যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ-ক্যালিফোর্নিয়ার একটি অঞ্চল, গোটা পৃথিবীর কাছে এর পরিচয় এখন সিলিকন ভ্যালি নামে। নামটি এসেছে সেমিকন্ডাক্টর পদার্থ সিলিকনের নাম থেকে। ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রির মূলে তো এই সেমিকন্ডাক্টরই। তাই এমন নামকরণ। বর্তমান পৃথিবীর প্রযুক্তি জগতের সকল মহীরুহর আবাস এখানে। এখান থেকেই পরিচালিত হয় গুগল, অ্যাপল, ফেইসবুক, মাইক্রোসফট, ইনটেল ও অ্যামাজনের মতো বিশ্ববিখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। গোটা পৃথিবী যে প্রযুক্তির ওপর ভর করে আছে, তার অধিকাংশের জন্মই এ তিনশো বর্গমাইল অঞ্চলে। এই সিলিকন ভ্যালির শুরুটা হয়েছিল কীভাবে?
সিলিকন ভ্যালির শুরুর ইতিহাস খুঁজতে গেলে ট্রানজিস্টরের উদ্ভাবনের সময়কালে যেতে হবে। সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইসের কল্যাণেই শুরু হয়েছিল সিলিকন ভ্যালির যাত্রা। ট্রানজিস্টর উদ্ভাবিত হয়েছিল বেল ল্যাবসে। প্রায় এক যুগ ধরে বহু বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের নিয়ে বিশাল একটি গবেষণা প্রকল্প চালাতে হয়েছিল এর জন্য। কিন্তু ট্রানজিস্টর উদ্ভাবনের পর এ মৌলিক গবেষণা প্রকল্পটি চালু রাখার আর কোনো প্রয়োজন ছিল না। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই বেল ল্যাবসের অনেক প্রকৌশলীর ঘর ছাড়ার সময় চলে এসেছিল।
বেল ল্যাবস থেকে বের হয়ে আসা গবেষকদের মধ্যে উইলিয়াম শকলিও ছিলেন। বাই-পোলার জাংশন ট্রানজিস্টরের উদ্ভাবক তিনি। প্রযুক্তিবিদ হিসেবে তার যশ-খ্যাতি তখন আকাশছোঁয়া। কিন্তু স্রেফ যশ-খ্যাতি সন্তুষ্ট করতে পারছিল না তাকে। গবেষণা জগতে সফল হওয়ার পর এবার অর্থ-কড়ির নেশা জাগল তার। তার সঙ্গীদের তিনি বলেছিলেন, ‘ফিজিক্যাল রিভিউ’র মতো একাডেমিক প্রকাশনাগুলোতে নিজের নাম যথেষ্ট দেখে ফেলেছেন তিনি, এবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে নাম লেখাতে চান।
শকলি সেমিকন্ডাক্টর ল্যাবরেটরি
শকলি বেল ল্যাবস ছাড়েন ১৯৫৪ সালে। এরপর কিছুদিন ক্যালটেকে অধ্যাপক হিসেবে চাকরি করেন, উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছিলেন সামরিক বিভাগেও। তিনি যার পেছনে ছুটছেন, সে অর্থ-কড়ি উপার্জনের লক্ষ্য যে এসব করে পূরণ হবে না, এসময় তা স্পষ্ট হয়ে যায় তার কাছে। অনেক ভেবেচিন্তে তিনি ব্যবসায় নামার সিদ্ধান্ত নিলেন। নিজের দক্ষতার জায়গা আধুনিক সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস তৈরিকেই বেছে নিলেন ব্যবসার জন্য। তার যশ-খ্যাতির কল্যাণে জন ডি. রকফেলার জুনিয়র সহ সম্পদশালী ও ক্ষমতাবান সব বিনিয়োগকারীদের নজর কাড়তে সমর্থ্য হন তিনি।
কিন্তু তার সাথে কথা বলে প্রায় সকল বিনিয়োগকারীই পিছিয়ে যান। শকলি ছিলেন ভীষণ একরোখা ও খ্যাপাটে প্রকৃতির। ব্যবসা বিষয়ে তার অজ্ঞতা ও একঘুয়েমি মানসিকতা দেখে কেউই বিনিয়োগের ভরসা করতে পারেনি। শেষমেশ শকলি তার ক্যালটেকে পড়ার সময়কার পরিচিত সিনিয়র আর্নল্ড বেকম্যানের কাছে হাজির হন। বেকম্যান নিজে একজন রসায়নবিদ ছিলেন। ইলেকট্রনিক্স বিষয়েও দক্ষতা ছিল তার, ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিক টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টে কাজও করেছিলেন কয়েক বছর। পরবর্তীতে একটি প্রযুক্তি কোম্পানি দিয়ে বেশ ধনী ব্যবসায়ী বনে যান। তিনি শকলির ওপর ভরসা করে, তার কোম্পানিতে এক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে সম্মত হন।
