টেনিস: গ্র্যান্ড স্ল্যাম এবং উন্মুক্ত যুগের সূচনা | পর্ব-১

ফুটবল ক্রিকেটের ভিড়ে আমাদের দেশে অন্যান্য খেলাধুলার জনপ্রিয়তা তেমন নেই। তবে ইদানিংকালে টেনিসের ব্যাপারে সম্ভবত আগ্রহ বাড়ছে। খুব বেশি অনুসরণ করা না হলেও অন্তত মিডিয়ার কল্যাণে রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল, নোভাক জোকোভিচ, সেরেনা উইলিয়ামস, মারিয়া শারাপোভাদের একটা ভক্তকূল কিন্তু তৈরি হয়েছে।

ফেদেরার, নাদাল বা জোকোভিচের নাম শোনেনি এমন লোক কমই আছে; Image Source: olympics.com

টেনিসের মূল আকর্ষণ চারটি প্রধান টুর্নামেন্ট, যা সাধারণ মানুষের কাছে ‘গ্র্যান্ড স্ল্যাম’ বলে পরিচিত। তবে ‘গ্র‍্যান্ড স্ল্যাম’ মূলত প্রয়োগ হয় এক বর্ষপঞ্জিতে সবগুলি প্রধান টুর্নামেন্ট বিজয়ী বোঝাতে। ১৯৬৮ সালে ‘ওপেন এরা’ শুরুর পর থেকে এই চারটি আসরই ব্যক্তিগত টেনিসের সর্বোচ্চ মর্যাদা দখল করে রেখেছে। কীভাবে, কেমন করে প্রচলন হলো এই আসরগুলির? ‘ওপেন এরা’ বা উন্মুক্ত যুগই বা কী?

উৎপত্তি

টেনিসের উৎপত্তি নিয়ে বহু তর্ক আছে। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, প্রাচীন গ্রীস আর রোমের কোনো খেলা থেকে এর শুরু। তবে সর্বজনস্বীকৃত মতবাদ হলো, পউম (Paume) নামে এক ধরণের ফরাসি খেলা থেকেই আধুনিক টেনিসের সূচনা।

সম্ভবত ১০০০ খৃষ্টাব্দে ফরাসি সন্ন্যাসীরা পউম (Jeu de paume) নামের খেলা খেলতেন। পউমের মানে ছিল হাত (jeu de paume/game of the palm)। হয় আশ্রমের দেয়ালে, নতুবা মঠের উঠোনে দড়ি টানিয়ে ছোট একটি বল হাত দিয়ে পিটিয়ে খেলা হতো। জনশ্রুতি আছে, বল ছোঁড়ার সময় সন্ন্যাসীরা “টেনেয” (tenez’) বলে চিৎকার করতেন, যার অর্থ ছিল ধরো। এই টেনেয থেকেই নাকি টেনিস শব্দের উদ্ভব।

ফরাসি সন্ন্যাসীরা পউম খেলতেন © SMcCandlish

সন্ন্যাসীদের থেকে খেলা ছড়িয়ে পড়ে সমাজের অন্যান্য শ্রেণিতে। অভিজাত লোকেরাও মজা পেয়ে যান। এই পর্যায়ে কিছু পরিবর্তন এলো খেলার ধরণে। খালি হাতে না খেলে দস্তানা ব্যবহার আরম্ভ হয়। কিছুদিন পর চামড়ার দস্তানার আঙ্গুলের ফাঁকে জাল লাগানো হয় বল মারার সুবিধার্থে। 

একসময় দস্তানা ছেড়ে কাঠের হাতলের মাথায় গোল বা উপবৃত্তাকার কাঠামো লাগিয়ে প্রস্তুত হয় প্রথম র‍্যাকেট (Paddle)। হাতের পরিবর্তে টেনিসে আরম্ভ হলো র‍্যাকেটের ব্যবহার। তবে স্বাভাবিকভাবেই এই র‍্যাকেটের আকার-আকৃতি আজকের থেকে ভিন্ন ছিল। ১৫০০ খৃষ্টাব্দ নাগাদ কাঠের তৈরি র‍্যাকেট সবখানে প্রচলিত হয়ে যায়। তখন বল তৈরি হতো চামড়া আর কর্ক দিয়ে।

র‍্যাকেট দিয়ে পউম খেলার প্রচলন শুরু হয়; Image Source: surlatouche.frCaption

ত্রয়োদশ শতকে টেনিস এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠল ফ্রান্সে যে প্রথমে পোপ এবং পরে রাজা লুই এই খেলা নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করলেন। তাদের ধারণা ছিল, টেনিসের কারণে ধর্মকর্ম থেকে মানুষ দূরে সরে যাচ্ছে। তবে তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়নি।

