২০২০ সালের করোনা মহামারির কারণে নেমে এসেছিল অর্থনৈতিক মন্দা। এমনকি এখনও সে মন্দাভাব পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ববাসী। প্রতি বছরই বিশ্বের আনাচে-কানাচে প্রত্নতাত্ত্বিকরা খুঁজে থাকেন মানবসভ্যতার কিংবা পৃথিবীর সঠিক ইতিহাস। প্রতি বছরই দুর্দান্ত আর দারুণ কিছু আবিষ্কার করে ফেলে এই প্রত্নতাত্ত্বিকের দল। কিন্তু গত বছর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে এই মহামারি। অসংখ্য প্রকল্পের কাজ বাতিল করা হয়েছে; চলমান প্রকল্পের কাজ কমিয়ে আনা হয়েছে; অথবা পরিপূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এত কঠিন একটা বছর হওয়া সত্ত্বেও, অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক আর ঐতিহাসিক আবিষ্কার ধুলোর আবরণ থেকে বেরিয়ে আলোর মুখ দেখেছে। নাজকার বিড়াল, আমাজনের গহীনে থাকা সিস্টিন চ্যাপেল অভ অ্যানশেন্ট আর্ট, সাকারা নেক্রোপলিসের মমি, কিংবদন্তি রমুলাসের সমাধিসহ আরো অনেককিছুই আবিষ্কার হয়েছে গেল বছর। আজকের আয়োজনটি এই সেরা ১০ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার নিয়েই।
সিস্টিন চ্যাপেল অভ অ্যানশেন্ট আর্ট
কলম্বিয়ান আমাজন
বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেইনফরেস্ট হচ্ছে আমাজন। কথিত আছে, এ বনের মাত্র ২০ শতাংশ জায়গাতেই কেবল মানুষের পা বাড়ছে। এর গহীনে লুকিয়ে আছে প্রাগৈতিহাসিক যুগের অজানা সব ইতিহাস। মুখে মুখে রটে যাওয়া কথা কখনো সত্য হয়; কখনো হয় না। তবে আমাজনের গহীনে যে প্রচুর ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে, তার প্রমাণ হলো গত বছর। ১২,৫০০ বছর আগেকার বরফযুগের এক প্রাগৈতিহাসিক চিত্রকর্ম পাওয়া গেছে কলম্বিয়ান আমাজনের সর্ব উত্তরের দিকে এক পাহাড়ের দেয়াল জুড়ে। কলম্বিয়ান আমাজনের এ অংশটা বিদ্রোহী গেরিলাদের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাদের থেকে অনুমতি নিয়ে তবেই সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে পেরেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
প্রাগৈতিহাসিক এ চিত্রকর্ম শোভা পাচ্ছে সুদীর্ঘ ৮ মাইল বা ১২.৯ কিলোমিটার পাথুরে এক ক্যানভাসে। ধারণা করা হচ্ছে, বরফযুগের চিত্রকর্মটির বয়স ১১,৮০০ থেকে ১২,৫০০ বছর। লাল গিরিমাটির সাহায্যে আঁকা হয়েছে এটি। পাহাড়ের দেয়ালে কিছু চিত্রকর্ম এতটা উঁচুতে অবস্থিত যে তা জমিনে দাঁড়িয়ে অবলোকন করা যায় না ঠিকভাবে। তাই ড্রোন চালিয়ে সেগুলোর ছবি তোলা হয়েছে। কাঠের উঁচু মাচা ব্যবহার করে যে এসব চিত্রকর্ম আঁকা হয়েছে, তা-ও ফুটে উঠেছে এ চিত্রকর্মে। একইসঙ্গে বরফযুগে বিচরণ করা সব প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী, যেমন- মাস্টোডন, দানব আকৃতির শ্লথ, কুমির, হরিণ, বানরসহ নাম না জানা বহু বন্য জন্তুর প্রতিকৃতি। এমনকি বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় অনেক প্রাণীরও দেখা মিলেছে।
