মজিদ কাকার মতো সিরিয়াস লোক সচরাচর পাওয়া যায় না। সূর্য ওঠার আগে মাঠে যান। দুপুরে ওখানেই খান। ফেরেন গোধূলিতে। সিরিয়াস লোকদেরও কিছুটা সময় খামখেয়ালি করে কাটাতে হয়। মজিদ কাকার খামখেয়ালিপনার সময় গোধূলির পর থেকে। তখন তিনি জীব ও জগৎ নিয়ে কথা বলেন। পুরোনো আম গাছের নিচে ছড়ানো শেকড়ে বসেন। একটু পর পর দাঁড়ান, লুঙ্গির গিঁট শক্ত করে বাঁধেন। আর জগতের সকল খামখেয়ালিপনাকে তুচ্ছজ্ঞান করেন।
যতদূর জানি, আমাদের এই পাড়াতো কাকার অক্ষরজ্ঞান নেই। তবে অন্য জ্ঞান যতটুকু আছে ততটুকুই পাকা। জীবন, বাস্তবতা ও দর্শন নিয়ে যা বলেন, তাতে পৃথিবীর তাবড় তাবড় ভাবুকরাও ভাবনার রসদ পেয়ে যাবেন।
মজিদ কাকা কবি নজরুলের নাম শুনেছেন। তার জীবন সম্পর্কেও জেনেছেন। নজরুল নাকি কবিতা লিখতেন। তার পুরোটা জীবন গেছে খামখেয়ালি করে। একবার রুটির দোকানে চাকরি নিয়েছিলেন। ওখানে লেগে-বেঁধে কিছুদিন থাকতে পারলেও গতি হয়ে যেত। তবে ওই কাজটাও ঠিকমতো করতে পারলেন না। করবেন কী করে, কবিতা লেখার নেশা যাকে পায়, তাকে দিয়ে কিছুই হয় না। নজরুল বড় হয়ে কিছুই হতে পারেননি। ওই কবিতা লিখতে লিখতেই মরতে হয়েছে।
কিছুদিন আগে গ্রামে গিয়েছিলাম। মজিদ কাকার সঙ্গে দেখা। মনে হলো, এখনও তিনি সিরিয়াস আছেন। আমাকে ধমকালেন, কাদা ভেঙে হেঁটে যাচ্ছি বলে।
আমি তখন দৌড়ের ওপর। বিয়ের দাওয়াত খেতে যাচ্ছি, নিকটাত্মীয়ের বিয়ে। যেতেই হবে। অন্যদিকে বাস্তব পৃথিবী। বাস্তবতা মানেই কঠিন কিছু। দুই কঠিন মুখোমুখি হলে দৌড়ের ওপর থেকেও কুলিয়ে ওঠা যায় না।
সেদিন মজিদ কাকার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি। তার ধমকের জবাবে মুচকি হাসলাম। পরে যে যার পথে চলে গেলাম। আমি হাঁটছি, আর ভাবছি। ভাবতে ভাবতেই মনে হলো, মজিদ কাকা ভাবার মতো বড় একটা রসদ দিয়ে গেছেন। কী সেই রসদ?
