হ্যারি পটার ইউনিভার্সে জাদু জগতের দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ‘দ্য ব্যাটেল অভ হগওয়ার্টস’ সংগঠিত হয়েছিল ১৯৯৮ সালের ২ মে, হগওয়ার্টস স্কুল অভ উইচক্র্যাফট অ্যান্ড উইজার্ড্রির ময়দানে। এ যুদ্ধে প্রাণ হারায় সিরিজের অনেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। যেমন লর্ড ভলডেমর্ট, রেমাস লুপিন, নিম্ফ্যাডোরা টঙ্কস, ফ্রেড উইজলি এবং সেভেরাপ স্নেইপের মতো জাদুকরেরা। হগওয়ার্টসের সেই যুদ্ধের পরই ইতি টানা হয় সিনেমার, যার ফলে বেঁচে যাওয়া জাদুকরেরা কে কোথায় গিয়েছে, কী অবস্থায় আছে, তা অনেকেরই অজানা। তাহলে জেনে নেয়া যাক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোর হগওয়ার্টস যুদ্ধ পরবর্তী অধ্যায় সম্পর্কে।
হ্যারি পটার
পুরো হ্যারি পটার ফ্র্যাঞ্চাইজি যাকে কেন্দ্র করে সাজানো হয়েছে, সে হচ্ছে হ্যারি পটার। হগওয়ার্টসে অধ্যয়নের মোট সাত বছরের মধ্যে শেষের কয়েকটা বছর তাকে খুবই ঝামেলা ও উৎকণ্ঠার মধ্যে কাটাতে হয়েছে। যুদ্ধের কারণে শেষ বর্ষের লেখাপড়ায় ইতি টানতে পারেনি হ্যারি পটার। গ্র্যাজুয়েট হবার উদ্দেশ্যে আর কখনো হগওয়ার্টসে যায়নি হ্যারি। গিয়েছে অন্য কারণে, অনুজকে কালো জাদুর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা শেখানোর জন্য। হগওয়ার্টস ব্যাটেলের পর সে কয়েক বছর বিশ্রাম নেয়। এরপর ডেথ ইটার পাকরাও করতে জাদু মন্ত্রণালয়কে অনেক সাহায্য করে। ফলে জাদু মন্ত্রণালয় তাকে অরোর হিসেবে মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত করে দেয়। ২৬-২৭ বছরের দিকে অরোর বিভাগের প্রধান ও ২০২০ সালের দিকে জাদু নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে যায় হ্যারি।
এরই মধ্যে জিনি উইজলির সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হলে, তাদের কোল আলো করে জন্ম নেয় ফুটফুটে তিনজন শিশু। প্রথমটির নাম রাখা হয় তার বাবা জেমস পটার ও তার ধর্ম-পিতা সিরিয়াস ব্ল্যাকের নাম মিলিয়ে, জেমস সিরিয়াস পটার। দ্বিতীয় ছেলের নাম, হ্যারির প্রিয় দুই প্রফেসর অ্যালবাস ডাম্বলডোর ও সেভেরাস স্নেইপের নামের সাথে মিল রেখে রাখা হয় অ্যালবাস সেভেরাস পটার। তাকে পরবর্তীতে হগওয়ার্টসে ভর্তি করা হয়। মজার ব্যাপার হলো, যে স্লিদারিনের হাউজের সাথে হ্যারি পটারের এতো দ্বন্দ্ব লেগে থাকত, তার ছেলেকে সর্টিং হ্যাট সেই স্লিদারিন হাউজেই পাঠিয়েছিল। লিলি লুনা পটার নামে একজন কন্যা সন্তানও ছিল তার।
রন উইজলি
রন-হারমায়োনির প্রেম রসায়নের অনেক বিক্রিয়া দেখা গেছে তাদের হগওয়ার্টস পিরিয়ড চলাকালীন। হগওয়ার্টস যুদ্ধের পর একসময় রন নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে হারমায়োনির সামনে। দুজনের বিয়ে হবার পর তাদের ঘরে দুই সন্তান জন্ম নেয়। এদের নাম রাখা হয় যথাক্রমে রোজ উইজলি ও হিউগো উইজলি। রোজকে হ্যারি-জিনির ছেলে অ্যালবাস সেভেরাস পটারের সাথেই হগওয়ার্টসে ভর্তি করা হয়। হ্যারির মতো, অসমাপ্ত পড়া সমাপ্ত করার জন্য রনও কখনো আর হগওয়ার্টসে ফিরে যায়নি। ডেথ ইটার ধরপাকড়ে হ্যারিকে পরিপূর্ণ সাহায্য করায় তাকে সরাসরি অরোর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। সেখানে দুই বছর কাজ করার পর সে মন্ত্রণালয় ত্যাগ করে তার ভাই জর্জ উইজলির সাথে উইজলি’স উইজার্ড হুইজেস নামের দোকানটা আবার চালানো শুরু করে।
