- ভারতের আসামে ট্রেনের ধাক্কায় পাঁচটি হাতি মারা গেছে।
- রোববার আসামের হোজাই জেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান বনবিভাগের কর্মকর্তা।
হাবাইপুরের লামডিং বনের কাছে একপাল হাতি রেললাইন পার হওয়ার সময় গুয়াহাটি-শিলচর এক্সপ্রেসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই পাঁচটি হাতি মারা যায় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় ‘নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে’ একটি বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দিয়েছে ।
নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের ‘চিফ পাবলিক রিলেশনস অফিসার’ (সিপিআরও) প্রণব জ্যোতি শর্মা জানান, ট্রেনটি এর গতিসীমার মধ্যেই ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। প্রোটোকল মেনে চলছে কিনা সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য একটি বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় জনগণ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার স্থানটি হাতি চলাচলের রাস্তা হিসেবে পরিচিত। এমনকি তারা হাত নাড়িয়ে ট্রেন চালককে থামানোরও চেষ্টা চালিয়েছে। তবে প্রণব শর্মা বলেন, ঘটনাটি এমন জায়গায় ঘটেছে যেখানে হাতি চলাচলের চিহ্নিত করা কোনো রাস্তা নেই। বনবিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রেনের গতিতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় এবং সকল ট্রেনের গতি কমিয়ে নিতে বলা হয়।
হাতির সাথে ধাক্কা লাগায় ট্রেনটির ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। এর ফলে এলাকাটিতে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। রেলওয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “অ্যাক্সিডেন্ট রিলিফ ট্রেইন’সহ লামডিং বিভাগের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার আরও কিছু উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা নিয়ে এলাকাটি পরিদর্শনে যান। এরপরে যানটিকে পুনরায় রেললাইনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু হয়।” এছাড়াও আসামের বনমন্ত্রী প্রমিলা রানী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গত বছর ডিসেম্বর মাসেও সোনিতপুর জেলায় ট্রেনের ধাক্কায় পাঁচটি হাতি মারা যায়। এর পরদিন পশু চলাচলের তথ্য তাদেরকে জানানো হচ্ছে না বলে নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে বনবিভাগকে দোষারোপ করে।
প্রণব শর্মা জানান, সম্প্রতি এ অঞ্চলে হাতি চলাচল অনেক বেড়ে গেছে। যখনই বনবিভাগ হাতির পাল চলাচলের কোনো তথ্য জানায়, তখনই ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, বনবিভাগ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের একত্রে কাজ করার ফলেই অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
আসামে দুর্ঘটনার কারণে হাতি মৃত্যুর হার বেড়ে চলেছে। বনবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ১১০ এবং ২০১৫ সালে ১১৫টি হাতি মারা যায়। বনবিভাগের কর্মকর্তাদের মতে তড়িতাহত, বিষক্রিয়া ও ট্রেন দুর্ঘটনা হাতি মৃত্যুর প্রধান কারণ।
ফিচার ইমেজ: DNA India