কোনো সিনেমায় রোমান্টিকতা বলতে আপনি কী বোঝেন?
হয়তো বৃষ্টির দৃশ্য থাকবে, তার মাঝে নায়ক-নায়িকার রসায়নও দেখা যাবে, পরিচালক বেশি রোমান্টিক আবহ আনতে চাইলে আরো গভীর দৃশ্যও নিয়ে আসতে পারেন। কিংবা নায়ক নায়িকার হাত ধরে হেঁটে যাবে সুদূরপানে, হয়তো তাদের সংলাপগুলো হয়ে যাবে তরুণ প্রজন্মের ভালোলাগার কিছু কথা, পরিচালকের নিপুণ পরিচালনার মতো পর্দার বাইরে অন্যরাও স্বপ্ন দেখবে তাদের জীবনের সুন্দর পরিচালনার। এরকম কিছুই কি ভেসে ওঠে মনের কোণে?
এমনটাই তো হবার কথা। আমরা বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির রোমান্টিক সিনেমাগুলো দেখে থাকি, কাহিনী তো এভাবেই এগিয়ে যায় অধিকাংশ সময়েই। যদি এমনটাই ভেবে থাকেন, তবে নিজেকে প্রস্তুত করুন রোমান্টিকতার সংজ্ঞা নতুন করে ভাবার জন্য, রোমান্টিকতাকে নতুন চোখে দেখার জন্য।
আচ্ছা, একটি রোমান্টিক ফিল্ম, অথচ তাতে নায়ক এবং নায়িকার কোনো সংলাপই নেই, ভাবা যায়?
আপনি বলেই বসতে পারেন- এরকম যদি রোমান্টিক ফিল্ম হয়, তবে সেটা চ্যাপলিন যুগের। চ্যাপলিনের মতো হয়তো তারাও অঙ্গভঙ্গি দিয়েই অভিনয় করেছেন। কিন্তু ফিল্মটি যদি হয় ২০০১ সালের?
এখানেও বৃষ্টি আছে, কিন্তু সেই বৃষ্টি নায়ক-নায়িকার জোড়া হাতের উপর বর্ষিত হয়নি, এই বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে মানুষের মনের সকল ধুলো-ময়লা ধুয়ে-মুছে সাফ করে দেবার জন্য, এই বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে পৃথিবীর উপর বিরক্তি নিয়ে, বর্ষিত হয়েছে মানুষের ভেতরের মানুষটিকে জাগিয়ে দেবার জন্য। এই বৃষ্টির নাম ‘বারান’, একজন কিংবদন্তীর হাতের ছোঁয়ায় বর্ষিত হওয়া এক অঝোর বর্ষণ।
তারপর ধরুন, একটি কনস্ট্রাকশন সাইট। সাধারণত আমরা যা কল্পনা করতে পারি কনস্ট্রাকশন সাইট নিয়ে, একটি অর্ধেক তৈরি হওয়া বিল্ডিং, কিছু কর্মী যারা এটি তৈরিতে সাহায্য করছে, সেই সাথে প্রয়োজনীয় ইট, বালি, সিমেন্ট ইত্যাদি। বিভিন্ন ফিল্মে এসব সাইট তৈরি করা হয় ভিলেনের আস্তানা কিংবা পরিত্যক্ত জায়গা যেখানে সবধরনের খারাপ কাজ হয় তা বোঝাতে। আরো ভয়ানকভাবেও দেখানো হয় কখনও। ফিল্মের অ্যাকশন শেষ করতেও এসব সাইটের ভূমিকা ব্যাপক দেখা যায়। এই সাইট থেকেই কোনো ফিল্মে হয়তো চিত্রিত হয়েছে ভালোবাসার অন্যতম একটি উপাখ্যান, সংলাপহীন এক রোমান্টিকতার গল্প কিংবা সেই বৃষ্টি, যা আমাদের ভেতরকে জানতে, চিনতে সহযোগিতা করে।