ফ্রান্স থেকে এই খেলা রপ্তানি হয় ইংল্যান্ডে। এখানে রাজারাজড়াও টেনিসে মেতে ওঠেন। সপ্তম আর অষ্টম হেনরির অন্যতম প্রিয় খেলা ছিল এই টেনিস। খেলার জন্য ইংল্যান্ডে প্রায় ১৮০০ ইনডোর কোর্ট (টেনিসের মাঠ) তৈরি হয়।

উল্লেখযোগ্য যে, ফরাসি এই খেলার পরিবর্তিত হয়ে আধুনিক টেনিসে রূপান্তরিত হয় ইংল্যান্ডে। তবে মূল খেলা, পউম, কিন্তু আজও চলমান। সবসময় ইনডোর কোর্টে র‍্যাকেট আর শক্ত কাপড়ের বল দিয়ে চলে এই খেলা। ইংল্যান্ডে একে বলা হয় রিয়েল বা আসল টেনিস, যুক্তরাষ্ট্রে কোর্ট টেনিস আর অস্ট্রেলিয়াতে রয়্যাল বা রাজকীয় টেনিস। নিয়মিত প্রতিযোগিতা এবং শিরোপারও ব্যবস্থা আছে।

আবার ফিরে আসা যাক টেনিসের কথায়। ১৭০০ খৃষ্টাব্দের দিকে পউমের জনপ্রিয়তায় ভাটার টান পড়ে। ব্যবহৃত বলের বাউন্সের ক্ষমতা কম থাকায় ইনডোর কোর্ট ছাড়া খেলা যেত না, কিন্তু অনেকে স্থানেই এই ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি।  

১৮৫০ সালে চার্লস গুডইয়ার নামে এক মার্কিন রসায়নবিদ ও প্রকৌশলী রবারের ভাল্কানাইজেশন (vulcanization) নামে একটি প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেন। এর ফলে প্রচুর বাউন্স করবে এমন টেনিস বল তৈরি করা সম্ভব হয়। এরপর থেকে ইনডোর কোর্ট ছেড়ে বাইরের ঘাসের মাঠে খেলার চল শুরু হয়।

চার্লস গুডইয়ার টেনিসের বড় উপকার করেছিলেন; Image Source: biography.com

ঠিক কবে পউম আধুনিক টেনিসে রূপান্তরিত হয়, তা নিয়ে বেশ কিছু মতামত আছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭৩ সালে শতবর্ষ পালনের মধ্যে দিয়ে ১৮৭৩ সালকে আধুনিক টেনিসের সূচনাকাল বলে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। 

১৮৭৩ সালে লন্ডনের এক ব্যক্তি, মেজর ওয়াল্টার উইংফিল্ড পউমের পরিবর্তিত রূপ হিসেবে স্ফাইরিস্তিক (গ্রীক শব্দ Sphairistikè , যার মানে বল খেলা/playing ball) নামে এক খেলার প্রবর্তন করেন। একই বছর এই খেলার নিয়মকানুন নিয়ে তিনি একটি পুস্তক প্রকাশ করে ফেলেন। পরের বছর খেলাটি প্যাটেন্ট করে নেন নিজের নামে।

মেজর উইংফিল্ডকে সাধারণভাবে আধুনিক টেনিসের প্রথম প্রবক্তা বলে মনে করা হলেও অধিকাংশ বিশেষজ্ঞদের মতে আরো আগে থেকেই একইরকম খেলা চলত ইংল্যান্ডে। এমনকি ১৮৭২ সালে ওয়ারউইকশায়ারের লিমিংটনে হ্যারি জেম নামে এক ব্যক্তি এজন্য ক্লাবও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

ধরে নেয়া হয় মেজর উইংফিল্ডের হাত ধরেই যাত্রা শুরু আধুনিক টেনিসের; Image Source: tennisreboot.com

যাই হোক, উইংফিল্ডের ঘটনাই বেশি প্রচার পেয়েছে। ফলে তার থেকেই আধুনিক টেনিসের আরম্ভ বলে ধরা হয়। তৎকালীন সময়ে মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাব (MCC) পউমের নিয়ম তৈরি করত। তারা ১৮৭৫ সালে সে সময়ের জন্য টেনিসের আইনকানুন ঠিক করে দেয়। খেলার নাম উল্লেখ করা হয় লন টেনিস।    

