গোটা পৃথিবী যখন পুরনো বছরের সকল দুঃখ-জরা ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে নতুন উদ্যমে পথ চলা শুরু করেছে, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন অনেকটাই ক্লান্ত। কেননা তাকে বছর শুরু করতে হয়েছে গত বছরের জঞ্জাল কাঁধে নিয়ে। এর ফলস্বরূপ নতুন বছরের শুরুতেই তাকে পোহাতে হচ্ছে ২০১৮ সালে সৃষ্টি হওয়া রাজনৈতিক সমস্যার উৎপাত। গোটা পৃথিবীর শাসনকর্তা হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা আমেরিকার রাজনীতি বর্তমানে অনেকটাই ভারসাম্যহীন অবস্থা বিরাজ করছে। আমেরিকার এই টালমাটাল রাজনৈতিক অবস্থার দ্রুত উত্তরণের কোনো সম্ভাবনা তো দেখাই যাচ্ছে না, বরং দিন যত যাচ্ছে ততেই অবনতি হচ্ছে এই অবস্থার। এমন বিচ্ছিরি অবস্থার শুরু হয়েছে গত বছরের শেষের দিকে। এর নেপথ্যে রয়েছেন আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে একটি ছিল, মেক্সিকানদের অভিবাসন ঠেকাতে আমেরিকার দক্ষিণ সীমান্তে মেক্সিকো ও আমেরিকার মাঝে একটি সীমান্ত দেয়াল নির্মাণ করা। কিন্তু প্রেসিডেন্ট চাইলেই তো তার একার সিদ্ধান্তে এই দেয়াল নির্মাণের ক্ষমতা রাখেন না। এর জন্য প্রয়োজন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন। সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন যদি ট্রাম্পের পক্ষে যায়, তবেই তিনি এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু ট্রাম্পের সে আশা পূর্ণ হয়নি। কেননা, সিনেটের উচ্চ কক্ষ ও নিম্ন কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন চলে গিয়েছিল ট্রাম্পের বিপক্ষে। আর এতে ক্ষিপ্ত ও একগুঁয়ে ট্রাম্প গত ২২ ডিসেম্বর প্রথমে রাষ্ট্রীয় অচল অবস্থা জারি করেন।
কিন্তু এতে কোনো ফল না পেয়ে কিছুদিন আগে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি তথা জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর ফলে আবার আমেরিকানদের মাঝে আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি। এ কারণে সারা বিশ্বে এই মুহূর্তে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি। যে ইস্যু আলোচনার শীর্ষে থাকে যখন, সে ইস্যুর আদ্যোপান্ত নিয়ে অনেকেরই কৌতূহল সৃষ্টি হয়। সেদিক বিবেচনা করেই আজ ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনার প্রয়াস।
ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি কী?
ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি তথা জাতীয় জরুরি অবস্থা একটি বিশেষ পদক্ষেপ, যা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারি করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় জরুরি অবস্থা হলো সে দেশের যেকোনো পরিস্থিতিকে রাষ্ট্রপতি যদি রাষ্ট্র কিংবা রাষ্ট্রের নাগরিকের জন্য হুমকিস্বরূপ মনে করেন, তবে তিনি ঐ পরিস্থিতি মোকাবেলার উদ্দেশ্যে জাতীয় জরুরি অবস্থা তথা ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি জারি করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, অতি সম্প্রতি অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি জারি করার সম্ভাবনার কথা বলা যায়।
ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সম্বন্ধে কিছু বিশেষ কথা
আমেরিকায় যদি এমন কোনো অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি হয়, যা সে দেশের নাগরিকদের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে এবং এই অস্থিতিশীল অবস্থার সমাধানের পথ প্রচলিত আইনের মাধ্যমে যদি খুঁজে না পাওয়া যায়, একমাত্র তখনই মার্কিন রাষ্ট্রপতি জনস্বার্থে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি জারি করে থাকেন।
