২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসের প্রথম দিন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন লুইজ ইনাচিও লুলা ডি সিলভা। মোটর শোভাযাত্রা, গানের উৎসব আর লুলার হাজারো সমর্থকের উচ্ছ্বাসকে সঙ্গে করে রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় দায়িত্ব হস্তান্তরের অনুষ্ঠান। দায়িত্ব হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অনুপস্থিত ছিলেন; তিনি কট্টর ডানপন্থী বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো।
মিস্টার বলসোনারো বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রেসিডেন্সিয়াল উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়ার কথা ছিলো নতুন প্রেসিডেন্ট মিস্টার লুলাকে। উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়ার এই সংস্কৃতিকে দেখা হয় ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরের প্রতীকী চিত্র হিসেবে। লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের মতো ব্রাজিলেও চলেছে সামরিক শাসন, ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় অনেকেই ১৯৮৫ সালে সমাপ্ত হওয়া ২১ বছরের সামরিক শাসনের স্মৃতি মনে করেন।
ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানকে সরিয়ে রেখে রবিবার সকালে মিস্টার বলসোনারোর ঘুম ভেঙেছে ব্রাজিল থেকে ছয় হাজার মাইল দূরে, ফ্লোরিডায় ভাড়া করা এক বাড়িতে। দায়িত্বে থাকার সময়েই বেশ কয়েকটি তদন্তের মুখে থাকা মিস্টার বলসোনারো শুক্রবার রাতেই ব্রাজিল ছেড়েছেন, আপাতত পরিকল্পনা করছেন ফ্লোরিডায় অন্তত মাসখানেক থাকার।
মিস্টার বলসোনারো প্রমাণ ছাড়া ব্রাজিলের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, গত অক্টোবরে পরাজয় মানতে চাননি তিনি। কয়েক সপ্তাহের নীরবতার পর বিদায়ী ভাষণে মিস্টার বলসোনারো বলেছেন, তিনি মিস্টার লুলার প্রেসিডেন্সি গ্রহণ আটকাতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন।
তিনি বলছিলেন, “আইনের মধ্যে থেকে, সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে, আমি পথের সন্ধান করেছি।” সমর্থকদের উৎসাহিত করতে তিনি বলেন, “আমরা হয় গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি, নতুবা করি না। কেউই অ্যাডভেঞ্চার চায় না।”
রবিবার প্রেসিডেন্টের দপ্তরে লুলা সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যময় একদল মানুষের সাথে দায়িত্ব গ্রহণের অনুষ্ঠান করেছেন। তার সাথে ছিলো একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারী, একজন প্রতিবন্ধী পুরুষ, দশ বছর বয়সী এক ছেলে, ছিলো আদিবাসী পুরুষ আর কারখানার শ্রমিক। প্রেসিডেন্সিয়াল উত্তরীয় পরানোর ক্ষেত্রে বলসোনারোর অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব নেন ৩৩ বছর বয়সী এক নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মী, লুলাকে প্রেসিডেন্টের উত্তরীয় তিনিই পরিয়ে দেন ব্রাজিলের মানুষের পক্ষে।
কংগ্রেসের সামনে বক্তব্যে মিস্টার লুলা বলেছেন, তিনি ক্ষুধা আর বন উজাড়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন, অর্থনীতিতে গতি আনার পাশাপাশি দেশকে একত্রিত করবেন। একইসাথে নিজের পূর্বসূরি বলসোনারোকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে আঘাত করার অভিযোগেও অভিযুক্ত করেছেন লুলা।
পুনরায় গণতন্ত্রায়নের যুগে আমরা সাধারণত বলি, কখনোই স্বৈরতন্ত্র না। আজ, একটি জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পর আমাদের অবশ্যই বলা উচিত, সবসময়ই গণতন্ত্র।