আর্থিক নিশ্চয়তা পাওয়ার পর শকলি তার সিলিকন ট্রানজিস্টর ডিভাইস তৈরির কোম্পানি ‘শকলি সেমিকন্ডাক্টর ল্যাবরেটরি’ শুরু করেন। শকলি তার কোম্পানি স্থাপন করার জন্য বেছে নেন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান-ফ্রান্সিসকো শহরের দক্ষিণে অবস্থিত পালো আলটো শহরটিকে। বেকম্যান অবশ্য প্রথমে রাজি ছিলেন না। তিনি চেয়েছিলেন লস-এঞ্জেলেসে, ক্যালটেক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে এ কোম্পানিটি স্থাপন করতে। কিন্তু শকলির জেদের কাছে হার মানেন তিনি। শকলি বেকম্যানকে এ জায়গার উপযোগীতা বোঝাতে অনেক কারণ দেখিয়েছিলেন। তবে তার জেদের সবচেয়ে বড় কারণ ছিল, এ শহরেই ছিল শকলির পরিবারিক বাসস্থান। এভাবেই সিলিকন ভ্যালি এ অঞ্চলে তার ভৌগলিক ঠিকানা খুঁজে পায়।
শকলি ও আট ‘বিশ্বাসঘাতক’
১৯৫৫ সালে এসে ‘শকলি সেমিকন্ডাক্টর ল্যাবরেটরি’ অফিসিয়ালি প্রতিষ্ঠিত হয়। এবার শকলি তার কোম্পানির জন্য প্রযুক্তিবিদ খুঁজতে শুরু করলেন। তার আগের কর্মস্থল বেল ল্যাবসের কেউ তার কোম্পানিতে যোগ না দেওয়ায় কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন। কিন্তু যারা শকলিকে চিনতেন তারা ভালোভাবেই জানতেন, তার মতো একজন ব্যক্তির অধীনে কাজ করা কতটা বিড়ম্বনার। অভিজ্ঞ কাউকে না পেয়ে শকলি তরুণদের দিকে চোখ ফেরালেন। স্বাভাবিকভাবেই তরুণ প্রযুক্তিবিদরা তার মতো কিংবদন্তী প্রযুক্তিবিদের সাথে কাজ করতে ভীষণ উৎসাহী ছিল।
প্রতিভা চেনার ক্ষেত্রে শকলির সহজাত দক্ষতা ছিল। তিনি এসময় অসাধারণ প্রতিভাবান কয়েকজন তরুণকে খুঁজে এনেছিলেন, যার মধ্যে ছিল রবার্ট নয়েস, গর্ডন মুরের মতো পরবর্তীকালে সিলিকন ভ্যালির কিংবদন্তিরা। পালো আলটোতে শকলির এ তরুণ দলটি ব্যপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে কাজ শুরু করলো। তাদের উৎসাহ আরো বেড়ে যায় যখন এর পরের বছর শকলি নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাদের সুখের সময় বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।
প্রযুক্তিবিদ হিসেবে শকলি যতই প্রতিভাবান হন না কেন, একজন নেতা হিসেবে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, স্বৈরাচারী ও চরম অসংবেদনশীল। বলা চলে এ কাজের জন্য তিনি চূড়ান্ত রকমের বাজে একজন ছিলেন। এসব কিছুর সাথে হয়তো তার দল মানিয়ে নিতে পারতো, কিন্তু বাজারের চাহিদা বোঝা, ব্যবসা কৌশল ও লক্ষ্য ঠিক রাখা এসব অতি জরুরি বিষয়ে তার কোনো দক্ষতা ছিল না। কিছুদিনের মাথায়ই তিনি তার কোম্পানির লক্ষ্য ট্রানজিস্টর ডিভাইস থেকে সরিয়ে ‘চার-স্তরের ডায়োডের’ দিকে মনোযোগ দেন।
কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ততদিনে ট্রানজিস্টর ডিভাইস তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল। তাই শকলি ভাবলেন, তার কোম্পানি কারো পদাঙ্ক অনুসরণ করবে না। সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু নিয়ে কাজ করবে। এ চিন্তা থেকেই তিনি ‘চার স্তরের ডায়োড’ নিয়ে কাজ শুরু করেন। কিন্তু এটি এমপ্লিফিকেশনে সক্ষম ছিল না, বাজারে এর চাহিদা ছিল খুবই সীমিত। কিন্তু একরোখা শকলি কি আর তা বুঝতে চান? কোম্পানির অর্থনৈতিক দিক নিয়ে কোনো পাত্তা না দিয়েই তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন।