চলুন, ভাই-বোনের গল্প বলি এবার। ভাই-বোন ও এক জোড়া জুতোর গল্প। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রোমান্টিসিজম বোধহয় ভাই-বোনের মাঝেই তৈরি হয়। নইলে এক জোড়া জুতো নিয়ে দুজনেই কীভাবে পার করে দিতে পারে অনেকগুলো দিন? বোন স্কুল থেকে এসে জুতো জোড়া দিলে ভাইটি তা পরে কেবল স্কুলে যেতে পারে। অনেক সময় যে দেরি হয়ে যায় না, তেমনটা না। এজন্য স্যারের বকাও শুনতে হয়। কিন্তু ভাইটি কী করবে, সে-ই যে হারিয়েছে প্রিয় বোনের ছোট্ট জুতো জোড়া! তাই তাকে সামলে নিতে হয়। কিন্তু তাই বলে আর কতদিন? ঐ জুতো জোড়াও তো ফেটে যায়, পরার অযোগ্য হয়। নতুন জুতো পাবার জন্য এক অদ্ভুত ইচ্ছেযাত্রা চলতে থাকে।
একটা সময় বোনের জন্য নতুন জুতো না নিতে পেরে ভাইটির কান্না আপনাকে কাঁদাবে যতটা, তার থেকেও বেশি ভাবাবে। আপনার মস্তিষ্ক একঝাঁক মুগ্ধতায় স্তব্ধ হয়ে ঝিম মেরে থাকবে।
কিছু সময় নিয়ে ঘুরে আসা যায় এক অন্ধ ছেলের জগত থেকেও। তার অন্ধত্ব যে অভিশাপের নয়, এটাও তো জানার বাকি। অন্ধ পরিচয়ের আগে তার মানুষ পরিচয়টি কীভাবে বড়, তা-ও তো আছে জানার বাকি।
আচ্ছা, বলুন তো উপরের গল্পগুলো কি খুব অসাধারণ, বা এমন কোনো গল্প যা কখনোই শুনিনি? এমন তো নয়, তারপরও এগুলো হচ্ছে একেকটি মাস্টারপিস ফিল্ম। এই সাদামাটা কাহিনী নিয়ে যিনি আমাদের কিছু অসাধারণ কাজ উপহার দিয়েছেন, তিনি মাজিদ মাজিদী। একজন স্বপ্নভূক, একজন পথিকৃৎ।
ইরানের তেহরানে জন্ম নেওয়া এক স্বপ্নভূক। ১৭ এপ্রিল, ১৯৫৯ সালে তার শুভ পদার্পণ ঘটে পৃথিবীতে, সেদিনই কি এতগুলো স্বপ্ন তার বুকে গাঁথা ছিল? কে জানে, হয়তো ছিল! সেই কারণেই কি না মাত্র ১৪ বৎসর বয়সে অনিয়মিতভাবে থিয়েটার করা শুরু করলেন।
বাজপাখি কি মাটিতে বসে থেকে কখনো শিকার করে বা করতে দেখেছেন কখনো? আকাশে ঘুরে ঘুরে শিকার ধরাই তো তার কাজ। দূরের কঠিন লক্ষ্যকে নিতান্তই সহজ মনে করে সে যথেচ্ছা শিকার করে। এতেই তো তার সার্থকতা। তেমনি যার জন্ম হয়েছে আকাশে উড়বার জন্য, তাকে কি অনিয়মিত থিয়েটারে মানায়? তাই তো ১৯৮৫ সালেই তার হয়ে যায় বড় পর্দায় অভিষেক। নতুন বাজপাখির যাত্রা শুরু হলো বাজপাখিদের রাহবারের হাতে। মোহসেন মাসমালবাফের পরিচালনায় ‘বয়কট’ দিয়েই হলো নতুন এ পথিকের উড়ন্ত পথচলা।
এর আগেই তিনি ইনস্টিটিউট অভ ড্রামাটিক আর্টস থেকে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফেললেন। এ যেন প্রস্তুতি নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়া সেরা শিকারকে ধরার জন্য, যেন তিনি জানেনই, সেরা শিকারটি তার হাতের মুঠোয় আসবেই।
আত্মবিশ্বাস মানুষকে ঠকায় না, যদি না সেটা অতিরিক্ত হয়। সাধ্যের মধ্যে যা, সেটা আমরা চেষ্টা করলেই পেয়ে যাই। কিন্তু যা আমরা সাধ্যের মধ্যে দেখি না কিংবা পাই না, সেগুলোর জন্য দরকার অধ্যবসায়। ‘চিলড্রেন অভ হেভেন’ নামটা কি খুব পরিচিত লাগছে? সেই ছোট্ট ভাই-বোন এবং এক জোড়া জুতোর গল্প। সেই অত্যন্ত সাদামাটা গল্পটা নিয়ে নাকি সিনেমাও হলো, আবার সেটা অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের জন্য নমিনেশনও পেল। অথচ নেপথ্যকাহিনী কি জানেন?
