সমাজে ক্ষমতার উৎস কী অথবা কীভাবে এই ক্ষমতা কাজ করে তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন তাত্ত্বিকরা মত দিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই ক্ষমতার কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করেছে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রকে। ম্যাকিয়াভেলি তার ‘দ্য প্রিন্স’ বইয়ে সরকারের ইচ্ছানুযায়ী সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শনের ক্ষমতাকে ন্যায্যতা প্রদান করেছেন। অন্যদিকে থমাস হবস তার ‘Leviathan’ বইয়ে মানুষের খারাপ দিকগুলো ঠেকানোর জন্য একজন রাজার হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা তুলে দিয়েছেন।
ইতিহাসে বেশিরভাগ সময়েই তাত্ত্বিকরা ক্ষমতার সাথে রাষ্ট্রের যোগসূত্র স্থাপন করেছেন। কেউ কেউ ক্ষমতাকে সামাজিক কাঠামোর একটি উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, এই চিন্তাধারায় ক্ষমতা হচ্ছে এমন বস্তু যা কেউ নিজের মধ্যে ধরে রাখতে পারে এবং তা ব্যবহার করতে পারে। ষাটের দশক পর্যন্ত ক্ষমতা সম্পর্কীয় তত্ত্ব দু’ভাগে বিভক্ত ছিল: একটি হলো জনগণের ওপর সরকার বা রাষ্ট্রের ক্ষমতা, অন্যটি হলো বুর্জোয়াঁ ও প্রলেতারিয়েতের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের মার্কসীয় চিন্তাধারা। যা-ই হোক, এই তত্ত্বগুলো ছিল মূলত সামষ্টিক পর্যায়ের (Macro Level)।
কিন্তু ফরাসি চিন্তাবিদ মিশেল ফুকোঁ ক্ষমতাকে একটু ভিন্নভাবে দেখেছেন। তিনি জ্ঞানের মধ্যে ক্ষমতা খোঁজার কথা বলেছেন। অবশ্য ক্ষমতা সম্পর্কে এ ধরনের কথা নতুন নয়। কার্ল মার্ক্স ক্ষমতা এবং জ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক টেনে একে অভিহিত করেছেন আদর্শ হিসেবে। ম্যাক্স ওয়েবারও ‘সমাজে আমলাতান্ত্রিকতা যত বাড়বে, জ্ঞানও তত ক্ষমতা হিসেবে ব্যবহৃত হবে’ বলে মত দিয়েছেন।
ফুকোঁ মার্ক্স এবং ওয়েবারকে ছাড়িয়ে আরও একধাপ এগিয়েছেন, তার মতে ক্ষমতা গোপন এবং বিপদজনক, ক্ষমতাকে সত্য এবং ডিসকোর্সের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় এবং শরীর ও মনে ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটে। তার মতে, ক্ষমতা কেবল রাষ্ট্র বা পুঁজিপতিরা প্রয়োগ করে না, বরং সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্ষমতার প্রয়োগ দেখা যায়। তার বক্তব্য অনুযায়ী, “সবকিছু থেকে ক্ষমতা আসে, এবং সবকিছুর ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়।” ‘ক্ষমতা অস্ত্রের মতো, একে কেবল ধারণ করা যায় এবং প্রয়োগ করা যায়’- এই মতের বিরোধিতাও করেছেন তিনি। তার মতে, এটি ক্ষমতা নয়, বরং ক্ষমতা চর্চা করার সক্ষমতা। কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত তা ক্ষমতা হিসেবে গণ্য হবে না। অর্থাৎ, ক্ষমতা হচ্ছে এমন এক জিনিস যা কেউ ধারণ করতে পারে না, বরং ক্ষমতা হচ্ছে এমন কিছু যার সাহায্যে ভিন্ন ব্যক্তির ওপর কোনো কিছু করা হয়, এমন কিছু যা অন্যের কাজকে প্রভাবিত করতে সক্ষম।
ক্ষমতা সম্পর্ক
