দুই কোরিয়া এবার অলিম্পিক মঞ্চে সম্মিলিত পতাকার নিচে হাঁটার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে বলে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা।
আগামী ৯ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাংয়ে অনুষ্ঠিতব্য অলিম্পিকে একসাথে একই পতাকার নিচে মার্চ করবেন দুই কোরিয়ার ক্রীড়াবিদরা। এছাড়া উক্ত দুই দেশ সম্মিলিত একটি আইস হকি দল গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো দুই কোরিয়া একই পতাকাতলে অলিম্পিক গেমসে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছে।
সিউলের একীভূতকরণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, গত বুধবার সীমান্তবর্তী পানমুনজম গ্রামে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় দুই পক্ষের চারজন করে প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়।
সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চললে, সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া প্রবেশ করবে উত্তর কোরিয়ার ৩০ জন তাইকোয়ান্দো খেলোয়াড়ে একটি দল। খেলোয়াড়দের সমর্থন ও উৎসাহ যোগানোর জন্য সাথে যাবেন ২৩০ জন এবং যাবেন ১৪০ জন অর্কেস্ট্রা বাদক। এছাড়া প্যারা অলিম্পিক মার্চের জন্যে ১৫০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে বলে সম্মতি জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
এর আগে কয়েকটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় একত্র হয়ে অংশগ্রহণ করলেও উত্তর কোরিয়া এর আগে দক্ষিণে অনুষ্ঠিত কোনো অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করেনি।
১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত সিউল অলিম্পিকস আয়োজনের ভার ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার উপর। তবে পরবর্তীতে কয়েকটি ইভেন্ট ভাগ করে নেয়ার লক্ষ্যে দুই কোরিয়ার মধ্যে আলোচনা বসে। দু’পক্ষ কোনো সিদ্ধান্তে যেতে না পারলে আলোচনাটি ভেঙে যায়। আর আসন্ন অলিম্পিক গেমস ব্যাহত করার চেষ্টায় ১৯৮৭ সালে উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমানে বোমা হামলা চালায়। সে বছর অলিম্পিক বয়কট করে উত্তর কোরিয়া।
দুই কোরিয়ার সম্মিলিত পতাকাটি হবে পেনিনসুলা দ্বীপের নীল রংয়ের সিলুয়েট বিশিষ্ট। তারা এর আগেও কয়েকটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহণ করেছে, তবে অলিম্পিকে এবারই প্রথম।
এই পতাকার নিচে দুই দেশের ঐক্যের বিরল প্রদর্শনীর লক্ষ্যে ১৯৯১ সালে টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে একত্রে যোগ দিয়েছিল দেশ দুটি। এটি শেষবার ব্যবহার করা হয়েছিল ২০০৬ সালে ইতালির তুরিনে অনুষ্ঠিত উইন্টার গেমসে।
ফিচার ইমেজ © Amy Sancetta