কোভিড মহামারিতে ২০২০ সাল, সিনেমার জন্য আদর্শ একটা বছর না হলেও স্ট্রিমিং সার্ভিস বা ওটিটি প্লাটফর্মের বদৌলতে প্রচুর সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সেটার উপর ভর দিয়েই অস্কারের আসরও বসল। অন্যান্য বছরের মতোই ২০২০ সালেও ভালো পরিমাণ অ্যানিমেশন সিনেমা এসেছে। সেগুলোর মধ্য থেকে সেরা ৩টি সিনেমা নিয়ে এই আয়োজন। এই ৩টি আবার অস্কারেও জায়গা করে নিয়েছে।
সোল (আমেরিকান)
স্যাক্সোফোনে সকল ছাত্রছাত্রীই সুর তুলছে, নিতান্তই অনিচ্ছার সাথে। মিউজিকাল ক্লাস করতে হচ্ছে, তাই আর কি। কিন্তু মিউজিক টিচারের শেখানোর আগ্রহে কমতি নেই। তাদের অনিচ্ছার সাথে ভুল নোটে বাজানোর সময়ও তার উৎসাহ যোগানে ভাটা পড়ে না। ছেলেবেলা থেকেই যে জ্যাজ মিউজিশিয়ান হবার স্বপ্ন লালন করেছিল। পেট আটকে দিল এই প্রাথমিক স্কুলের পার্টটাইম মিউজিক শেখানোয়। তবে প্রারম্ভিক দৃশ্যেই তার পার্টটাইম চাকরিটা ফুলটাইম হয়ে যায়। এতে অবশ্য তেমন উচ্ছ্বসিত এই জো গার্ডনার হতে পারে না। কিন্তু উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়বার মতো খবর এর পরেই চলে আসে।
তার পূজনীয় এক বিখ্যাত জ্যাজ মিউজিশিয়ানের সাথে পারফর্ম করার সুযোগ চলে আসে। জো তো বলেই ওঠে, এরপর শান্তিতে মরাও যায়। জীবন তো তখনই পরিপূর্ণ। দুঃখের বিষয় হলো, সেই পূর্ণতা আসেনি। অডিশন দিয়ে পছন্দের মিউজিশিয়ানের সাথে এক মঞ্চে বাজানোর কথা ভাবতে গিয়ে এতটাই বিভোর হয়ে পড়েছিল যে, পায়ের নিচের ম্যানহোল যে তাকে টেনে অতলে নেবে, তা আর বুঝতে পারেনি।
দর্শক কিছু বোঝার আগে, এমনকি জো নিজেও কিছু বোঝার আগে তাকে দেখা যায় বিশাল হলঘরের মতো একটা জায়গায়। তবে দুনিয়ার হলঘর নয় সেটি, কসমিক হলঘর। একটা লম্বা হাঁটা পথ আছে। কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারা যায়, তার শরীরটা কোমায় আছে। জীবনমৃত্যুর মাঝামাঝি। আর তার আত্মা এসেছে এই ‘গ্রেট বিয়ন্ড’ নামক জায়গায়। তখন জো দুনিয়ার যেই জীবনটা তার হেলায় কাটল, অনুতাপ করে তা নিয়ে। গ্রেট বিয়ন্ডে যেতে সে নারাজ। এখনই সে মরতে চায় না। আকুতিতে কাজ হলো। তাকে এবার পাঠানো হলো ‘গ্রেট বিফোর’-এ, যার স্পষ্ট অনুপ্রেরণা নেওয়া হয়েছে অ্যালবার্ট ব্রুকসের ‘ডিফেন্ডিং ইওর লাইফ’ সিনেমা থেকে।