রাষ্ট্রপতির অস্থায়ীভাবে বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী হওয়াই ন্যাশনাল ইমার্জেন্সির মূলমন্ত্র। ১৯৭৬ সালের জাতীয় জরুরি আইনের অধীনে জাতীয় জরুরি অবস্থা রাষ্ট্রপতিকে অস্থায়ীভাবে ১৪০টি ক্ষমতা প্রদান করে থাকে।
কোন পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে ও এক্ষেত্রে কোন বিধানগুলো প্রয়োগ করা উচিত, তা একমাত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়ে থাকে।
পেছনের কথা
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রপতির শাসনামলে আমেরিকায় সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সমাধানের প্রয়োজনীয়তা থেকেই মূলত ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি, তথা জাতীয় জরুরি অবস্থা আইনের উৎপত্তি হয়েছে। ১৯৭৬ সালে কাগজে-কলমে জাতীয় জরুরি অবস্থা আইনটি পাস হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সির প্রয়োগ চলছিল আরো ৫৯ বছর আগে থেকে। আমেরিকায় সর্বপ্রথম জরুরি অবস্থা জারি করা হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়। দিনটি ছিল ১৯১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের রপ্তানি পণ্য বহন করার জন্য প্রয়োজনীয় মার্কিন পণ্যসম্ভার জাহাজের অভাব দেখা দিয়েছিল। আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন এ অবস্থা উত্তরণের উদ্দেশ্যে আরো জাহাজ তৈরির জন্য ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি জারি করেন।
আমেরিকার আরেক রাষ্ট্রপতি ফ্র্যাংকলিন ডি. রুজভেল্ট। রুজভেল্টের পূর্বের প্রেসিডেন্টগণ তাদের শাসনামলে বিভিন্ন সংকটময় পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সমস্যাগুলো হলো কোরিয়ান যুদ্ধ, শ্রমিকদের ধর্মঘট, নিয়ন্ত্রণহীন মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদি। সেই রাষ্ট্রপতিরাও এই অপ্রত্যাশিত সমস্যাগুলোর মোকাবেলা করতে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সির সাহায্য নিয়েছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩ সালে রুজভেল্ট তার শাসনামলে গ্রেট ডিপ্রেশন নামক শেয়ার বাজার ধ্বসজনিত সমস্যা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে কংগ্রেসের তত্ত্বাবধান ছাড়াই পূর্বের রাষ্ট্রপতিদের এই চলমান প্রথা অনুযায়ী জরুরি অবস্থা জারি করেন। অবশেষে ১৯৭৬ সালে কংগ্রেস এই জাতীয় জরুরি অবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দান করে। যার অর্থ হলো, সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে এই আইন জারির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বিশেষ কিছু ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবেন।
জাতীয় জরুরি আইন, ১৯৭৬
জাতীয় জরুরি আইন, ১৯৭৬ খতিয়ে দেখা যায়, এ আইন ঘোষণার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিগণ ১৩৬টি বিশেষ ক্ষমতা প্রাপ্ত হন। আর এই ক্ষমতাগুলোর মধ্যে ১৩টি ক্ষমতা অর্জনের জন্য কংগ্রেসের আলাদা ঘোষণা প্রয়োজন। তবে চাইলেই কোনো রাষ্ট্রপতি এই আইন জারি করতে পারেন না। জাতীয় জরুরি আইন ঘোষণা এবং বার্ষিক নবায়ন করতে হলে রাষ্ট্রপতিদের প্রথমে সংকট নিরসনের বিশেষ ক্ষমতা ও বিধানগুলো শনাক্ত করতে হবে।
“জাতীয় জরুরি অবস্থা চলাকালে প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই আমেরিকানদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগ এবং সমস্ত বেসামরিক বিমানবন্দর জব্দ করার ক্ষমতা রাখেন।”
জরুরি অবস্থা ঘোষণার পদ্ধতি
