Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

সীমান্ত পেরিয়ে স্বচ্ছ জল আর পাহাড়ের দেশে ভ্রমণের গল্প

যতবারই সিলেটের বিছানাকান্দি, জাফলং, সুনামগঞ্জের বারিক্কা টিলা, নীলাদ্রি লেক, যাদুকাটা নদীতে গিয়েছি ততবারই আফসোস ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলাম মেঘালয়ের ঐ পাহাড়গুলোর দিকে। সবুজে ঘেরা মেঘালয়ের বিশাল বিশাল পাহাড়। ছুঁয়ে দিতে মন চাইতো পাহাড়ের গায়ের সবুজ গাছগুলোকে। কিন্তু চাইলেও সেটা সম্ভব হতো না। কেননা আমরা আটকে আছি সীমান্ত নামক দাগের খেলায়। প্রচণ্ড ইচ্ছা হতো পাহাড়গুলোর ওপাশে কী আছে তা দেখার। সেখানে যেতে প্রথম যেটা প্রয়োজন সেটা হলো পাসপোর্ট। আর তাই বানিয়ে ফেললাম পাসপোর্টটা।

পাসপোর্ট তো হলো এবার চাই ভিসা। ভারতীয় ভিসা সেন্টারে আবেদন করে ভিসাটাও পেয়ে গেলাম। গন্তব্য ভারতের মেঘালয় রাজ্য। সবাই মিলে নভেম্বরের একটি দিন নির্দিষ্ট করে সিলেটগামী উপবন এক্সপ্রেসের টিকেট বুক করে নিলাম। আমাদের প্ল্যান ছিলো সিলেটের তামাবিল সীমান্তপথ দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে প্রবেশ করবো। ট্রেন রাত ৯:৪০ এর হলেও ভ্রমণের উত্তেজনায় আমরা সবাই ৯টার মধ্যেই হাজির হলাম কমলাপুর স্টেশনে।

ট্রেন প্ল্যাটফর্মে এলে উঠে পড়লাম নিজেদের বগিতে। জানালার পাশে বসা নিয়ে কিছুক্ষণ কাড়াকাড়ি হলো আমাদের মাঝে। যথা সময়ে সাপের মতো লম্বা উপবন এক্সপ্রেস ছুটতে শুরু করলো সিলেট অভিমুখে। ক্রমশ ঠান্ডার মাত্রা বাড়ছিলো। পরদিন সারাদিন বিনা বিশ্রামে ঘুরতে হবে বলে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করছিলাম। তবে ট্রেনের খোলা দরজা দিয়ে একটু পর পর ঠান্ডা বাতাস এসে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিল।

হঠাত হৈ চৈ শুনে ঘুমটা ভেঙে গেল। উঠে দেখি প্রায় চলে এসেছি সিলেট স্টেশনে। চারিদিকে কুয়াশা। সূর্য উঠেনি তখনও। কিছুক্ষণ বাদে সিলেট স্টেশনে নেমে হাড় কাঁপুনি ঠান্ডা লাগা শুরু হলো। আমাদের ধারণাও ছিল না সিলেটে এত ঠান্ডা পড়বে। কাঁপতে কাঁপতে সবাই ফ্রেশ হয়ে নিলাম। আমরা ক’জন ওযু করে ফজর নামাজটা আদায় করে নিলাম। ততক্ষণে চারদিকে কিছুটা আলো ফুটেছে। আমরা হেঁটেই চলে গেলাম বাস স্ট্যান্ডে। আমরাই প্রথম কিছু যাত্রী। গিয়ে ভাড়া ঠিক করে উঠে পড়লাম মিনিবাসে।

সিলেট থেকে তামাবিল যেতে প্রায় ঘন্টা দুয়েক সময় লাগে। প্রথম দিককার রাস্তা ভালো হলেও শেষদিকের রাস্তা খানাখন্দে ভরপুর। তবে দু’পাশের প্রকৃতি অসাধারণ রকমের সুন্দর। রাস্তার একপাশে বিস্তীর্ণ সবুজ চা বাগান আর অন্যপাশে সবুজে আচ্ছাদিত মেঘালয়ের সারি সারি পাহাড়।