হারমায়োনি গ্রেঞ্জার
একসাথে ৭ বছর কাটানোর পর, হারমায়োনিও একসময় বুঝতে পারে সে রন উইজলির প্রেমে ডুবে আছে। তাই রনের প্রস্তাব পাওয়ার পর সে বিয়েতে রাজি হয়ে যায়। রন আর হ্যারির মতো অরোর হবার কোনো ইচ্ছা ছিল না তার। শুরু থেকেই দেখা গিয়েছিল, পড়ার প্রতি ছিল তার ভীষণ ঝোঁক, শিক্ষকের যেকোনো প্রশ্নেই হাত তুলে উত্তর দেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকত সে। হগওয়ার্টস ব্যাটেলের জন্য সে বছর শেষ বর্ষ সমাপ্ত করতে না পারায়, সে পুনরায় ফিরে যায় হগওয়ার্টসে।
N.E.W.T পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফলাফলের মাধ্যমে হগওয়ার্টসের পড়ালেখার পাঠ চুকায় হারমায়োনি।
কিংসলি শ্যাকলবোল্টের অবসরের পর ২০২৯ সালের দিকে হারমায়োনিকে জাদু মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়। এছাড়াও ‘ডিপার্টমেন্ট ফর দ্য রেগুলেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অফ ম্যাজিকাল ক্রিয়েচার’-এ সে হাউজ এলভদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য উকিল হিসেবে নিযুক্ত ছিল।
জিনি উইজলি
হ্যারি পঞ্চম বর্ষে থাকাকালীন, প্রথম ম্যাচের পর ডলোরেস আমব্রিজ হ্যারি, ফ্রেড ও জর্জকে কুইডিচ থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে। ফলে হ্যারির জায়গায় জিনি উইজলি সিকার হিসেবে এবং ফ্রেড জর্জের পরিবর্তে কির্কে ও স্লপার বিটার হিসেবে খেলার সুযোগ পায়। কুইডিচে জিনি উইজলির জুড়ি মেলা ভার। তাই হগওয়ার্টস থেকে গ্রাজুয়েশনের পর সে পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে হলিহেড হারপিস উইচেস কুইডিচ ক্লাবে যোগদান করে।
জিনি উইজলি যে হ্যারি পটারকে বিয়ে করেছিল সেটা হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোস: পার্ট টু এর শেষ অঙ্কেই চিত্রায়িত করা হয়েছে। তাদের ঘরে মোট তিন সন্তান জন্ম নিয়েছিল। তাদের নাম জেমস সিরিয়াস পটার, অ্যালবাস সিরিয়াস পটার, ও লিলি লুনা পটার। প্রত্যেকটা নামই হ্যারি তার কাছের প্রিয় মানুষগুলোর নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছিল। মা হবার পরেই কুইডিচ খেলা ছেড়ে দেয় জিনি। তারপর সে জাদু জগতের দৈনিক পত্রিকা ‘ডেইলি প্রফেট’ এর ক্রীড়া বিভাগে সাংবাদিক হিসেবে যোগদান করে।
নেভিল লংবটম
