ক্লিফটনের রাত বেশ নিশ্চুপ হয়। আধুনিকতার অগ্রসরতায় যেখানে উন্নত বিশ্বের শহরগুলো রাতের গভীরতায় নতুন রূপে কলরব করে উঠে, তার ছিটেফোঁটাও দেখা যাবে না এই শহরে। শহরের বন চিড়ে ছুটে চলা মহাসড়ক দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গেলে বিশ্বাস করতে পারবেন না যে এটি আধুনিক বিশ্বের প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্রের একটি শহর। তার উপর শহরের জনসংখ্যাও খুব একটা বেশি না। কিন্তু আজ রাতের কথা আলাদা। রাত দশটার কিছু আগে শহরের উত্তর দিকের রাস্তায় দু’টো গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। আর সেই দুর্ঘটনার জের ধরে জেগে উঠেছে স্থানীয়রা। উল্টে থাকা গাড়ির কাঁচ ভেঙে আহত চালককে বের করে আনা হলো। মাথায় গুরুতর জখম হওয়া চালক বাঁচবে কিনা সন্দেহ। তার জখম এতটাই গুরুতর যে, মাথা ফেটে ভেতরের মাংস, মগজ দেখা যাচ্ছে। প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।
ঘটনাস্থলে ভিড় ঠেলে এক চৌদ্দ বছর বয়সী মেয়ে হন্তদন্ত হয়ে সামনে এগিয়ে আসলো। আহত চালকের আপন ছোট বোন সে। বন্ধুর বাসায় বোনকে নামিয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলো হতভাগা চালক শন ওয়েস্টোভার। সবাই ধরাধরি করে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে লাগলো। তখন বাসায় ফোন দিলো ছোট বোন তারা। বাসায় জানানো হলো শনের দুর্ঘটনা এবং জখমের কথা। সব শুনে পরিবারের কর্তা বাবা ঠাণ্ডা গলায় জানালেন, “হাসপাতাল নিতে হবে না। ওকে বাসায় নিয়ে আসো।” বাবার সিদ্ধান্ত শুনে হতবাক দাঁড়িয়ে থাকলো মেয়েটি। কিন্তু সে জানে, তার এখানে আর কিছুই করার নেই। কারণ তার বাবার বিশ্বাস, সরকার নিয়ন্ত্রিত হাসপাতালগুলো একেকটা শয়তানের আখরা, নিষিদ্ধ ইল্যুমিনাটির সরাইখানা। তাই একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ হিসেবে তিনি তার সন্তানকে ইল্যুমিনাটির হাতে তুলে দিতে পারেন না।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে ছোট বোন তারা তার ভাইকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলো। তার চলার পথের দিকে তাকিয়ে হতবুদ্ধি হয়ে থাকলো বাকিরা। ২০০০ সালেও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এমন ঘোরতর ইল্যুমিনাটি বিশ্বাসী পরিবার থাকতে পারে, সেটা তাদের ধারণার বাইরে। তারপর কী হলো সেই শনের? সে কি বাঁচতে পেরেছিলো? কৌতূহলীদের জানাচ্ছি, হ্যাঁ, শন সে যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিল তার মায়ের হাতে বানানো আয়ুর্বেদিক রেসিপির সাহায্যে। ওয়েস্টোভার পরিবারে সেগুলো ‘ঈশ্বরের ফার্মেসি’ নামে পরিচিত। কিন্তু আমাদের আলোচনা সেই শন ওয়েস্টোভারকে নিয়ে নয়। বরং তার ছোটবোন তারাকে নিয়ে।
তারা ওয়েস্টোভার
গুগলের সার্চ অপশনে গিয়ে যদি কেউ ‘তারা ওয়েস্টোভার’ লিখে অনুসন্ধান করেন, তাহলে ফলাফল পাতায় ডানদিকে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি থেকে জানতে পারবেন, তারা ওয়েস্টোভার একজন ইতিহাসবিদ। ১৯৮৬ এর দিকে কোনো একদিন তার জন্ম। কিন্তু কবে সেটা কারো পরিষ্কার মনে নেই। তবে পাসপোর্টের তথ্যমতে, তার জন্ম ১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ইদাহো প্রদেশের ক্লিফটন অঞ্চলে। ইংলিশ পাহাড়ের নিকটবর্তী অঞ্চলে ওয়েস্টোভার পরিবারে তার জন্ম হয়। তিনি ব্রিঘাম ইয়াং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন এবং ঐতিহ্যবাহী ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজ থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি হার্ভার্ডের একজন ভিজিটিং ফেলো হওয়ার সম্মান অর্জন করেছেন। আপাতদৃষ্টিতে দেখে মনে হচ্ছে, বেশ সফলতার সাথে তিনি তার শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেছেন।