ক্ষমতাকে কোনো বস্তু হিসেবে চিন্তা না করে ফুকোঁ ক্ষমতাকে দেখেছেন সম্পর্ক হিসেবে। তিনি ক্ষমতার প্রকৃতি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন আধুনিক সমাজের বিভিন্ন স্তরে থাকা সম্পর্কের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ক্ষমতাকে অনুসন্ধান করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো ব্যক্তির সাথে রাষ্ট্রের ক্ষমতার সম্পর্ক আছে, আবার সেই ব্যক্তির সাথে তার ক্ষমতার সম্পর্ক আছে তার নিয়োগকর্তার, তার সন্তানের, তার গৃহকর্মীর, এবং যাবতীয় অন্যান্য সম্পর্কের।
ফুকোঁর মতে, সামাজিক বিন্যাস গঠনের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে ক্ষমতা। কিন্তু তার মতে, ক্ষমতার প্রকৃতি মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। মধ্যযুগীয় সমাজে ক্ষমতার ‘সার্বভৌম’ ব্যবহার ছিল নির্যাতন বা মৃত্যুদণ্ড, বিশেষ করে সাধারণ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ এভাবে তাদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতো। কিন্তু ইউরোপে এনলাইটেনমেন্টের পর সহিংসতার মাধ্যমে নির্যাতন অমানবিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং একইসাথে মানুষকে নিয়ন্ত্রণের জন্য অকার্যকর পদ্ধতি হিসেবে পরিগণিত হয়।
নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণ
আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠিন শারীরিক শাস্তির বদলে আরও প্রভাবশালী একটি প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, আর তা হলো শৃঙ্খলা (Discipline)। ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যম হিসেবে শাস্তির বদলে জেলখানা, পাগলাগারদ, হাসপাতাল কিংবা স্কুলের মতো প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যাতে করে মানুষকে আরও শৃঙ্খলাবদ্ধ করা যায়, বিশেষ করে এসব প্রতিষ্ঠানে শেখানো হয় কীভাবে কোনো আচরণ থেকে ব্যক্তিকে বিরত রাখা যায়। এসকল প্রতিষ্ঠান কেবল সীমালঙ্ঘন করার পথই বন্ধ করে দেয়নি, বরং আচরণ কীভাবে ঠিক করা যায় তা-ও নির্ধারণ করা যায় এবং সর্বোপরি ব্যক্তিকে নজরদারি এবং নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
নজরদারি করা জিনিসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আধুনিক সমাজে ক্ষমতা চর্চা করার বিবর্তনকে নির্দেশ করে। ইংরেজ দার্শনিক জেরেমি বেন্থামের প্যানোপটিকনের ধারণা থেকে ফুকোঁ অনুপ্রাণিত হন। প্যানোপটিকন হচ্ছে এমন একধরনের জেলখানা, যেখানে প্রহরীর ওয়াচটাওয়ারকে কেন্দ্র করে একটি সারিতে চারপাশে বৃত্তাকার অবস্থায় জেলখানার প্রতিটি সেল থাকে, একইসাথে প্রতিটি সেলের পেছন দিকে একটি জানালা থাকে, যাতে করে ঘরের কোনো জায়গা অন্ধকার না থাকে এবং প্রত্যেক অবস্থায় কয়েদীর ওপর সর্বক্ষণ নজরদারি করা যায়। কয়েদী কোনোভাবেই বুঝতে পারবে না কখন তার ওপর নজরদারি করা হচ্ছে বা কখন করা হচ্ছে না, ফলে তারা নজরদারির ভয়ে নিজেরাই নিজেদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। ক্ষমতা এখন আর জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে চর্চা করা হয় না, বরং এমনভাবে চর্চা করা হয় যাতে ব্যক্তির কাছ থেকে নির্দিষ্ট আচরণ করার সম্মতি আদায় করা হয়।
আচরণ নিয়ন্ত্রণ এবং ডিসকোর্স
