অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে বৃষ্টিবিঘ্নিত ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে বৃষ্টি আইনে ১৯ রানে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জিতলো অস্ট্রেলিয়া। ত্রিদেশীয় সিরিজের গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের সব ক’টি ম্যাচে জয় পেয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড মাত্র একটি জয় নিয়ে রান রেটের হিসাবে এগিয়ে থেকে ফাইনাল নিশ্চিত করে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ মোকাবেলায় ২৪৩ রান করেও সাত বল বাকি থাকতেই ম্যাচ হেরেছিলো নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও হাতের মুঠো থেকে ম্যাচ ফসকে যায় নিউজিল্যান্ডের। নিজেদের মাটিতে টানা দুই হারে কিছুটা ব্যাকফুটে ছিলো কিউইরা।
ফাইনালে ইডেন পার্কের ছোটো মাঠে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ছন্দে থাকা দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও কলিন মুনরো এদিনও দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। এই দুজন মাত্র ২৭ বলে ৪৮ রান যোগ করেন। গাপটিল ১৫ বলে ২১ রান এবং মুনরো ১৪ বলে ২৯ রান করে ফিরে গেলে ছন্দ হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। অ্যাস্টন অ্যাগার, অ্যান্ড্রু টাই ও কেন রিচার্ডসনের বোলিং তোপের মুখে পড়ে মাত্র ১১০ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে বসে নিউজিল্যান্ড। অ্যাগার মাত্র সাত বলের ব্যবধানে তিন উইকেট শিকার করে নিউজিল্যান্ডের মিডল অর্ডারে ধস নামান।
নবম উইকেট জুটিতে ইশ সৌদির সাথে ৩৮ রান যোগ করে দলকে সম্মানজনক পুঁজি এনে দেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রস টেইলর। তার অপরাজিত ৪৩* রানের ইনিংসের উপর ভর করে নয় উইকেটে ১৫০ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। ইডেন পার্কে প্রতিপক্ষকে ১৫০ রানে আটকে রাখতে পারলে যেকোনো দলের অধিনায়কের মুখে হাসি থাকবে। গত ম্যাচে একই মাঠে ২৪৪ রান তাড়া করে জয় পাওয়া অস্ট্রেলিয়া ১৫১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করে। প্রকৃতির মুখও গোমড়ো ছিলো। বৃষ্টি আইনের কথা মাথায় রেখেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকেন।
উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে মাত্র আট ওভারে ৭২ রান যোগ করার পর মুনরোর শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন ডি’আর্চি শর্ট। ৭২ রানের মধ্যে তিনি একাই করেন ৫০ রান। মাত্র ৩০ বলে তিনটি ছয় এবং দিগুণ চারের মারে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক হাঁকান শর্ট। শর্ট আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসেন অ্যাগার। এটি অস্ট্রেলিয়ার নতুন কোনো গেম প্ল্যান ছিলো না। ইনজুরিতে পড়ে মাঠের বাইরে ছিলেন তিন নাম্বারে নিয়মিত ব্যাট করা ক্রিস লিন। তিনে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি বল হাতে ম্যাচের নায়ক অ্যাগার। মাত্র দুই রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এর আগে অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারও সাজঘরে ফিরলে ৮৪ রানে তিন উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
১৪.৪ ওভারের মাথায় অকল্যান্ডে বৃষ্টি নামলে ম্যাচ থমকে যায়। তখন অস্ট্রেলিয়া তিন উইকেটে ১২১ রান সংগ্রহ করেছিলো। বৃষ্টির কারণে খেলা আর মাঠে না গড়ালে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডে অস্ট্রেলিয়ার তখন প্রয়োজন ছিলো তিন উইকেটে ১০২ রান। এই জয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েই টুর্নামেন্ট শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচে চার উইকেট শিকার করা অ্যাগার ফাইনালে ২৭ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১১৬.৫০ ব্যাটিং গড়ে ও ১৬৬.৪২ স্ট্রাইক রেটে ২৩৩ রান তোলার পাশাপাশি তিন উইকেট শিকার করে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জেতেন।
ফিচার ইমেজ- Twitter