কিন্তু সত্যি বললে, এই তথ্যগুলো দেখে তারা ওয়েস্টোভারের জীবনকে বিচার করলে বড় ধরনের অপরাধ হয়ে যাবে। হয়তো তারা নিজেও এটা অনুভব করতেন। তার শৈশবের ভয়াবহ স্মৃতি তাকে রাতদিন তাড়া করে বেড়াতো। তিনি সেগুলোকে আর নিজের মাঝে আটকে রাখতে পারলেন না। ঝটপট মনিটরের সামনে বসে গেলেন। কীবোর্ডে ঝড় তুলে তার জীবনের রোমাঞ্চকর যাত্রা নিয়ে লিখে ফেললেন ৩০০ পৃষ্ঠার স্মৃতিকথা ‘এডুকেটেড’। যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় ‘শিক্ষিত’। সেই আত্মজীবনীর মলাটের ভেতর বর্ণিত হলো ড. তারা ওয়েস্টোভারের না বলা কথাগুলো, যা জানার জন্য প্রস্তুত ছিল না কেউ।
ওয়েস্টোভার পরিবার
প্রবন্ধের শুরুতে বর্ণিত ঘটনা থেকেই ধারণা করা যায়, তারা ঠিক কী ধরনের পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন। ওয়েস্টোভার পরিবারের কর্তা জিন ওয়েস্টোভার ছিলেন একজন ধর্মান্ধ পিতা। তার কাছে পুরো পৃথিবী ছিল ষড়যন্ত্রকারীদের আড্ডাখানা। সাত সন্তান এবং এক স্ত্রী নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি কাঠের দালানে স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনযাপন করতেন তিনি। স্বয়ংসম্পূর্ণ বলছি, কারণ তিনি সরকার থেকে কোনোরূপ সাহায্য নিতেন না। এমনকি জন্মের পর সন্তানদের জন্ম সনদও ছুঁড়ে ফেলে দেন তিনি। কাউকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তিনি বিশ্বাস করতেন, স্কুলগুলো ছিল গুপ্ত সঙ্ঘ ইল্যুমিনাটি দ্বারা পরিচালিত। সেখানে একদম ছোট থেকে শিশুদের মগজ ধোলাই করা হয়। তবে স্কুল যাওয়া থেকে বঞ্চিত হলেও সন্তানদের শিক্ষা থেকে একদম বঞ্চিত করেননি তিনি। বাসায় নিজে এবং তার স্ত্রী মিলে সন্তানদের শিক্ষাদান করতেন। আধুনিক স্কুলগুলোর মতো সব বিষয় পড়াতেন না। প্রাগৈতিহাসিক মানুষের মতো তিনি কিছু কিছু বিষয়কে ছেলেদের বিষয় বা মেয়েদের বিষয় হিসেবে আলাদাভাবে দেখতেন।
স্কুল নাহয় বাদ গেলো, অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাওয়াতেও তার অমত। ঘরে বানানো বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক এবং ভেষজ তেলের সাহায্যে চিকিৎসা করতেন তার স্ত্রী। বেশ কয়েকবার গুরুতর দুর্ঘটনায় সন্তানদের অনেকের প্রাণনাশের আশঙ্কা থাকলেও তিনি হাসপাতালে নেননি। এমনকি একবার নিজেও দুর্ঘটনার কবলে পরে রক্তক্ষরণের ফলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু তারপরেও হাসপাতাল যাননি তিনি। তার স্ত্রী লাইসেন্সহীন ধাত্রী মাতা হিসেবে কাজ করতেন। তারা বিশ্বাস করতেন, পৃথিবী খুব শীঘ্রই ধংস হয়ে যাবে। তাই শেষদিনগুলোতে যখন পুরো পৃথিবী জুড়ে খাদ্যের অভাব দেখা দিবে, সেদিন যেন তার পরিবারকে অভুক্ত না থাকতে হয়, সেজন্য তিনি ঘরের ভেতর খাদ্য মজুদ করে রাখা শুরু করেন। পিতার অন্ধবিশ্বাস পুরো পরিবারের উপর প্রভাব ফেলে। তাই সবাই পিতার চোখে পৃথিবীকে দেখতে থাকে। বাইরের পৃথিবী ছিল তাদের নিকট বিপদজনক।
