সিরিয়াতে বিমান এবং মিসাইল হামলা করেছে ইসরায়েল!

সিরিয়াতে আবারও আক্রমণ করেছে ইসরায়েল। সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী যুদ্ধ বিমান এবং স্থলভিত্তিক মিসাইলের মাধ্যমে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের অদূরে একাধিক পৃথক হামলা পরিচালনা করে। তবে নিজেদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ইসরায়েলের কয়েকটি আক্রমণ ব্যর্থ করে দিতে সমর্থ হয়েছে বলেও দাবি করেছে তারা।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে সরকারি বিবৃতির বরাত দিয়ে জানানো হয়, মঙ্গলবার সকালে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিকটবর্তী আল-কুতাইফা শহরে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইসরায়েল বিমান এবং স্থল ভিত্তিক মিসাইল হামলা চালায়। বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, ইসরায়েলি যুদ্ধ বিমান লেবাননের আকাশসীমা ব্যবহার করে বিমান হামলা পরিচালনা করে। অন্যদিকে মিসাইলগুলো নিক্ষেপ করা হয় দখলকৃত গোলান উপত্যকা থেকে।

সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর দাবি অনুযায়ী, রাত ২টা ৪০ মিনিটে প্রথমে ইসরায়েলি যুদ্ধ বিমান থেকে কয়েকটি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর ভোর ৩টা ৪ মিনিটে ২টি এবং ৪টা ১৪ মিনিটে আরও ৪টি স্থল ভিত্তিক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি মিসাইল ধ্বংস করে দিতে পারলেও বাকিগুলো সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত করে। তবে এতে কোনো প্রাণহানি ঘটেছে কিনা, সে ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।

মানচিত্রে সিরিয়া, লেবাবন, ইসরায়েলের অবস্থান; Source: Al Jazeera

সিরিয়ার বিদ্রোহীদের একটি ওয়েবসাইটেও এই হামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়, চারটি ইসরায়েলি যুদ্ধ বিমান লেবাননের আকাশ সীমা ব্যবহার করে সিরিয়ার কুতাইফাতে আক্রমণ করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে।

ব্রিটেন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ‘দ্য অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ এর দাবি অনুযায়ী, কুতাইফার সামরিক ঘাঁটিটি সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং হেজবুল্লাহ মিলিশিয়া কর্তৃক যৌথভাবে ব্যবহৃত হতো। ধারণা করা হয়, অস্ত্রাগারটিতে স্কাড মিসাইল সহ সিরিয়ার সেনাবাহিনীর ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র মজুদ করা ছিল।

ইসরায়েলী বিমান (ফাইল ছবি); Source: Wikimedia commons

ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে তারা এর আগেও বিভিন্ন সময় সিরিয়ার সেনাবাহিনীর উপর হামলা করেছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, তারা এ হামলাগুলো করে যেন সিরিয়ার সেনাবাহিনী ইরান সমর্থিত হেজবুল্লাহর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করতে না পারে। ইসরায়েলের এক সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা গত আগস্ট মাসে স্বীকার করেছিলেন যে, ইসরায়েলের বিমান বাহিনী সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সিরিয়াতে অন্তত ১০০টি হামলা পরিচালনা করেছে।

সিরিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সম্প্রতি সিরিয়ার সেনাবাহিনীর অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করে বিদ্রোহী সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে সাহায্য করার জন্যই ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে।

ফিচার ইমেজ- STRINGER/AFP (ফাইল ফটো)

Related Articles

Exit mobile version