রাষ্ট্রের সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাষ্ট্রপতি যদি ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ঘোষণা করতে চান, তবে তাকে অবশ্যই কিছু আনুষ্ঠানিকতার ভিতর দিয়ে যেতে হবে। ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি আইন বলে, কোনো রাষ্ট্রপতি যদি জাতীয় জরুরী অবস্থা জারি করতে চান, তবে তাকে অবশ্যই জনসম্মুখে ঘোষণা করতে হবে যে তিনি জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করছেন। তবেই তিনি এই ঘোষণার মাধ্যমে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি পাওয়ারগুলো সক্রিয় করতে সক্ষম হবেন। তাকে আরো যেটা করতে হবে তা হলো, জরুরি অবস্থা চলাকালে প্রয়োগকৃত ক্ষমতাগুলোর তালিকা তৈরি করতে হবে এবং এ বিষয়ে কংগ্রেসকে অবহিত করতে হবে।
আর জারিকৃত এই অবস্থার স্থায়িত্বকাল কতদিন হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা একমাত্র রাষ্ট্রপতিরই রয়েছে। তিনি চাইলে যেকোনো সময় জরুরি অবস্থা তুলে নিতে পারেন কিংবা কংগ্রেসের অনুমোদন নিয়ে প্রতি বছর নবায়নের মাধ্যমে এই জরুরি অবস্থা বহাল রাখতে পারেন। তবে ১৯৮৫ সালে কংগ্রেস থেকে একটি ঘোষণা আসে, যা জরুরি অবস্থার নবায়ন প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করে দেয়। কেননা ইতোপূর্বে জরুরি অবস্থা নবায়ন করতে হলে হাউস ও সিনেটে পৃথক পৃথক প্রস্তাবনার প্রয়োজন হতো। কিন্তু ১৯৮৫ সালে এই ঘোষণায় কংগ্রেস জানায়, এখন থেকে জরুরি অবস্থা নবায়নের জন্য প্রেসিডেন্টকে আর এই পৃথক প্রস্তাবনার ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হবে না। এর পরিবর্তে একটি যৌথ প্রস্তাবনার মাধ্যমেই জরুরি অবস্থা নবায়ন করা যাবে।
ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি আইনে (এনইএ) প্রেসিডেন্ট ও তার মন্ত্রীপর্ষদকে কিছু বিধিমালা মেনে চলার আদেশ দেয়া আছে। আর তা হলো, জরুরি অবস্থা চলাকালে জারিকৃত সমস্ত আদেশ ও বিধান কংগ্রেসের অবগতির স্বার্থে রেকর্ড করে রাখতে হবে এবং এই বিধানগুলো কার্যকরের পেছনে ব্যয়কৃত খরচ সম্বন্ধেও কংগ্রেসকে তথ্য দিতে হবে।
ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি আইনের অধীনস্থ জরুরি ক্ষমতাগুলো
মানবদেহের কোষগুলোর মতো ন্যাশনাল ইমার্জেন্সির শরীরেরও বিদ্যমান রয়েছে বেশ কিছু ক্ষমতা, যা জরুরি অবস্থা চলাকালে প্রেসিডেন্টের অধীনস্থ থাকে। সংখ্যায় এগুলো প্রায় ১৪০টির মতো। জরুরি অবস্থা চলার সময়ে রাষ্ট্রপতি যে ক্ষমতাগুলো প্রয়োগ করবেন, সেগুলো এই তালিকার আওতাভুক্ত হতে হবে। তবে এর মধ্যে কিছু নাটকীয় ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি রয়েছে।
১৯৬৯ সালে আমেরিকার আলোচিত রাষ্ট্রপতি নিক্সন জরুরি অবস্থাকালে এক কাণ্ড করে বসেন। তিনি মানুষের উপর রাসায়নিক ও জৈব অস্ত্র প্রয়োগ নিয়ন্ত্রণকারী সকল আইন স্থগিত করে দেন।
১৯৭৭ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন ফোর্ড। সেসময় তিনিও এমন আরেকটি নাটকীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে বসেন। সে সময় ক্লিন এয়ার অ্যাক্টের সমস্ত মূল বিধানগুলো স্থগিত করে দেন। এরপর ১৯৮২ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রেগান তো এই ক্ষমতাবলে সরাসরি প্রতিরক্ষা বিভাগের তহবিলে হাত দিয়ে বসেন। তিনি সে সময় জরুরি সামরিক নির্মাণকাজের জন্য প্রতিরক্ষা বিভাগের তহবিল ব্যবহার করার অনুমতি দিয়ে বসেন।
এমন নাটকীয় ঘটনার এখানেই কিন্তু শেষ নয়। এমন অদ্ভুত ক্ষমতা প্রয়োগের ঘটনা আরো ঘটেছে। ২০০১ সালে টুইন টাওয়ার ধ্বংসের কথা কার না মনে আছে! সে সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ জুনিয়র। আমেরিকার এমন এক অতি সংকটময় মুহূর্ত মোকাবেলা করতে প্রেসিডেন্ট বুশ ১১ সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি জারি করে বসেন এবং এনইএ’র আওতায় সামরিক আইনের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কিত সকল আইনসহ বিভিন্ন আইন স্থগিত করে দেন। এর ৮ বছর পর ২০০৯ সালে ওবামা সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধে জরুরি অবস্থা জারি করেন, যা এ যাবতকালে জারিকৃত সকল ন্যাশনাল ইমার্জেন্সির বিষয় থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
