তার নিজস্ব চিন্তাপ্রসূত সুন্দর খেলা দিয়ে।
জিনেদিন জিদান
জিনেদিন জিদানের খেলোয়ারি ক্যারিয়ারটা সবচেয়ে সংক্ষেপে সেরে ফেলা যায়। কেন? কারণ, খুব সহজেই তিনি পেলে, ম্যারাডোনাদের সমান কাতারে আসতে পারেন। খেলোয়াড়ি জীবনে দেশকে জিতিয়েছেন বিশ্বকাপ, ইউরো; রিয়ালকে জিতিয়েছেন লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। তার মাপের ফুটবলার ইতিহাসে যে বিরল, এটা ন্যুনতম ফুটবল দেখা লোক মাত্রও জানেন। কিন্তু তার অবাক করা ব্যাপার ছিল কোচিং। সেই দেল বস্কের মতো করেই হঠাৎ টালমাটাল এক রিয়ালের দায়িত্ব পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে তিনি দলকে জিতিয়ে দেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ! তার পরেরবার লিগ জেতানোর পাশাপাশি আবারো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতান। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নামকরণের পর সাচ্চি-পরবর্তী যুগে এই প্রথম কেউ টানা দুটো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতেন।
ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার
জার্মানিতে একটা কথা বলা হয় যে, যদি বেকেনবাওয়ার বলে থাকেন যে সূর্য পশ্চিমে উঠে, অনেক জার্মান তা সত্য বলে ধরে নেবেন! অনায়াসে বলা যায়, বিশ্বের ইতিহাসের সেরা ডিফেন্ডারদের একজন তিনি। বায়ার্ন মিউনিখের উত্থানের নায়ক তিনি, জেতেন চারটি বুন্দেসলিগা ও টানা তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। জার্মানিকে ১৯৭২ সালের ইউরো ও অধিনায়ক হিসেবে ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপ জেতান। ভাঙা হাত আর ইনজুরড পা নিয়েও খেলা চালিয়ে যেতেন তিনি জার্মানির জন্য। হামবুর্গে কোচিং শুরু করেন তিনি, তাদের লীগ জেতানোর পর জার্মান জাতীয় দলের দায়িত্ব নেন। ১৯৮৬-তে ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার সাথে পেরে না উঠলেও ১৯৯০ সালে এর বদলা নেন তাদের হারিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের মধ্য দিয়ে।
মারিও জাগালো
মারিও জাগালোকে ‘মি. ওয়ার্ল্ড কাপ’ বললেও হয়তো ভুল হবে না। খেলোয়াড়ি জীবনে ১৯৫৮ সালের অদম্য ব্রাজিল দলের খেলোয়াড় তিনি। আবার ১৯৬২ সালের ব্রাজিল, যে দলটি সফলভাবে বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়, সেই ব্রাজিল দলেরও নিয়মিত সদস্য তিনি। খুব সহজেই ব্রাজিল ইতিহাসের সেরা ৫০ জন খেলোয়াড়ের একজন তাকে বলাই যায়। ১৯৭০ সালে ব্রাজিল দলের দায়িত্ব নেন তিনি। কোচ হিসেবে জেতান বিশ্বকাপ। সেই ব্রাজিল দলকে ফুটবল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা দল বলা হয়। এর ২৪ বছর পরেও যখন ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিততে পারছিল না, দেশের স্বার্থে পেরেইরার সহকারী হয়ে আসেন তিনি, সেবারও বিশ্বকাপ জেতে ব্রাজিল। ১৯৯৮ সালে ব্রাজিল যেবার রানার্স আপ হয়, সে সময়ও দলের কো-অরডিনেটর ছিলেন তিনি। কী? তাকে কি বলা যায় না ‘মি. ওয়ার্ল্ড কাপ’?
ইয়োহান ক্রুইফ
ফুটবল ইতিহাসে ক্রুয়েফের মতো প্রভাব খুব কম লোকেরই আছে। আয়াক্সে উত্থান ঘটেছিল তার। সেই আয়াক্সকে একাধিক লিগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়ে বার্সেলোনায় যান। সেখানে ছিল তার সুপার স্টারডম। বার্সেলোনাকেও জেতান লিগ। খেলোয়াড়ি জীবনে তার অর্জন সর্বমোট ১০টি লিগ ট্রফি, ১টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সহ অসংখ্য ট্রফি। ১৯৭৪ সালে হল্যান্ডকে বিশ্বকাপের ফাইনালে তুললেও জার্মান যন্ত্রের কাছে হেরে যেতে হয় তাকে। কিন্তু তার প্রভাব ছিল সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি কিছু। বিশ্ব ইতিহাসের সেরা একাদশ যেভাবেই করা হোক, এই নামটিকে বাদ দিয়ে করা যাবে না। কোচ হিসেবেও টোটাল ফুটবলকে তিনি দেন নতুন মাত্রা। আয়াক্সকে জেতান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। আসেন তার সাবেক ক্লাব বার্সায়। বর্তমানের লা মাসিয়া নামের বার্সেলোনা একাডেমি তারই মস্তিস্কপ্রসূত। বার্সায় টিকিটাকা তার হাত ধরেই আসে। ১৯৯২ সালে বার্সাকে জেতান তাদের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। টানা ৪টি লিগ জেতান বার্সাকে। ফুটবলে ক্রুয়েফের প্রভাব বলে শেষ করা যাবে না। তার সাবেক প্রায় সব ছাত্রই এখন বড় বড় কোচ। আজকের মেসি, ইনিয়েস্তা, জাভি সবাই তার মস্তিস্কপ্রসূত সেই লা মাসিয়া থেকে আগত। এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ‘ক্রুয়েফ লিগ্যাসি’ সহসাই শেষ হচ্ছে না।