সাকারা নেক্রোপলিসের মমি
কায়রো, মিশর
মিশর- যেখানে ছিল পৃথিবীর সবচাইতে প্রাচীন সভ্যতা। ধারণা করা হয়, মিশরীয় সভ্যতার অনেক নিদর্শনই এখনো চাপা পড়ে আছে মরুভূমির বালির নিচে। ২০২০ সালের গ্রীষ্মে সেরকমই একটি আবিষ্কার করেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। কায়রোর দক্ষিণে সাকারা মূলত একটি নেক্রোপলিস। যেখানে মিশর সভ্যতার অসংখ্য গণকবর রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। আর সেই সাকারা থেকেই ১০০টি প্রাচীন কফিন উদ্ধার করেছেন মিশরীয় প্রত্নতাত্ত্বিক কর্মকর্তারা। কফিনগুলোর কয়েকটির মধ্যে সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় কিছু মমিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া, ৪০টি সোনার ভাস্কর্য-মূর্তি এবং প্রতিমা আবিষ্কৃত হয়েছে। কাঠের কফিন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র সমাহিত করা হয়েছিল টলেমাইক পিরিয়ডে, যা ৬৬৪ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪ শতাব্দী পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।
দুই দেবতার সংমিশ্রিত এক অবতার, মিশরীয় দেবতা পাতাহ-সেকারের মূর্তিও পাওয়া গেছে এ অঞ্চল থেকে। পাতাহ ছিলেন মেমফিসের দেবতা এবং সেকার (সোকার বা সাকার নামেও পরিচিত) ছিলেন সাকারার দেবতা। ধারণা করা হয়, সেই সময়টাতে মিশর বাইরের শক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল; যেমন – আসিরিয়ান, পারসিয়ান এবং গ্রিক। এই প্রাচীন সমাধিস্থলে বিশ্বের সবচাইতে পুরনো ইলাস্ট্রেশন বই, রহস্যময় এক ব্যক্তির সমাধিকক্ষ এবং আরো অন্যান্য রহস্যময় জিনিসের সন্ধান মিলেছে। যেহেতু প্রাচীনকাল থেকে এখন অবধি মিশরের নিদর্শন চুরি ঘটনা চলমান, তা সত্ত্বেও এমন একটা আবিষ্কার সত্যিকার অর্থেই অবিস্মরণীয়।
রোমুলাসের সমাধি
রোম, ইতালি
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে একদল প্রত্নতাত্ত্বিক ঘোষণা দেন, তারা রোমান ফোরামের সিনেট হাউজের নিচে কিংবদন্তি রোমুলাসের সমাধির সন্ধান পেয়েছেন। কিংবদন্তি অনুসারে, ৭৫৩ সালে, অর্থাৎ ৮ম শতকে রোমুলাসের হাতেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল রোম শহর। রোমুলাস এবং রেমুস- দুই ভাইকে শিশু অবস্থায় নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে শিশু দুটোকে দত্তক নেয় এক মায়া নেকড়ে। কে হবে শহরের রাজা কিংবা কোথায় হবে শহরের অবস্থান, এ নিয়ে বিতর্কে রোমুলাস হত্যা করেন নিজের ভাই রেমুসকে এবং নিজেকে রোমের সম্রাট বলে ঘোষণা করেন। মূলত, রোমুলাস থেকেই রোম শব্দের উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়। যদিও, বেশিরভাগ ইতিহাসবিদই গল্পটিকে পৌরাণিক কাহিনী বলে উড়িয়ে দেন এবং রোমুলাস বলে কারো অস্তিত্ব নেই বলেই স্বীকৃতি দেন। কিন্তু, প্রাচীন রোমানরা ব্যাপারটিকে গুরুত্বসহকারেই নিয়েছিল।