ক্ষমতা চর্চার পদ্ধতি বা ‘ক্ষমতার প্রযুক্তি’ সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। পশ্চিমা সমাজে ব্যক্তির আচরণ নিয়ন্ত্রণ যতটা না করা হয় হুকুম দিয়ে, তার চেয়ে বেশি করা হয় ব্যক্তির আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে কোনো কর্তৃপক্ষ জনগণের ওপর কোনো কাজ করার আদেশ দেয় না, অথবা ভিন্ন রকম আচরণ করতে বাধাও দেয় না, বরং সমাজের জটিল ক্ষমতার সম্পর্ক এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে যে, সমাজের সাধারণ নাগরিকরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে থাকে।
সমাজে থাকা নীতি-নৈতিকতা, আদর্শ-মূল্যবোধ ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে এই নতুন ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগের বহিঃপ্রকাশ। ফুকোঁ একে অভিহিত করেছেন ‘ডিসকোর্স’ নামে। ডিসকোর্সকে সহজ ভাষায় বলা যায়, কোনো বিষয় সম্পর্কে কীভাবে কথা বলা হবে তার ধরন।
ফুকোঁ ডিসকোর্স সম্পর্কে বিভিন্নভাবে চিন্তা-ভাবনা করেছেন, এর আরও গভীরে ঢুকেছেন। প্রথমত, ভাষার সাথে চিন্তার বেশ বড় সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সবসময় কোনো একটি ভাষায় চিন্তা করি, এই ভাষাই আমাদের চিন্তাকে ঠিক করে দেয়। আবার আমরা কী চিন্তা করি, সেই চিন্তাটি কীভাবে করি, তা আমাদের ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। অর্থাৎ, ডিসকোর্স আমাদের ভাষা এবং চিন্তা-ভাবনার পদ্ধতি ঠিক করে দেয়।
দ্বিতীয়ত, কোনো ডিসকোর্স গ্রহণ করে নেওয়া ব্যক্তি সেই ডিসকোর্সের মধ্যে থাকার ফলে সে ঐ ডিসকোর্স অনুযায়ী পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করে থাকে। কেউ কোনো ডিসকোর্সের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলে, সে ঐ ডিসকোর্সের বাইরে চিন্তা-ভাবনা করতে পারে না, ফলে সে ঐ ডিসকোর্সের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখায়। যেমন ধরা যাক, ক্রুসেডের প্রতি মুসলমান ও খ্রিস্টানদের বিপরীত ডিসকোর্স। মুসলমানদের ডিসকোর্স অনুযায়ী, মুসলমানদের কাছ থেকে ইউরোপীয় খ্রিস্টানরা জেরুজালেম ‘দখল’ করে নেয় এবং পরবর্তীতে মুসলমানরা আবার তা ‘অধিকার’ করে। আবার উল্টোদিকে খ্রিস্টানদের ডিসকোর্স অনুযায়ী, মুসলমানরা তাদের পবিত্র ভূমি ‘দখল’ করে নেওয়ায় তারা ক্রুসেড পরিচালনা করে তা ‘অধিকার’ করে নেয়। যখন কেউ কোনো ডিসকোর্স গ্রহণ করে, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই ডিসকোর্স অনুযায়ী নিজের অবস্থান ঠিক করে নেয় এবং চিন্তা-ভাবনা করে, অনুভব করে এবং ব্যবহার করে।
তৃতীয়ত, ফুকোঁ দেখিয়েছেন যে, কোনো সামাজিক গোষ্ঠীর মধ্যে কোনো কিছু চাপিয়ে না দিয়ে ডিসকোর্স ঢুকিয়ে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
সমাজের চোখে গ্রহণযোগ্য কিছু বিশ্বাস-মূল্যবোধ ধীরে ধীরে বিবর্তিত করা হয়, ফলে সেই আদর্শ-বিশ্বাসই একসময় সমাজের প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। সেই আদর্শ-মূল্যবোধ অনুযায়ীই সমাজ ঠিক করে দেয় কোন কাজটি ভালো আর কোনটি খারাপ। অর্থাৎ, ভালো-খারাপ কাজের একটি লেবেল লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ব্যক্তি সেই ‘ডিসকোর্স’ অনুযায়ী তার নিজের জীবন ঠিক করে নেয়। এখানে ব্যক্তি বুঝতেও পারে না, সে ডিসকোর্সের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে এবং ডিসকোর্সের বাইরে থাকা আদর্শ-মূল্যবোধ কখনো তার চিন্তাতেও আসে না।
