Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

কে হবেন আর্সেনালের নতুন কোচ?

“আমি ইউরোপের সেরা দলগুলোর একটি হতে চাই, এবং এলিটদের মাঝে থাকতে চাই।”

আর্সেন ওয়েঙ্গারের পর ২০১৮ সালের মে মাসে দুই বছরের চুক্তিতে আর্সেনালের নতুন কোচ হয়ে এসে এই কথাগুলোই বলেছিলেন উনাই এমেরি। তার সামনে সুযোগ ছিল নিজের কাজে ক্লাবকে মুগ্ধ করে চুক্তির মেয়াদ অন্তত আরো এক বছর দীর্ঘায়িত করারও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত এক বছর তো দূরে থাক, মূল দু’বছরই সম্পন্ন করতে পারলেন না এই স্প্যানিয়ার্ড।

বেশ অনেকদিন ধরেই এমেরির উপর নাখোশ ছিল বিশ্বব্যাপী আর্সেনাল ভক্তরা। কিছু সময়ের জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার উপর আস্থা ধরে রাখলেও, সেই আস্থার প্রতিদান দিতে তিনি দিতে পারেননি। তাই, মাত্র দেড় বছরের মাথায়ই ব্যর্থতার দায়ভার কাঁধে নিয়ে সরে যেতে হলো তাকে। আপাতত তার জায়গায় আর্সেনালের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন ফ্রেডি লিউনবার্গ।

কেন সরে যেতে হলো এমেরিকে? ঠিক কতটা দুরবস্থা আর্সেনালের? এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলে একবার নজর বোলালেই। ১৩ ম্যাচ শেষে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে গানাররা রয়েছে অষ্টম অবস্থানে, শীর্ষে থাকা লিভারপুলের চেয়ে ১৯ পয়েন্ট পিছিয়ে। শুধু কি তাই! ৬ অক্টোবরের পর থেকে প্রিমিয়ার লিগে জয়হীন তারা। এমনকি সব মিলিয়েও তাদের শেষ জয়টি এসেছে এক মাসেরও বেশি সময় আগে। সর্বশেষ সাত ম্যাচের পাঁচটিতে ড্র, দুইটিতে হার।

ব্যর্থতার দায়ভার কাঁধে নিয়ে বিদায় নিয়েছেন এমেরি; Image Source: Action Images

আর কফিনের শেষ পেরেক হিসেবে এসেছে গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ঘরের মাঠে ইউরোপা লিগে এইনট্রাক্ট ফ্রাঙ্কফুর্টের কাছে ২-১ ব্যবধানে হার। এরপর এমেরির বিদায়টা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। সেটিই আর্সেনাল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে দিয়েছে গত শুক্রবার। আর এভাবেই আর্সেনাল অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে এই সাবেক পিএসজি, ভ্যালেন্সিয়া ও সেভিয়া বসের।

এমেরির অধীনে আর্সেনালের বলার মতো কোনো অর্জনই ছিল না। তাই মাউরিসিও পচেত্তিনোর বিদায়ের পর যেমন হাহাকার ঝরে পড়েছে টটেনহ্যাম হটস্পার ভক্তদের কণ্ঠে, তেমন কিছুর পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে না গুনাররা। বরং এই মুহূর্তে তাদের যাবতীয় জল্পনা-কল্পনা কেবল একটি প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই, “কে হচ্ছেন আর্সেনালের নতুন কোচ?”

নিত্যনতুন সংবাদ কিংবা গুঞ্জনের মাধ্যমে ভক্তদের উৎসাহে ঘি ঢালার দায়িত্বটাও বেশ ভালোভাবেই পালন করছে ইংলিশ গণমাধ্যম। যেমন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানাচ্ছে, আর্সেনাল নাকি চেষ্টা করবে তাদের সাবেক খেলোয়াড় মিকেল আরতেতাকে কোচ হিসেবে নিয়োগের। সম্ভাব্য কোচের তালিকায় ম্যানচেস্টার সিটির এই সহকারী হেড কোচ ছাড়াও আরো রয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি, ম্যাক্স অ্যালেগ্রি এবং উলভসের নুনো এসপিরিতো সান্তোও।

