মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনআন্দোলনটি হয় ২০১১ সালে, আরব বসন্ত নামের এই আন্দোলন তিউনিসিয়া থেকে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে মিশরে। আরব বসন্তের ফলে পতন ঘটে মিশরের দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক জেনারেল হোসনি মোবারকের, শুরু হয় মিশরের গণতান্ত্রিক বিবর্তন। মিশরে রাষ্ট্রের উপস্থিতি হাজার বছরের, মিশরের রাজনৈতিক ইতিহাসও সুদীর্ঘ। মিশরের হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন মোহাম্মদ মুরসি, আরব বসন্তের পরে প্রথম নির্বাচনে তিনি ছিলেন মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রার্থী।
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতায় ছিলেন এক বছর, মুরসির অধীনে বদলে যাচ্ছিল আঞ্চলিক রাজনীতিতে মিশরের অবস্থান। চলমান রাজনৈতিক হিসাব নিকাশের মধ্যে এক বছরের মাথায় মিশরে ঘটে সামরিক অভ্যুত্থান, সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির নেতৃত্বে মিশরের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয় মোহাম্মদ মুরসিকে, বিচারাধীন অবস্থায় মুরসি মারা যান ২০১৯ সালে। শুরুতে পরোক্ষভাবে ক্ষমতার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেন জেনারেল সিসি, পরবর্তীতে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের মাধ্যমে অধিষ্ঠিত হন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির পরিচিতি
আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ১৯৫৪ সালের নভেম্বরে কায়রোতে জন্মগ্রহণ করেন, বেড়ে উঠেছেন আল-আজহার মসজিদের নিকটবর্তী এলাকায়। তরুণ বয়সেই মিশরের সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন সিসি, মিশরীয় মিলিটারি একাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েট হন ১৯৭৭ সালে। সামরিক বাহিনীতে দ্রুতই পদোন্নতি ঘটতে থাকে জেনারেল সিসির, চৌকস অফিসার হিসেবে অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছেন ব্রিটিশ কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ আর যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি ওয়ার কলেজে। সৌদি আরবে মিসরের ডিফেন্স অ্যাটাচি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিসি, ছিলেন মিশরের নর্দান মিলিটারি জোনের কমান্ডারও। আরব বসন্তের সময়ে গঠিত সুপ্রিম কাউন্সিল অব আর্মড ফোর্সেসের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন সিসি, দায়িত্ব পালন করেছেন মিলিটারি ইনটেলিজেন্সের ডিরেক্টর হিসেবে।
মিশরের আরব বসন্তের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটে, প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতা গ্রহণের দুই মাসের মাথায় সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে। তখনও তুলনামূলকভাবে অপরিচিত জেনারেল সিসি, জেনারেল সিসিকে দেখা হচ্ছিল মোহাম্মদ মুরসির অনুগত এক জেনারেল হিসেবেই।
কিন্তু, জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি মিশরের সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের দীর্ঘ ইতিহাসের বাইরে যেতে পারেননি, বরং তিন যুগের মিলিটারি ক্যারিয়ার জেনারেল সিসিকে ক্ষমতা দখলে অনুপ্রাণিতই করেছে। ২০১৩ সালে, সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দশ মাসের মাথায় তার নেতৃত্বে ঘটে সামরিক অভ্যুত্থান, ক্ষমতাচ্যুত হন মুসলিম ব্রাদারহুড থেকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। অভ্যুত্থানের পরে মিশরের ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব নেন জেনারেল সিসি, ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি প্রমোশন পান ফিল্ড মার্শাল হিসেবে।
নির্বাচন
২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য জেনারেল জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি সেনাপ্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন, সেনাবাহিনীর আর্শিবাদপুষ্ট হয়ে ৯৭ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। এরপর থেকে মিশরের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অধিষ্ঠিত আছেন জেনারেল সিসি, কার্যত অদৃশ্য করে দিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে সকল কণ্ঠস্বরকে। নির্বাচনে জেনারেল সিসি প্রতিশ্রুতি দেন কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা আর অবকাঠামো উন্নয়নের মতো মৌলিক খাতগুলো নিয়ে কাজ করার, প্রতিশ্রুতি ছিলো দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধেরও।