প্রযোজকেরা এই ফিল্মটি প্রযোজনা করতে চাননি। কাহিনী শুনে তারা বলেছিলেন, এ কাহিনী দিয়ে সর্বোচ্চ শর্টফিল্ম সম্ভব, পূর্ণ্যদৈর্ঘ্য ছবি অসম্ভব। অথচ সেটি কি না অস্কার পেতেও পারতো বেস্ট ফরেন ল্যাংগুয়েজ ফিল্ম হিসেবে! রবার্তো বেনিগনির ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’-এর কাছে হেরে গেলেও জয় হলো ইরানী চলচ্চিত্রের। জয়টা হলো এক বাজপাখির।
দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো যেমন, তেমনি সে বছরই সিনেমাটি পেল মন্ট্রিল ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার। সময়টা ছিল ১৯৯৮ সাল। বাজপাখির আকাশে রাজত্ব করবার উপাখ্যান মাত্র শুরু হলো।
১৯৯৯-২০০০ এর মধ্যেই এসে গেলো তার তৃতীয় সিনেমা। ঐ যে অন্ধ ছেলেটা, যে দেড় ঘণ্টা সবাইকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। ঐ ছেলেটা, যাকে তার বাবা অভিশাপ মনে করেছিল, সেই ছেলের কাহিনী নিয়েই এল ‘দ্য কালার অভ প্যারাডাইস’। এটিও প্রথম ছবিটির মতো মন্ট্রিলের ফিল্ম ফেস্টিভালে সেরা ছবির পুরস্কার পেলো। একজন পরিচালকের আর কী-ইবা চাই তখন, পর পর দুটি ছবি বিশ্বের তাবৎ সমালোচকের প্রশংসা কুড়িয়ে নিল। বাজের ক্ষুধা কি তবু থেমে থাকে? যত সামনে এগোয়, তত ভালো কিছু হয়তো চোখে পড়ে যায়। তাই কাজও থেমে থাকে না।
২০০১ সাল। এবার এলো সেই প্রতীক্ষিত বৃষ্টি। ‘বারান’ শব্দের অর্থই হচ্ছে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি বর্ষিত হলো মানুষের হৃদয়ে, যা মানুষকে অন্য রূপে পরিবর্তন করে দিলো। জন্ম নেয় সংলাপহীন রোমান্টিকতার এক অমর সৃষ্টি। এটি শুধু ২৫ তম মন্ট্রিল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সেরা ছবিই নির্বাচিত হলো না, সেই সাথে পেয়ে গেল ইউরোপিয়ান অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের সেরা ফিল্মের পুরস্কার।
১৯৯৬-এ মুক্তি পেলো ‘ফাদার’, ২০০৫-এ ‘দ্য উইলো ট্রি’ এবং ২০০৮-এ আমরা পেলাম ‘দ্য সং অভ স্প্যারোস’। এতগুলো ভালো সিনেমার ভিড়ে যখন দর্শকরা যখন ক্লান্ত হয়েও আনন্দিত, তখনই মুহাম্মদ (সা:)-এর জীবনী নিয়ে তৈরিকৃত একটি ফিল্ম প্রকাশিত হবার ঘোষণাও এলো। তখন ছিল ২০১৫, যেটি আবার ইরানের জন্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল সিনেমা হিসেবে পরিচিত হলো।
সবশেষে ২০১৭-তেই পেলাম আমরা ‘বিয়ন্ড দ্য ক্লাউডস’। এটি হচ্ছে মাজিদ মাজিদীর প্রথম ডিজিটাল সিনেমা। আগের এত পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো শুধুই ছিল নেগেটিভ ফিল্মের সাহায্যে তৈরি। তার ছবিগুলো রিমেক হতেও শুরু করলো। ‘চিলড্রেন অভ হেভেন’ এর অফিসিয়াল রিমেক হচ্ছে বলিউডের ‘বাম বাম বোলে’। এটি ২০১০ সালে মুক্তি পায়।
২০০৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য সং অভ স্প্যারোস’ ছিল বিশাখাপট্টনম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ওপেনিং ফিল্ম। তবে হ্যাঁ, তার প্রথম ফিচার ফিল্ম হিসেবে মুক্তি পায় ‘বাডুক’, ১৯৯২ সালে। ২০০৮ সালেই বেইজিং সরকার তাকে-সহ বিশ্ব থেকে আরো চারজন পরিচালককে আমন্ত্রণ জানান বেইজিং নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণের জন্যে, যার নাম ছিলো ‘ভিশন বেইজিং’। তথ্যচিত্রটি সামার অলিম্পিকের ওপেনিংয়ের জন্য নির্মিত হয়।