আর সেজন্যই রোমুলাসের সমাধি তারা শহরের সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থান রোমান ফোরামের সিনেট হাউজের নিচে করেছিল। সমাধির ভেতরে প্রত্নতাত্ত্বিকরা, একটি ফাঁকা সারকোফ্যাগাস পেয়েছেন; যা ৪.৫ ফুট লম্বা (১.৪ মিটার)। এটি নির্মাণ করা হয়েছিল আগ্নেয়গিরির পাতলা শিলাখণ্ড ভেঙে, যা টাফ নামে পরিচিত। বাংলায় একে চুনাপাথরও বলা হয়ে থাকে। এটি উদ্ধার করা হয়েছে রোমান ফোরামের তলদেশে ক্যাপোতোলিনে হিল নামক পাহাড়ের চূড়া হতে, যা রোমের মূল সাত পাহাড়ের অন্যতম একটি। থ্রিডি লেজার স্ক্যান করে বর্তমানে এ সমাধি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর তথ্য পাবে বিশ্ববাসী।
নাজকার বিড়াল
নাজকা, পেরু
পেরুর নাজকা লাইন ইতোমধ্যেই ইউনেস্কো কর্তৃক ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। সম্প্রতি সেখানকার এক পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করতে গেলে প্রায় দু’ হাজার বছর আগেকার একটি জিওগ্লিফের সন্ধান মেলে। জিওগ্লিফটার অনেকটাই ক্ষয়ে গেছে এবং খানিকটাই কেবল দৃশ্যমান হয়েছিল। তবে সংরক্ষিত কাজের মাধ্যমে সেটির একটি পূর্ণ চিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। পাহাড়ের গায়ে অপরিণত হাতের সেই আঁকিবুঁকি আসলে একটা বিড়ালের প্রতিচ্ছবি। অবশ্য দেখে মনে হয়, যেন কোনো বাচ্চা ছেলে অন্যমনস্কভাবে হিজিবিজি কেটেছে।
কর্মরত এবং গবেষণারত প্রত্নতাত্ত্বিকরা অনুমান করছেন যে, জিওগ্লিফটি খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ থেকে ১০০ শতাব্দীর আশেপাশে নির্মাণ করা হয়েছিল। কেননা, নাজকা লাইনের বেশিরভাগ রেখাসমূহ বা জিওগ্লিফের নির্মাণকাল ছিল এর আশেপাশেই। ১২০ ফুট লম্বা এই বিড়ালের জিওগ্লিফটি আবারও প্রত্নতাত্ত্বিক আর ইতিহাসবিদদের আগ্রহ উসকে দিয়েছে। কেননা, এই নাজকা লাইনে এখনো লুকিয়ে রয়েছে হাজার বছরের অমীমাংসিত রহস্য। আর তাই, গবেষণাও চলছে এই বিড়ালসহ পুরো নাজকা লাইনের, নতুন করে নতুন উদ্যমে।
নারী শিকারী
আন্দিজ পর্বতমালা, দক্ষিণ আমেরিকা
সভ্যতার ইতিহাসে এতদিন একথাই প্রচারিত হয়ে এসেছে যে, পুরুষরা বড় শিকারে নিয়োজিত থাকত এবং নারীরা শাকসবজি এবং ফলমূল সংগ্রহ করত। কিন্তু ২০২০ সালে এসে এ তথ্যকে ভুল প্রমাণ করে দিলেন একদল ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষক। পেরুতে তারা এমন একটি সমাধি পেয়েছেন, যা প্রায় ৯ হাজার বছরের বেশি পুরনো এবং সমাধিটি একজন শিকারী নারীর। প্রাচীনকালে বিশ্বাসমতে, এ সমাধিতে ছিল শিকার করার সকল জিনিসপত্র; যার মধ্যে পাথরের সূক্ষাগ্র অস্ত্র এবং পাথরের ধারালো ফলা ছিল। সম্ভবত এই শিকারী ভিকুনাস প্রাণী শিকার করেছিলেন, যেগুলো আদতে বুনো আলপাকাদের পূর্বপুরুষ।