লুলার প্রেসিডেন্ট পদে ফিরে আসা এক চমকপ্রদ রাজনৈতিক পুনরুত্থান। তিনি একসময় ছিলেন ব্রাজিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট, প্রেসিডেন্টের অফিস ছাড়ার সময় তার অ্যাপ্রুভাল রেটিং ছিলো ৮০ শতাংশের উপরে। প্রেসিডেন্সি ছাড়ার পর তাকে ৫৮০ দিন কাটাতে হয়েছে কারাগারে, দুর্নীতি আর অবকাঠামো নির্মাণের সাথে যুক্ত কোম্পানিকে অবৈধ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে।
সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে এসব অভিযোগ থেজে দায়মুক্তি পান লুলা। কোর্ট রায় দেন- লুলার কেসে বিচারক ছিলেন পক্ষপাতদুষ্ট। অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়ে লুলা আবার প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করেন, এবং জিতে আসেন।
৭৭ বছর বয়সী লুলা আর তার সমর্থকেরা লুলাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হিসেবে দেখাতে পছন্দ করেন। বলসোনারো আর তার সমর্থকদের ভাষ্যে- ব্রাজিলে এখন ‘একজন অপরাধী’ প্রেসিডেন্ট হিসেবে রয়েছে।
ব্রাসিলিয়ায় লুলার অভিষেক উপলক্ষ্যে হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছিলো, যাদের অনেকের গায়ে ছিলো লুলার বামপন্থী ওয়ার্কাস পার্টির লাল শার্ট।
সপ্তাহান্তে আয়োজিত হয়েছে র্যালি, র্যালিতে অংশগ্রহণ করা সমর্থকেরা নতুন বছরের প্রাক্বালে নেচেছে সাম্বা নাচ। শহরের ব্যালকনি আর রাস্তার মোড় থেকে ভেসে এসেছে উচ্ছ্বাস, প্রতিধ্বনিত হয়েছে লুলার আগমন আর বলসোনারোর বিদায়ের সুর।
রবিবারের উৎসবে অংশ নেওয়া এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের মতে, লুলার অভিষেক আসলে আশাকেন্দ্রিক। তার প্রত্যাশা, লুলা কেবল তার দলকেই প্রতিনিধিত্ব করবেন না, প্রতিনিধিত্ব করবেন পুরো দেশকে। পুরো ব্রাজিলীয় জনগোষ্ঠী যেন সুখী হতে পারে।
এর মধ্যেও, শহরের আরেক প্রান্তে বলসোনারোর সমর্থকেরা একসাথে সেনা সদরের সামনে জড়ো হয়েছিল। তাদের প্রত্যাশা ছিলো শেষ মূহুর্তে সেনাবাহিনী লুলার ক্ষমতায় আরোহন আটকাবে।
এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছিলেন মাগনো রদ্রিগেজ নামে ৬০ বছর বয়সী এক মোটর মেকানিক। প্রতিদিন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেওয়া এক বলসোনারো সমর্থকের মতে, ব্রাজিলীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে দেশপ্রেম আছে, দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে সেনাবাহিনী আগেও এরকম উদ্যোগ নিয়েছে। রদ্রিগেজ ব্রাজিলে ১৯৬৪ সালে হওয়া সামরিক অভ্যুত্থানের কথা বোঝাচ্ছিলেন।
মিস্টার রদ্রিগেজ সস্ত্রীক নয় সপ্তাহ ধরে ব্রাজিলের সেনাসদরের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে আছেন, সেখানে একটি গুচ্ছ গ্রামই তৈরি করে ফেলেছেন বলসোনারো সমর্থকেরা। এখানে শৌচাগার আছে, লন্ড্রি সার্ভিস আছে, আছে মোবাইল চার্জ দেওয়ার স্টেশন। ইতোমধ্যেই এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মানুষদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ২৮টি খাবারের দোকান।
মোটাদাগে, বলসোনারো সমর্থকদের কর্মসূচি অহিংস ছিলো, সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতা তৈরির চেয়ে বেশি গুরুত্ব ছিলো প্রার্থনার। এর মধ্যেও, কিছু সমর্থক যানবাহনে আগুন ধরিয়েছে। লুলার সরকার ইতোমধ্যেই বলছে, এ ধরনের সহিংস কর্মসূচি আর খুব বেশি সহ্য করা হবে না। ফলে প্রশ্ন উঠছে, রদ্রিগেজরা আর কতদিন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন? মিস্টার রদ্রিগেজ বলছিলেন, “জীবনের শেষদিন পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবো, যদি না আমার দেশ মুক্ত হয়।”
