আটককৃত দুই রয়টার্স সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ‘দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইন‘ এর আওতায় অভিযোগ এনেছে মিয়ানমার সরকার। বুধবার ইয়াঙ্গুনের একটি আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয় বলে প্রকাশ করেছে রয়টার্স। অভিযোগটি প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকদ্বয়ের আইনজীবী।
গত ১২ ডিসেম্বর এক পুলিশ অফিসারের নিমন্ত্রণে রাতের খাবার খেতে গেলে সেখানে রয়টার্সের এই দুই সংবাদকর্মীকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন ওয়া লোন (৩১) ও কিয়াও সয়ে উ (২৭)। তাদের পরিবারের মতে, পুলিশ অফিসার কর্তৃক কিছু দলিলপত্র সরবরাহের পরপরই তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রথম কিছুদিন তাদেরকে আইনজীবী বা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।
৩০ মিনিট শুনানির পরে আদালত থেকে তাদের ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় ওয়া লোন বলেন, “আমরা সত্য প্রকাশের চেষ্টা করছিলাম বলেই তারা আমাদের গ্রেফতার করে আমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে।”
মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয় পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, “রাখাইন প্রদেশ ও নিরাপত্তা বাহিনী সম্পর্কে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় তথ্য জানার কারণে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।” মন্ত্রণালয় আরও জানায়, “তারা বিদেশী গণমাধ্যমকে জানানোর উদ্দেশ্যে অবৈধ উপায়ে তথ্য সংগ্রহ করেন।”
মিয়ানমার সরকার জানায়, ‘দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইন’ ভঙ্গের সন্দেহে তদন্ত করার লক্ষ্যে দুজন পুলিশ অফিসারকেও গ্রেফতার করা হয়। তবে সেই গ্রেফতারের ব্যাপারে আর কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
রয়টার্সের মতে, সাংবাদিকদ্বয় কোনো অন্যায় করেননি। রয়টার্সের প্রধান সম্পাদক স্টিফেন জে অ্যাডলার এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি সাংবাদিকতার উপর একটি সম্পূর্ণ অন্যায়, অশোভন আক্রমণ।”
গ্রেফতারকৃত সাংবাদিকদ্বয় মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের ব্যাপারে রয়টার্সে প্রতিবেদন করেছিলেন। জাতিসংঘের হিসাব মতে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞের কারণে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
ফিচার ইমেজ: eNCA