তামাবিল স্থল বন্দর © লেখক

সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে আমরা তামাবিল পৌঁছে গেলাম। বাস থেকে নেমেই সবাই নাস্তা করে নিলাম। এরপর চলে গেলাম ইমিগ্রেশন পুলিশ অফিসে। সেখান থেকে বাংলাদেশ কাস্টমসে ট্রাভেল ট্যাক্সের কাগজ জমা দিয়ে বিজিবি চেক পোস্টে নাম এন্ট্রি করে নো ম্যানস ল্যান্ড দিয়ে পায়ে হেঁটে ঢুকে গেলাম ভারতে। ভারতের বিএসএফ পাসপোর্ট চেক করে ইমিগ্রেশন অফিসে যেতে বললো।

ভারতীয় ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের সব কাজ শেষ করে বের হতে হতে দেখি ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১১টা বাজে। অফিস থেকে বের হয়ে ঝটপট হাঁটা শুরু করলাম ডাউকি বাজারের দিকে। কেননা ডাউকি বাজার থেকেই আমরা গাড়ি নিবো। ঘোরাঘুরির জন্য ট্যাক্সি অথবা জিপগাড়ি পাওয়া যায়। তবে আমরা ৮ জন হওয়ায় জিপগাড়ি নেয়ার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্ত সেদিন আমরা অনেক খোঁজ করেও কোনো জিপগাড়ি পেলাম না।

 অগত্যা দুটি ট্যাক্সি ভাড়া নিয়ে শুরু হলো আমাদের পথচলা। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের ট্যাক্সি। খানিক দূরেই জাফলং এ অনেক মানুষ জলকেলি খেলছে। আমরা ধীরে ধীরে পাহাড়ি পথ দিয়ে উপর দিকে উঠছি। বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে চলছে ট্যাক্সি। পাহাড়গুলো গাছগাছালিতে ভরপুর। গাছের ফাঁকে ফাঁকে জাফলংও দেখা যাচ্ছিলো। পাহাড়ে প্রচুর পরিমাণে সুপারি গাছ জন্মেছে। সুপারিগাছের বন বললেও কম হবে না!

চলতে চলতে একসময় ড্রাইভার জানালেন আমারা উমেক্রাম ঝর্ণায় চলে এসেছি। মন চাইলে এই ঝর্ণায় গোসলও করতে পারি। উমেক্রাম ঝর্ণাকে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট সুইমিংপুল বলা হয়। ঝর্ণা থেকে পানি পড়ে জমা হচ্ছে বিশাল পাথুরে সুইমিংপুলে। সেখান থেকে আবার উপচে পড়ছে নিচে। এই উমেক্রাম ঝর্ণাটাকেই আমরা মায়াবী ঝর্ণা বলি।

উমেক্রাম ঝর্ণা © লেখক

ঝর্ণার পানিগুলো বেশ স্বচ্ছ। মাছের ছুটোছুটি স্পষ্ট দেখা যায়। উমেক্রাম ঝর্ণার পানি ভীষণ ঠান্ডা। উমেক্রাম ঝর্ণায় কিছুক্ষণ কাটিয়ে আমরা আবার ট্যাক্সিতে চেপে বসলাম।ট্যাক্সি ছুটে চললো পাহাড়ি পথে। আমাদের এবারের গন্তব্য বড়হিল ঝর্ণা। শীতকাল শুরু হওয়ায় দানবাকৃতির এই ঝর্ণায় পানি কিছুটা কম থাকলেও সৌন্দর্য কমেনি খুব একটা। বহু ধাপ পার হয়ে এই ঝর্ণার পানি চলে যায় বাংলাদেশে। ঝর্ণার নিচে স্বচ্ছ পানির সুইমিংপুল!