ব্রেন্ডন রজার্সের নামও ইতঃপূর্বে বিবেচিত হচ্ছিল, তবে এখন এটি মোটামুটি নিশ্চিত যে অদূর ভবিষ্যতে তাকে ছাড়ার কথা চিন্তাও করছে না লেস্টার সিটি। এদিকে প্যাট্রিক ভিয়েরা নিজে থেকেই আর্সেনালে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন বটে, তবে সাম্প্রতিক সময়ে নিসের পড়তি ফর্ম এমনিতেও তার সুযোগ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিল।

চলুন পাঠক, এবার খতিয়ে দেখা যাক আসলেই আর্সেনালের পরবর্তী কোচ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন কারা, এবং তারা ঠিক কতটাই বা কার্যকর হতে পারেন।

মিকেল আরতেতা

সব মিলিয়ে আরতেতাকেই অনেকে মনে করছেন আর্সেনালের পরবর্তী কোচ। এর আগেও গত বছর তিনি আর্সেনাল কোচ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন, যদিও শেষ পর্যন্ত এই সাবেক মিডফিল্ডারের বদলে এমেরিকেই বেছে নিয়েছিল আর্সেনাল। সেবার আরতেতা বেশ মনঃক্ষুণ্ণই হয়েছিলেন। কিন্তু নিজের ম্যানেজেরিয়াল ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো এমন একটি সুযোগ যদি তিনি পেয়েই যান, সেটিকে হয়তো লুফেই নেবেন। তাছাড়া সাবেক ক্লাবের প্রতি আবেগের বিষয়টিকেও এড়িয়ে যাওয়া যায় না।

মিকেল আরতেতা; Image Source: Manchester City FC/Getty Images

আরতেতা যদি সত্যিই কোচ হয়ে আসেন, আর্সেনাল ভক্তরা হয়তো সাদরেই গ্রহণ করবে তাকে। তাছাড়া এই মুহূর্তে চেলসি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো দলগুলোও ভরসা রেখেছে নিজ নিজ ক্লাবের কিংবদন্তী খেলোয়াড়দের উপর। আর্সেনালও সেই পথে হাঁটতেই পারে।

এখন চিন্তা করা যাক কী ফল হবে আরতেতা এলে। ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আর্সেনালে খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন তিনি। ফলে ক্লাবের খেলার ধরনের সাথে যেমন তিনি সুপরিচিত, তেমনই ক্লাবের অনেক খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের সাথেও তার বেশ অন্তরঙ্গ সম্পর্ক বিদ্যমান। সুতরাং অন্যান্য কোচের যেমন নতুন ক্লাবে এসে মানিয়ে নিতে কিছুদিন সময় লাগে, সেটি লাগার কথা না তার।

আবার মুদ্রার অপরপিঠে কিছু সমস্যাও আছে। ৩৭ বছর বয়সী এই স্প্যানিয়ার্ড ম্যানচেস্টার সিটিতে পেপ গার্দিওলার অধীনে কাজ করছেন এবং গার্দিওলার কৌশল বেশ ভালোভাবেই রপ্ত করে নিয়েছেন। আর্সেনালে এলেও হয়তো তিনি দলকে সিটির আদলেই খেলানোর চেষ্টা করবেন। সেটি কি কিছুটা হলেও অহমিকায় আঘাত করবে না আর্সেনাল ভক্তদের? খুব সহজে কি বিষয়টি মেনে নিতে পারবে তারা? তাছাড়া সিটির মতো ফুটবল খেলার উপযুক্ত পর্যাপ্ত খেলোয়াড়ও কি বর্তমানে রয়েছে আর্সেনাল শিবিরে?

ম্যাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি

আরতেতার মতোই, অনেক আর্সেনাল ভক্তের কাছে তাৎক্ষণিক পছন্দ হতে পারেন অ্যালেগ্রি। কারণ তিনি এমন একজন, যার মধ্যে আছে অভিজ্ঞতা ও দৃঢ় ব্যক্তিত্বের দারুণ সংমিশ্রণ—ওয়েঙ্গারের বিদায়ের পর যেটির অভাব বোধ করছে অনেক গুনারই।

৫২ বছর বয়সী অ্যালেগ্রি গত গ্রীষ্মে জুভেন্টাস ছাড়ার পর ফুটবল থেকে সাময়িক বিরতি নিয়েছেন। তবে এই অবসর সময়টিতে তিনি বেশ একটা কাজের কাজ করে ফেলেছেন; ইংরেজি শিখেছেন তিনি। ইংল্যান্ডে এসে নতুন জীবন শুরুর ক্ষেত্রে ইংরেজিতে পারদর্শিতা খুবই জরুরি। এবং সেটির জন্য যেহেতু তিনি প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাই আমরা এটিও অনুমান করতে পারি যে কোনো এক সময়ে তিনি অবশ্যই প্রিমিয়ার লিগের কোনো দলের দায়িত্ব নিয়ে ইংল্যান্ডে থিতু হবেন। তাহলে সেই দলটি আর্সেনাল নয় কেন?

