- যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন দাবি করেছেন, গত দশ বছর ধরেই রাশিয়া বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ‘নার্ভ এজেন্ট’ মজুত করছে।
- রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্লাদিমির চিজভ এর আগে দাবি করেছিলেন, এই নার্ভ এজেন্ট যুক্তরাজ্যের উইল্টশায়ারের একটি গবেষণাগার থেকে চুরি করা হয়েছে।
নার্ভ এজেন্ট হামলার শিকার হয়ে সের্গেই স্ক্রেপাল আর ইউলিয়া স্ক্রেপাল এখন পর্যন্ত হাসপাতালে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় আছেন। যুক্তরাজ্য আর রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি দূত বহিষ্কার নিয়ে উত্তেজনা এখনো শান্ত হয়নি, এরই মধ্যে বোমা ফাটালেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। তার দাবি হলো, গত দশ বছর ধরেই রাশিয়া এরকম হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্য সামনে রেখে এসব বিষাক্ত গ্যাস মজুত করছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে যুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্লাদিমির চিজভ এর আগে দাবি করেছিলেন, বিষাক্ত ওই নার্ভ এজেন্ট যুক্তরাজ্যের উইল্টশায়ারের একটি গবেষণাগার থেকে চুরি করা হয়েছে। কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে জোর দিয়ে বলছেন, নোভিচোক নামের ওই নার্ভ এজেন্ট সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রস্তুত করা হতো। ব্রিটিশ কোনো ল্যাবে এই গ্যাস থাকবার কথা নয়।
অবশ্য গ্যাসটির রকমফের বুঝতে অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বিশেষজ্ঞদের। চিজভ অবশ্য বলছেন যে, ঘটনাস্থলের মাত্র ৮ মাইল দূরে থাকা পোর্টোন গবেষণাগার থেকে ঐ গ্যাস চুরি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, পোর্টোনে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় রাসায়নিক গ্যাসের পরীক্ষাগার অবস্থিত।
উল্লেখ্য, সের্গেই আর তার মেয়ে ইউলিয়াকে গত ৪ মার্চ উইল্টশায়ারের একটি পার্কের বেঞ্চে মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। রুশ কর্তারা একথা কোনোভাবেই মানতে রাজি নন যে, হামলায় ব্যবহৃত নার্ভ এজেন্ট রাশিয়া থেকে আনা হয়ে থাকতে পারে। এর আগে রাশিয়ার এক পররাষ্ট্র কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্র, স্লোভাকিয়া, সুইডেন কিংবা চেক প্রজাতন্ত্র থেকে পাচার হয়ে আসতে পারে।
অবশ্য প্রাক্তন সোভিয়েত গুপ্তচরদের ওপরে হামলা কোনো নতুন ঘটনা নয়। এর আগে ২০০৬ সালে আলেক্সান্দর লিতভেঙ্কো নামের একজন প্রাক্তন গুপ্তচরকে এই যুক্তরাজ্যেই তেজষ্ক্রিয় বিষক্রিয়ার সহায়তায় খুন করা হলে সে সময়েও সবাই রাশিয়ার দিকেই আঙুল তুলেছিল।
তবে স্ক্রেপাল পরিবারের ওপরে নার্ভ গ্যাস হামলার ফলে সৃষ্ট আলোড়ন সহসা থামবে বলে মনে হচ্ছে না। ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্য ২৩ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে। পাল্টা জবাব হিসেবে রাশিয়াও শনিবার বলেছে যে, এই সপ্তাহের মধ্যে তারাও ২৩ জন ব্রিটিশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করবে।
ফিচার ইমেজ: uk.businessinsider.com