মাজিদীর হাত থেকে আমরা পেয়েছি কিছু অসাধারণ ডকুমেন্টারিও। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ‘বেয়ারফুট টু হেরাত’। ২০০১ সালের যুদ্ধবিধ্বস্ত শরণার্থী শিবির নিয়ে হৃদয়গ্রাহী একটি ডকুমেন্টারি এটি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই এটি দর্শকনন্দিত হয়, সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ায়।
চলচ্চিত্র দর্শন
মাজিদীর চলচ্চিত্র, ডকুমেন্টারি যেটাই বলা হোক না কেন, সবগুলোরই রয়েছে একটি বিশেষ দিক। তার কাজগুলো আপনাকে নৈতিকতার শিক্ষা দেবে, মানুষকে আরো গভীরে গিয়ে নিজেকে চিনতে সাহায্য করবে। আপনাকে প্রতিবেশীর হক পালন করা শেখাবে, শেখাবে সহযোগিতার পাঠ, দেখাবে সাধারণকে কী করে অসাধারণ করে তুলতে হয়, বুঝিয়ে দেবে জীবনের পরিচয়।
মাজিদীর চলচ্চিত্রগুলোর কাহিনী খুবই সাধারণ হয়। তিনি চলচ্চিত্রে জীবনকে ঘনিষ্ঠ করে তোলেন। সাধারণত তিনি আনকোরা, একেবারেই নতুনদের নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসেন।
মাজিদী তার ফিল্ম তৈরির ক্ষেত্রে বাস্তবতার উপর জোর দেন বেশি। স্টুডিওতে বানানো সেটের উপর তার রয়েছে অগাধ অস্বস্তি। তিনি মনে করেন, চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে স্থানটাও একটা চরিত্র। অন্যান্য জীবিত চরিত্রের মতো এরও জীবিত থাকাই উচিত। যেখানে জীবন চলমান, সেখানেই তো পাওয়া যাবে জীবনের গল্পের অজস্র উপাদান, যাকে আমরা সিনেমা বলে চালিয়ে দিই।
তার অন্যতম সিনেমা ‘বিয়ন্ড দ্য ক্লাউডস’-এ তিনি মাত্র একটি দৃশ্য সেট তৈরি করে শ্যুট করেছেন। বাকি পুরোটাই শ্যুট হয়েছে মুম্বাইয়ের অলিতে-গলিতে। এটিই তার প্রথম ডিজিটাল ফিল্ম এবং তার পরিচালনায় প্রথম বলিউড ফিল্ম।
প্রখ্যাত সাংবাদিক রাজিভ মাসান্দের একটি সাক্ষাৎকারে মাজিদী এরকম কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন। তিনি সাক্ষাৎকারে এটাও বলেছেন যে, তিনি সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ ৩০ বারের বেশি দেখেছেন এবং প্রতিবারই তার কাছে এটি নতুন মনে হয়েছে। সত্যজিৎ রায় হচ্ছেন মাজিদীর অনুপ্রেরণা।
মাজিদীর সিনেমাগুলোতে সবচেয়ে সাধারণ বিষয় ধরা যায়, এর শেষটা সুখের হবে না এবং কোনো একটা অপূর্ণতা অবশ্যই থাকবে। তার সিনেমার আরেকটি গভীর দিক হচ্ছে হার না মানার মানসিকতা। তার গল্পের মূল চরিত্রেরা একেবারে শেষটা দেখেই ছাড়ে, হার মেনে নেওয়া তাদের অভিধানেই নেই। মাজিদী তার সাক্ষাৎকারে এ বিষয়টিতে জোরালোভাবে আলোকপাত করেছেন।
মাজিদী শুধু তথাকথিত ফিল্ম বানাননি, তিনি চেয়েছেন সমাজকে পরিবর্তন করতে। মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে, চেয়েছেন নৈতিকভাবে মানুষকে দৃঢ় করে তুলতে। তিনি পেরেছেন জীবনকে ফিল্মে প্রবেশ করাতে, মানুষের জীবনকে রূপালি পর্দায় প্রতিফলিত করাতে। তাকে শুধু একজন পরিচালক, প্রযোজক কিংবা চিত্রনাট্যকার বললেই পোষাবে না, তিনি একজন দার্শনিকও বটে।
তাকে বলতে পারেন আরব বিশ্বের সত্যজিৎ কিংবা ক্যামেরা হাতে ছুটে চলা সক্রেটিস। হয়তো তিনি ক্যামেরায় শটের পর শট বুনে জীবনের গল্প তৈরি করা চাঁদের বুড়ি। তার সিনেমা দর্শন আমাদের ভাবতে শেখায়, নতুনভাবে দেখতে শেখায়, শেখায় জীবনকে অন্যভাবে উপলব্ধি করতে এবং সবশেষে একঝাঁক মুগ্ধতায় ঝিম মেরে বসে থাকা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। মাজিদীর চলচ্চিত্র এবং তার দর্শনের সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মিল পাওয়া যায় কবিগুরুর একটি ছোট্ট লাইনেই,
“ শেষ হয়েও হইল না শেষ”