রসদের নাম ‘দৌড় বিষয়ে যত কথা’। এটা একটা বই। লিখেছেন জাপানি লেখক হারুকি মুরাকামি। তিনি ঔপন্যাসিক। আবার একজন দৌড়বিদ হিসেবেও খ্যাত। ২০১৮ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের হ্রস্বতালিকায় তাঁর নাম আলোচিত ছিলো। তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবে যেমন খ্যাত, ম্যারাথন দৌড়ের জন্যও আলোচিত।
ইংরেজিতে লেখা তাঁর ‘হোয়াট আই টক অ্যাবাউট হোয়েন আই টক অ্যাবাউট রানিং’ এর বাংলা করেছেন ফারুক মঈনউদ্দীন। তিনি পেশায় ব্যাংকার। গল্প লেখেন, ভ্রমণকাহিনী লেখেন, সাথে অনুবাদও করেন।
ফারুক মঈনউদ্দীন হারুকি মুরাকামির এই বইয়ের বাংলা নাম দিয়েছেন ‘দৌড় বিষয়ে যত কথা’। শুনে মনে হতে পারে, এখানে দৌড়ের নিয়ম-কানুন লেখা আছে। একটু ধারণা নেওয়ার জন্য লেখকের ভূমিকার একটা অংশ থেকে ঘুরে আসা যাক।
ফারুক মঈনউদ্দীন সেই অংশটার অনুবাদ করেছেন এভাবে,
সবাই জানেন, আমি কোনো ভদ্রলোক নই, তাই হয়তো শুরু করার আগে আমার না ভাবলেও চলবে, কিন্তু তবু এ বইটা লেখার ব্যাপারে কিছুটা ইতস্তত করছি। বিষয়টা একধরনের কৌশল মনে হতে পারে, কিন্তু বইটা দৌড়ের বিষয়ে, কীভাবে সুস্থ থাকা যায়, তার আলোচনাগ্রন্থ নয়। আমি এখানে এরকম কোনো উপদেশ দিতে যাচ্ছি না, ‘উপস্থিত সবাই- আসুন, সুস্থ থাকার জন্য আমরা রোজ দৌড়াই।’ তার বদলে আমি এই বইতে একজন ব্যক্তি হিসেবে আমার কাছে দৌড় কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ের ভাবনাগুলো জড়ো করেছি।
বেশ ভালো কথা, বইয়ের ব্যাপারে একটা ধারণা পাওয়া গেলো। কিন্তু এই ধারণা মজিদ কাকা দিয়ে গেলেন কীভাবে!
আসলে মজিদ কাকার সঙ্গে যখন দেখা হয়েছে, তখন আমার হাতে ওই বইটা ছিলো। ওটা আমাকে পাঠিয়েছিলেন আমার এক বন্ধু। বলেছিলেন একটা সমালোচনা দাঁড় করাতে হবে। কিন্তু হাতে সময়ের যতটা সঙ্কট, তাতে বই পড়াই কঠিন হয়ে উঠছিলো। তাই সঙ্গে নিয়ে নিলাম। বাসে, রিকশায়, যখন যে অবস্থায় থাকলাম ‘দৌড় বিষয়ক যত কথা’ পড়লাম।
দৌড়ের ওপর থেকে দৌড় বিষয়ক বই পড়লাম, ভালো কথা। কিন্তু এই বইয়ের সাথে তো নিরক্ষর মজিদ কাকার সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে না! পাঠক, সম্পর্ক পাওয়ার আশা বাদ দিতে হবে। নাহয় নিজ দায়িত্বে খুঁজে নিতে হবে। আপনাদের আপত্তি না থাকলে মজিদ কাকার অধ্যায়টা একেবারে বাদ দিয়ে এবার হারুকি মুরাকামির অধ্যায়ে ঢুকে যেতে চাই। তার আগে বলে রাখা ভালো, ওই লেখকের কিন্তু অন্যের মনের খবর এদিক-সেদিক করে নিজের বলে চালিয়ে দেওয়ার অভ্যাস আছে।
আমার অভ্যাস আছে হাঁটার। ওই লেখকের অভ্যাস দৌড়ানোর। আমি যখন ভাবতে ভাবতে হাঁটি, রাজধানীর কুখ্যাত জটের ভেতর দিয়েও আট-দশ কিলোমিটার যেতে পারি, নিরাপদে। প্রায় প্রতিদিন একান্ত ভাবনাগুলোর জন্য লম্বা হাঁটার আয়োজন করি। লেখক মুরাকামিও যখন দৌড়ান, তখন একান্ত সময় কাটান। তিনি কখনো দৌড়ান ২৫ কিলোমিটার পথ। দৌড়েছেন টানা ৬২ কিলোমিটার। আমার হাঁটার অভ্যাসকে তিনি চুরি করে ‘দৌড়’ বলে চালিয়ে দিয়েছেন! আর ভাবের দুনিয়ার সুফল পুরোপুরি ভোগ করছেন। বইটা যারা পড়বেন, তারাই মুরাকামির বিরুদ্ধে এমন কিছু না কিছু চুরির অভিযোগ তুলবেন!