অনেকেই বড়শি দিয়ে মাছ ধরেন সেখানে। তবে উমেক্রাম ঝর্ণায় নামার সুযোগ থাকলেও বড়হিল ঝর্ণায় সেই সুযোগ নেই। খানিকটা দূরেই সেতুর উপর দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে হয় এ ঝর্ণার সৌন্দর্যকে। সেখানে কিছুক্ষণ কাটিয়ে আমরা আবার ছুটলাম।

বড়হিল ঝর্ণা © লেখক

আবার চলতে শুরু করলাম নিরিবিলি পথে সবুজের মাঝ দিয়ে। আমাদের এবারের গন্তব্য মাওলিংডং গ্রাম। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে খেতাব অর্জন করেছে এই গ্রাম। আর প্রতিদিন এ গ্রামে বহু পর্যটক এলেও এখানে ময়লা আবর্জনা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এই গ্রামে ঢুকতে প্রবেশ ফি দিতে হলো ৫০ রুপি করে প্রতি ট্যাক্সি।

গ্রামে ঢুকে পুরোই অবাক। সবকিছু একদম ছবির মতো সাজানো গোছানো। কোনো হৈ-হুল্লোড় কিছুই নেই। চারদিক একদম শান্ত নিরিবিলি। গ্রামের প্রত্যেকটি বাড়ির সামনে ছোট ছোট ফুলের বাগান। রাস্তাঘাটে ময়লা আবর্জনা নেই। আমরা পুরো গ্রামটাই ঘুরে দেখলাম। ততক্ষণে দুপুর হয়ে যাওয়ায় সিদ্ধান্ত নিলাম মাওলিংডং গ্রামেই দুপুরের খাবার সেরে নেয়ার।

মাওলিনং গ্রাম © লেখক

হোটেলে কোনো পুরুষ নেই। রাঁধুন-ক্যাশিয়ার-ওয়েটার সবাই নারী। সবাই মিলে বেশ আড্ডা দিচ্ছিলেন। আমরা যাওয়ার পর আমাদের খাবার সার্ভ করলেন। যদিও রান্না খুব একটা মজার ছিল না। খাওয়া সেরে আবার ট্যাক্সিতে চেপে বসলাম।

এবারের গন্তব্য লিভিংরুট সেতু। লিভিংরুট বা জীবন্ত শেকড়ের সেতুতে যেতে হয় অনেকধাপ সিঁড়ি বেয়ে। জনপ্রতি ১০ রুপি করে টিকেট। সিঁড়িপথটা বেশ পরিষ্কার। একটু পর পর ময়লা ফেলার জন্য ঝুড়ি রেখে দেয়া আছে। সিঁড়ি পথের দু’পাশে জাম্বুরা, পেঁপে, কলা সহ নানা রকম ফল-ফলাদি নিয়ে বসে আছেন দোকানিরা। দামও বেশ কম। এসব দেখতে দেখতেই পৌঁছে গেলাম লিভিংরুট সেতুতে।

লিভিংরুট সেতুটি মূলত কয়েকটি গাছ একে অপরের শেকড়ের মাধ্যমে জড়িয়ে ধরে সেতুর সৃষ্টি করেছে। এটি একটি প্রাকৃতিক সেতু। জীবন্ত শেকড়ে সেতু সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে রোর বাংলার এই লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন। সেতুর নিচে স্বচ্ছ শীতল পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সেতুটি দেখে বেশ অবাক হলাম। কিভাবে গাছের সাথে গাছের শেকড় মিলে এই অসাধারণ সৃষ্টি। স্থানীয় মানুষজন বছরের পর বছর ধরে এই সেতুটি ব্যবহার করে আসছে।