‘সত্য’ ডিসকোর্স
সমাজে থাকা ডিসকোর্স প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকে, যেহেতু এটি একইসাথে ক্ষমতা প্রদর্শনের একটি অস্ত্র এবং ক্ষমতার ফলাফল। মানুষের চিন্তাধারা এবং আচরণ ডিসকোর্স তৈরির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যেটি একসময় মানুষের বিশ্বাসে রূপ নেয়। এটি ঠিক করে দেয় কোনটি ঠিক আর কোনটি ভুল, ফলে ডিসকোর্স নিজেই ‘প্রতিষ্ঠিত সত্য’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় যাকে অগ্রাহ্য করা যায় না।
‘জ্ঞানই শক্তি’, ফুকোঁ এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, কেবল জ্ঞানই শক্তি নয়, বরং শক্তির মাধ্যমেও জ্ঞান উৎপাদন করা যায়। তিনি এই সম্পর্ককে অভিহিত করেছেন ‘পাওয়ার-নলেজ’ হিসেবে। বর্তমানে কোন জ্ঞান ঠিক আর কোন জ্ঞান ভুল, তা ঠিক করে দেওয়ার মাধ্যমে ক্ষমতার চর্চা করা হয়। যেটি ঠিক মনে হয়, সেটি ব্যতীত বাকি সব বাতিল করে দিয়ে সমাজে তথাকথিত ‘সত্য’ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
যেহেতু আগের মতো শাস্তিপ্রদানের মাধ্যমে ক্ষমতাচর্চার প্রকাশ করা হয় না, ডিসকোর্স উৎপাদনের মাধ্যমে ব্যক্তির আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তাই সরাসরি এই ডিসকোর্স তৈরির প্রভাব আঁচ করা যায় না। এবং এর কোনো কাঠামো বা এটি কোনো দর্শনযোগ্য বস্তু না হওয়ায় একে প্রতিহতও করা যায় না। ফুকোঁ দেখিয়েছেন যে, রাজনৈতিক প্রতিরোধ বা বিপ্লবের মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, কারণ এটি কেবল রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে। কিন্তু সমাজের প্রতিটি স্তরে চলা ক্ষমতাচর্চা এটি ঠেকাতে পারে না। তবে ফুকোঁ ডিসকোর্সকে প্রতিহত করার একটি উপায় বাতলে দিয়েছেন, আর তা হলো এর বিপরীত আরেকটি ডিসকোর্স তৈরি করা। ক্ষমতা প্রদর্শনের অস্ত্র হিসেবে তৈরি করা নতুন ডিসকোর্স যাদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে, তাদেরকে অবশ্যই একটি ক্ষমতাসম্পর্কে থাকতে হবে, এবং ক্ষমতাসম্পর্ক থাকলে অবশ্যই এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি হবে। যদি কোনো প্রতিরোধ না-ই আসে, তবে ক্ষমতাচর্চার কোনো মানেই হয় না।
প্রভাব
ফুকোঁর পাওয়ার রিলেশন এবং ডিসকোর্স সম্পর্কিত তত্ত্ব পরবর্তীতে অনেক তাত্ত্বিকই প্রত্যাখ্যান করেছেন একে অতিমাত্রায় অস্পষ্ট ও অনুমানকৃত বলে। যদিও তার লেকচার এবং লেখাগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং অনেকেই তাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রভাবশালী চিন্তাবিদ বলে মনে করেন। বিশেষ করে তার ‘ডিসকোর্স’ ভাবনা সমাজবিজ্ঞানে নতুন ধারার সূচনা করেছে। আধুনিক নারীবাদ, কুইয়ার তত্ত্ব, সংস্কৃতিবিদ্যাসহ বেশ কিছু তত্ত্ব ফুকোঁর তত্ত্বের কাছে ঋণী, বিশেষ করে কোনো চাপিয়ে দেওয়া ধারণা কীভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কীভাবে ডিসকোর্সের বাইরেও চিন্তা করা যায়, তা ফুকোঁই প্রথম দেখিয়েছেন।