ছোটবেলায় স্কুলে থাকতে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র বইতে ইডিওমস অ্যান্ড ফ্রেজ পড়েছি আমরা। বাংলায় যাকে বলে বাগধারা বা প্রবাদ-প্রবচন, ইংরেজিতে সেগুলোই হলো ইডিওমস অ্যান্ড ফ্রেজ। পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার আশায় ঝাড়া মুখস্থ করেছি সেসব ইডিওমস অ্যান্ড ফ্রেজের বাংলা অর্থ, এবং ব্যবহারবিধি। কিন্তু ঠিক কোথা থেকে যে উৎপত্তি ঘটেছে সেগুলোর, তা ক’জনই বা ভেবে দেখেছি! অথচ ইংরেজির ইডিওমস অ্যান্ড ফ্রেজ, কিংবা বাংলার বাগধারা বা প্রবাদ-প্রবচন, এগুলো কোনোটাই কিন্তু আকাশ থেকে টুপ করে মাটিতে পড়েনি। প্রতিটির পেছনেই আছে কোনো না কোনো চমকপ্রদ ইতিহাস। চলুন পাঠক, জেনে নিই সেরকমই কিছু বহুল প্রচলিত ইংরেজি ইডিওমস অ্যান্ড ফ্রেজের নেপথ্যের ইতিহাস।
A Cat Has Nine Lives
বাংলায় যে আমরা বলি কই মাছের প্রাণ, সেটিরই ইংরেজি সংস্করণ A Cat Has Nine Lives। সহজে মরে না যারা, উপর্যুপরি আঘাত সহ্য করেও টিকে থাকতে পারে, বাংলায় আমরা তাদেরকে তুলনা করি কই মাছের সাথে। আর ইংরেজরা তুলনা করে বিড়ালের সাথে। কারণ মনে করা হয়, একটি বিড়ালের থাকে নয়টি জীবন।
কেন এমনটা মনে করা হয়? এই ধারণার প্রধান কারণ, অনেক উঁচু থেকে পড়েও বিড়ালের বেঁচে যাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা। অনেকেই খেয়াল করে দেখবেন, উঁচু কোনো জায়গা থেকে বিড়াল যখন নিচে পড়তে থাকে, মাঝপথেই তারা নিজেদের শরীর বাঁকাতে পারে, এবং শেষ পর্যন্ত নিজ পায়ে ভর করে তারা মাটিতে অবতরণ করে। ফলে প্রাণে বেঁচে যায় তারা। আর তাদের এই বিশেষ ক্ষমতা থেকেই উপকথার জন্ম হয়েছে যে, একটি বিড়ালের থাকে নয়টি জীবন।
এখন আবার অনেকের প্রশ্ন জাগতে পারে, বিড়ালের জীবন নয়টিই কেন? অন্য কোনো সংখ্যার বদলে এই অঙ্কটিকেই কেন বেছে নেয়া হয়েছে? এ ব্যাপারে অনেকের অভিমত, প্রাচীন মিশরীয়দের হাত ধরে এর উদ্ভব ঘটেছে এবং তারা বিড়ালকেই খুবই সম্মানের চোখে দেখত। আবার অনেকে মনে করে, নয় অঙ্কটি গ্রিকদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলেই আধিক্য বোঝাতে এটি বেছে নেয়া হয়েছে। ইতিহাস ঘেঁটে এ সংক্রান্ত সেল্টিক কিংবদন্তির চরিত্র ক্যাট সিথেরও উল্লেখ পাওয়া যায়। সে ছিল এক ডাইনি, যে নিজেকে নয়বার বিড়ালে রূপান্তরিত করতে পারতো।
A Fool’s Paradise
এর বাংলা মানে হলো ‘বোকার স্বর্গ’। যখন কোনো ব্যক্তি বিদ্যমান পরিস্থিতির প্রকৃত ভয়াবহতা বা নেতিবাচক দিক সম্পর্কে অবগত না হয়েই আনন্দ অনুভব করতে থাকে, তখন আমরা বলি লোকটা বোকার স্বর্গে বাস করছে।
এই প্রবচনটির ব্যবহার শুরু হয়েছে সেই পঞ্চদশ শতকে। এর প্রথম আবির্ভাব ঘটে ১৪৬২ সালে, ইংল্যান্ডের এজেন্ট্রি উইলিয়াম প্যাস্টনের লেখা পত্রগুচ্ছে। তিনি লিখেছিলেন, “I wold not be in a folis paradyce.”