ব্রাজিলে মিস্টার বলসোনারোর অনুপস্থিতি আর রাজপথে বলসোনারোর হাজারো সমর্থকের উপস্থিতি প্রমাণ করে, তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে এক বিভাজিত জাতির দায়িত্ব নিচ্ছেন মিস্টার লুলা। বলসোনারোর সমর্থকেরা এখনও বিশ্বাস করেন, সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম গণতন্ত্রও ব্রাজিলের।
প্রেসিডেন্ট লুলার অধীনে ব্রাজিল ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে ২০০৩-১১ সাল পর্যন্ত। কিন্তু, ব্রাজিলে তখন রাজনৈতিক বিভেদ এত কট্টর ছিলো না, ছিলো না এত ভেদাভেদ। প্রেসিডেন্ট লুলার উত্থান লাতিন আমেরিকাতে বামপন্থীদের জন্য নতুন ঢেউ নিয়ে এসেছে, লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম সাতটি দেশের মধ্যে ছয়টি দেশেই এখন রয়েছে বামপন্থী সরকার। বামপন্থীদের উত্থানে অবশ্য ভূমিকা রেখেছে অ্যান্টি-ইনকাম্বেন্সি ভোটও।
প্রেসিডেন্ট লুলার সময়ে শুরুর কয়েক সপ্তাহ ব্রাজিলের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থান করবেন বলসোনারো। এটি ইঙ্গিত করে, প্রেসিডেন্ট লুলার অধীনে ব্রাজিলে একটি অস্বস্তিকর সময় পার করতে হবে বলসোনারোকে। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই পাঁচটি অভিযোগের তদন্ত চলছে। বলসোনারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার, ব্রাজিলের ভোটিং মেশিনে হস্তক্ষেপের, ‘ডিজিটাল মিলিশিয়াদের’ কাজে লাগিয়ে ক্রমাগত গুজব ছড়ানোর।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে বলসোনারো এতদিন যে বিচারিক দায়মুক্তি পেয়েছেন, একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এই দায়মুক্তি এখন আর পাবেন না। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা কিছু অভিযোগ এখন হয়তো সুপ্রিম কোর্ট থেকে স্থানীয় কোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
ব্রাজিলের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন ফেডারেল প্রসিকিউটরের মতে, বলসোনারোকে অপরাধী প্রমাণ করার মতো যথেষ্ট আলামত সরকারপক্ষের কাছে রয়েছে। বিশেষ করে গোপনীয় তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে বেকায়দায় রয়েছেন বলসোনারো।
রবিবার কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট লুলা বলেছেন,
অনেকেই ব্যক্তিগত আর আদর্শিক বিশ্বাসের জায়গা থেকে দেশকে ভুলপথে চালিত করেছেন। কিন্তু, আমাদের কারো বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছে নেই। আমরা আইনের শাসনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। যারা আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে, তারা নিজেদের ভুলের উত্তর নিজেরাই দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের কারণে বলসোনারো ব্রাজিলের আইনি প্রক্রিয়াগুলো থেকে রেহাই পাবেন না। এর মধ্যেও, ফ্লোরিডা গত কয়েক বছর ধরে ব্রাজিলীয় রক্ষণশীলদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
ব্রাজিলের অনেক জনপ্রিয় টকশোর ভাষ্যকারেরা ফ্লোরিডায় ঘাটি গেড়েছেন। চরম ডানপন্থী এক উসকানিদাতা ফ্লোরিডায় বসবাস করছেন, যিনি ব্রাজিলে থাকতে বিচারককে হুমকি দিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। বলসোনারোর আরো অনেক শীর্ষ কর্মকর্তার আবাস ফ্লোরিডায়; এদের একজন কার্ল জাম্বেলি। নির্বাচনের আগে তাকে অস্ত্রসমেত দেখা গিয়েছিলো।