পুরো সিরিজে বোকা হিসেবে পরিচিত নেভিল লংবটম হগওয়ার্টস যুদ্ধে নাগিনীকে গ্রিফিন্ডরের তলোয়ারের মাধ্যমে খুন করার পর নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করে দিয়েছে পুরোপুরি। বিধ্বস্ত অবস্থায়ও শক্তিশালী ভলডেমর্টের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শক্তি দেখিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ একটা হরক্রাক্স ধ্বংসের মাধ্যমে ভলডেমর্ট বধে নেভিল লংবটমের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হগওয়ার্টস যুদ্ধের পর নেভিল কিছুদিন অরোর হিসেবে কাজ করেছিল। সিনেমা ও বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ করা হয়েছে হার্বোলজিতে ছিল লংবটমের বিশেষ দখল। তাই সেটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে প্রফেসর স্প্রাউটের অধীনে হগওয়ার্টসের হার্বোলজি বিভাগে যোগ দেয় সে। কিছুদিন পর সহপাঠী হাউজ হাফলপাফের হ্যানা অবটের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় নেভিল। এই দম্পতির ঘরে কোনো সন্তান জন্ম নেয়নি।
লুনা লাভগুড
ভলডেমর্টের অন্যতম হরক্রাক্স রোয়েনা র্যাভেনক্ল’র ডায়াডেম খুঁজে বের করতে লুনা লাভগুডই সাহায্য করেছিল হ্যারিকে। স্কুল ছেড়ে যাওয়ার পর পুরো পৃথিবী চষে বেড়িয়ে বিচিত্র সব প্রাণী সংগ্রহ করেছিল লুনা লাভগুড। তখন সে হয়ে উঠেছিল পৃথিবী বিখ্যাত এক উইজার্ডিং ন্যাচারালিস্ট। সে এমন সব প্রাণী আবিষ্কার করেছিল, যেগুলোর অস্তিত্ব সম্পর্কে কারো কোনো ধারণা ছিল না।
লুনা বিয়ে করেছিল তার মতোই আরেক জন্তু-প্রেমী রফ স্ক্যামান্ডারকে। রফ স্ক্যামান্ডার ছিল বিখ্যাত জাদুকর ও ‘ফ্যান্টাস্টিক বিস্টস অ্যান্ড হোয়্যার টু ফাইন্ড দেম‘ বইয়ের লেখক নিউট স্ক্যামান্ডারের দৌহিত্র। বইটি হগওয়ার্টসের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্যই অধ্যয়ন করা বাধ্যতামূলক।
রুবিয়াস হ্যাগ্রিড
হগওয়ার্টসে ভর্তি হবার প্রথম দিন থেকেই হ্যারি, হারমায়োনি, ও রন ত্রয়ীর সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিল বিশালদেহী রুবিয়াস হ্যাগ্রিড। ২০১৭ সালের দিকে তার বয়স হয়েছিল ৮৯। তখনও তিনি তাগড়া যুবকের মতো শক্তি নিয়ে ঘুরতেন। কারণ তিনি ছিলেন এক দানব পরিবারের সদস্য। হ্যারিকে যেভাবে শুরুতে থেকেই খাতির-যত্ন করেছিলেন, ঠিক তেমনটা করেছিলেন হ্যারির ছেলে অ্যালবাসের ক্ষেত্রেও। দুর্ভাগ্যবশত পছন্দের মানুষ মাদাম ম্যাক্সিমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেননি তিনি। কারণ, হ্যাগ্রিডের চেয়ে তার পদমর্যাদা ছিল অনেক উঁচুতে। তাই বেচারা হ্যাগ্রিড নিজ থেকে আর কিছু বলার সাহস পায়নি।
জর্জ উইজলি
নিঃসন্দেহে হ্যারি পটার ফ্র্যাঞ্চাইজিতে অধিকতর কৌতুকের রসদ জুগিয়েছে যমজ উইজলি ভাই। সিনেমা ও বইয়ে তাদের কিছু কর্মকাণ্ড দেখে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু হগওয়ার্টস যুদ্ধে সেই মানিকজোড়ের একজনকে চিরতরে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হয়, সে প্রাণ বিসর্জন দেয় হগওয়ার্টস যুদ্ধে। সেই জন্ম থেকে থেকে শুরু করে ফ্রেড মারা যাওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত প্রত্যেকটা মূহুর্ত একসঙ্গে কাটিয়েছে ফ্রেড ও জর্জ। ফ্রেডের মৃত্যুতে নিঃসঙ্গ হয়ে পুরোপুরি ভেঙে পড়ে জর্জ।
কয়েক বছর পর সে হাউজ গ্রিফিন্ডরের অ্যাঞ্জেলিনা জনসনকে বিয়ে করে। তাদের প্রথম সন্তানের নাম রাখা হয় প্রয়াত ভাইয়ের নামে, ফ্রেড। রোক্সানে নামে ওদের একটা মেয়েও ছিল। পরবর্তীতে সে রন উইজলির সাথে উইজলি’স উইজার্ড হুইজেস নামক দোকান চালিয়ে প্রচুর পয়সা কামায়।
