- ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করা একটি প্রস্তাবে ভেটো প্রয়োগ করেছে রাশিয়া।
- ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদেরকে মিসাইল সরবরাহ করার কারণে ইরানের উপর চাপ প্রয়োগ করার লক্ষ্যে ঐ বিল উত্থাপন করেছিল ব্রিটেন।
- পরবর্তীতে রাশিয়ার প্রস্তুত করা একটি প্রস্তাব পাশ করে নিরাপত্তা পরিষদ, যাতে শুধু ইয়েমেনের উপর অবরোধ বৃদ্ধি করা হয়।
Russia vetoes UN resolution that would have promised action against countries that violate the UN arms embargo on Yemen. https://t.co/dFOY8VXJ90
— The Associated Press (@AP) February 26, 2018
ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদেরকে মিসাইল সরবরাহ বন্ধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ইরানের উপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা একটি খসড়া প্রস্তাবের উপর ভেটো প্রয়োগ করেছে রাশিয়া। গতকাল সোমবার ইংল্যান্ডের উত্থাপন করা প্রস্তাবটির পক্ষে জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ইংল্যান্ডের উত্থাপন করা ঐ খসড়া প্রস্তাবের মূল লক্ষ্য ছিল ইয়েমেনের উপর অবরোধ জোরদার করা। এতে গত জানুয়ারি মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করা বলা হয়, ২০১৫ সালে ইয়েমেনের উপর জাতিসংঘের যে অস্ত্র অবরোধ ছিল, ইরান তা ভঙ্গ করেছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের ঐ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ফলাফল অনুযায়ী, গত বছর ইয়েমেনের হুথিরা সৌদি আরব লক্ষ্য করে যে মিসাইল নিক্ষেপ করেছিল, তা ছিল ইরানের তৈরি, যদিও প্যানেল মিসাইল সরবরাহকারী রাষ্ট্র কিংবা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি।
নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে প্রস্তাবটির পক্ষে মোট ১১টি ভোট পড়ে। চীন এবং কাজাখস্তান ভোটদানে বিরত থাকে, বলিভিয়া বিরুদ্ধে ভোট দেয় এবং স্থায়ী সদ্য হিসেবে রাশিয়া তার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে। ফলে প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়। নিরাপত্তা পরিষদে যেকোনো প্রস্তাব পাশের শর্ত হচ্ছে, কমপক্ষে নয়টি ভোট পড়তে হবে এবং কোনো স্থায়ী সদস্য ভেটো দিতে পারবে না।
#UPDATE After the veto, the UN Security Council unanimously adopted a Russian-drafted measure that extended for one year the sanctions regime against Yemen https://t.co/mCLk87uFDw
— AFP news agency (@AFP) February 26, 2018
কয়েক ঘন্টাব্যাপী চলমান আলোচনায় রাশিয়া তার অবস্থানে অনড় থাকে। রাশিয়া বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রতিবেদনের উপরেও সন্দেহ প্রকাশ করে। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, তাদের পক্ষে অসমর্থিত প্রমাণ এবং সিদ্ধান্তের সাথে একমত হওয়া সম্ভব না। এছাড়াও তিনি সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে মধ্যপ্রাচ্যে শিয়া এবং সুন্নী সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে এবং এতে বিপজ্জনকভাবে অস্থিতিশীলতার শাখা-প্রশাখা বৃদ্ধি পাবে।
ভেটোর পরপরই রাশিয়ার দ্বারা উত্থাপন করা একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতক্রমে পাশ করে নিরাপত্তা পরিষদ। এ প্রস্তাব অনুযায়ী, ইয়েমেনের উপর অস্ত্র অবরোধ আরো এক বছরের জন্য বৃদ্ধি করা হয়। তবে এতে ইরান সম্পর্কিত কোনো ধারা ছিল না।
বৈঠক শেষে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এক বিবৃতিতে রাশিয়ার ভেটো প্রদানের সমালোচনা করে বলেছেন, রাশিয়া ইরানের “সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক” সরকারকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিকল্প পথ গ্রহণ করবে। অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের প্রতিনিধিদল ইয়েমেনে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন ইরান বিরোধী রাজনৈতিক লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য একটি অন্যায্য প্রস্তাব পেশ করেছিল।
Source: TIMOTHY A. CLARY/ AFP