ম্যাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি; Image Source: Getty Images

আর্সেনালে আসার পর অ্যালেগ্রিকে ভক্তদের প্রবল প্রত্যাশা মেটানোর চাপ সামলাতে হবে বটে, তবে এসব চাপের সাথে তিনি বেশ ভালোভাবেই পরিচিত। এসি মিলান ও জুভের মতো ইটালিয়ান জায়ান্টদের দায়িত্ব পালনকালে তিনি খুব ভালোভাবেই অর্জন করেছেন সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা, এবং সেই সাথে ছয়টি সিরি এ শিরোপাও জিতে নিয়েছেন। জুভদের দুইটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্বও তারই।

তবে হ্যাঁ, এ কথাও ভুলে গেলে চলবে না যে প্রিমিয়ার লিগ আর সিরি এ সম্পূর্ণ দুই আঙ্গিকের, দুই ধরনের লিগ। সিরি এ-তে প্রতিযোগিতা যেমন কম, সেখানকার ফুটবলের ধরনও অনেকটাই রক্ষণঘেঁষা। এদিকে প্রিমিয়ার লিগে একাধারে যেমন দ্রুতগতির টানটান উত্তেজনাকর ফুটবল খেলা হয়, তেমনই প্রতি সপ্তাহেই পয়েন্ট টেবিলে চলে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। বিনা অভিজ্ঞতায় মৌসুমের মাঝপথে এমন একটি লিগের অষ্টম স্থানে থাকা দলের দায়িত্ব নেয়া নিঃসন্দেহে বড় চ্যালেঞ্জ হবে তার জন্য, এবং এ ব্যাপারটি অন্য অনেকের চেয়ে তাকে কিছুটা পিছিয়েও রাখছে।

নুনো এসপিরিতো সান্তো

নুনো এসপিরিতো সান্তো; Image Source: Fox Sports

সম্ভাব্য নতুন কোচ হিসেবে আর্সেনাল কর্তৃপক্ষ বেশ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে উলভস বস সান্তোর নাম, এমনটিই খবর বিবিসির। তবে আসলেই নুনো আর্সেনালের কোচ হতে পারবেন কি না, সে সম্ভাবনা ঝুলে আছে একটি বড় প্রশ্নের উপর: এই পর্তুগিজ কি আর্সেনালের সাথে কথা বলবেন?

এমন প্রশ্নের উদয় ঘটেছে এ কারণে যে, গত বৃহস্পতিবার ইউরোপা লিগে ব্রাগার বিপক্ষে ম্যাচের আগে যখন তার কাছে আর্সেনালের কোচ হওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি এটিকে ‘অসম্মানজনক’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।

“যে দলের একজন ম্যানেজার আছেনই, সেই দলের ম্যানেজার হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলাটা হবে অসম্মানজনক, এবং আমি সেটি করব না।”

তবে এখন যেহেতু এমেরি আর আর্সেনালের কোচ নেই, এবং আর্সেনালের কোচের পদটি শূন্য পড়ে রয়েছে, তাই কোচ হওয়ার ব্যাপারে আর্সেনালের সাথে আলোচনায় লিপ্ত হতেও নিশ্চয়ই আর কোনো বাধা নেই নুনোর।

তবে এই সাবেক সেভিয়া ও প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন কোচের আর্সেনালের দায়িত্ব গ্রহণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে তার বর্তমান ক্লাব। খেলোয়াড়ি জীবনে গোলবার আগলানো নুনো উলভারহ্যাম্পটনের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম মৌসুমেই দলকে নিয়ে গেছেন ইউরোপা লিগে। এই মুহূর্তে তারা প্রিমিয়ার লিগের পঞ্চম স্থানেও রয়েছে। সব মিলিয়ে উলভসদের যে ‘সাত বছর মেয়াদী পরিকল্পনা’, সেটি অর্জনের পথে বেশ ভালোই অবদান রেখে চলেছেন নুনো। সুতরাং ক্লাব কর্তৃপক্ষ যে তাকে ধরে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবে, তাতে আর আশ্চর্য কী!