ডলোরেস আম্ব্রিজ
হ্যারি পটারে যে কয়টা চরিত্রের উপর মন থেকে ঘৃণা এসেছে, তার তালিকা করা হলে ডলোরেস আমব্রিজের নাম উপরের দিকেই থাকবে। ডেথ ইটার না হওয়া সত্ত্বেও, আম্ব্রিজ লর্ড ভলডেমর্টের দলে পরোক্ষভাবে শামিল হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর অত্যাচার চালানো ও জাদু মন্ত্রণালয়ের নির্দোষ কর্মচারীদের বন্দী করার মতো জঘন্য কাজ করেছে সে। হগওয়ার্টস যুদ্ধের পর তাকে বন্দি করে বিচারের আওতায় আনা হয়। আনফরগেভিবল কার্স ব্যবহার করার দরুন জন্য তাকে চিরকালের জন্য আজকাবান কারাগারে প্রেরণ করা হয়। যেখানে তার রং-বেরঙের গোলাপি দুনিয়া পরিণত হয় আজকাবানের প্রেতবৎ ঘুটঘুটে অন্ধকারে।
উইজলি পরিবার
হ্যারিকে সবসময়ই উইজলি পরিবার সবক্ষেত্রে সমর্থন দিয়ে এসেছে। বেল্লাট্রিক্স লেস্ট্রেঞ্জের সাথে মল্লযুদ্ধে মলি বেল্লাট্রিক্সকে হারিয়ে দিলেও, তাদের অন্তরে জ্বলন্ত ছিল ফ্রেডকে হারানোর দগদগে ক্ষত। হগওয়ার্টস যুদ্ধের পর অবশ্য তারা আগের মতোই সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে থাকে।
পার্সি উইজলি ‘ডিপার্টমেন্ট অভ ম্যাজিক্যাল ট্রান্সপোর্টেশন’ এর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে যায়। তারপর সে বিয়ে করে অড্রে নামে এক রমণীকে, যাদের ঘরে মলি ও লুসি নামে দুটো কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছিল। পার্সির মধ্যে খুঁতখুঁতে স্বভাব ছিল শুরু থেকেই, তাই প্রতিটা জিনিসই সে ৩-৪ বার করে পরীক্ষা করত।
আর্থার ইউজলি তার পুরনো ঘরেই থাকতেন। মাগলদের নিয়ে কাজ করতে অনেক পছন্দ করতেন তিনি। সবসময় মাগলদের পাশে থেকে সমর্থন ও সাহস জোগাতেন। ভলডেমর্ট মন্ত্রণালয়ে যে তালগোল ও জঞ্জাল পাকিয়েছিল, আর্থার তা সাফ করেছিলেন নিজ হাতে। মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হওয়া ডেথ ইটারদের মন্ত্রণালয় থেকে বিতাড়িত করেন তিনি।
বেল উইজলি আর ফ্লেউর ডেলাকৌর বিয়ে করার পর তাদের ঘরে তিনজন সন্তান জন্ম নেয়। এদের মধ্যে ভিক্টরি নামের একজন টেড লুপিনের সাথে মন দেয়া-নেয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যায়। চার্লি উইজলি আবারও রোমানিয়া ফিরে যায়, যেখানে সে তার ড্রাগন গবেষণা অব্যাহত রাখে। সে কখনো বিয়ে করেনি, তাই তার কোনো সন্তান-সন্ততি ছিল না। তবে মাঝেমধ্যে তার ভাই-বোনের সন্তানদের সাথে সময় কাটাতে আসত।
ড্র্যাকো ম্যালফয়
হগওয়ার্টস যুদ্ধের শেষ দিকে ড্র্যাকো ম্যালফয় ভলডেমর্টের দল থেকে সরে এসে হ্যারি পটারের দলে শামিল হয়। পরবর্তীতে হ্যারি আর ড্র্যাকো ম্যালফয়ের বন্ধুত্ব হয়তো খুব একটা গাঢ় হয়নি, কিন্তু স্কুলের দুশমনি পুরোপুরি বাদ দিয়েছিল। যুদ্ধের পর ড্র্যাকো তার পুরনো স্বভাব ত্যাগ করে মাগলদের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ফেলেছিল। বাবার কাছ থেকে পাওয়া অহংকারকেও ঝেড়ে ফেলে সে। তারপর অ্যাস্টোরিয়া গ্রিনগ্রাসকে বিয়ে করে, যে কিনা হগওয়ার্টসে তার দুই ক্লাস জুনিয়র ছিল।