এমন কুসংস্কারাচ্ছন্ন পরিবারে বেড়ে উঠা তারার জন্য ভবিষ্যৎ ছিল অনিশ্চিত। কিন্তু তার দুই ভাই পরিবারের শেকল ভেঙে ঠিকই কলেজে গিয়ে ভর্তি হয়ে যায়। সেখানে তারা নতুন জীবন শুরু করে। হয়তো ভাইদের এই নতুন জীবন তারাকে প্রচণ্ডভাবে টানতো। তিনি নিজেও ছিলেন প্রচণ্ড রকমের জ্ঞানপিপাসু। তার পড়াশোনার প্রতি গভীর আগ্রহ এবং শহরের অপরপ্রান্তে থাকা দাদী তাকে অনুপ্রেরণা দিতেন, বাড়ি থেকে পালিয়ে কলেজে ভর্তি হওয়ার। কিন্তু বালিকা তারার জন্য কাজটা সহজ নয়। বাইরের পুরো জগত তখন তার কাছে অচেনা। ক্লিফটনের সেই কুটির তখন তারার কাছে এক অন্ধকার কারাগার। সেই কারাগারের অন্ধকার তাড়িয়ে কলেজ শিক্ষা শুরু করার জন্য প্রয়োজন অদম্য ইচ্ছে আর বুকভরা সাহস। অদম্য ইচ্ছে তার আছে, কিন্তু সাহসের দৌড় কতটুকু? ওদিকে বাবা জিন ওয়েস্টোভার কলেজের নাম শুনেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন। বাবা আর সন্তানের এই নীতিগত বিরোধের মাঝে তিনি কীভাবে তার জীবনকে নতুনভাবে গড়ে তুললেন? সে গল্প নাহয় তারার কাছ থেকেই জেনে নেবেন, তার আত্মজীবনীর পাতায়। বইটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ হলেও এর প্রতিটি পৃষ্ঠায় আপনি এক নতুন যুক্তরাষ্ট্রকে জানতে পারবেন, যেটা অনেকটাই গণমাধ্যমের দৃষ্টির আড়ালে লুকিয়ে আছে শত বছর ধরে।
এডুকেটেড
নিজের পরিবার এবং তিক্ত অতীত নিয়ে লিখতে বসে তারা আবিষ্কার করলেন, ব্যাপারটি মোটেও সহজ হচ্ছে না তার জন্য। কয়েকবার মনে হচ্ছিলো, বই লেখার পুরো বুদ্ধিটাই যত নষ্টের মূল! কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি তার গল্প লিখে শেষ করেন এবং ছাপাখানায় পাঠিয়ে দেন। প্রকাশক তাকে জানিয়ে দিলেন, সামনের ফেব্রুয়ারিতে তিনি বইটি বাজারে ছাড়বেন। এরই মাঝে মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে যান তিনি। তার মা-বাবা বইয়ের ব্যাপারটি কীভাবে নেবেন, সে কথা ভেবে ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি।
২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বাজারে আসে তারা ওয়েস্টোভার রচিত‘এডুকেটেড: আ মেমোয়ার’ নামের আত্মজীবনী গ্রন্থ। এডুকেটেড বইয়ে সর্বমোট তিনটি অধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে তিনি তার শৈশব এবং কৈশোরের গল্প তুলে ধরেছেন। পাঠকরা এই অধ্যায় পড়ার সময় ওয়েস্টোভার পরিবার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ করবেন। একটি পরিবার কীভাবে কোনোরূপ সরকারি সাহায্য ব্যতিরেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর, সেটি পড়লে অবাক হয়ে যাবেন। লেখিকা এই অধ্যায়ে তার পরিবারের সাথে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন দুর্ঘটনা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার পিতার প্রতিক্রিয়া বেশ স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। একগুঁয়ে এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন পিতার বিশ্বাসে পরিচালিত এই অদ্ভুত পরিবারের ঘটনাপ্রবাহ পাঠকের মনে গভীর দাগ কাটতে বাধ্য।
দ্বিতীয় অধ্যায়ে তারা ওয়েস্টোভার তার কলেজ জীবনের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। স্থানীয় কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পিতার মত না থাকলেও তিনি কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেননি। কলেজ জীবনে তারা তার নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে থাকেন। এই অধ্যায়ে পাঠকরা এক নতুন তারার সাথে পরিচিত হবেন, যিনি তার স্বাধীনতাকে খুঁজে পাওয়া শুরু করেছেন। এর ফলে তার মা-বাবার সাথে নীতিগত দ্বন্দ্বের সূচনা হয়, যেটি বইয়ের শেষ পর্যন্ত বজায় ছিল। কলেজ জীবনে তিনি তার পরিবার সম্পর্কে অনেক ভয়ংকর সত্য জানতে পারেন, যা তার পরবর্তী জীবনে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের উপর প্রভাব বিস্তার করে।