তরুণ প্রকৌশলীরা অনেক চেষ্টা করেছিলেন শকলিকে এ সিদ্ধান্ত থেকে টলাতে, কিন্তু সফল হননি। এতে হতাশ হলেও তারা এ প্রকল্পে কাজ করতে শুরু করেন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি যখন কোম্পানির সর্বনাশ ডেকে আনছিল, তখন আর তারা চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। মুর, নয়েস সহ মোট আটজন প্রকৌশলী শকলিকে এড়িয়ে সরাসরি আর্নল্ড বেকম্যানের কাছে হাজির হন। কোম্পানির সম্পূর্ণ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে তাকে প্রস্তাব দেন, যাতে শকলিকে সরিয়ে অন্য একজন ম্যানেজার নিয়োগ দেয়া হয় আর প্রযুক্তিখাতের দেখাশোনা করার জন্যে তারাই সক্ষম।
বেকম্যান সম্পূর্ণ পরিস্থিতি বুঝলেন এবং এ তরুণদের প্রতি সহমতও হলেন। কিন্তু শকলিকে সরাতে তিনি সম্মত হলেন না, কারণ শকলির সাথে তার কেবল ব্যবসায়িক সম্পর্কই নয়, ব্যক্তিগত সম্পর্কও ছিল। এভাবে তার নিজের কোম্পানি থেকে তাকে সরিয়ে দিতে পারলেন না তিনি। এদিকে শকলি এ খবর জানার পর একইসাথে ভীষণ ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে পড়লেন। তিনি মনে করতে লাগলেন যে তিনি বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছেন। এই আটজনকে তিনি ‘আট বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে আখ্যা দেন। এ ঘটনার পর এ আটজনের সাথে শকলির বিভেদ চরম পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। সে কোম্পানিতে তাদের কাজ করার আর সুস্থ পরিবেশ রইলো না, যদিও তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
ভেঞ্চার ক্যাপিটালের শুরু
অসুখী পরিবেশে কাজ করতে কে-ই বা চায়? এ আটজন তরুণ প্রকৌশলীও চায়নি। তারা ঠিক করে রেখেছিলেন, একইসাথে বের হয়ে অন্য একটি কোম্পানিতে যোগ দেবেন। তবে তাদের মাথায় কখনো নিজেদের কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার চিন্তা আসেনি। এ পরামর্শটা আসে আর্থার রকের কাছ থেকে। এ আটজনের একজন ইউজিন ক্লেইনারের মাধ্যমে রকের সাথে পরিচয় হয় তাদের। রক তখন সদ্য হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে পাশ করে ওয়াল স্ট্রিটের একটি ব্রোকারেজ ফার্মে কাজ শুরু করেছেন। তিনি তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পরামর্শ দেন, অন্য কোম্পানিতে যোগ দেওয়ার বদলে তারা নিজেরাই বিনিয়োগকারী খুঁজে একটি কোম্পানি শুরু করতে।
প্রস্তাবটি মনে ধরে তাদের। তারা সবাই নিজেরাই নিজেদের বস হওয়ার বিষয়ে যথেষ্ট উৎসাহী হলেও, এর ঝুঁকিটাও জানতেন। তারা সিদ্ধান্ত নিলেন, প্রথমে প্রযুক্তি বিষয়ক বড়সড় কোনো কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে দেখবেন, কেউ তাদের পেছনে বিনিয়োগ করতে রাজি হয় কিনা। রক তাদের হয়ে বেশ কয়েকটি কোম্পানিতে যোগাযোগ চালিয়ে গেলেন। কিন্তু প্রায় সব জায়গা থেকেই নেতিবাচক জবাব এলো। কারণ অধিকাংশ কোম্পানিগুলোই হয় নিজেরাই ট্রানজিস্টর-ডিভাইস তৈরি করা শুরু করেছিল অথবা এ বিষয়ে আপাতত তাদের কোনো আগ্রহ ছিল না।