এই গ্রেট বিফোরে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে পারলে দ্বিতীয় সুযোগ হিসেবে একটা স্পার্ক দেওয়া হবে, যা তাদের দুনিয়াতে পাঠিয়ে আরেকবার সুখী আর অর্থবহ জীবনযাপনের সুযোগ দেবে। গ্রেট বিফোরে জো’র পরিচয় ঘটে উদ্দেশ্যহীন ঘুরে বেড়ানো সোল ২২-এর সাথে। এই পর্যায়ে ‘সোল’ হয়ে ওঠে একটি বাডি-কমেডি ঘরানার সিনেমা এবং এরপর ঘটতে থাকে অনেককিছু। পৃথিবীর অভিমুখে যাত্রা, বডি সোয়াইপ সহ বিভিন্ন বাঁক নিয়ে এগিয়ে চলতে থাকে গল্প।
‘আপ’, ‘ইনসাইড আউট’ খ্যাত পিট ডক্টারের নতুন সিনেমা এই ‘সোল’। এবং আগের দু’টির মান রক্ষা করেই আরেকটি স্মরণীয় এবং ভবিষ্যতে ক্লাসিক অ্যানিমেশন হওয়ার গুণাগুণ সম্পন্ন সিনেমা হয়ে উঠেছে ‘সোল’। কীভাবে? প্রশংসিত অ্যানিমেশন সিনেমাগুলোকে যদি পাশাপাশি রেখে দেখা হয়, তবে দেখা যায় শুধু মজাদার হয়ে ওঠার বাইরে, এদের আরো কিছু বলার আছে, বা বলেছে এই সিনেমাগুলো। গূঢ় বিষয়াদির অবতারণা থাকে এসবে, ন্যারেটিভের মূল লক্ষ্যটা শুধু বিনোদনে থাকে না, বরং পরিণত দর্শকদের মাঝে চিন্তা জাগানোতে আছে। এবং পিক্সারের অন্যান্য সিনেমা থেকে, সেসবকে তুলনামূলক আরেকটু গভীরে নিয়ে গেছে এই সিনেমা।
তবে অবশ্যই, লাইট টোন বিসর্জন না দিয়ে। সোলের যে মেটাফিজিক্যাল ধারণা; মৃত্যু, মৃত্যু পরবর্তী জীবন, বেঁচে থাকার মানে এবং জীবনের প্রাপ্তি নিয়ে তার দর্শনগুলো কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় মতবাদে কিংবা তত্ত্বে আটকা পড়েনি। একটা সার্বজনীন জায়গা থেকেই ‘সোল’ তার বক্তব্য পেশ করেছে। অনেকটা ইনসাইড আউটের ধারাতে করেছে। আর বাডি-কমেডি এবং যুগলবন্দীর রসদ ব্যবহার করে এই গভীর বিষয়সমূহকে নতুনত্বের সাথেই চিত্রনাট্যে লিখেছেন পিট ডক্টার। ভিজ্যুয়াল গ্যাগের সাথে কোয়ার্কি কমেডির মিশ্রণ আর চিত্রনাট্যের সূক্ষ্ম সব বিবরণেই বিষয়গুলো ‘সোলফুল’ হয়ে উঠেছে সোলে।
বর্তমান নিউ ইয়র্ক আর কল্পনাবিলাসী পরজগতের বৈপরীত্যটা নিখুঁত অ্যানিমেশনের ফলে স্পষ্টভাবেই চোখে পড়ে। ভিজ্যুয়ালে জাপানিজ মাস্টার অ্যানিমেটর হায়াও মিয়াজাকির শৈলীটা পরিলক্ষিত হয়। চমকপ্রদ জ্যাজ আবহসঙ্গীত আর আড়ষ্টতাবিহীন জেমি ফক্স এবং গ্রাহাম নর্টনের ভয়েস অ্যাক্টিং, সেই শৈলীটাকে আরো প্রাণচঞ্চল করে তুলেছে। জ্যাজ সঙ্গীতের ভাবটা একদম অবিচ্ছেদ্য আকারে মিশে যেতে পেরেছে সিনেমার সাথে।
সোল শুরু থেকেই প্রশ্ন করে, শুধুমাত্র বেঁচে থাকলেই কি বেঁচে হয়? বাঁচতে হয় কীভাবে তবে? এবং সেই উত্তরটা জো গার্ডনারের ভেতর দিয়েই উত্থাপিত হয়। দেহ বাঁচানোর আয়োজন নয়, আত্মাকে বাঁচানোর পথ খোঁজা উচিত।
উল্ফওয়াকার্স (আয়ারল্যান্ডীয়)