এডি হোয়ে

এডি হোয়ে; Image Source: Fox Sports

অনেকের কাছেই বোর্নমাউথের কোচ এডি হোয়ে হলেন বাজির কালো ঘোড়া। তিনি এমন একজন, যাকে ঠিক আর্সেনালের সম্ভাব্য কোচ হিসেবে মানা যাচ্ছে না, আবার তার নাম এক ফুঁৎকারে উড়িয়েও দেয়া যাচ্ছে না। কারণ তিনি তো শুধু এমেরির বদলি হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছেন না। এমনকি গত বছর স্বয়ং আর্সেন ওয়েঙ্গারের উত্তরসূরি হিসেবেও আর্সেনাল বোর্ড সদস্যদের মুখে উচ্চারিত হয়েছিল তার নাম।

৪২ বছর বয়সী এই ইংলিশম্যান বোর্নমাউথের মতো একটি ছোট ক্লাবকে নিয়ে গেছেন নতুন উচ্চতায়। এই মুহূর্তে প্রিমিয়ার লিগে তার দল হয়তো একাদশ অবস্থানে রয়েছে, কিন্তু এতটুকু স্থিতাবস্থাও যে এসেছে তারই বদৌলতে। মাত্র তিন বছরে তিনি চেরিসদের লিগ ওয়ান থেকে প্রিমিয়ার লিগে নিয়ে এসেছেন, এবং সেখানেই থাকাটাও নিশ্চিত করেছেন। তার সবচেয়ে বড় গুণ, তিনি জানেন কীভাবে কম উপাদান নিয়েও বড় কিছু উৎপাদন করা যায়। আর্সেনালেরও যে এই মুহূর্তে এমন কাউকেই বড্ড প্রয়োজন।

হোয়ে ম্যানেজার হিসেবে খুবই সংগঠিত, পুরো স্কোয়াডকে একত্র করে এক লক্ষ্য অর্জনে প্রণোদিত করতে তার জুড়ি নেই, এবং প্রিমিয়ার লিগে নতুন ধরনের খেলোয়াড়ি ধারণা আমদানির প্রয়াসও তার মাঝে লক্ষণীয়। এসব কারণেই গতবার তার প্রতি আগ্রহ থাকলেও পরবর্তীতে এমেরির উপরই ভরসা রেখেছিল আর্সেনাল। তবে এবার তারা হোয়েকে একটি সুযোগ দিয়েই দেখতে পারে।

কার্লো আনচেলত্তি

কার্লো আনচেলত্তি; Image Source: Fox Sports

আর্সেনাল ভক্তদের কাছে সবসময়ই একটি প্রিয় নাম কার্লো। তাই তার আগমনও হাসি ফোটাতে পারে অনেক আর্সেনাল ভক্তের মুখে। চেলসির এই সাবেক কোচ তার ক্যারিয়ারে কী জেতেননি! প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগ, সিরি এ, বুন্দেস লিগা, লিগ ওয়ানের মতো আকর্ষণীয় সব ট্রফি থরে থরে সাজানো আছে তার শোকেসে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আর্সেনাল কয়েকটি এফএ কাপ শিরোপা জিতেছে বটে। কিন্তু তারা যদি সত্যিকারের বড় কিছুর আশায় থাকে, কোনো রকম অলৌকিকের জন্ম না দিয়েই সেটির সন্ধান দিতে পারেন হাতেগোনা যে কয়জন, তাদের মধ্যে অন্যতম কার্লো আনচেলত্তি।

এই মুহূর্তে কার্লো পালন করছেন নাপোলির কোচের দায়িত্ব, এবং সেখানের অবস্থাটা বেশ কৌতূহলোদ্দীপক। ৬০ বছর বয়সী এই কোচের দল শেষ আট ম্যাচ ধরে জয়ের দেখা পায়নি, এ বিবৃতি থেকে আসলে কিছুই বলা হয় না। নাপোলির সমস্যা আরো গভীরে। তারা বর্তমানে এক চরম সঙ্কটাপন্ন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ক্লাব মালিকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে দলের খেলোয়াড়েরা।