তবে নিঃসন্দেহে এই প্রবচনটি আরো বেশি জনপ্রিয়তা পায় ষোড়শ শতকের শেষ ভাগে, ইংরেজ নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের হাত ধরে। তিনি তার বিখ্যাত নাটক রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েটে ব্যবহার করেছিলেন এই প্রবচনটি।
Acid Test
বাংলায় এই প্রবচনটিকে বোঝানো হয় অগ্নিপরীক্ষার মাধ্যমে। এর অর্থ হলো, কোনো একটি পরীক্ষা বা তদন্ত, যার মাধ্যমে কোনো বিষয় সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়। আবার কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নিজেকে প্রমাণের ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়।
অনেকেই হয়তো এতদিন ভেবে এসেছেন, এর সাথে অ্যাসিডের সম্পর্ক কী! মজার বিষয় হলো, শুরুতে কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই এই শব্দগুচ্ছ ব্যবহৃত হয়েছিল। অষ্টাদশ শতকে নাইট্রিক অ্যাসিড আবিষ্কৃত হয়, এবং এরপর থেকে কোনো ধাতুর ভেতর সোনার অস্তিত্ব রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এই অ্যাসিডটি ব্যবহৃত হতো। আর এই অ্যাসিডের মাধ্যমে সোনার অস্তিত্ব পরীক্ষাকেই ডাকা হতো Acid Test নামে।
তবে বর্তমানে শব্দগুচ্ছ যে নতুন অর্থ লাভ করে একটি প্রবচনে পরিণত হয়েছে, তার সূচনা কিন্তু ঊনবিংশ শতকে। তখন থেকে যেকোনো ব্যক্তি বা বস্তুর কর্মদক্ষতা পরীক্ষার ক্ষেত্রেই বহুল ব্যবহৃত হতে থাকে এই প্রবচনটি।
Blind Luck
ভাগ্যক্রমে কারো সাথে খুব ভালো কিছু হয়ে বসলে, সেটিকে আখ্যায়িত করতে এই প্রবচনটি ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ কোনো সাফল্যের পেছনে হয়তো ব্যক্তির তেমন কোনো চেষ্টাই ছিল না, নেহাতই ভাগ্যক্রমে সে ওই সাফল্যটি পেয়ে গেছে, তখন তার ভাগ্যকে বলা হয় Blind Luck। লটারিতে জেতা, কিংবা নিজের অজান্তেই সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকার সুবাদে লাভবান হওয়ার ভাগ্যই হলো এ ধরনের ভাগ্য।
কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো, ভাগ্য আবার অন্ধ হয় কীভাবে? সৌভাগ্য তো একটি খুবই ইতিবাচক জিনিস, তাহলে সেটি কেন অন্ধ হবে? এর পেছনে কিন্তু রয়েছে খুবই চমকপ্রদ একটি কারণ।
গ্রিক পুরাণ অনুযায়ী, সৌভাগ্যের দেবী হলেন টাইকি (রোমানদের কাছে ফরচুনা)। তিনি চাইলেই যে কারো সাথে খুব ভালো কিছু ঘটাতে পারতেন, আবার চাইলেই কারো জন্য মন্দ ভাগ্যও বয়ে আনতে পারতেন। তবে সৌভাগ্য ছড়িয়ে দিতেই বেশি পছন্দ করতেন তিনি। কখনো কখনো তাই শখের বশে চোখে কাপড় বেঁধে উদ্দেশ্যহীনভাবে সৌভাগ্যের বর ছড়িয়ে দিতেন তিনি। যারা সেই বর পেতো, তারাই সৌভাগ্যের অধিকারী হতো। অথচ টাইকি জানতেও পারতেন না কার কার সৌভাগ্য বয়ে আনলেন তিনি! এভাবে তার অন্ধের মতো সৌভাগ্য বিলানো থেকেই জনশ্রুতি তৈরি হয়েছে যে সৌভাগ্য কখনো কখনো অন্ধও হতে পারে!
