এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে ১২টি দেশ টেস্ট ক্রিকেট খেলার মর্যাদা পেয়েছে। এর মধ্যে আফগানিস্তান ছাড়া বাকি এগারো দেশ আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। আফগানিস্তানও আগামী মাসে আন্তর্জাতিক টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা অর্জন করবে।
১৫ই মার্চ ১৮৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৪৫ রানে পরাজিত করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচেই শতক হাঁকান অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান।
এগারতম দেশ হিসাবে টেস্ট ম্যাচ খেলার যোগ্যতা অর্জন করা আয়ারল্যান্ডের অলরাউন্ডার কেভিন ও’ব্রায়েন নিজ দেশের প্রথম টেস্ট শতক হাঁকানো ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের নাম লেখান। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৮ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
চার্লস ব্যানারম্যান থেকে শুরু করে কেভিন ও’ব্রায়েন। আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে নিজ দেশের হয়ে প্রথম শতক হাঁকানো ব্যাটসম্যানদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
অস্ট্রেলিয়া
আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের অভিষেক ম্যাচেই নিজেদের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম বল মোকাবেলা করা এবং প্রথম রান সংগ্রহ করা ব্যাটসম্যান চার্লস ব্যানারম্যান অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রথম টেস্ট শতক হাঁকান।
মেলবোর্ন টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের প্রথম দিনেই শতক হাঁকান ইংল্যান্ডের বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান চার্লস ব্যানারম্যান। প্রথম দিন শেষে তিনি ১২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। প্রথম দিনে অস্ট্রেলিয়া স্কোরবোর্ডে ছয় উইকেটে ১৬৬ রান জমা করেছিলো, যার মধ্যে ব্যানারম্যান একাই ১২৬* রান করেছেন।
শেষপর্যন্ত ১৬৫* রানের মাথায় রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচের প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ২৪৫ রান সংগ্রহ করেছিলো। দলের ৬৭.৩% রান আসে চার্লস ব্যানারম্যানের ব্যাট থেকে।
ইংল্যান্ড
ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান শতক হাঁকানোর পর ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জেমস লিলিহোয়াইট বলেছিলেন, “শুধুমাত্র ডব্লিউ. জি. গ্রেস এর চেয়ে ভালো ইনিংস খেলতে পারতেন।”
টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসাবে ডব্লিউ জি গ্রেসের নাম-ই ইতিহাসের পাতায় লেখা আছে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ইংল্যান্ড তাদের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পায়।
কেনিংটন ওভালে ১৮৮০ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ম্যাচে শতকের দেখা পান ডব্লিউ জি গ্রেস।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে তিনি ২৯৪ বলে ১২টি চারের মারে ১৫২ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন, যার সুবাদে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে স্কোরবোর্ডে ৪২০ রান জমা করে। ইংল্যান্ডের ৪২০ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ১৪৯ রানে গুটিয়ে যায়। ফলো-অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৩২৭ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ডকে ৫৭ রানের সহজ লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ড মাত্র ৩১ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে। এই ইনিংসে ডব্লিউ জি গ্রেস ওপেনিংয়ে ব্যাট করেননি। সাত নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে অপরাজিত ৯ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান। এই ম্যাচে ডব্লিউ. জি. গ্রেসের আরও দুই ভাই খেলেন। তারা দুই ম্যাচে তিনটি ডাক মারেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা
টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের শুরুর দিকে খুবই দুর্বল দল ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের প্রথম সাত ম্যাচে তাদের কোনো ব্যাটসম্যান অর্ধশত রানের ইনিংসও খেলতে পারেননি। ১৮৯৯ সালের পহেলা কেপটাউন টেস্ট দিয়ে সেই আক্ষেপ ঘোচান জিমি সিনক্লেয়ার।
তার শতকের পরেও দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের টানা ৮ম হার এড়াতে পারেননি। কেপটাউন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডকে মাত্র ৯২ রানে গুটিয়ে দিয়ে ব্যাট করতে নেমে জিমি সিনক্লেয়ারের ১০৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস সত্ত্বেও প্রথম ইনিংসে ১৭৭ রানের বেশি সংগ্রহ করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩৩০ রান সংগ্রহ করে। ইংল্যান্ডের দেওয়া ২৪৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩৫ রানে গুটিয়ে গিয়ে ২১০ রানে পরাজিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান জিমি সিনক্লেয়ার প্রোটিয়াদের প্রথম তিনটি শতকের সবকটি নিজের নামে করে নেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের আক্রমণাত্মক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ক্লিফোর্ড রোচ টেস্ট ক্রিকেটে তাদের প্রথম টেস্ট শতক হাঁকান। ১৯৩০ সালের ১১ই জানুয়ারি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্রিজটাউন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২০টি চারের মারে ১২২ রানের ইনিংস খেলেন ক্লিফোর্ড রোচ।