বলসোনারো পরিকল্পনা করছেন, ফ্লোরিডায় তিনি ১-৩ মাস থাকবেন। এর মাধ্যমে তিনি আপাতত প্রেসিডেন্ট লুলার সরকারের তদন্তপ্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে পারবেন। ব্রাজিলের সরকার বলসোনারোর সাথে চারজন কর্মকর্তা পাঠিয়েছেন, অফিসিয়াল নোটিশ অনুযায়ী যারা ফ্লোরিডায় বলসোনারোর সাথে মাসখানেক অবস্থান করবেন।
শনিবার বলসোনারো ফ্লোরিডায় তার ব্রাজিলিয়ান প্রতিবেশীদের সাথে ছবি তুলেছেন, অভিবাসীরা প্রবল আগ্রহ নিয়েই ছবি তুলেছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্টের সাথে। সেখান থেকে বলসোনারো কেএফসিতে যান খাবার খেতে।
সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানদের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের ঘটনা নতুন কিছু না। অনেকেই আসেন একাডেমিয়াতে কাজ করার জন্য, অনেকে আসেন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতেও। কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্রের এক গণতান্ত্রিক মিত্রদেশের সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানের যুক্তরাষ্ট্রে সেইফ হেভেন খোঁজার ঘটনা বেশ ব্যতিক্রম। ব্রাজিলের ক্ষেত্রে সেই সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান সেইভ হেভেন খুঁজছেন বিচারিক প্রক্রিয়াগুলো এড়িয়ে যাওয়ার জন্য।
বলসোনারো ও তার সমর্থকদের দাবি, তিনি ব্রাজিলের বামপন্থীদের রাজনৈতিক লক্ষ্যে পরিণত হয়েছেন, পরিণত হয়েছেন ব্রাজিলের স্বদেশের লক্ষ্যেও। বলসোনারো-সমর্থকেরা দীর্ঘদিন ধরেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করছে। তাদের দিক থেকে এখন নতুন অভিযোগের তীর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্ডার ডি মোরাসের দিকে, যিনি ব্রাজিলের নির্বাচন এজেন্সির দায়িত্বে ছিলেন।
মিস্টার মোরাস নির্বাচনের সময় সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন, বলসোনারো সমর্থকদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট ডিলিটের পাশাপাশি লুলাকে অতিরিক্ত টেলিভিশন টাইম দিয়েছেন বলসোনারোর ভুল রাজনৈতিক বার্তার প্রেক্ষিতে। কিছু আইনি বিশেষজ্ঞের মতে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, অনেক ক্ষেত্রেই একজন প্রথাগত সুপ্রিম কোর্টের বিচারকের দায়িত্ব ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।
এরপরও, নির্বাচনে হারার পরের ভূমিকার জন্য বলসোনারো সমালোচনার শিকার হচ্ছেন, সমালোচনা আসছে বাম আর ডান, দু’পক্ষ থেকেই। যেকোনো পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানানোর মাধ্যমে তিনি তার সমর্থকদের উজ্জীবিত করেছিলেন, চিন্তিত করেছিলেন সমালোচকদের। নির্বাচনের পর তিনি পরাজয় স্বীকার করেননি, অনেকটা আড়ালে চলে যান। নিয়মিত দায়িত্বগুলোও এড়িয়ে যাওয়া শুরু করেন, তার প্রশাসনই দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।
বলসোনারোর ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন হামিল্টন মোরাও, একজন সাবেক জেনারেল তিনি। শনিবার রাতে দেশত্যাগের আগে বলসোনারোর ব্যাপারে নিজের ধারণা পরিষ্কার করেছেন নিজের বিদায়ী বক্তব্যে।
নেতারা দেশের মানুষদের পুনরায় আশাবাদী করবেন, দেশের মানুষকে একটি লক্ষ্যের সামনে রেখে আশাবাদী করবেন। অসহিষ্ণু এবং অন্ধ সমর্থন রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করে, তৈরি করে সামাজিক শিথিলতা।
মূল প্রবন্ধের লেখক জ্যাক নিকাস এবং আন্দ্রে স্পিগারিয়ল। 'Lula Becomes Brazil’s President, With Bolsonaro in Florida' শিরোনামে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত আর্টিকেলটি রোরের পাঠকদের জন্য বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে।