লন্ডন থেকেও বিতাড়িত হতে পারেন অ্যাসাঞ্জ!

নির্বাসিত অবস্থায় বসবাসরত উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ইকুয়েডরের লন্ডন দূতাবাস থেকেও বিতাড়িত হতে পারেন। গত মঙ্গলবার ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া ফারনান্ডা এস্পিনোসা দূতাবাসে অ্যাসাঞ্জের পাঁচ বছরের অবস্থানকে ‘অসমর্থনযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গার্ডিয়ান।

ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার মাধ্যমে ব্যাপারটির অবসান চাচ্ছে তার সরকার। তিনি বলেছেন, “আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া কোনো সমাধান আসবে না।

ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া ফারনান্ডা এস্পিনোসা; Source: wtop.com

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অ্যাসাঞ্জের পক্ষে একজন আইনজীবী ইকুয়েডরের প্রস্তাবকে স্বাগত জানাতে হাজির হন। তিনি জানান, তার মক্কেলের আশ্রয়ের অধিকার রয়েছে এবং ট্রাম্প প্রশাসনের উইকিলিকসের সাথে সংঘাত সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে তার নিগৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সুইডেনে এ পর্যন্ত দু’বার তদন্ত বন্ধ করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র জানান, “ইকুয়েডর সরকার জানে যে, এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে দূতাবাস ছেড়ে জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জের ন্যায়বিচারের সম্মুখীন হওয়া।

বিগত পাঁচ বছর ধরে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়া অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত অ্যাসাঞ্জ স্পেন সহ ইকুয়েডরের কিছু মিত্ররাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মানবাধিকার বিষয়ক কথা বলায় সেই দেশের কর্তৃপক্ষের তোপের মুখে পড়েন। গত বছর ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো অ্যাসাঞ্জকে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতাকামীদের সমর্থনে রাজনৈতিক মন্তব্য করায় সতর্ক করেন।

ইকুয়েডরের লন্ডন দূতাবাসে অ্যাসেঞ্জ; Source: Washington Times

অ্যাসাঞ্জ ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় গ্রেপ্তার এড়াতে পাঁচ বছর ধরে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে অবরুদ্ধ জীবন যাপন করে আসছেন। গত বছর এই মামলার তদন্ত বন্ধ হয়ে গেলেও দূতাবাসের বাইরে পা রাখলে জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে।

এর অনেক আগে ২০১৩ সালে অ্যাসেঞ্জ আশঙ্কা করেছিলেন যে, ব্রিটিশ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে সুইডেনে প্রত্যর্পণ করলে সেখান থেকে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে। তার মতে, উইকিলিকস মার্কিন গোপন কূটনৈতিক বার্তা ফাঁস করায় দেশটি তার ওপর ক্ষিপ্ত রয়েছে। তিনি বলেছিলেন, “আমি বাইরে বের হলেই যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া অনুযায়ী আমাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। গ্রেপ্তার ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তুলে দেওয়ার ঝুঁকি এড়াতে দূতাবাস না ছাড়ার জন্য আমার আইনজীবীরা আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন।

এদিকে ইকুয়েডরের এই সিদ্ধান্তের সংবাদ প্রচার করেও তা পরবর্তীতে ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলেছে ‘দি অস্ট্রেলিয়ান‘। সংবাদটি সরিয়ে সেখানে তারা এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও প্রতিষ্ঠানের মন্তব্য প্রদর্শন করছে।

সরিয়ে ফেলা সংবাদের লিংকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য; Source: theaustralian.com.au

ফিচার ইমেজ: usnews.com

Related Articles

Exit mobile version