১৯৪৯ সালে যখন মাও সে তুংয়ের হাত ধরে চীন একটি স্বাধীন কমিউনিস্ট রাষ্ট্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়তো অদূর ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী মিত্রদেশ পেতে যাচ্ছে। চীন-সোভিয়েত মৈত্রী পশ্চিম ইউরোপ ও আমেরিকার পুঁজিবাদী জোটের বিরুদ্ধে বেশ বড় ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলবে, এরকমটা ধারণা করাটা সেসময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিলে খুব অমূলক ছিল না। কিন্তু দুই দেশের সম্পর্ক এক দশক পার হতে না হতেই তিক্ততায় পর্যবসিত হয়। এমনকি সীমানা নিয়ে বড় ধরনের যুদ্ধের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী দুটো কমিউনিস্ট দেশের মধ্যে!
১৯১৭ সালে অক্টোবর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে লেনিন ও তার বলশেভিক বিপ্লবীরা জারকে উৎখাত করে রাশিয়ায় কমিউনিস্ট শাসনব্যবস্থার গোড়াপত্তন করেন। এই ঘটনা ছিল আধুনিক পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাগুলোর একটি। শত শত বছর ধরে ইউটোপিয়ায় যে সাম্যবাদী, বৈষম্যবিরোধী ও শ্রেণীহীন একটি রাষ্ট্রের কথা চিন্তা করেছিলেন পৃথিবীর বিখ্যাত চিন্তক ও তাত্ত্বিকেরা, লেনিনের অক্টোবর বিপ্লবের মাধ্যমে সে ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রথমবারের মতো চিন্তার জগত থেকে বাস্তবে রূপ নেয়। পৃথিবী প্রথমবারের মতো দেখতে পায় এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে পুঁজি কোনো ব্যক্তির হাতে সংরক্ষিত থাকছে না, রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করছে। পুঁজিবাদী সমাজে আয়বৈষম্যের ফলে যে শ্রেণীর উদ্ভব হয় এবং অভিজাত ও বুর্জোয়ারা শ্রমশোষণের মাধ্যমে সর্বহারা দরিদ্রদের উপর আধিপত্য জারি রাখে, এই ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থায় তার কোনো অস্তিত্বই ছিল না।
লেনিনের রুশ কমিউনিস্ট পার্টি অক্টোবর বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়ায় শাসনক্ষমতা দখল করার পর ১৯১৯ সালে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল বা কমিন্টার্ন (Comintern) প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। এই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় বুর্জোয়াদের উৎখাত করে কমিউনিস্ট শাসনব্যবস্থার গোড়াপত্তনের জন্য সাধারণ জনগণকে সাহায্য করা। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা কিংবা পরবর্তীতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয়ার ক্ষেত্রে রাশিয়ার কমিন্টার্ন খুব জোরালো ভূমিকা পালন করে। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (Chinese Communist Party বা CCP) পরবর্তী এক দশক ধরে রাশিয়ার নির্দেশনাতেই রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়েছে। ১৯৩০ এর দশকে মাও সে তুং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির দায়িত্ব গ্রহণ করার পর কমিন্টার্নের ভূমিকা ছোট হয়ে আসে, মাও সে তুং বিপ্লবের জন্য চীনা কৃষকদের প্রস্তুত করেন।