এই শিকারীর দেহাবশেষ যারা খনন করেছেন, তারা বিশ্বাস করেন না যে, এটি একটি অস্বাভাবিক ঘটনা। কেননা, পশ্চিম গোলার্ধে খনন করে ৪০০টিরও বেশি কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছিল। সেগুলো বিশ্লেষণ করে তারা জানতে পেরেছেন যে, ওগুলোর মধ্যে ২৭টি কবরে বড় শিকার ধরার মতো অস্ত্র ও সরঞ্জাম ছিল। আর সেই ২৭টি কবরের ১১টিই ছিল নারী শিকারীর কবর। এতে করে এটাই প্রমাণিত হয় যে, পশ্চিম গোলার্ধে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও শিকারে নামত।
অ্যাসিরিয়ান রক প্যানেল
কুর্দিস্তান, ইরাক
অ্যাসিরিয়ান দেবদেবীদের খোদাই করা প্রাচীন ১০টি রক প্যানেলের সন্ধান পাওয়া গেছে একটি খালে, যা প্রায় ২,৭০০ বছর আগেকার। প্রধান অ্যাসিরিয়ান দেবতা আশুরের খোদাই করা প্রতিকৃতি আছে, যাকে দেখা যাচ্ছে একটি ড্রাগনের ওপর। সেখানে আশুরের স্ত্রী মুলিসো বিদ্যমান, যিনি একটি রাজ সিংহাসনে বসে আছেন সঙ্গে একটি সিংহ নিয়ে। অন্যান্য চিত্রকর্মের মধ্যে সূর্যদেবতা শামাস ঘোড়ায় চড়ে আছেন, শিংযুক্ত সিংহের উপর চাঁদ দেবতা সিন। সব দেবতাদের প্রতিকৃতিই খালের জল প্রবাহের দিকে মুখ করা।
ধারণা করা হচ্ছে, এই খাল আর রক প্যানেল তৈরি করা হয়েছিল রাজা দ্বিতীয় সারগনের রাজত্বকালে; যা খ্রিষ্টপূর্ব ৭২২ থেকে ৭০৫ শতাব্দীকালে। কেননা, রক প্যানেলে দেবদেবীদের শোভাযাত্রার শুরু এবং শেষে রাজা সারগনের দেখা মেলে। ইরাকের কুর্দিস্তানের মোসুল নামক এলাকায় এ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া গেছে। যদিও এর খনন কাজটা শুরু হয়েছিল ২০১২ সালে। কিন্তু এর পরপরই আইএসআইএস নামক সন্ত্রাসী সংগঠন এ জায়গা দখল করে কাজ বন্ধ করে দেয়। ফলে, গত বছর গবেষণার কাজ সম্পন্ন হলেও এখনো অনেককিছুই অনাবিষ্কৃত রয়েছে; এমনকি অনেককিছু ধ্বংসও হয়ে গেছে।
ম্যামথের অবয়ব ও হাড়
রাশিয়া
রাশিয়ার একটি বৃত্তাকার কাঠামোর মধ্যে কমপক্ষে ৬০টি ম্যামথের দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে। বলগা হরিণ, ঘোড়া, ভালুক, নেকড়ে, লাল শেয়াল, মেরু শেয়াল এবং আরো অন্যান্য অনেক নাম না জানা কিংবা বিলুপ্ত প্রাণীর হাড় দিয়ে কাঠামোটি গঠন করা হয়েছিল; অন্তত প্রত্নতাত্ত্বিকবিদদের তা ধারণা। প্রায় ২০ হাজার বছর আগেকার এই কাঠামোটি ৩৬ ফুট (১১ মিটার) ব্যাসের এবং খুব সম্ভবত প্রাণীদের চামড়া দিয়ে নির্মিত একটি ছাদের ব্যবস্থাও ছিল এখানে।
