- সৌদি নারীদের আবায়া বা বোরকা পরার ব্যাপারে বাধ্যবাধ্যকতা থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের এক আলেম শেখ আব্দুল্লাহ আল-মুলতাক।
- গত শুক্রবার এক রেডিও অনুষ্ঠানে শেখ মুলতাক মন্তব্য করেন, নারীদের ভদ্র পোশাক পরা উচিৎ, কিন্তু আবায়া পরা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক না।
- সাম্প্রতিক সময়ে নারীদের অধিকার সংক্রান্ত অনেকগুলো যুগান্তকারী আইন পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় এই বক্তব্য সৌদি আরবের নারীদের পোশাকের ক্ষেত্রে শিথিলতার সম্ভাবনার ইঙ্গিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
- তবে শেখ আল মুলতাকের এ বক্তব্য কোনো আইনগত স্বীকৃতি না এবং সৌদি সরকারের পক্ষ থেকেও এখনও এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
Senior religious #Saudi figure says #women ‘shouldn’t be forced’ to wear #abaya https://t.co/xogjgAtIcR pic.twitter.com/nqjS36aJHS
— Al Arabiya English (@AlArabiya_Eng) February 10, 2018
সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের সদস্য শেখ আব্দুল্লাহ আল-মুলতাক গত শুক্রবার আল-নিদা আল-ইসলাম নামক চ্যানেলের ‘ফ্রাইডে স্টুডিও’ অনুষ্ঠান চলাকালীন দেওয়া বক্তব্যে বলেন, “বিশ্বের শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি নারী বোরকা পরে না। এমনকি তারা বোরকা সম্পর্কে জানেও না। কাজেই আমাদেরও নারীদেরকে বোরকা পরতে বাধ্য করা উচিৎ না।” ফ্রাইডে স্টুডিও হচ্ছে একটি সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান, যেখানে শেখ মুলতাক শ্রোতাদের ইসলামী শরীয়া বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর এবং ফতোয়া দিয়ে থাকেন।
শেখ মুলতাক আরো বলেন, মক্কা এবং মদীনায়ও অনেক ভদ্র এবং ধার্মিক নারীকে দেখা যায়, যারা আবায়া পরিধান করেন না। এটাই সাক্ষ্য দেয় যে, নারীদের জন্য আবায়া বাধ্যতামূলক হওয়া উচিৎ না। তার মতে, শরীয়া আইনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যেকোনো ধরনের ঢোলা পোশাক দিয়ে শরীর ঢেকে রাখা। তার জন্য নির্দিষ্ট ধরনের আবায়া পরা বাধ্যতামূলক না।
#Saudiwomen need not wear #abaya robes: Senior cleric — https://t.co/mTW0f7Atpw pic.twitter.com/FkvQSzOUfA
— Saudi Gazette (@Saudi_Gazette) February 10, 2018
যদিও শেখ মুলতাকের এ বক্তব্য থেকে বোঝার উপায় নেই, সৌদি সরকারের নারীদের আবায়া পরিধানের উপর থেকে বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা, কিন্তু ওলামা পরিষদের কোনো আলেমের পক্ষ থেকে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার দৃষ্টান্ত সৌদি আরবে বিরল।
সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরব নারীদের অধিকার সংক্রান্ত অনেকগুলো আইনের সংস্কার করেছে। সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তার দেশটিকে ‘মডারেট ইসলামে’ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় নারীদের গাড়ি চালানো, স্টেডিয়ামে প্রবেশ করা সহ বিভিন্ন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তবে এবার সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত আসার আগেই ওলামা পরিষদের এক আলেমের মৌখিক স্বীকৃতি পাওয়ায় হয়তো সরকারের পক্ষে আবায়ার উপর থেকে বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা আরো সহজ হতে পারে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি আলেমের এ বক্তব্যের পর সামাজিক গণমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
ফিচার ইমেজ- AFP