ব্রিজটাউন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান জর্জ হ্যাডলিও ১৭৬ রানের ইনিংস খেলেন। ব্রিজটাউন টেস্টে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরাও ছন্দে ছিলেন। ফলে ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়।
ক্লিফোর্ড রোচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে প্রথম দ্বিশতকও হাঁকান। তিনি তার ক্যারিয়ারে দুবার শতাধিক রানের ইনিংস খেলেন। দুটি শতকই ইতিহাসের পাতায় অক্ষুণ্ণ হয়ে থাকবে।
নিউজিল্যান্ড
১৯৩০ সালের জানুয়ারিতে ইংল্যান্ডের একটি দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে খেলেছিল। ইংল্যান্ডের আরও একটি দল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একইসময়ে মুখোমুখি হয়েছিলো। আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের এটি অভিষেক টেস্ট সিরিজ ছিলো।
টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের জন্য বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি কিউইদের। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্টুয়ার্ট ডেম্পস্টারের হাত ধরে প্রথম শতকের দেখা পায় নিউজিল্যান্ড।
ওয়েলিংটনে ১৯৩০ সালের ২৪শে জানুয়ারি সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড।
ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানই শতক হাঁকান। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন স্টুয়ার্ট ডেম্পস্টার। তার সঙ্গী জ্যাকি মিলসও শতক হাঁকান। মিলস এবং ডেম্পস্টার উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ২৭৬ রান যোগ করেন। ডেম্পস্টার খেলেন ১৩৬ রানের ইনিংস এবং মিলস ১১৭ রানের।
ডেম্পস্টার বিদেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ম্যাচেও শতক হাঁকান। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান মাত্র ১০ টেস্টে ৬৫.৭২ ব্যাটিং গড়ে ৭২৩ রান করেছিলেন।
ভারত
টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এবং ঘরের মাটিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অভিষেক সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পায় ভারত। তৎকালীন বোম্বে এবং বর্তমানের মুম্বাইতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন লালা অমরনাথ।
১৯৩৩ সালের ১৫ই ডিসেম্বর, বোম্বেতে অনুষ্ঠিত হয় ইংল্যান্ড এবং ভারতের তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ২১৯ রান সংগ্রহ করে ভারত। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন অভিষিক্ত লালা অমরনাথ।
ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে ঠিক ভারতের প্রথম ইনিংসের দ্বিগুণ রান করে। ফলে ভারত ইনিংস ব্যবধানে হারার সম্মুখীন হয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৯ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে লালা অমরনাথ এবং নায়ডুর ব্যাটে চড়ে একপর্যায়ে ভারতের রান ছিলো দুই উইকেটে ২০৭। অভিষিক্ত লালা অমরনাথ ২১টি চারের মারে ১১৮ রানের ইনিংস খেলেন। এটিই ছিলো টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে কোনো ভারতীয় ব্যাটসম্যানের প্রথম শতক। শেষপর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৮ রানে গুটিয়ে গিয়ে নয় উইকেটে পরাজিত হয় ভারত।
পাকিস্তান
টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের অভিষেক ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে ইনিংস ও ৭০ রানে পরাজিত হয়েছিলো পাকিস্তান।
দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল তারা। পাকিস্তানের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান নজর মোহাম্মদ এবং ফজল মাহমুদের বোলিং নৈপুণ্যে ভারতকে ইনিংস ও ৪৩ রানে পরাজিত করেছিলো পাকিস্তান।
১৯৫২ সালের ২৩ অক্টোবর লখনৌতে টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ১০৬ রান সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নামা নজর মোহাম্মদ ৫১৫ মিনিট ক্রিজে থেকে অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংস খেললে পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ৩৩১ রান সংগ্রহ করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ২২৫ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে ১৮২ রানে অল আউট হয় ভারত।
শ্রীলঙ্কা
পাকিস্তান টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার প্রায় ৩০ বছর পর ১৯৮২ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কা টেস্ট স্ট্যাটাস পায়। শ্রীলঙ্কা টেস্ট স্ট্যাটাস পায়।