তবে কাঠামোটি তৈরি করার উদ্দেশ্য এখনো এক রহস্য। সম্ভবত এটি ধর্মীয় ও শাস্ত্রীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য, কিংবা হতে পারে খাবার মজুদের জন্যে। অবশ্য, কিছু প্রাণীর হাড়ের সঙ্গে মাংসের টুকরো এখনো সংযুক্ত; যে কারণে কাঠামোটি ব্যাপক দুর্গন্ধময়। আবার কিছু এমনও হাড় পাওয়া গেছে, যেগুলো একসঙ্গে জোড়া দেয়া, আর তা কেবল তখনই সম্ভব, যদি হাড়ের উপর মাংস থেকে থাকে। তাই, প্রত্নতাত্ত্বিকদের বিশ্বাস, অনুসন্ধানে আরো দারুণ তথ্য বেরিয়ে আসবে সামনে।
ভাইকিংদের লংহাউজের সন্ধান
স্টোডভারফিওরদর, আইসল্যান্ড
২০২০ সালের জুন মাসে, আইসল্যান্ডের একদল প্রত্নতাত্ত্বিক নবম শতাব্দীতে তৈরী একটি লংহাউজের সন্ধান পান, যা প্রায় ১৩০ ফুট লম্বা (৪০ মিটার)। আইসল্যান্ডে ভাইকিংদের পাওয়া অন্যান্য অবকাঠামোর মধ্যে এটাই বেশ আগেকার বা প্রাচীন। প্রত্নতাত্ত্বিকের দল লংহাউজে অসংখ্য অলঙ্কারসমৃদ্ধ অসংখ্য পুঁতিমালা এবং মুদ্রা খুঁজে পেয়েছেন।
অনুসন্ধানে রোমান ও মধ্যপ্রাচ্যের রৌপ্যমুদ্রার পাশাপাশি হ্যাকসিলভারও পাওয়া গেছে; যা মূলত রূপোর টুকরো বিশেষ, ভাইকিংস এবং অন্যরা মুদ্রা হিসেবে এটাকে চালাত। আরো পাওয়া গেছে কাঁচের গোলক, আংটি, বাটখারা এবং স্বর্ণের একটি ক্ষুদ্র অংশ। এখানে বসবাসকারী ভাইকিংরা সম্ভবত তিমি ও সিল মাছের চামড়া এবং মাংসের ব্যবসা করে জীবনযাপন করত।
চৈনিক সভ্যতার পাখির ভাস্কর্য
হেনান প্রদেশ, চায়না
কালো রঙের হাড় থেকে খোদাই করা প্রাচীন প্রস্তরযুগের ক্ষুদ্র প্রস্তরমূর্তিটি খুব বেশি চিত্তাকর্ষক নয়। তবে এটা ১৩,৫০০ বছর আগেকার। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, এটিই পূর্ব এশিয়ার সবচাইতে প্রাচীন থ্রি-ডি মডেল আর্টের উদাহরণ। এ প্রস্তরমূর্তির তলদেশ, এতে যে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে, তার প্রমাণ দেয়। বোঝা যায়, শিল্পী খোদাইশিল্পে দারুণ পারদর্শী ছিলেন। পাখিটি মূলত একটি স্তম্ভমূলের উপর সাঁটা, যা প্রাচীনকালের অজানা কোনো এক ঐতিহ্যকে ইঙ্গিত করে।
প্রাচীন মায়া সভ্যতার হারানো রাজধানী
চিয়াপাস, মেক্সিকো
ব্রাউন ও ব্র্যান্ডেস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি দল, প্রাচীন মায়া সভ্যতার হারানো রাজধানীর সন্ধান পেয়েছেন। মেক্সিকোর একটি পশুপালন কেন্দ্রের পেছনে উঠোনে সন্ধান পাওয়া গেছে এ সভ্যতার রাজধানীর ধ্বংসাবশেষের। নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক চার্লস গোল্ডেন এবং জৈব প্রত্নতত্ত্ববিদ অ্যান্ড্রু শেরার বিশ্বাস করেন, এ সাইটটি মূলত প্রাচীন মায়া সভ্যতার রাজধানী, যা এককালে কালের অতলে হারিয়ে গিয়েছিল।
সাইটটির নাম দেয়া হয়েছে লাকানিয়া জেলটেল। ধারণা করা হচ্ছে, এটি সাক টিজাই রাজ্যের রাজধানী ছিল,যা বর্তমানে মেক্সিকোর চিয়াপাস শহরের অন্তর্গত। খননকাজ চালালে এখানে মায়া সভ্যতার দারুণ সব আবিষ্কার বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন প্রত্নতাত্ত্বিক দলের লোকেরা।