১৯৪৯ সালে কুয়োমিনতাং সরকারকে তাইওয়ানে হটিয়ে দিয়ে মাও সে তুং কমিউনিস্ট চীনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই বছরের শেষের দিকে তিনি রাশিয়ান কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নেতা জোসেফ স্ট্যালিনের সাথে মস্কোতে দেখা করেন। তার এই সফর ছিল চীন ও সোভিয়েত রাশিয়া উভয় দেশের জন্যই খুব দরকারি। এই সফরের সময় রুশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা স্ট্যালিনের সাথে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মাও সে তুং দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তিতে দুই দেশ যদি বিদেশি আক্রমণের শিকার হয়, তবে একে অপরকে সামরিক সহায়তার বিধান রাখা হয়। এছাড়াও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা ও কমিউনিজম এগিয়ে নিতে দুই দেশের যৌথ প্রচেষ্টার কথাও বলা হয়েছিল। জোসেফ স্ট্যালিনের সাথে মাও সে তুংয়ের করা চুক্তির ফলে চীনের অর্থনীতি বেশ লাভবান হয়। চীন চুক্তির পর ৩০০ মিলিয়ন ডলার লাভ করে। এছাড়া হাজার হাজার সোভিয়েত গবেষক, বিজ্ঞানী ও ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টকে চীনে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এদের কাজে লাগিয়ে চীনে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে, টেকসই অর্থনৈতিক অবকাঠামো গড়ে উঠতে থাকে।
কোরিয়া উপদ্বীপের যুদ্ধের সময় উত্তর কোরিয়ার পক্ষে চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়ন– দুটি দেশই অংশগ্রহণ করে। মার্কিন সহায়তাপ্রাপ্ত পুঁজিবাদী দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে চীন সেনাবহর ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়ে দিয়ে উত্তর কোরিয়াকে সহায়তা করে। অপরদিকে রাশিয়া চীনের অনুরোধে সেনাবহর না পাঠিয়ে শুধু সামরিক যুদ্ধবিমান ও অস্ত্রশস্ত্র পাঠিয়েই নিজেদের দায়িত্ব পালন করা শেষ করে। কোরিয়া যুদ্ধে যেহেতু পুঁজিবাদ বনাম কমিউনিস্ট শাসনব্যবস্থার শক্তিশালী দেশগুলো জড়িয়ে পড়ে, তাই চীন মোটেও এই যুদ্ধকে হালকাভাবে নেয়নি। অসংখ্য চীনা সৈন্য উত্তর কোরিয়ার পক্ষে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের গা-ছাড়া ভাব চীনকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। ১৯৫০ এর দশকে কমিউনিস্ট রাষ্ট্র হিসেবে যাত্রা শুরু করা চীনের অর্থনীতি তখনও কোনো শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়ানো ছিল না। এই যুদ্ধের কারণে চীনের অর্থনীতির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়।
স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে নিকিতা খ্রুশ্চেভ সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পার্টির ২০তম কংগ্রেসে ‘অন দ্য কাল্ট অব পার্সোনালিটি এন্ড ইটস্ কনসিকোয়েন্সেস’ নামে একটি গোপন ভাষণ দেয়ার আগপর্যন্ত সবাই তাকে স্ট্যালিনের খুব কাছের লোক হিসেবেই জানতো। কিন্তু গোপন ভাষণ দেয়ার পর সবাই আশ্চর্য হয়ে যায়। ভাষণে তিনি স্ট্যালিনের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। স্ট্যালিনের নিজেকে ‘কাল্ট ফিগারে’ পরিণত করা কিংবা কমিউনিস্ট পার্টিতে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার নামে লাখ লাখ পার্টি সদস্য ও সাধারণ মানুষকে গুলাগে পাঠিয়ে বা বিনাবিচারে হত্যা করে ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য স্ট্যালিনকে রীতিমতো ধুয়ে দেন তিনি।