তৃতীয় এবং শেষ অধ্যায়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাটি ত্যাগ করে ইউরোপের উদ্দেশে পাড়ি জমান। তার এই সিদ্ধান্তের কারণে পুরো পরিবারের সাথে অঘোষিত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। যেখানে অন্য যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্যে ইউরোপের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া বেশ আনন্দের সংবাদ হিসেবে বিবেচিত হয়, সেখানে তার পরিবার এই সুযোগকে শয়তানের প্ররোচনা হিসেবে সাব্যস্ত করলো। পারিবারিক ঝামেলা ছাড়াও তিনি কিছুটা আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন একদম কলেজ জীবন থেকেই। এই অধ্যায়ে তিনি তার পরিবারের সাথে তার বর্তমান সম্পর্ক এবং নিজ জীবনের বেশ বড় কিছু সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। বইয়ের কিছু কিছু ঘটনা সম্পর্কে লেখিকা নিজে কিঞ্চিৎ সন্দিহান ছিলেন। তিনি সেগুলো প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে চিহ্নিত করে দিয়েছেন।
পাঠক প্রতিক্রিয়া এবং সম্মাননা
তারা ওয়েস্টোভারের ব্যতিক্রমী আত্মজীবনী গ্রন্থটি প্রকাশের পর খুব সহজে উৎসাহী পাঠকদের নজর কেড়ে নিলো। প্রথম সপ্তাহে বইটি নিউইয়র্ক টাইমসের বেস্ট সেলার তালিকার প্রথম স্থান দখল করে নেয়। বইটি নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ইকোনমিস্টসহ বিভিন্ন বড় বড় পত্রিকায় সমালোচনা এবং ফিচার প্রকাশ করা হয়। তারা ওয়েস্টোভারের এই সংগ্রামী জীবনের গল্প খুব দ্রুত তাকে কিছু‘বড় ভক্ত’ যোগাড় করে দিলো। ভক্তের তালিকায় বারাক ওবামা, বিল গেটস সহ লক্ষ লক্ষ বইপ্রেমীর নাম যুক্ত হলো। বিল গেটসের নিকট এই বইটি ২০১৮ সালের অন্যতম সেরা বই হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বছরের শেষদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রকাশিত সেরা দশ বইয়ের তালিকায় তারা ওয়েস্টোভারের এডুকেটেড-এর নাম স্থান পেয়েছে। সমালোচকদের মন জয় করা বইটি Goodreads ওয়েবসাইটে পাঠকদের ভোটেও সেরা বইয়ের পুরস্কার জিতে নেয়।
এখন পর্যন্ত বইটি নিউ ইয়র্ক বেস্ট সেলার তালিকায় আত্মজীবনী বিভাগে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। একমাত্র মিশেল ওবামার বিকামিং-এর কাছে পরাজিত হয়েছে বইটি। সারাবিশ্বে বইটির প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার কপি বিক্রি হয়েছে। এই অসামান্য সৃষ্টির জন্য লেখিকা তারা ওয়েস্টোভার অদি পুরস্কার, লস এঞ্জেলস টাইমস বুক প্রাইজ, ওয়েলকাম বুক প্রাইজ, জাতীয় বই সমালোচক পুরস্কার, রিডিং ওম্যান অ্যাওয়ার্ড, অ্যালেক্স অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন।
বই পড়ুয়াদের নিকট বই পড়া মানেই একটি অ্যাডভেঞ্চার। প্রতিটি বইয়ের মলাট উল্টানো মাত্র যেন তারা ডুবে যান এক অসীম কল্পনায়, যেখানে পরতে পরতে লুকিয়ে আছে হাসি, কান্না, বিস্ময় কিংবা হতাশা। যারা বইয়ের মাঝে নতুনত্ব খুঁজে পেতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য তারা ওয়েস্টোভারের এডুকেটেড বইটি একদম যুতসই। আত্মজীবনী নামক চেনা মোড়কে এডুকেটেড এক নতুন বিস্ময়। বইয়ের সহজ সাবলীল ভাষার মুগ্ধতায় বেশ সহজেই ডুবে যাবেন এক অদ্ভুত পরিবারে বেড়ে উঠা ‘শিক্ষিত’ তারার জীবনে। তাহলে আর দেরি কেন? আজই শুরু করে দিন এই চমৎকার বইটি।