Bone of Contention
এর অর্থ হলো বিবাদের মূল বিষয়, অর্থাৎ যে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে বিবাদ অব্যাহত থাকে। যখন কোনো একটি ইস্যু নিয়ে দুটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে যায়, কিন্তু কোনো মীমাংসা বা সুরাহা হয় না, তখন ওই ইস্যুটিকে বলা হয় Bone of Contention।
প্রাথমিকভাবে অনেকের ধারণা, এই প্রবচনটির উৎপত্তি দুটি কুকুরের মধ্যকার লড়াই নিয়ে, যাদের বিবাদের কারণ হলো একটি হাড়। দুটি প্রাণীই চায় হাড়টি নিজের দখলে নিতে, এবং এজন্য কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না। ফলে তাদের বিবাদ দীর্ঘসময় ধরে অব্যাহত রয়েছে।
তবে অন্য অনেকের ধারণা, প্রবচনটি অষ্টাদশ শতকে তার বর্তমান রূপ লাভের আগে, ষোড়শ শতক থেকে Bone of Dissension হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে।
এরও আগে অন্য একটি প্রবচন ব্যবহৃত হতো, যেটি হলো To find bones in something। এর অর্থও ছিল প্রায় একই: কোনো বিষয়ে বিরোধিতা করার মতো কারণ খুঁজে পাওয়া। ১৪৫৯ সালে প্যাস্টনের পত্রগুচ্ছে এই প্রবচনটির ব্যবহার দেখা গেছে। এমনও হতে পারে যে, Bone of Contention প্রবচনটির উদ্ভব সরাসরি এই প্রবচনটি থেকেই ঘটেছে।
তবে মূল উৎপত্তি যেখান থেকেই ঘটুক না কেন, একটি বিষয় কিন্তু দিনের আলোর মতো পরিষ্কার, সকল ক্ষেত্রেই Bone বা হাড় বিবাদের বিষয়বস্তু হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে। এমনকি হিন্দি প্রবচন ‘কাবাব মে হাড্ডি’তেও কিন্তু হাড়কে একটি নেতিবাচক বিষয় হিসেবেই দেখা হয়।
Break the Ice
বাংলায় আমরা একে বলে থাকি সম্পর্কের বরফ গলানো। যেকোনো নতুন বা অপরিচিত ব্যক্তির সাথে সাক্ষাতের প্রাথমিক পর্যায়েই আমরা কিছুটা অপ্রস্তুত বোধ করি, ফলে অস্বস্তিদায়ক একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কিন্তু বন্ধুত্বপূর্ণ বা মজার কোনো কথা বলে যখন সেই পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করে তোলা হয়, সেটিকে এই প্রবচন দ্বারা বোঝানো হয়ে থাকে।
এই প্রবচনটির উৎপত্তির পেছনে মাঝি-মাল্লা কিংবা নাবিকদের হাত রয়েছে। ধারণা করা হয় যে, সমুদ্রে নৌকা চালানোর সময় যখন সামনে কোনো বড় বরফখণ্ড চলে আসতো এবং তার ফলে নৌকা নিয়ে সামনে এগোনো যেতো না, তখন নৌকার মাঝিরা এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতো। অনেক চেষ্টা-চরিত্র করে বরফ ভেঙে বা গলিয়ে, মাঝখানের ফাঁকা দিয়ে বা পাশ দিয়ে তাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হতো।
সপ্তদশ শতকের শুরুর দিক থেকে এটি আক্ষরিক অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। কিন্তু বর্তমান রূপকার্থটির আগমন ঘটেছে অনেক পরে, সম্ভবত ঊনবিংশ বা বিংশ শতকের দিকে।
Broken Heart
বাংলায় একে বলা হয় ভগ্নহৃদয়। ভালোবাসার ব্যক্তির কাছ থেকে আঘাত পাওয়াকে আলঙ্কারিকভাবে এই প্রবচনটির মাধ্যমে নির্দেশ করা হয়।
তবে এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সবধরনের ভালোবাসার ব্যক্তিই কিন্তু এখানে গণ্য হয় না। কেবলমাত্র রোমান্টিক সম্পর্ক ছিল এমন ভালোবাসার মানুষের ক্ষেত্রেই এই প্রবচনটি ব্যবহৃত হয়। একটি রোমান্টিক সম্পর্কের অবসান ঘটলে, সেই সম্পর্কে জড়ানো দুই ব্যক্তির বর্তমান অবস্থাকে সংজ্ঞায়িত করতে এই প্রবচনটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে অনেকে সম্পর্কের অবসান নয়, ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে পাওয়া সাময়িক আঘাতের পরও নিজেকে Broken Heart হিসেবে দাবি করে থাকে।
অন্যান্য অধিকাংশ প্রবচনের থেকে এই প্রবচনটি অপেক্ষাকৃত বেশি বয়স্ক। সেই চতুর্দশ শতক থেকেই এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আর এক্ষেত্রে হৃদয়কে ব্যবহারের মূল কারণ হলো, সেই প্রাচীনকাল থেকেই সকল মানবিক আবেগ-অনুভূতির মূল উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে হৃদয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ভালোবাসা প্রমাণের জন্য বুক চিরে হৃদয় বের করে আনা বা ভেঙে টুকরো টুকরো হওয়া হৃদয়ের উপস্থাপন কোনো হাল আমলের বিষয় নয়। শত শত বছর ধরে মানুষের রোমান্টিকতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে হৃদয়।