নিকিতা খ্রুশ্চেভের বক্তৃতা চীনা কমিউনিস্ট পার্টিতে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। স্ট্যালিনের মতোই মাও সে তুং চীনে নিজেকে এক ‘কাল্ট ফিগার’ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। চীনের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে মোটাদাগে স্ট্যালিনের নীতিগুলোকেই অনুসরণ করা হয়েছিল। মাও সে তুং অসংখ্যবার প্রকাশ্যে সোভিয়েত নেতা স্ট্যালিনের প্রশংসা করেছেন। সেই স্ট্যালিনের পরবর্তী নেতা খ্রুশ্চেভ যখন স্ট্যালিনকে সমালোচনায় ধুয়ে দেন, তখন মাও সে তুং ক্ষুব্ধ হন। তার মনে হয়েছিল, খ্রুশ্চেভ তার পূর্বসুরির রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। এতে করে চীন-সোভিয়েত সম্পর্কে ভাটা পড়ে।
১৯৬২ সালে কিউবায় সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক মিসাইল স্থাপন করে। এই ঘটনার পর স্নায়ুযুদ্ধ নতুন মাত্রা লাভ করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের আশঙ্কা ছিল ফিদেল ক্যাস্ট্রোর কমিউনিস্ট কিউবায় হয়তো আমেরিকা সামরিক আগ্রাসন চালাতে পারে, তাই তারা তা প্রতিরোধের জন্য পারমাণবিক মিসাইল স্থাপন করে। পরে আমেরিকা যখন সোভিয়েত ইউনিয়নকে নিশ্চয়তা দেয় যে তারা কিউবায় সেরকম কিছু করবে না তখন সোভিয়েত রাশিয়া মিসাইলগুলো সরিয়ে নেয়। এই ঘটনায় চীন সোভিয়েত রাশিয়ার প্রতি প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান মাও সে তুং এই ঘটনাকে আখ্যায়িত করেন ‘পুঁজিবাদী মার্কিনীদের হুমকিতে সোভিয়েতদের ভীত হওয়ার ঘটনা’ হিসেবে। অর্থাৎ মার্কিন সামরিক বাহিনীর ভয়ে ভীত হয়েই কিউবা থেকে সোভিয়েত রাশিয়া নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। সোভিয়েত নেতা নিকিতা খ্রুশ্চেভও মাও সে তুংয়ের এই ধরনের মন্তব্যকে সহজভাবে নেননি। ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও তলানিতে নেমে যায়।
বাস্তবেও নিকিতা খ্রুশ্চেভের সময় সোভিয়েত রাশিয়া পুঁজিবাদী আমেরিকা ও তার মিত্রদের সাথে সরাসরি সামরিক সংঘাত এড়িয়ে চলার নীতি গ্রহণ করে। কোরিয়া যুদ্ধের সময় ক্রুশ্চেভ সরাসরি সামরিক সংঘাত এড়িয়ে চলার যুক্তি প্রয়োগ করেই সোভিয়েত সৈন্যদের কোরিয়া উপদ্বীপে পাঠাননি। তার আশঙ্কা ছিল আমেরিকার সাথে যেকোনো সংঘাত পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নেবে, যেটি কারও জন্যই ভালো হবে না। অপরদিকে মাও সে তুংয়ের চীন এ ব্যাপারে কট্টর অবস্থান নেয়। তাদের মতে, দরকার হলে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে হলেও পুঁজিবাদী বুর্জোয়াদের দমন করে বিপ্লবের লাল ঝান্ডা উঁচু রাখতে হবে। আর সামরিক দিক থেকে যেহেতু সোভিয়েত রাশিয়া আমেরিকার সাথে সমানে সমানে পাল্লা দিচ্ছিল, তাই সোভিয়েতদের কাছে তাদের প্রত্যাশাও ছিল বেশি। কিন্তু সোভিয়েত রাশিয়া পুঁজিবাদী আমেরিকার সাথে সহাবস্থানের নীতি গ্রহণ করায় চীন তা মেনে নিতে পারেনি।
১৯৪৯ সালের শেষের দিকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মাও সে তুং যখন মস্কো সফর করছিলেন, তখন সোভিয়েতরা তাকে যে সম্মান দিয়েছিল সেটি তার যথেষ্ট মনে হয়নি। পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হিসেবে তিনি আরও বেশি সম্মান প্রত্যাশা করেছিলেন। এ কারণেই হয়তো নিকিতা খ্রুশ্চেভ যখন ১৯৫৮ সালে চীনে আসেন, তখনও তাকে পর্যাপ্ত সম্মান দেয়া হয়নি। এমনকি দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় মাও সে তুং কূটনৈতিক শিষ্টাচার ভঙ্গ করেছিলেন, ঔদ্ধত্য ও দাম্ভিকতার সাথে খ্রুশ্চেভের যৌথ সামরিক প্রকল্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে খ্রুশ্চেভ পরবর্তীতে যে সোভিয়েত সামরিক ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টারা চীনে অবস্থান করছিলেন, তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নেন। চীনের অবকাঠামোগত অনেক প্রকল্প থমকে গিয়েছিল এতে।