লিভিংরুট ব্রিজ বা জীবন্ত শিকড়ে সেতু © লেখক

লিভিংরুট সেতু ঘোরাঘুরি শেষে সিঁড়ি বেয়ে উঠে গেলাম উপরের দিকে। দু’পাশে ঘন গাছগাছালি কখনওবা ঘর বাড়ির মাঝ দিয়ে রাস্তা ধরে মিনিট বিশেক এগিয়ে গিয়ে পেলাম নোহওয়েট ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে বাংলাদেশ দেখা যায়। এছাড়াও বর্ষাকালে এখান থেকে বেশ কয়েকটি ঝর্ণা দেখা যায়। ভিউ পয়েন্টে গাছের উপর বাঁশ দিয়ে দাঁড়ানোর জায়গা তৈরি করা হয়েছে।

নোহওয়েট ভিউ পয়েন্ট থেকে স্বদেশ এবং সূর্যাস্ত দেখা © লেখক

অন্যদেশ থেকে নিজ দেশ দেখার অনুভূতিটা একদমই অন্যরকম। ভিউ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখলাম। চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছিলো। আমাদের ফিরতে হবে এখনও। যেতে হবে বহুদূর। দ্রুত হেঁটে সবাই ফিরে এলাম ট্যাক্সির কাছে। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে ট্যাক্সি ছুটে চলছে স্নোংপেডেং এর উদ্দেশ্যে। রাতে সেখানেই থাকবো এমনই বন্দোবস্ত।

ক্যাম্পিং করবো উমগট নদীর পাশে। সারাদিনের ছুটোছুটিতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম টেরই পাইনি। ঘুম ভাঙল স্নোংপেডেং গিয়ে। ট্যাক্সি থেকে স্নোংপেডেং নামতেই কানে ভেসে এলো উমগট নদীর শোঁ শোঁ শব্দ। ব্যাগপত্র নিয়ে চলে গেলাম নদীর তীরে। আগেই ফোন দিয়ে তাঁবু ঠিক করে রেখেছিলাম। নদী তীরে পৌঁছে দেখি তাঁবু মালিক আমাদের জন্য সব রেডি করে রেখেছেন। ব্যাগপত্র তাঁবুতে রেখে চলে গেলাম রাতের খাবার খেতে। 

এদিকে রাতের আকাশে লক্ষ কোটি তারার মেলা। চারদিকে পিনপতন নীরবতা। শুধু কিছুদূর থেকে ভেসে আসছিলো উমগট নদীর পাথরের সাথে পানির আঘাতের শোঁ শোঁ শব্দ। তাঁবু থেকে তিন কদম হাঁটলেই নদীর পানি ছোঁয়া যায়। ভীষণ ঠান্ডা! তাঁবুর সামনে সবাই মিলে আগুন জ্বালালাম। গোল হয়ে বসে শুরু করলাম গল্প বলা। জীন ভূত নয়, জীবনের গল্প। জীবনের হাসি আনন্দের গল্প। বহুদূর থেকে ভেসে আসছে ঠান্ডা বাতাসের দল। তাপ দিচ্ছে আগুন। সামনেই কালো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল বিশাল সব পাহাড়ের দল।

উমগট নদীর পাড়ে আমাদের তাবু ও সাসপেনশন ব্রিজ। © লেখক

পরদিন ঘুম ভাঙল একটু দেরিতেই। ঘুম থেকে উঠে ঝটপট নাস্তা সেরে সবাই চলে গেলাম বোট কাউন্টারে। লাইফ জ্যাকেট পরে দুটো বোট নিয়ে ছুটে চললাম উমগট নদীর প্রায় উৎপত্তির দিকে। দু’পাশে বিশাল বিশাল সব পাথুরে খাড়া পাহাড়। আর পাহাড় মানেই ঘন জংগল।