ফয়সালাবাদে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথম ইনিংসে শতক হাঁকান সিদাথ ওয়েতিমুনি। এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান পুরো দিন ব্যাট করে শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথম টেস্ট শতক হাঁকান। শেষপর্যন্ত ৩৩০ বলে ১৫৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
সিদাথ লর্ডসে শ্রীলঙ্কার প্রথম টেস্ট ম্যাচেও ১৯০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন।
জিম্বাবুয়ে
অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যানের পর দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজ দেশের অভিষেক ম্যাচেই শতক হাঁকানোর কীর্তি গড়েন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ডেভ হাটন। তার ব্যাটিং নৈপুণ্যে অস্ট্রেলিয়ার পর দ্বিতীয় দল হিসেবে নিজেদের প্রথম টেস্টে পরাজয় এড়ায় জিম্বাবুয়ে।
১৯৯২ সালের ১৮ই অক্টোবর হারারেতে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হয় জিম্বাবুয়ে। ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ডেভ হাটন। তার সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করেন ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসে ২১৪.২ ওভার ব্যাট করে ৪৫৬ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। জিম্বাবুয়ের হয়ে প্রথম টেস্ট শতক হাঁকানো হাটন ৩২২ বলে ১২১ রান করেন। তিনি ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসেও ৭৪ বলে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ ড্র করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন।
বাংলাদেশ
২০০০ সালের ১০ নভেম্বর বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন, বাংলাদেশ এখনও টেস্ট ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত না। সবাইকে অবাক করে দিয়ে নিজেদের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ঢাকাতে ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক প্রথম টেস্ট ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের ৫৩৫ মিনিট ক্রিজে থেকে ৩৮০ বলে ১৪৫ রানের অনবদ্য ইনিংসের সুবাদে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান সংগ্রহ করে।
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পেয়ে যায়। ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে ২৮২ বলে শতক হাঁকান আমিনুল ইসলাম। শেষপর্যন্ত ১৪৫ রান করেন তিনি, যা চার্লস ব্যানারম্যানের পর নিজ দেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচে দ্বিতীয় সেরা ব্যক্তিগত ইনিংস।
বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান সংগ্রহ করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৯১ রানে গুটিয়ে গিয়ে নয় উইকেটে পরাজিত হয়।
আয়ারল্যান্ড
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের আগমনী বার্তা দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। এরপর ২০১১ বিশ্বকাপে কেভিন ও’ব্রায়েনের রেকর্ড গড়া ইনিংসে ইংল্যান্ডকে এবং ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করেছিল আইরিশরা।
ধারাবাহিকভাবে সাফল্য পাওয়ার পুরস্কারস্বরূপ গত বছর ১১তম দেশ হিসেবে টেস্ট স্ট্যাটাস পায় আয়ারল্যান্ড। আয়ারল্যান্ড তাদের প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে। ডাবলিনে গত ১২মে ঐতিহাসিক ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।
আয়ারল্যান্ডের তারকা ক্রিকেটার কেভিন ও’ব্রায়েন পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম টেস্টেই শতক হাঁকান। নিজ দেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচে এর আগে শতক হাঁকিয়েছিলেন মাত্র তিন ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান, জিম্বাবুয়ের ডেভ হাটন এবং বাংলাদেশের আমিনুল ইসলাম। ডাবলিনে একমাত্র টেস্ট ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো আয়ারল্যান্ড।
ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে নয় উইকেটে ৩১০ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। জবাবে আয়ারল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানে গুটিয়ে গিয়ে ফলো-অনে পড়ে। প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করে কেভিন ও’ব্রায়েন।
ফলো-অনে পড়ে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংস ঘুরে দাঁড়ায় আয়ারল্যান্ড। কেভিন ও’ব্রায়েনের ২১৭ বলে ১১৮ রানের ইনিংসের কল্যাণে পাকিস্তানকে ১৬০ রানের লক্ষ্যে ছুঁড়ে দেয় আয়ারল্যান্ড। ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৪ রানে তিন উইকেট খোয়ানোর পরও পাঁচ উইকেটের জয় তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড। দুই ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা কেভিন ও’ব্রায়েনের হাতে ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে।
ফিচার ইমেজ: Getty Images