এতেগুলো ঘটনার পর চীন-সোভিয়েত সম্পর্ক একেবারে বিপরীত আকার ধারণ করে। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধে সোভিয়েত রাশিয়া তার মতাদর্শিক মিত্র চীনকে ছেড়ে ভারতকে সমর্থন দিলে দুই দেশের সম্পর্ক ছিন্ন হতে আর বেশি দেরি ছিল না। ১৯৬৪ সালে মাও সে তুং মস্কোর সাথে চীনের সমস্ত কূটনৈতিক বন্ধনের ইস্তফা টানেন ও মস্কোতে কর্মরত চীনা কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করে নেন। সেই সাথে রাশিয়ার অধীনে থাকা বিতর্কিত পুরোনো জায়গার দাবি নিয়ে হাজির হন। সামরিক সংঘাত এড়াতে দুই পক্ষই অনেকবার আলোচনার টেবিলে বসে, কিন্তু সবগুলো আলোচনাই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ১৯৬৮ সালে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের উশুরি নদীর দুই পাশে দুই দেশের প্রায় দেড় মিলিয়ন সেনা অবস্থান নিলে দুই সাবেক মিত্রদেশের সামরিক সংঘাত অনিবার্য হয়ে ওঠে। ১৯৬৯ সালের দিকে ঝেনবাও দ্বীপে প্রথম সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। কিন্তু পরবর্তীতে দুই পক্ষই বড় ধরনের যুদ্ধ এড়িয়ে যায়।
মিখাইল গর্বাচেভের সময় আবার চীন-সোভিয়েত সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা পায়। ১৯৮৯ সালে গর্ভাচেভের চীন সফরের পরিকল্পনাকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি সাদরে আমন্ত্রণ জানায়। পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে সাংবাদিকেরা চীন-সোভিয়েত সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক মুহুর্ত ধারণ করতে বেইজিংয়ে হাজির হন। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে আর কোনো বড় ধরনের তিক্ততার সৃষ্টি হয়নি। বর্তমানে রাশিয়া আবার বড় খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বমঞ্চে আবির্ভূত হচ্ছে, অপরদিকে চীনও অর্থনৈতিক দিক থেকে আমেরিকাকে টপকে বিশ্বশক্তি হওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। দুই দেশের স্বাক্ষরিত অর্থনৈতিক চুক্তিগুলো তাদের পুরনো সম্পর্ককে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আমেরিকার নেতৃত্বে থাকা পুঁজিবাদী সমাজ চীন-সোভিয়েত দ্বন্দ্বকে শুরু থেকে উপভোগ করেছে। কারণ স্নায়ুযুদ্ধের সময় দুটি দেশ পুঁজিবাদকে রুখে দিতে একাট্টা হয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীন যদি সেসময় নিজেদের বন্ধন ছিন্ন না করতো তাহলে স্নায়ুযুদ্ধের ফলাফল অন্যরকম হতে পারতো। চীন হাতছাড়া হবার ফলেই সোভিয়েত রাশিয়া মোটামুটি বৈশ্বিক পরিমন্ডলে একা হয়ে পড়ে, এই সুযোগ আমেরিকা কাজে লাগায়। বর্তমানে আবার দুটি দেশ নিজেদের সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করছে। সামনে হয়তো আবারও আমেরিকার বিপক্ষে ভূরাজনৈতিক বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুটি দেশকে এক হয়ে কাজ করতে দেখা যাবে।