একই ধরনের দৃশ্যের অবতারণা হয় ২০১৮ সালের নির্বাচনেও। ভোটার উপস্থিতি ছিলো ৪১ শতাংশের মতো, এবারও ৯৭ শতাংশ ভোট পেয়েই প্রেসিডেন্ট পদে আবারো নির্বাচিত হন জেনারেল সিসি। প্রায় ২১ মিলিয়ন ভোটার জেনারেল সিসির পক্ষে ভোট দেন। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি করলেও, ২০১৮ সালের নির্বাচনও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ব্যর্থ হয়েছে, ব্যর্থ হয়েছে রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে। মিশরের সিভিল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট নির্বাচন বয়কট করে, নির্বাচনে প্রার্থী ছিলো না মুসলিম ব্রাদারহুডেরও। জেনারেল সিসির বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়া মুসা মোস্তফা মুসাও পরিচিত সিসি ঘনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ হিসেবেই।
জেনারেল সিসির কর্তৃত্ববাদী শাসকদের এই চরিত্র অবশ্য নতুন না। তারা নিজেদের শাসনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য সাজানো নির্বাচনের আয়োজন করে। নির্বাচন আয়োজনের আগেই নির্বাচনের সাথে জড়িত ব্যক্তি আর প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা, সেখানে বসায় নিজের অনুগত লোক। নির্বাচনের রেফারিদেরও নিজেই নির্ধারণ করে, নির্ধারণ করে দেয় নির্বাচনের ফলাফলও।
নাগরিক স্বাধীনতা আর রাজনৈতিক অধিকার
ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই জেনারেল সিসি ক্রমাগত কর্তৃত্ববাদী হয়েছেন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণকে কুক্ষিগত করেছেন। নির্বাচনী কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছেন, আইনসভার সদস্যরাও প্রায় সকলেই তার আর্শিবাদপুষ্ট। রাজনৈতিক বহুত্ববাদ নেই, নেই স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক দল গঠনের সুযোগ। কোনো গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য আন্দোলন করতে চাইলে, সেটি রাষ্ট্র থেকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের উপর নির্বিচার দমন-পীড়ন চলেছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছে মুসলিম ব্রাদারহুডের কর্মী আর নেতাদের বিপক্ষে। ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও, জেনারেল সিসির আর্শীবাদপুষ্ট হয়ে কিছু ইসলামিক রাজনৈতিক দল নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
নির্বাচনে বিরোধী দলের জেতার বাস্তবসম্মত সুযোগ কম, নাগরিকেরাও স্বাধীনভাবে তাদের নির্বাচনী পছন্দ জানাতে পারেন না। বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র্য নিয়ে যেসব কমিউনিটি রয়েছে, তাদের স্বাধীনতার মাত্রাও অত্যন্ত সীমিত। জেনারেল সিসির অধীনে সামরিক আর বেসামরিক আমলাতন্ত্র দুর্নীতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে, সরকারের মধ্যে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা প্রায় নেই বললেই চলে।
মিশর মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম জগতে শক্তিশালী শক্তিশালী খেলোয়াড়, মিশরের টিভি আর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আরবের অন্যান্য দেশে কনটেন্ট সরবারহ করে থাকে। গণমাধ্যম জগতে শক্তিশালী হলেও, বর্তমানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বলে কিছুই নেই মিশরে, ভিন্ন মত আর ধর্মীয় আচার প্রকাশের সুযোগও সীমিত মিশরে।
অন্যান্য স্বৈরশাসকের মতোই জেনারেল সিসিকেও কট্টর ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর সাথে সমঝোতায় যেতে হয়েছে জেনারেল সিসির, মিশরীয়দের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়েই বন্ধুত্ব করেছেন ইসরায়েলের মতো নিপীড়ক আর বর্ণবাদী রাষ্ট্রের। যেকোন ধরনের সমাবেশকেই ‘অবৈধ জনসমাবেশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করার সুযোগ রাখা হয় ২০১৩ সালের তৈরিকৃত আইনে। তবে, সৌদি আরবের কাছে ২০১৬ সালে দুটি দ্বীপ হস্তান্তর করেন জেনারেল সিসি, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে জেগে উঠেছিলো মিশর। সেটি অবশ্য রাজনীতিতে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই থেকে গেছে। যেমন বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে থেকেছে ২০১৯ সালের আরেকটি আন্দোলন।
মিশরের অর্থনীতি
কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা তাদের শাসনের ব্যাপারে সম্মতি আর বৈধতা উৎপাদনের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের গল্প প্রচার করেন, অর্থনৈতিক সাফল্যের গল্প প্রচার করেন। বিভিন্ন স্বৈরশাসকের কার্যকাল পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, স্বৈরশাসকের ক্ষমতায় টিকে থাকার সাথে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে অর্থনৈতিক উত্থান-পতনের। অর্থনীতি ভালো করলে স্বৈরশাসকদের শাসন দীর্ঘায়িত হয়।
মিশরে জেনারেল সিসির অধীনে জীবনমানের তেমন কোনো আহামরি পরিবর্তন হয়নি, ক্ষেত্রবিশেষে জীবনমান কমেছে। একটি ভঙ্গুর অর্থনীতির উত্তরাধিকার হিসেবে বার বার আইএমএফের দ্বারস্থ হতে হয়েছে জেনারেল সিসিকে, আইএমএফের শর্তের অংশ হিসেবে জ্বালানীর উপর ভর্তুকি প্রত্যাহার করে জীবনযাত্রাকে আরো জটিল করেছেন। এর মধ্যেও, বেশ কিছু মেগা প্রজেক্ট নিয়েছেন জেনারেল সিসি। ৮.২ বিলিয়ন ইউএস ডলার খরচ করে সুয়েজ খাল বর্ধিত করার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন সিসি, হাতে নিয়েছেন কায়রো থেকে রাজধানী পরিবর্তনের জন্য ৪৫ বিলিয়নের প্রজেক্ট। এর মধ্যে আরব বসন্তের পরে মিশরে পর্যটন খাত থেকে আয় কমেছে।
জেনারেল সিসির অধীনে মিশরের প্রবৃদ্ধির হার ৪ এর ঘরে থেকেছে, বেকারত্বের হার প্রায় ৭.৪ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতির হার ৩২ শতাংশের বেশি, কারেন্ট একাউন্ট ডিফিসিটে পড়ে বার বার আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছে মিশর। ব্যক্তিগত ও শিল্পের করের হার তুলনামূলকভাবে বেশ বেশি, অর্থনৈতিক দুরবস্থায়ও কমেনি সামরিক ব্যয়।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জেনারেল সিসি
মিশর তুলনামূলকভাবে একটি দরিদ্র দেশ হলেও মধ্যপ্রাচ্য আর আফ্রিকার রাজনীতিতে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক মিশর। রাজনীতিতে মিশরের প্রাসঙ্গিকতা তৈরি করেছে ভৌগলিক অবস্থান, রয়েছে মিশরের সামরিক বাহিনীর ভূমিকাও। জেনারেল সিসির অধীনে মিশরের সবচেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে সৌদি আরবের সাথে, বিভিন্ন সময়ে সৌদি আরব অর্থনৈতিক সহায়তাও দিয়েছে মিশরকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথেও সুসম্পর্ক রয়েছে জেনারেল সিসির মিশরের, বিভিন্ন সামরিক আর অর্থনৈতিক বিষয়ে যৌথ সম্পর্ক রয়েছে দুই দেশের। জেনারেল সিসি, মোহাম্মদ বিন সালমান আর মোহাম্মদ বিন জায়েদকে বিভিন্ন সময়ে একসাথে সময় কাটাতে দেখা গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশগুলোর বাইরে ইসরায়েলের সাথেও সুসম্পর্ক আছে জেনারেল সিসির, বিভিন্ন সময়ে তিনি চেষ্টা করেছেন ফিলিস্তিন আর ইসরায়েলের মধ্যে শান্তিচুক্তি করার। ইসরায়েল আর সৌদি আরবের সূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও সুসম্পর্ক রয়েছে জেনারেল সিসির, মিশরের সামরিক বাহিনীরও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। হোসনি মোবারকের পতনের পর জেনারেল সিসিই প্রথম নেতা, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরের আমন্ত্রণ পান। ২০১৭ সালে প্রথম সফরের পর ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আরেকটি সফর করেন জেনারেল সিসি, দু’বারই সাক্ষাৎ পান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।
যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ফ্রান্স আর চীনের সাথেও যুগপৎ সম্পর্ক বজায় রাখছেন জেনারেল সিসি। যুক্তরাজ্যের সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে মিশরের, ১৯২২ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকেই স্বাধীনতা অর্জন করে মিশর।
জেনারেল সিসির ভবিষ্যৎ
গত দশকে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশে করুণ পতন হয়েছে স্বৈরশাসকদের, অনেকেই নিহত হয়েছেন বিদ্রোহীদের হাতে। নিজের দুর্ভাগ্যের পাশাপাশি এসব স্বৈরশাসক জনগণের জন্যও দুর্ভোগ ডেকে নিয়ে আসেন, জনগণকে যেতে হয় দুর্ভিক্ষ, গৃহযুদ্ধ কিংবা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্যাতনের মুখে। স্বৈরতন্ত্রের সাথে রাজনৈতিক উত্থান-পতনের এই চক্রাকার খেলা চলতেই থাকে। নাগরিকেরা যতদিন এই চক্রটি ধরতে না পেরে অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিনিময়ে কর্তৃত্ববাদী শাসকদের বৈধতা দিবে, ততদিন এই চক্র চলতেই থাকবে। লাতিন আমেরিকার দেশগুলো দু’শো বছরেও এই চক্র ভাঙতে পারেনি, পারেনি উন্নয়নশীল দেশ থেকে নিজেদের উন্নত দেশে পরিণত করতে।
নাগরিকেরা সাধারণত শেখে না, নির্বাচনকে ব্যবহার করে শাসকেরা হয়ে ওঠেন ‘ফারাও’।