চলমান ও উল্লেখযোগ্য কিছু ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি
১৯১৭ সাল থেকে আনঅফিসিয়ালী এবং ১৯৭৬ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অফিসিয়ালী ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি জারি হয়ে আসছে। এর সবগুলোই সংগঠিত হয়েছে মূলত আমেরিকার সংকটময় মুহূর্তে এবং এর সবগুলোই উল্লেখযোগ্য। তবে এর মধ্যে কিছু রয়েছে, যা ছিল অত্যন্ত কার্যকর এবং মনে রাখার মতো।
- ১৯৯৪ নভেম্বর সালের গণবিদ্ধংসী অস্ত্রের বিস্তার রোধে জারিকৃত ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি।
- ১৯৯৫ সালের জানুয়ারিতে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ায় হুমকিস্বরূপ সন্ত্রাসীদের সাথে সকল প্রকার আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করতে জারিকৃত ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি।
- ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার ফলে জারিকৃত ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি থেকে উদ্ভূত বিধানসমূহ।
- ২০০১ সালে সন্ত্রাসবাদের সমর্থনকারীদের সম্পত্তি, অর্থ জব্দ করতে জারিকৃত ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি।
- ২০০৮ সালের জুনে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সির মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া ও তার নাগরিকদের সাথে সম্মানের সহিত ক্রমাগত নিষেধাজ্ঞা।
- ২০১১ সালের জুলাইয়ে বহুজাতিক অপরাধী সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা।
- ২০১৫ সালে সাইবার ক্রাইমে জড়িত কতিপয় ব্যক্তির সম্পত্তি জব্দ করা।
এবার আমেরিকার বর্তমান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে জারিকৃত জরুরি অবস্থাগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক। জনাব ট্রাম্প তার শাসনামলের প্রথম দু’বছরেই তিনবার জারি করেছেন ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি। এর মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত হলো আমেরিকার আভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে হস্তক্ষেপের অপরাধে বিদেশী নাগরিকদের শাস্তির বিধান।
ট্রাম্পের শাসনামলে জারিকৃত জরুরী অবস্থাগুলো হলো,
- ন্যাশনাল ইমার্জেন্সির মাধ্যমে ট্রাম্প গুরুতর মানবাধিকার অপব্যাবহার অপরাধের সাথে কিংবা দুর্নীতিতে জড়িত ব্যক্তিদের সমস্ত সম্পত্তি জব্দ করার বিধান প্রয়োগ করেন।
- ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকার নির্বাচনে বিদেশীদের হস্তক্ষেপে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ট্রাম্প আরেকটি ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি আহ্বান করেন
- নিকারাগুয়া পরিস্থিতির সাথে জড়িতদের সম্পদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে ট্রাম্প একই বছরের নভেম্বরে আবার ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি জারি করেন।
এযাবৎ সংঘটিত ন্যাশনাল ইমার্জেন্সিগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এর বেশিরভাগই সংঘটিত হয়েছে বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্কিত অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে। তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রম ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি জারি করা হয় ২০০৯ সালে ওবামার শাসনামলে। এ আইনে আরো যে জিনিসটি রয়েছে তা হলো, ৫০টি রাজ্যের গভর্নরের নিজেদের রাজ্যে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি জারি এবং এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের নিকট সহায়তা চাওয়ার বিধান রয়েছে।