মুরাকামি লিখেছেন, “কিছু কাজ যত নীরসই মনে হোক না কেন, দীর্ঘ সময় লেগে থাকলে সেটাই পরিণত হয় চিন্তাশীল, এমনকি ধ্যাননিষ্ঠ এক কর্মে।”
লিখেছেন,
কখনো মনে করলে দ্রুত দৌড়াই, কিন্তু লম্বা পা ফেলে দৌড়ালে সময় কমিয়ে দিই, যাতে প্রতিটি দৌড়ের শেষে যে উল্লাস অনুভব করি, সেটির রেশ পরদিন পর্যন্ত বহমান থাকে। এই কৌশল আমার উপন্যাস লেখার সময়েও দরকার হয়। প্রতিদিন লেখার সময় যেখানে এসে মনে হয় আরও লিখতে পারব, ঠিক সেখানে এসে আমি থেমে যাই। এটা করলে পরদিনের লেখা বিস্ময়কর রকম মসৃণভাবে এগোয়।
ম্যারাথন যেমন সহজ নয়, লেখাও সহজ কাজ নয়। বিশেষ করে একটা উপন্যাস লেখা। যিনি দৌড়ান, তাকে যেমন অনুশীলন করতে হয়, শক্তি খরচ করতে হয়, শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়, একজন ঔপন্যাসিকের ক্ষেত্রেও তা-ই। বরং এর চেয়েও বেশি। ঔপন্যাসিককে যন্ত্রণা মাথাতেও বহন করতে হয়। মুরাকামিকে যদি প্রশ্ন করা হয়, ঔপন্যাসিকের প্রথম দরকারি গুণটি কী? জবাবে তিনি বলবেন, মেধা। যদি কারো সাহিত্যমেধা না থাকে তাহলে তাকে ঔপন্যাসিক হওয়ার চিন্তা ভুলে যেতে হবে। যদি তেলই না থাকে, তাহলে সবচেয়ে ভালো গাড়িটিও চলবে না। দ্বিতীয় গুণ মনোসংযোগ। একটা বিশেষ সময়ে যা কিছু অত্যাবশ্যক, তার ওপর সীমিত মেধার সবটুকু নিবদ্ধ করা।
তিনি লিখেছেন,
মনোসংযোগের পর একজন ঔপন্যাসিকের জন্য চূড়ান্তভাবে সবচেয়ে দরকারি জিনিসটা হচ্ছে সহিষ্ণুতা। দৈনিক তিন থেকে চার ঘণ্টা লিখে এক সপ্তাহ পর যদি পরিশ্রান্ত হয়ে যায় কেউ, তার পক্ষে বড় কোনো লেখা সম্ভব হবে না। একজন ফিকশন লেখক- অন্তত যিনি উপন্যাস লিখতে চান- তাঁর জন্য দরকার প্রতিদিন ছয় মাস কিংবা এক বছর বা দুই বছর ধরে প্রতিদিন নিজ শক্তিকে সংহত করা।
মুরাকামির কাছে উপন্যাস লেখা শারীরিক শ্রম। লেখাটা মানসিক শ্রম হলেও একটা আস্ত বই লিখে শেষ করা শারীরিক শ্রমের কাছাকাছি। অধিকাংশ মানুষ কেবল লেখার ওপরের বাস্তবতা দেখেন। তারা ভাবেন, লেখকেরা নীরব ঘরে বসে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে জড়িত থাকেন। কারো যদি একটা কফির পেয়ালা তোলার মতো শক্তি থাকে, মানুষ ভেবে বসে তিনি উপন্যাসও লিখতে পারবেন। কিন্তু কাজে নামলে দেখা যায়, যেমন মনে হয়ে তেমন আরামের কাজ এটা নয়।
এই শক্ত কাজকে ঠিকমতো সামাল দিয়ে ঘরে তুলতে হলে দরকার নিয়মানুবর্তিতা। হারুকি মুরাকামি প্রয়োজনের তাগিদেই নিয়ম মানতে শুরু করেন। তিনি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে গিয়ে তার ঔপন্যাসিক জীবনকেও স্বাস্থ্যকর হিসেবেই গড়ে তোলেন। সেসব কথা নিয়েই তার বই ‘দৌড় বিষয়ে যত কথা’। ইংরেজি থেকে ভাষাবদল হয়ে প্রকাশ হয়েছে বাংলায়। বদল মানে তো বদলই। আসলের মতো নয়। কিন্তু এই বদলটায় দূর থেকে হলেও আসলের গন্ধ পাওয়া গেছে।
