ভারতের কলকাতার আলীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার (কারাগার) থেকে পালিয়েছেন এক ভারতীয় নাগরিক সহ বিচারাধীন দুই বাংলাদেশি। বাংলাদেশি গণমাধ্যম এনটিভি অনলাইনের কলকাতা সংবাদদাতা মনোজ বসু এই তথ্য জানিয়েছেন।
পালিয়ে যাওয়া দুই বাংলাদেশির নাম মোহাম্মদ ফারুক হাওলাদার এবং ফেরদৌস শেখ ওরফে রানা। এদের মাঝে ফারুক হাওলাদার ২০১৩ সালে বেআইনি অস্ত্র পাচার ও ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার হন। আর ফেরদৌস শেখ বিচারাধীন ছিলেন বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশ ও ডাকাতির মামলায়। পালিয়ে যাওয়া অপর আসামী ভারতের নাগরিক ইমন চৌধুরী ২০১৪ সালের একটি অপহরণ মামলায় বন্দী ছিলেন।
এনটিভি অনলাইন জানায়, আজ রবিবার সকালে বন্দী গণনার সময় বিষয়টি ধরা পড়লে তাদেরকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এ ঘটনায় আলীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এবং এর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
এনটিভি সংবাদদাতা জানান, গতকাল শনিবার গভীর রাতে আলীপুর সংশোধনাগারের পিছন দিকের ছয় নম্বর ওয়াচ টাওয়ার সংলগ্ন উঁচু পাঁচিল টপকে তিন বন্দী পালিয়ে যায়। পাঁচিলের অপর পাশে আদি গঙ্গা অবস্থিত।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দীরা তাদের নিজেদের ব্যবহৃত চাদরকে দড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। তারা চাদরের একপ্রান্তে লোহার রড লাগিয়ে তা বাঁকিয়ে পাঁচিলের কাঁটাতারে বিঁধে ফেলে। এরপর তারা সেটি বেয়ে পাঁচিলের উপর উঠে যায়। পাঁচিল ডিঙ্গিয়ে অপর পাশে থাকা পেয়ারা গাছ বেয়ে নিচে নেমে পালাতে সক্ষম হয় আসামিরা। পাঁচিলের পাশ থেকে চাদর ও বাঁকানো লোহার রড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এনটিভির বরাতে জানা যায়, পুলিশ প্রাথমিকভাবে অনুমান করছে যে, বন্দীরা দীর্ঘদিন ধরেই এই পরিকল্পনা আঁটছিল। ইতোমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আলীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের নিরাপত্তাকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। সংশোধনাগারে স্নিফার ডগ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া সেখানে কলকাতার লালবাজার গুণ্ডা দমন শাখার কর্মকর্তারাও হাজির হয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন থানায় বন্দী পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে জানানো হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী থানাগুলোকে বন্দী পালানোর বিষয়ে কড়া নজর রাখার বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে। এর সাথে তল্লাশি অভিযানও শুরু করা হয়েছে।
ফিচার ইমেজ: Millennium Post