তারা তখনো শকলির কোম্পানিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এদিকে বিনিয়োগ না পেয়ে তাদের নিজেদের কোম্পানি গড়ে তোলার আশাও ক্ষীণ হয়ে আসছিল। সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন চাকরি খোঁজার ভাবনাও শুরু করে দিয়েছিল। ঠিক এ সময় শারম্যান ফেয়ারচাইল্ডের সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পান রক। শারম্যান ফেয়ারচাইল্ডের বাবা ছিলেন আই.বি.এম এর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। পিতার একমাত্র সন্তান হিসেবে অঢেল ধন সম্পদের মালিক হন তিনি। রক তাকে এ বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে সমর্থ্য হন। খুব শীঘ্রই আটজনের সাথে তার সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেন।
তাদের সাথে বিস্তর আলোচনা শেষে শারম্যান ফেয়ারচাইল্ড দেড় মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে ‘ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি’ প্রতিষ্ঠা করতে রাজী হন। চুক্তি অনুযায়ী এ কোম্পানির ৭০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা থাকে শারম্যান ফেয়ারচাইল্ডের, ২০ শতাংশ রকের ব্রোকারেজ ফার্মের এবং বাকি দশ শতাংশে সমান ভাগ থাকে বাকি আটজনের। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, অর্থাৎ কোম্পানিতে শেয়ারের বিনিময়ে বিনিয়োগের যে প্রক্রিয়া সিলিকন ভ্যালিতে এখনো বর্তমান, তার শুরুটা হয় এখান থেকেই। আর্থার রক এখানে এসে প্রথম ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ইনটেল ও অ্যাপল যখন সিলিকন ভ্যালিতে আসে তখন রকের ফার্ম ছিল তাদের প্রধান বিনিয়োগকারীদের একজন।
১৯৫৭ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ সব কিছু তৈরি হয়ে যায়। আট ‘বিশ্বাসঘাতক’ একইসাথে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে শকলির কোম্পানি ছেড়ে আসেন। এখান থেকে কয়েক মাইল দূরেই নিজেদের অফিস নেন তারা। সেসময় সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস তৈরির জন্য যেসব যন্ত্রাদি দরকার হয়, তা কোথাও বিক্রি হতো না। এসব তাদের একদম শূন্য থেকে করতে হয়েছিল। কিন্তু এ আটজন অত্যন্ত প্রতিভাবান প্রকৌশলীর জন্য তা অসম্ভব কিছু ছিল না। নতুন যাত্রা শুরু করার উৎসাহে তারা নিজেদের সবটুকু নিংড়ে দিলেন। শুরুর কয়েক মাস পরেই তারা তাদের প্রথম অর্ডার পান। আই.বি.এমের সাথে পাঁচ লক্ষ ডলারের চুক্তি হয় তাদের। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডাক্টরের পরিধি।
তাদের মাধ্যমেই সেমিকন্ডাক্টর-ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রির যাত্রা শুরু হয় সিলিকন ভ্যালিতে। তবে তখন হয়তো কেউ জানতো না এরপর একের পর এক কোম্পানি আসতে থাকবে এ অঞ্চলে এবং একসময় গোটা অঞ্চলটিই চলে যাবে সিলিকন নামক সেমিকন্ডাক্টরের দখলে।
আর শকলির কোম্পানির কী হয়েছিল? খুব সংক্ষেপে বললে সেটি এক প্রকার ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এক পর্যায়ে এসে বেকম্যান যখন প্রকৃত পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন, তখন তিনি অখ্যাত একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেন কোম্পানিটি। আর শকলি আবার একাডেমিক জগতে ফিরে যান, সিলিকন ভ্যালির পাশেই স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টি হিসেবে যোগ দেন তিনি।
আচ্ছা পরবর্তী সময়ে সিলিকন ভ্যালির উথান দেখে কখনো কি তার মনে আফসোস জেগেছে, “যদি তখন এ তরুণদের যথাযথ সুযোগ দিতাম”?
তথ্যসূত্র
Conquering the Electron by Derek Cheung, Eric Brach, page (227-238)
ফিচার ইমেজ- nziff.co.nz