বিশুদ্ধ রক্ত সমৃদ্ধ হবার পরেও অ্যাস্টোরিয়া এসব দম্ভ থেকে নিজেকে মুক্ত করে আনে। তাদের ঘরে একটি ছেলে জন্মেছিল, যার নাম রাখা হয় স্করপিয়াস ম্যালফয়। স্করপিয়াস ম্যালফয় আর হ্যারির ছেলে অ্যালবাস পটারকে একসাথে হগওয়ার্টসে ভর্তি করা হয়। সর্টিং হ্যাট দুজনকেই হাউজ স্লিদারিনে পাঠায়। ফলে দুজনের মধ্যেই বেশ ভালো বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। ম্যালফয় পরিবার আগে থেকেই ধনী হওয়ায়, ড্র্যাকোকে টাকা-পয়সা নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়নি। এমনকি পরবর্তীতে সে ম্যালফয় মহলটাও পেয়ে গিয়েছিল। তার বাবার মতো ডার্ক আর্টিফেক্ট জমা করার পাশাপাশি, রসায়নের নিগুঢ় তত্ত্ব অনুধাবনেও মনোনিবেশ করেছিল।
এডওয়ার্ড ‘টেডি’ লুপিন
দুনিয়া কাঁপানো দুই জাদুকর রেমাস লুপিন আর নিম্ফ্যাডোরা টঙ্কসের ছেলে টেড লুপিন মা-বাবার মৃত্যুর পর তার নানী অ্যান্ড্রোমিডা টঙ্কসের কাছে বড় হতে থাকে। সে তার মায়ের মতো ইচ্ছানুযায়ী রূপ বদল করতে পারত। টেডির ধর্মপিতা ছিল হ্যারি পটার, তাই মাঝে মাঝেই হ্যারি টেড লুপিনকে দেখতে যেত।হগওয়ার্টসে ভর্তি হবার পর সর্টিং হ্যাট তাকে হাউজ হাফলপাফে পাঠায়। সপ্তম বছরে সে হেড বয় হিসেবে নির্বাচিত হয়। সে সময় বিল আর ফ্লেউরের মেয়ে ভিক্টরি উইজলির সাথে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে।
কিংসলি শ্যাকলবোল্ট
অর্ডার অভ দ্য ফিনিক্স থেকে শুরু করে, জাদু মন্ত্রণালয়ের অরোর ও হগওয়ার্টসের গুরুভার দায়িত্ব পালন করায়, কিংসলি শ্যাকলবোল্ট ছিলেন হ্যারি পটার ফ্র্যাঞ্চাইজির গুরুত্বপূর্ণ এক চরিত্র। হগওয়ার্টস যুদ্ধের পর তাকে জাদু মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী মন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে তিনি জাদু মন্ত্রণালয়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।
মিনেরভা ম্যাকগোনাগল
ডাম্বলডোরের আমলে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক থাকলেও, সেভেরাস স্নেইপ মারা যাওয়ার পর তাকে হগওয়ার্টসের প্রধান শিক্ষকের আসনে বসানো হয়। কয়েক বছর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বিধ্বস্ত হগওয়ার্টসে তিনি পুনরায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। হগওয়ার্টস আবার ফিরে পেয়েছিল তার স্ব-মহিমা, যেমনটা ছিল ডাম্বলডোরের আমলে। তবে হ্যাঁ, তিনি অবশ্য ডাম্বলডোরের মতো হাউজ গ্রিফিন্ডরকে ফ্রিতে পয়েন্ট বিলিয়ে দিতেন না।
ডাডলি
বড় হবার পর স্বভাব-চরিত্রে পুরোপুরি পরিবর্তন আসে ডাডলির। সে হ্যারির সাথে আর কখনো দুর্ব্যবহার করেনি। বিয়ের পর হ্যারির সাথে সে ভালো একটা সম্পর্ক ধরে রাখে এবং নিজ ছেলেকে হ্যারির ছেলের সাথে খেলতে নিয়ে আসত। ডার্সলি ও পেতুনিয়ার সাথে হ্যারির আর কখনো দেখা হয়নি। হ্যারিকে যে কম্বলে তার মা মুড়িয়ে রেখেছিল, সেটা ডাডলি হ্যারির কাছে হস্তান্তর করে। মায়ের সর্বশেষ স্মৃতি খুঁজে পেয়ে প্রচণ্ড রকমের খুশি হয় হ্যারি পটার।