১৮৭০ সালে মেরি আউটব্রিজ নিউ ইয়র্কের এক বাসিন্দা টেনিসের সরঞ্জাম নিয়ে যান তার ভাইয়ের কাছে। ভাই ছিলেন স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের ক্রিকেট আর বেসবল ক্লাবের সভাপতি। তাদের হাত ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাখা মেলে লন টেনিস। বলা হয়, ম্যাসাচুসেটসের নাহান্ট শহরে বাসিন্দা উইলিয়াম অ্যাপলটন ও তার বন্ধু জেমস ডোয়াইট এবং ফ্রেডেরিক সিয়ার্স যুক্তরাষ্ট্রে লন টেনিসের প্রসারে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন।

উইম্বলডন

ইংল্যান্ডে লন টেনিস তখন নিয়ন্ত্রিত হতো ক্রকেটের সংস্থা ‘অল-ইংল্যান্ড ক্রকেট ক্লাব’-এর (All England Croquet Club) দ্বারা। তাদের আওতাধীন উইম্বলডনের মাঠ বরাদ্দ দেয়া হয় শুধু লন টেনিসের জন্য। দ্রুতই এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠলে সংস্থা নাম পরিবর্তন করে হয়ে যায় ‘অল-ইংল্যান্ড ক্রকেট অ্যান্ড লন টেনিস ক্লাব’।

১৮৭৭ সালে ক্লাব একটি প্রতিযোগিতা আয়োজনের চিন্তা করল, নাম দেয়া হলো উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নশিপ। ২৪ জন খেলোয়াড় নাম লেখালেন, বিজয়ী হলেন স্পেন্সার গোর নামে এক লোক। উইম্বলডনের দেখাদেখি পরের বছর স্কটিশ এবং ১৮৭৯ সালে আইরিশ লন টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজিত হয়।

উইম্বলডনে এখন নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক আসর; Image Source: nbcnews.com

প্রথমদিকে উইম্বলডনে মেয়েদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ ছিল না। ১৮৮৪ সাল থেকে এই নিয়ম উঠে যায়। ১৮৮৮ সালে উইম্বলডনের পরিচালনা পর্ষদেও কিছু পরিবর্তন আসে, যখন ব্রিটিশ লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (LTA) অল ইংল্যান্ড ক্লাবের জায়গায় টেনিসের প্রধান সংস্থা বলে স্বীকৃতি পায়।

যুক্তরাষ্ট্র

১৮৮০ সালে নিউ ইয়র্কের স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় টেনিসের প্রথম প্রতিযোগিতা। ব্রিটিশ খেলোয়াড় উডহাউজ (O.E. Woodhouse) জিতে নেন শিরোপা। যুক্তরাষ্ট্রে খেলার সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য পরের বছর গঠিত হয় ইউএস জাতীয় লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন। বছরখানেক পর নাম পরিবর্তন করে তা হয়ে গেলো ইউএস লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন, যা ১৯৭৫ সালে পুনরায় ইউএস টেনিস অ্যাসোসিয়েশন নামে নিবন্ধিত হয়।

ইউএস জাতীয় লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন ১৮৮১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচলন করে ইউএস ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের। নিউ ইয়র্কের রোড আইল্যান্ডের নিউপোর্টে বসল এই আসর। বিজয়ী হন রিচার্ড সিয়ার্স, যিনি পরের সাত বছর টানা ধরে রেখেছিলেন শিরোপা।

উইম্বলডনের মতোই যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমদিকে নারী খেলোয়াড়রা টেনিস টুর্নামেন্টে প্রবেশাধিকার পেতেন না। তবে ১৮৮৭ সাল থেকে আলাদা করে তাদের জন্য প্রতিযোগিতার সূচনা হয়।  

ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া

১৮৮০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মতোই টেনিস ছড়িয়ে পড়তে থাকে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে। ১৮৮৬ সালে নিউ জিল্যান্ড আয়োজন করে টেনিসের বড় এক প্রতিযোগিতার। ১৯০৪ সালে নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার মিলিত সংগঠন ‘লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন অফ অস্ট্রেলেশিয়া’ আত্মপ্রকাশ করে, যা থেকে পরে টেনিস অস্ট্রেলিয়া’র উৎপত্তি। ১৯০৫ সালে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম অস্ট্রেলিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ।

পউমের জনক ফরাসিরা কিন্তু টেনিসে বেশ পিছিয়ে ছিল। প্রথম ফরাসি চ্যাম্পিয়নশিপ মাঠে নামতে ১৮৯১ সাল পর্যন্ত লেগে যায়। তবে এখানে খেলতেন কেবল ফরাসি খেলোয়াড়েরাই। ১৯২০ সালে ফরাসি লন টেনিস ফেডারেশন গঠিত হয়। তারা আন্তর্জাতিক টেনিস আসর চালু ১৯২৫ সাল থেকে। 