পাহাড়ের মাঝে উমগটের বয়ে চলা © লেখক

দু’পাশের পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে এই নদী। বিশাল বিশাল সব পাথরের গা ঘেঁষে বয়ে চলেছে শীতল স্রোতেরা। পরিপূর্ণতা দিচ্ছে এই নদীটাকে। উমগট নদীকে অনেকেই জীবন্ত অ্যাকুরিয়াম বলে থাকেন। কারণ এই নদীর পানি এতটাই স্বচ্ছ যে, পানির নিচের মাছগুলোকেও স্পষ্ট দেখা যায়। অনেক্ষণ বোটিং শেষে চলে গেলাম ঝুলন্ত সেতুতে। দুজন চলার মতো প্রস্থের বেশ লম্বা এই সেতুটি লোহার পাতের তৈরি। হাঁটার সময় বেশ দুলে ওঠে। এতে আনন্দ আর উত্তেজনা বেড়ে যায় বহুগুণে।

ঝুলন্ত সেতু © লেখক

আগের রাতেই গাড়ি ঠিক করে রাখায় চালক চলে এলেন ১২টায়। আমরাও ব্যাগপত্র গুছিয়ে রওনা হলাম ক্রাংসুরি ঝর্ণার পথে। স্বচ্ছ পানির কারনে এ ঝর্ণার বেশ সুনাম রয়েছে। ক্রাংসুরি যেতে প্রায় ঘন্টাখানেক সময় লাগে। আর এই ঘন্টাখানেক ভ্রমণে কখনও জিপগাড়ি ছুটেছে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তায় আবার কখনও বা ধূসর বর্ণের বিশাল ভূমির মধ্য দিয়ে।

ক্রাংসুরি ঝর্ণায় যেতে হলে গাড়ি থেকে নেমে প্রায় ১৫ মিনিট নিচের দিকে হেঁটে যেতে হয়। তবে সেই হাঁটার পথটাও অসাধারণ। গাছগাছালি ঘেরা সেই পথ। ক্রাংসুরিতে গিয়ে সবাই লাইফ জ্যাকেট ভাড়া নিলাম। কারণ ক্রাংসুরিতে নামতে হলে লাইফজ্যাকেট পরিধান করা বাধ্যতামূলক। তাছাড়া এরকম প্রকৃতির কোলে ঝর্না এবং সুইমিংপুলের অপূর্ব সংমিশ্রণ মিস করতে চাচ্ছিলাম না কেউ।

ক্রাংসুরি ফলস। © লেখক

গিয়েই লাফিয়ে পড়লাম স্বচ্ছ নীলচে পানিতে। ভীষণ ঠান্ডা পানিতে মানিয়ে নিতে সময় লাগলো বেশ কিছুক্ষণ। ঠান্ডা লাগলেও উঠতে ইচ্ছা করছিল না একদমই। মন চাচ্ছিল থেকে যাই এই প্রকৃতির বুকে। ভেসে বেড়ালাম পুরো ঝর্ণার পানিতে। কোন ফাঁকে সময় চলে গেলো টেরই পেলাম না। দুপুর গড়িয়ে বিকেলের পথে সূর্য।

ক্রাংসুরি থেকে উঠে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে রওনা হলাম ডাউকির পথে। জিপগাড়ি ছুটে চললো সীমান্তের দিকে। শেষ বিকেলে অনেকটা দৌড়ে এসে পৌঁছালাম ভারতীয় ইমিগ্রেশনে। ভারতীয় ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ শেষে পায়ে হেঁটে সীমান্তরেখা পেরিয়ে চলে এলাম দেশে। এখানেও ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ শেষে ছুটে চললাম সিলেটের পথে। সিলেট এসে খাবার খেয়ে রাত সাড়ে এগারোটার বাসে উঠে পড়লাম আমরা। বহু দিনের ইচ্ছা পূরণ শেষে স্মৃতিবহুল দুটো দিন কাটিয়ে আমরা ছুটে চললাম রাজধানীর দিকে।

জীবন অনেক সংক্ষিপ্ত সময়ের যাত্রা। আর তাই চলুন ছুটি দিগন্তে। বেঁচে থাকি আনন্দে। ভ্রমণ শুভ হোক

This article is about a 2 day tour in dawki. The visited places were umgot river, small waterfalls like umekram,boro hill,living root bridge,  Mawlynnong, krangsuri .

Feature image © Writer

Related Articles