আয়ারল্যান্ডের লোকগাথা আর কেল্টিক সঙ্গীতের এক অপূর্ব বন্ধন যেন ‘উল্ফওয়াকার্স’। এ বন্ধন অটুট ছিল টম মুরের ‘আইরিশ ফকলোর ট্রিলজি’-র আগের দুই সিনেমা; ‘দ্য সিক্রেট অভ কেলস’ (২০০৯), ‘সং অভ দ্য সি’ (২০১৪)-তেও। প্রথমটি, সেই ২০০৯ সালে, অ্যানিমেশন সিনেমায় অনন্য এক ভিজ্যুয়াল ভাষা উপহার দেওয়ার সাথে সাথে অকৃত্রিম বিশুদ্ধতা আর ভালোলাগাও উপহার দিয়েছিল। বাকি দু’টিও সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছে। বিশেষ করে এই ‘উল্ফওয়াকার্স’ তো সেদিক থেকে নিজেকে আরো সুপিরিয়র অবস্থানে বসিয়েছে। অ্যানিমেশনকেও বানিয়েছে একদম জীবন্ত।
এ সিনেমা ষোড়শ শতকের প্রেক্ষাপটে গল্প বলে। আয়ারল্যান্ডে চলছিল তখন ব্রিটিশ আধিপত্য। এই সেটিং দিয়েই সিনেমা তার রাজনৈতিক বক্তব্যের জায়গাটি প্রকাশ করে। এবং এই সেটিংই ট্রিলজির শেষ এ কিস্তিকে আগের দুটো থেকে ভিন্ন অবস্থানে রেখেছে; ভিজ্যুয়াল ভাষায় আগের দ্যোতনা থাকলেও। তো যাওয়া যাক প্রেক্ষাপটে। আইরিশদের উপর সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশদের অবদমনের কথা বিখ্যাত সাহিত্যিক জেমস জয়েসের নানান গল্পেও তো দেখতে পাওয়া যায়। মাতৃভূমিকে নিজের মতো করে পাবার আকুতি ছিন্ন খঞ্জনীর মতো সেই গল্পগুলোতে শোনা যায়। ন্যূনোক্ত সুরে তা শোনা যায় এ সিনেমায়ও।
সিনেমার গল্প মূলত কিশোরী রবিনের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণিত হয়। সে মূলত তার ইংরেজ, শিকারি বাবার সাথে কিল্কেনিতে এসেছে। কিল্কেনির কাছের জঙ্গল, যেখানে নেকড়ের অবাধ পদচারণা, সেখান থেকে নেকড়ের বসতি হটিয়ে জঙ্গলের পরিষ্কার জায়গাটাকে ব্যবসার উপযোগী বানাতেই তার বাবার ডাক পড়ে। বাবার মতো মেয়ে রবিনও চায় তুখোড় শিকারি হতে। কিন্তু বাবা তো মেয়ের জীবন বিপন্ন হতে দিতে পারে না। তাই কোনোভাবেই রবিনের সেই নির্ভীকতাকে প্রশ্রয় দেয় না। কিন্তু রবিনও নাছোড়। বাবার পিছু পিছু ঢুকে পড়ে সেই জঙ্গলে। অল্পের জন্য নেকড়ের থাবা হতে রক্ষে পায়। কিন্তু তাও তার কৌতূহল দমে না।
এভাবেই তার পরিচয় হয় নেকড়েকন্যা মেভের সাথে। দিনে সে ছোট্ট কিশোরী। আর রাতে হয়ে যায় নেকড়ে। সে আবার নেকড়েশাবকও। রবিনের চরিত্রের অনেকটাই বিপরীত মেভ। আইরিশ কিশোরী মেভের দস্যিপনা, অদম্যতার ছোঁয়া ধীরে ধীরে রবিনের মাঝেও লাগে। দু’জনের মাঝে গড়ে উঠে বন্ধুত্ব। মেভ তার নেকড়ে হবার ক্ষমতা ছড়িয়ে দেয় রবিনের শরীরে। শীঘ্রই তাদের উচ্ছলতার মুহূর্তগুলো শেষ হয়ে ফের সংকটের কেন্দ্রে আসে। লর্ড প্রটেক্টর বন উজাড় করে, নেকড়েদল খেদিয়ে আয়ারল্যান্ডকে আবার গ্রেট বানানোর দিবাস্বপ্ন দেখে। প্রাণীকূলের সংকটের পাশাপাশি পর্দায় তখন মেভের মাকে উদ্ধারের অভিযানও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