যদি প্রশ্ন করেন, কীভাবে? তাহলে বলবো, ব্যাখ্যা করতে পারবো না। কারণ ‘আসল’ চেখে দেখিনি। তবে ঘ্রাণেও অর্ধেক খাওয়া হয়ে যায়। আসলের ঘ্রাণ নেওয়ার চেষ্টায় বইটার একটা ইংরেজি সমালোচনা পেয়ে যাই। ওটা লিখেছেন ব্রিটিশ লেখক অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল। তিনি সংবাদিক এবং রাজনীতিবিদও। ক্যাম্পবেল তখনকার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের মুখপাত্র ছিলেন। হারুকি মুরাকামি যেহেতু পশ্চিমা ঘেঁষা জাপানি, সেহেতু পশ্চিমেও তার লেখার কদর আছে। ব্রিটেনে আছে অনেক পাঠক। এদের একজন ক্যাম্পবেল। তিনি সমালোচনায় লিখেছেন, হারুকি মুরাকামি তার বইতে ৬২ মাইল দৌড়ানোর কষ্ট, যন্ত্রণার কথা লিখেছেন। যেসব পাঠকের দৌড়ের সাথে সম্পর্ক নেই, তারা প্রশ্ন করতে পারেন, “তিনি কি জানেন না ৬২ মাইল দৌড়ানো কতটা যন্ত্রণার? তারপরও দৌড়াতে গেলেন কেন?” আর যারা দৌড়ান, তাদের প্রশ্ন হবে উল্টো, “আমি কেন এই কাজটা করতে পারলাম না?”
মূল কথা হলো সেই বিখ্যাত উক্তি, ‘বুঝলে বুঝপাতা, না বুঝলে তেজপাতা।’ এখানে ‘বুঝপাতা’ বলতে যা বোঝাতে চাওয়া হয়েছে, সেটা স্পষ্ট। ‘তেজপাতা’ ব্যবহার করতে যা বলা হয়েছে, সেটাও বুঝতে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু ‘তেজপাতা’র অর্থ অভিধান ঘেঁটে বের করা হলে বাক্যটাতে গোলমাল লেগে যাবে।
কোথায় অভিধান ঘাঁটতে হবে, কোথায় হবে না, সেটা ফারুক মঈনউদ্দীন ভালো করেই জানেন। বাংলায় যারা ভাষা বদল করেন, তাদের তালিকার প্রথম সারিতেই তার নাম দেখা যায়। ভাত সেদ্ধ হয়েছে কি না, সেটা যাচাই করতে গোটা পাতিলের ভাত দেখতে হয় না। একটা-দুইটা ভাত টিপে দিয়েই পাতিলের খবর নেওয়া যায়- ‘দৌড়ানোর অনেক সুবিধা। প্রথম কথা, এটার জন্য অন্য কাউকে দরকার হয় না এবং কোনো বিশেষ যন্ত্রপাতি লাগে না। দৌড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় যেতে হয় না।’– এই হলো ফারুক মঈনউদ্দীনের ভাষাবদল।
এখানে তিনি যদি লিখতেন, ‘দৌড়ানোর অনেক পীড়া। প্রথমত, এর জন্য অন্য কোনো ব্যক্তিকে প্রয়োজন হয় না এবং কোনো বিশেষ ধরনের যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় না। দৌড়াতে হলে নির্দিষ্ট কোনো স্থানে যেতে হয় না।’
যদিও ইংরেজিটা আমার পড়া নেই, তবু আন্দাজ করে বলে দেওয়া যায় অভিধান ঘাঁটলে আমার বাক্যগুলোকেও নির্দোষ প্রমাণ করা যাবে। তাহলে অনুবাদক কেন এমন বাক্য ব্যবহার করেননি? তিনি ‘অন্য কোনো ব্যক্তিকে’ না লিখে ‘অন্য কাউকে’ লিখলেন কেন?