By Chance
এর আভিধানিক অর্থ ঘটনাক্রমে, কিংবা কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই। তবে বাংলাতেও কিন্তু আমরা সাধারণত বাই চান্স কথাটিই বেশি ব্যবহার করে থাকি।
যখন কোনো ঘটনা সম্পর্কে কেউ আগে থেকে অবগত থাকে না কিংবা সেটির জন্য তার কোনো পরিকল্পনা বা প্রচেষ্টা থাকে না, কিন্তু কাকতালীয়ভাবেই ঘটনাটি ঘটে যায়, তখন এই প্রবচনটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
তবে একটি বিষয় উল্লেখ্য, সাধারণত বাই চান্সে হওয়া ঘটনা কিন্তু ইতিবাচকই হয়ে থাকে। একজন মানুষ যখন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হওয়া ঘটনায় খুশি হয়, তখনই সে সেটিকে বাই চান্স বলে থাকে। কেউ যদি কোনো ব্যাপারে অখুশি থাকে, কিন্তু তারপরও বাই চান্স কথাটি প্রয়োগ করে, সেক্ষেত্রে শ্রোতাদের বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
১৩০০ সালের দিক থেকেই এই প্রবচনটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে, এবং এখন এটি দৈনন্দিন আলাপচারিতায় এত বেশি ব্যবহৃত হয় যে, অনেকে জানেও না যে এটি আসলে একটি প্রবচন। মূল Chance কথাটির আগে By বসে কীভাবে প্রবচনটির উদ্ভব ঘটেছে, তা-ও খেয়াল করেনি কেউই। তবে এটুকু অন্তত জানা যায় যে, সেই শেক্সপিয়ারের আমলেও প্রবচনটি খুবই স্বাভাবিক ছিল।
১৬১১ সালে শেক্সপিয়ার তার ‘দ্য উইন্টার্স টেল’ নাটকে লিখেছিলেন,
“Though I am not naturally honest, I am so sometimes by chance.”
এছাড়াও এই প্রবচনটির আরেকটি বিখ্যাত ব্যবহার ঘটেছিল ১৭৮২ সালে উইলিয়াম কাউপারের মাধ্যমে। তিনি বলেছিলেন,
“A fool must now and then be right, by chance.”
Calculated Risk
আজকাল বহুল ব্যবহৃত একটি প্রবচনগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। সহজ বাংলায় বলতে গেলে, এর অর্থ হলো হিসাব-নিকাশ করে নেয়া ঝুঁকি। অর্থাৎ কোনো কাজের আগে সে বিষয়ে সকল লাভ-ক্ষতির সম্ভাবনা হিসাব করে নেয়া, এবং ঝুঁকিটি গ্রহণ করা, যদি দেখা যায়, সফল হলে প্রাপ্ত লাভের পরিমাণ ব্যর্থতার ফলে হওয়া ক্ষতির চেয়ে বেশি।
বর্তমান সময়ের উদ্যোক্তারা হয়তো কথায় কথায় এই প্রবচনটি ব্যবহার করে থাকে, তবে এর ব্যবহার মূলত শুরু হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে। তখন সৈন্যবাহিনীর প্রধানের যেকোনো অ্যাকশন নেয়ার আগে চিন্তা-ভাবনা করতেন, অ্যাকশনটি ব্যর্থ হলে ক্ষতি কেমন হবে, আর তার বিপরীতে সফল হলে লাভ হবে কতটুকু। অর্থাৎ, এখানে Calculated শব্দটি মূলত পরিকল্পিত অর্থে ব্যবহৃত হতো।
Carbon Copy
এর অর্থ হলো লিখিত কোনো কিছুর নকল। যখন একটি লেখার সাথে অপর একটি লেখা হুবহু মিলে যায়, তখন এই প্রবচনটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আজকাল শুধু হাতে-কলমে নয়, মেইলের ক্ষেত্রে, কিংবা এক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত লেখার সাথে অন্য ওয়েবসাইটে লেখার মিল খুঁজে পাওয়া গেলেও এ কথাটি বলা হয়ে থাকে।
তবে এই প্রবচনটিও কিন্তু শুরুতে আক্ষরিক অর্থেই ব্যবহৃত হতো। ঊনবিংশ শতকের শেষদিকে কার্বন কাগজের আগমন ঘটে। তখন একটি কার্বন কাগজের উপর কিছু লেখা হলে, কাগজ ভেদ করে কালি নিচের কাগজেও চলে যেত, অর্থাৎ উপরের আর নিচের কাগজে অভিন্ন লেখা তৈরি হতো।
সময়ের প্রবাহে অনেক নতুন নতুন প্রযুক্তির আগমন ঘটেছে। আজকাল লেখা নকল করার জন্য কার্বন কাগজের প্রয়োজন হয় না। ফটোকপি মেশিন থেকে শুরু করে কম্পিউটারের কপি-কাট-পেস্ট, অনেকভাবেই লেখা নকল করা যায়। কিন্তু তারপরও দুটি লেখার মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া গেলে, প্রথমেই আমাদের মাথায় এই প্রবচনটিই আসে।
(আরো পড়ুন: মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে ‘ক্যাটস এন্ড ডগস’ এর সম্পর্ক কী?)
চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/