রাজনৈতিক সেটিং এবং সূক্ষ্ম ইতিহাস পাঠের পাশাপাশি ‘উল্ফওয়াকার্স’ সবুজ রক্ষার কথাও বলে। পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে বন উজাড় ঠেকাতে হবে। এবং প্রাণীকূল ধ্বংসে নামলে সমগ্র বাস্তুতন্ত্রকেই যে হুমকির সম্মুখে রাখা হবে, তা নিয়েও কথা বলে। তবে এই সবকিছু কোনোভাবেই সিনেমার লাইট টোনে চেপে বসেনি। ওইযে ন্যূনোক্ত সুরের কথা বলছিলাম, তেমন নিচু স্বর আর সূক্ষ্মতাতেই বক্তব্য রাখা হয়েছে। ছোটখাটো সংলাপে দর্শন উপহার দেওয়া হয়েছে। উইল কলিন্সের চিত্রনাট্য এই সবকিছুকেই সুবিন্যস্ত আকারে রেখেছে।
সিনেমায় স্টুডিও ঘিবলি আর ডিজনির একটা সম্মিলিত আবহ পাওয়া যায়। পরিবেশ নিয়ে এর বক্তব্য আর সেটিংয়ে ঘিবলির অনুপ্রেরণা আছে। ওদিকে গল্পের বাঁক, চরিত্রায়নের উপাদানে আর ক্লাইমেক্টিক অ্যাকশনে ডিজনির ভাবটা আছে। তবে তা একেবারেই ভারি হয়ে নেই। কার্টুন স্যালুনের ভিজ্যুয়াল ভাষাটা স্বকীয়। টম মুর আর রস স্টুয়ার্টদের অ্যানিমেশনের ডিজাইনটা খুবই আকর্ষণীয়। এখনকার আমেরিকান অ্যানিমেশন সিনেমাগুলোর মতো কম্পিউটারাইজড ফটোরিয়ালিস্টিক না।
এই ফকলোর ট্রিলজির প্রত্যেকটিতেই পেইন্টিং স্টাইলে কিয়ারস্কিউরোর প্রভাবটা লক্ষণীয়। আকৃতি আঁকার সময় ছায়াগুলো খুব গাঢ় করে রাখা হয়। এতে টোনটা আরো বর্ণাঢ্য হওয়ার পাশাপাশি দ্বিমাত্রিকতা তৈরি হয়। কালার প্যালেট স্যাচুরেটেড রাখায় রঙের ঘূর্ণাবর্ত ভাবটা ইমেজগুলোতে আরো সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই ভাবটাই প্রতিটি চরিত্রের অ্যানিমেশন ডিজাইন ভিন্ন করে তুলেছে। একটা মোহবিষ্টতায় ফ্রেমগুলোকে জড়িয়ে রেখেছে।
উল্ফওয়াকার্স নিয়ে শেষত বলতে হয়, গল্প আর চিত্রনাট্যে এটা যতটা হৃদয়ের কাছে, ভিজ্যুয়ালে ততটাই শিল্পিত রূপের পাশে।
‘অনওয়ার্ড’ (আমেরিকান)
‘সোল’-এর পাশাপাশি ‘অনওয়ার্ড’ পিক্সারের তরফ হতে এ বছরের দ্বিতীয় নিবেদন। এবং অবশ্যই তালিকার বাকি দুই সিনেমার তুলনায় একটু পিছিয়েই থাকবে এটি। তবে পরিচালক ডন স্ক্যানলনের আগের সিনেমা বিবেচনায় আবার সেরা কাজ এটি।