অন্যান্য আসর

ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স আর অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও অন্যান্য দেশেও টেনিস যাত্রা শুরু করেছিল। ১৮৯০ সালে কানাডা, ১৮৯১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯১০ সালে স্পেন, ১৯২১ সালে ডেনমার্ক, এবং ১৯২৫-৩০’এর ভেতর মিশর, ইতালি আর সুইডেনে ছড়িয়ে পড়ে টেনিস।

তখন অবধি টেনিস ছিল ব্যক্তিগত খেলা। দেশে দেশে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয় ‘ডেভিস কাপ’ নামে এক আসর থেকে। ১৯০০ সালে এই প্রতিযোগিতার সূচনা, যার পোশাকি নাম ছিল ‘আন্তর্জাতিক লন টেনিস চ্যালেঞ্জ’। প্রতিযোগিতার জন্য শিরোপাটি দান করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড় ডোয়াইট ডেভিস, ফলে ডেভিস কাপ নামেই পরিচিতি পায় এই আয়োজন। তিনি নিজেও যুক্তরাষ্ট্র দলে ছিলেন, এবং প্রথম ডেভিস কাপে চ্যাম্পিয়ন হন তারাই।

ডোয়াইট ডেভিস; Image Source: kahimyang.com

প্রধান আসরগুলির সূচনা

বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সংস্থা টেনিসের নিয়ন্ত্রক থাকায় আইনকানুন সবসময় একই রকম থাকত না। এই সমস্যা দূর করতে কোর্টে ইংল্যান্ড আর ফ্রান্সের অ্যাসোসিয়েশন একবার ডেভিস কাপ চলাকালে আলোচনায় বসল। তাদের উদ্যোগে ১৯১২ সালের অক্টোবর মাসে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় এক সভা, ইংল্যান্ড আর ফ্রান্সের পাশাপাশি যেখানে যোগদান করেছিল অস্ট্রেলেশিয়ান, অস্ট্রিয়ান, বেলজিয়ান, স্প্যানিশ আর সুইস টেনিস ফেডারেশনও। এখান থেকে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (ILTF)।

আন্তর্জাতিক লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন টেনিস প্রতিযোগিতার দায়িত্ব নেয় © Library of Congress’s Prints and Photographs division

অ্যাসোসিয়েশন ১৯১৩ সালে তাদের প্রথম সভায় বসে। এখানে ভোটাধিকার ভাগাভাগি হলো। গুরুত্বের বিচারে সর্বাধিক ছয়টি ভোট পেল ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ড আর ফ্রান্সে তিনটি টেনিস বিশ্বকাপের সিদ্ধান্ত হয় এই সভাতে। একটি খেলা হবে ঘাসের বা গ্রাস কোর্টে, দ্বিতীয়টি মাটির কোর্টে আর তৃতীয়টি ইনডোরে কাঠের মেঝেতে।

তবে অ্যাসোসিয়েশনের গোড়ায় ছিল বড় গলদ। কারণ অ্যাসোসিয়েশনের বাইরে থেকে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাদের যুক্তি ছিল, ভোটাধিকার বিন্যাসে হ-য-ব-র-ল করে ফেলেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা। তাছাড়া বিশ্বকাপের আয়োজন কেন কেবল ইংল্যান্ড আর ফ্রান্সে সীমাবদ্ধ সেই প্রশ্নও তুলল তারা।  

১৯২০ সাল নাগাদ দেখা গেল আন্তর্জাতিক লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের আসরের থেকে যুক্তরাষ্ট্র আর অস্ট্রেলিয়ান প্রতিযোগিতাগুলি বেশি দর্শক টানছে। ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের দুয়ারে ধর্না দিল। তাদের রাজি করালো অ্যাসোসিয়েশনের অধিভুক্ত হতে। এজন্য নিজেদের তিন প্রধান টুর্নামেন্ট থেকে বিশ্বকাপ বা ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ শব্দগুচ্ছ ছেঁটে ফেলল তারা। ঘাসের কোর্ট ছাড়া বাকি দু’টি আসর একপ্রকার বিলুপ্ত হয়ে গেল।

এর তিন বছরের মাথায় আন্তর্জাতিক টেনিসের ছড়ি ঘোরাতে থাকে চারটি দেশ – ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া আর যুক্তরাষ্ট্র । এই চার দেশের আসরগুলিই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফলে আন্তর্জাতিক লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক আসরের মর্যাদা পায় কেবল এই চারটি। বর্তমানে এই চারটি আসরকে অনেকে ‘গ্র্যান্ড স্ল্যাম’ বলে থাকেন।

এই লেখার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব দেখুন এই লিঙ্কে: 

টেনিস: গ্র্যান্ড স্ল্যাম এবং উন্মুক্ত যুগের সূচনা | শেষ পর্ব (roar.media)

Related Articles

Exit mobile version