এখন প্রশ্ন হলো, এমন পরিস্থিতিতে কার্লো কী করবেন? তিনি কি সেখানেই থাকবেন, নাকি অন্য কোথাও পাড়ি জমাবেন? কার্লো নিজে অবশ্য বরাবরই দাবি করে আসছেন যে নাপোলি ছেড়ে কোথাও যাওয়ার কথা ভাবছেন না তিনি, কিন্তু সেই ভাবনার উদয় হতে কতক্ষণই বা লাগতে পারে! বিশেষত আর্সেনাল বোর্ড যদি তার সামনে খুব আকর্ষণীয় কোনো প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়, এবং তাকে প্রভাবিত করতে পারে নতুন একটি চ্যালেঞ্জ গ্রহণের কথা বলে, সেক্ষেত্রে তিনি রাজি হয়ে যেতেও পারেন।

তবে হ্যাঁ, নাপোলি থেকে আসলেই যদি আর্সেনাল কার্লোকে ছিনিয়ে আনতে চায়, তাহলে বিদ্যমান চুক্তি মোতাবেক নাপোলিকে বিশাল অঙ্কের চেকে সই করে দিতে হবে তাদেরকে।

মাউরিসিও পচেত্তিনো

মাউরিসিও পচেত্তিনো; Image Source: Getty Images

সত্যিই যদি এমনটি হয়, তবে কি সেটি ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটিতে পরিণত হবে না? স্রেফ একবার কল্পনা করে দেখুন, টটেনহ্যাম থেকে বরখাস্ত হবার মাত্র কয়েকদিনের মাথায়ই এই আর্জেন্টাইন যোগ দিচ্ছেন আর্সেনালে—স্পার্স সমর্থকদের কাছে চিরকালের জন্য ঘৃণার পাত্র হয়ে যেতে আর কী-ই বা লাগে! গত মৌসুমেই স্পার্সদের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে তুলেছেন তো কী হয়েছে, এমন অমার্জনীয় কাজের পর কোনোদিনই আর তাকে ক্ষমা করবে না তারা!

এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা হয়তো খুবই কম। তবে বাজিকররা পুরো ব্যাপারটিকেই পর্যবেক্ষণ করছে সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে। তাদের মতে পচেত্তিনোর আর্সেনালে যোগদানের ক্ষেত্রে বাজির দর ৮/১, এবং এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি যতটা না ক্লাব কর্তৃপক্ষের উপর নির্ভরশীল, তারচেয়েও বেশি পচেত্তিনোর নিজের উপরই। ঠিক এমন কথাই বলছে ডেইলি মেইলও। পচেত্তিনো যদি আর্সেনালকে সবুজ সংকেত দেয়, তাহলে আর্সেনাল নাকি তাকে চুক্তিবদ্ধ করে ফেলতে কোনো দ্বিধাই করবে না।

গত মৌসুমে এই আর্জেন্টাইনকে স্পার্সের সাথে থাকা তার চুক্তি থেকে ছাড়িয়ে আনতে গুনতে হতো ৪০ মিলিয়ন ডলার। এখন হয়তো সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। তবু আর্সেনালে এলে ফুটবল জগতে পচেত্তিনোর সম্মান নিঃসন্দেহেই অনেক বেড়ে যাবে, যা তিনি স্পার্সে থাকতে পেতেন না। এছাড়া আর্সেনালের অ্যাকাডেমি ও তারুণ্যে ঠাসা মূল স্কোয়াড নিয়ে কাজ করাটাও তাকে দিতে পারে কোচ হিসেবে এক অনাস্বাদিত তৃপ্তি।

কিন্তু ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পচেত্তিনো নাকি আশায় আছেন আরো বড় কোনো সুযোগের। গত ১৮ মাস ধরে বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবের সাথে তার নাম তো জড়ানো হচ্ছিলই, এবং এখন শোনা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই হয়তো তাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডাগ-আউটেও দেখা যেতে পারে, যদি রেড ডেভিলরা ছাঁটাই করে তাদের বর্তমান কোচ ওলে গানার সোলশারকে।

খেলাধুলার চমৎকার, জানা-অজানা সব বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: https://roar.media/contribute/

ফুটবল নিয়ে আরও জানতে পড়তে পারেন এই বইগুলোঃ

১) মুক্তিযুদ্ধে ফুটবল

২) ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার আইন কানুন

This article is in Bengali language. It analyses who could become the new coach of Arsenal. Necessary references have been hyperlinked inside.

Featured Image © Getty Images

Related Articles