‘অনওয়ার্ড’ এক জাদুবাস্তব দুনিয়ার গল্প বলে, যেখানে একসময় জাদু দ্বারা রোজকার জীবন প্রভাবিত হলেও এখন সে জায়গা দখল করে নিয়েছে প্রযুক্তি। ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তি আর তার সুবাদে জাদুর দরকার এখন কারো জীবনে পড়ে না। তবে সেই জাদুই দুই এল্ভ সহোদর ইয়ান লাইটফুট এবং বার্লিকে তাদের মৃত বাবার সাথে একটা দিন কাটানোর সুযোগ করে দিতে পারে। ইয়ানের ১৬ তম জন্মদিনে তার মা তাকে একটি লাঠি আর জাদুর মন্ত্র দেয়। এ দুটো চমক রেখে গিয়েছিল তাদের বাবা। এর সাহায্যে তাদের বাবাকে একদিনের জন্য জীবিত করা যাবে। কিন্তু ওই জাদুর মন্ত্র পড়ার পর শুধু বাবার কোমর থেকে পায়ের অংশটাই জীবিত হয়। পুরো শরীরে প্রাণ ফেরানোর জন্য লাগবে বশীভূত হওয়া একটি পাথর। সে পাথর খুঁজতে নেমে অদ্ভুতুড়ে আর মজার এক যাত্রার মধ্য দিয়ে এগোয় সিনেমাটি।
পিক্সারের ধারাতেই গল্প বেশকিছু বাঁকবদল করেছে। তবে আবেদনটাও গড়পড়তা। জনরার উপাদানগুলোকে খুব বেশি উল্টেপাল্টে ব্যবহার করা হয়নি। নির্দিষ্ট গণ্ডিতেই থেকেছে। জাদু আর প্রযুক্তিকে পাশাপাশি রাখা এই জগতটাকে পরিপূর্ণভাবে এক্সপ্লোর করা হয়নি। সিনেমার নির্দিষ্ট দর্শকশ্রেণির কথা ভাবলে অবশ্য কারণটাও বোঝা হয়ে যায়। তবে বিশেষ কিছু না দিলেও, বিনোদন শতভাগ দিয়েছে। একদম খাঁটি বিনোদন যাকে বলে। আবেগের দিক থেকেও অনুনাদি ড্রামা হয়েছে ‘অনওয়ার্ড’। ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে মহিমান্বিত করে তুলে ধরেছে। এবং দুই ভাইয়ের চরিত্রে টম হল্যান্ড আর ক্রিস প্যাটের ভয়েস অ্যাক্টিং, অ্যানিমেটেড রসায়নটাকে অনবদ্য করেছে। ভয়েস কাস্টিংয়ের দিক থেকে নিখুঁত কাস্টিং হয়েছে সিনেমায়।
ভিজ্যুয়ালে স্বকীয়তা কিংবা ভিন্নতা উপহার না দিলেও আকর্ষণীয় ভিজ্যুয়াল ভাষার। ভিজ্যুয়াল ডিটেলগুলো মুগ্ধ করে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম হওয়ার কারণে। ভিজ্যুয়াল গ্যাগগুলো, সিনেমার হাস্যরসাত্মক উপাদান ব্যবহারের সীমানা আরো বিস্তৃত করার পাশাপাশি, ব্যবহারটাও নিখুঁত করেছে।
চেনাজানা ন্যারেটিভেই রঙিন এবং প্রাণচঞ্চল একটি সিনেমা হয়ে উঠেছে অনওয়ার্ড। তবে একটা কারণে এ সিনেমার নাম আলাদাভাবে উচ্চারিত হবে। তা হলো, এটিই প্রথম অ্যানিমেটেড সিনেমা, যেটি সরাসরিই একটি সমকামী চরিত্রকে গল্পে এনেছে। অ্যানিমেশন সিনেমায় সমকামিতা নিয়ে আসা উচিত না অনুচিত, সে তর্ক সময়ই এগিয়ে নিয়ে যাবে অবশ্য। তবে শুরুটা ‘অনওয়ার্ড’ করেছে।