‘বুঝলে বুঝপাতা, না বুঝলে তেজপাতা।’
তবে মানুষের বোঝার শেষ নেই। সহজে কিছু পেলে, আরো সহজ আশা করে। বসতে দিলে শুতে চায়। সেই হিসেবে একটা অংশ তুলে ধরছি, ‘যারা প্রতিদিন দৌড়ায়, মানুষ কখনো কখনো তাদের এই বলে বিদ্রুপ করে যে, দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার জন্য তারা নাকি যেকোনো কিছু করতে পারে।’
এখানে অনুবাদক শতভাগ সততা দেখিয়েছেন, সেটা মূল লেখা না দেখেই বলে দেওয়া যায়। সততার ব্যাপারে তার সুনাম আছে। তবে আমি যদি অনুবাদকের কাছে এই অংশটা এভাবে আশা করি, ‘যারা প্রতিদিন দৌড়ায়, কখনো কখনো মানুষ তাদের বিদ্রুপ করে। বলে, দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে তারা নাকি যেকোনো কিছু করতে পারে।’
আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। আশা থেকে স্বপ্ন তৈরি হয়। আবার স্বপ্ন থেকেও তৈরি হয় আশা। আর এই দুটোর জন্ম হয় ভেতর থেকে। ভেতরটাকে যদি নিজের মতো ছেড়ে দেওয়া যায়, তাহলে স্বপ্ন এবং আশা জেগে ওঠে।
আমি হাঁটি, অফিস থেকে বাসা। এতটুকু দূরত্ব বাসে গেলে ভাড়া মাত্র বিশ টাকা। অনেকে ভাবেন, এই টাকা কয়টা বাঁচানোর জন্য আমি হেঁটে যাই। কেউ ভাবেন, শরীর অটুট রাখার জন্য হাঁটি। কিন্তু আমি হাঁটি স্বপ্ন বাঁচাতে। আর আশা অটুট রাখতে। মুরাকামি হাঁটেন না। দৌড়ান। উদ্দেশ্য ঐ দুটোই।
হাঁটা, দৌড়ানো আর উপন্যাস লেখা, তিনটিই খামখেয়ালিপনা। জীবন নিয়ে যারা ‘সিরিয়াস’, তাদের এসব খামখেয়ালিপনা পছন্দ নয়। আবার খামখেয়ালিতে যারা বুঁদ, তাদের ‘তথাকথিত জীবন’ বিরক্তির।
হারুকি মুরাকামি তার ৬২ মাইলের ম্যারাথনের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখেছেন,
পথের ধারে গরুগুলো অলসভাবে ঘাস চিবিয়ে চলে। দৌড়বিদদের প্রতি ওগুলোর কোনো আগ্রহই নেই। এসব খামখেয়ালি মানুষ আর তাদের অর্থহীন কর্মকাণ্ডকে পাত্তা দেওয়ার চেয়ে ঘাস খেতেই ব্যস্ত ওরা। অন্যদিকে দৌড়বিদদেরও নজর দেওয়ার ফুরসত নেই গরুগুলো কী করছে সেদিকে।
আহা দৌড়বিদ, আহা গরু।
অনলাইনে বইটি সংগ্রহ করতে ক্লিক করতে পারেনি নিচের লিঙ্কে: