‘গেম অফ থ্রোনস’ সিরিজের ‘ফায়ার অ্যান্ড ব্লাড’ বইয়ে বর্ণিত ভ্যালেরিয়া সভ্যতাকে ধ্বংস করে দেয়া ‘ডুম অব ভ্যালেরিয়া’ থেকে রক্ষা পাওয়া একমাত্র ড্রাগনলর্ড ছিলেন এইনার টারগেরিয়ান। তার পরবর্তী সময়ে টারগেরিয়ান পরিবারে যত জন সদস্য এসেছেন, তারা সবাই নিজেদের ফেলে আসা স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলতেন। পুরনো সভ্যতা, তাদের শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা দেখে তাদের মনে হাহাকার জেগে উঠতো। ভ্যালেরিয়া সভ্যতা শেষ হবার ঠিক ১০০ বছর পর ড্রাগনস্টোনে টারগেরিয়ানদের লর্ড হয়েছিলেন এগন টারগেরিয়ান। একমাত্র তিনিই তার পূর্বপূরুষ থেকে ভিন্ন ছিলেন। কারণ, তাদের মৃত অতীতের দিকে এইগন তাকাননি। তার নজর ছিল ওয়েস্টেরস মহাদেশ।
ওয়েস্টেরস মহাদেশ সাতটি রাজ্যে বিভক্ত। সেই রাজ্যগুলো শাসন করত ভিন্ন ভিন্ন সাতটি পরিবার। এই পরিবারগুলোর ভেতর সারাক্ষণ যুদ্ধ লেগেই থাকে। তাই এগন জানতেন, ওয়েস্টেরসের রাজা হবার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে তাকে সাতটি পরিবারের বিপরীতে লড়তে হবে। তবে তার জন্য এই কাজ তেমন কঠিন নয়। কারণ, তার শক্তির উৎস ছিল ড্রাগন। পুরো ওয়েস্ট্রোসে ড্রাগনের বিপরীতে লড়ার জন্য কোনো অস্ত্র ছিল না।
এগন শুরু করলেন তার স্বপ্নপূরণের লড়াই। ভ্যালেরিয়া থেকে আসা ড্রাগনগুলোর ভেতর তখন একমাত্র জীবিত ড্রাগন, ব্যালেরিয়ন দ্য ব্ল্যাক ড্রেড। টারগেরিয়ানদের পুরো ইতিহাসে ব্যালেরিয়নের থেকে ভয়ংকর ড্রাগন দ্বিতীয়টি নেই। আর এই ড্রাগন ছিল এগনের বাহন। ওয়েস্টেরস দখল করতে এগনের সাথে ছিল তার বোন ভিসেনিয়া ও স্ত্রী রেইনিস। তাদের বাহন ছিল ড্রাগনস্টোনে জন্ম নেয়া ড্রাগন ভ্যাগার ও মিরাক্সিস। এরপর ২০০ বছর টারগেরিয়ানরা যতগুলো ড্রাগন ব্যবহার করেছে, তা মূলত এই তিন ড্রাগনেরই বংশধর।
এরপর ওয়েস্টেরস দেখলো ড্রাগন আক্রমণের ভয়াল রূপ। এগন ব্যালেরিয়ানকে দিয়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালালেন হ্যারেনহাল ও দ্য ফিল্ড অব ফায়ার যুদ্ধে। রেইনিস দখল করলেন স্টোর্মল্যান্ড। ওয়েস্টেরসে তখন উইন্টারফেলের রাজা ছিলেন টরেন স্টার্ক। তিনি এগনের ক্ষমতা দেখে তার সামনে নিজের মুকুট রেখে আত্মসমপর্ণ করেন। তাই উইন্টারফেল ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যায়। ভেইল জয় করেছিলেন ভিসেনিয়া ও ড্রাগন ভ্যাগার, যুদ্ধ নয় বুদ্ধিতে। ডর্ন জয় করতে গিয়েছিলেন রেইনিস ও তার ড্রাগন মিরাক্সিস। তবে সেখানে যুদ্ধের একপর্যায়ে একটি বর্শা মিরাসিক্সের চোখে ঢুকে গেলে মিরাক্সিস ও রেইনিস সেখানেই মারা যায়। রেইনিসের মৃত্যুর শোকে ভিসেনিয়া ও এগন পুরো তাণ্ডব চালান ডর্নে। কিন্তু ডর্ন কখনও টারগেরিয়ানদের অনুগত্য হয়নি।
এই তিন ড্রাগন ছিল ওয়েস্টেরসের ইতিহাসের প্রথম ড্রাগন। টারগেরিয়ানের ৩০০ বছরের রাজত্বে এরপর ২২টি ড্রাগনের উল্লেখ আছে। সে ড্রাগন নিয়ে টারগেরিয়ানরা লড়েছে নিজেদের ভেতর। প্রতিহিংসা, কুটিলতায় ভর্তি ও বিধ্বংসী হবার কারণে নিজেদের রাজত্বের মাত্র ১৫০ বছরের মাথায় তারা তাদের সেরা অস্ত্র হারিয়ে ফেলে। রবার্ট ব্যারাথিওন তখন বিদ্রোহ করে বসেন। ট্রাইডেন্টে নিহত হন রাজপুত্র রেগার, নিজের প্রাসাদে হত্যার শিকার হন খোদ ‘ম্যাড কিং’। তখন তাদের কাছে সেরা অস্ত্র ছিল না। তাদের রাজত্বের শেষ ১০০ বছর কয়েকজন টারগেরিয়ান অনেক পাগলাটে কৌশল ব্যবহার করেছিল, কিন্ত ড্রাগন জন্ম দিতে পারেনি।
ড্রাগনদের তার বাহকের অবস্থান চিহ্নিত করার ক্ষমতা থাকে। এজন্য ভ্যালেরিয়ান রক্ত ছাড়া ড্রাগন অনুগত্য প্রকাশ করে না। আবার কোনো টারগেরিয়ান রাজা তার ব্যক্তিগত ড্রাগন বেঁচে থাকতে দ্বিতীয় ড্রাগনকে বাহন হিসেবে নেবার কথা ভাবেন না। কারণ, ড্রাগনের তার বাহক সম্পর্কে সবকিছু বোঝার ক্ষমতা থাকার কারণে দুইজন ভিন্ন ব্যক্তিকে একইসাথে সে গ্রহণ করে না। তবে কারও ব্যক্তিগত ড্রাগন মরে গেলে বা ড্রাগনের বাহক মৃত্যুবরণ করলে, তখন অন্য ড্রাগনকে ব্যক্তিগত ড্রাগন হিসেবে নেওয়া যায় বা ড্রাগন নতুন ব্যক্তির উপর বশ্যতা স্বীকার করে। এজন্যই এগন টারগেরিয়ানের মৃত্যুর পর ব্যালেরিয়নকে পরিচালনা করতে পেরেছিলেন তার পরবর্তী তিন উত্তরসূরী। প্রথম মেইগর, প্রিন্সেস আরেয়া ও ভিসেরইস টারগেরিয়ান। ভিসেনিয়ার মৃত্যুর ২৯ বছর পর ভ্যাগারকে ব্যবহার করেছিলেন প্রিন্স ব্যালন দ্য ব্রেভ, লেডি লিয়েনা ও প্রিন্স এইমন্ড টারগেরিয়ান।
প্রথম এগনের সময়ে ড্রাগনস্টোনে জন্ম নেওয়া অন্যতম ড্রাগন ‘কুইকসিলভার’। এই ড্রাগন নিয়ন্ত্রণ করতেন প্রথম এগন টারগেরিয়ানের বড় ছেলে প্রথম এইনিস টারগেরিয়ান। এগনের দুু’টি বিয়ে করেছিলেন। তাদের দুই পক্ষের দুই সন্তান ছিল। একজন এই এইনিস ও অন্যজন প্রথম মেইগর টারগেরিয়ান। এইনিসের সন্তান ছিলেন প্রিন্স এগন টারগেরিয়ান। এইনিসের মৃত্যুর পর আয়রন থ্রোন দখল করেন মেইগর। কিন্তু এগনের তা পছন্দ হয় না। তিনি অনঢ় ছিলেন আয়রন থ্রোন পাবার জন্য। শুরু হয়ে যায় চাচার বিপক্ষে পারিবারিক দ্বন্দ্ব, যা একসময় যুদ্ধে মোড় নেয়।
৪৩ এসিতে, এগন ১৫ হাজার সৈন্য ও তার ড্রাগন সিলভারকুইনকে নিয়ে রিভারল্যান্ড ভেদ করে যুদ্ধের মাঠে আসে। মেইগর যুদ্ধের সময় দক্ষিণ দিক থেকে তার ড্রাগন ব্যালেরিয়নকে নিয়ে এগনকে আক্রমণ করেন। ব্যালেরিয়ন ছিল কুইকসিলভার থেকে কয়েকগুণ বড়। তার আক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতা ছিল না এগনের ড্রাগনের। কুইকসিলভারের সমাপ্তি হয় সেখানেই। সাথে এগনও মৃত্যুবরণ করেন। ‘Battle Beneath the Gods Eye’ নামক এই লড়াই ছিল ওয়েস্টেরসের শাসন শুরুর পর টারগেরিয়ান বংশে প্রথম ড্রাগন বনাম ড্রাগন লড়াই।
১৫০ বছর ধরে টারগেরিয়ানরা ড্রাগনকে তাদের শক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেছে। প্রথম জ্যাহেরিস টারগেরিয়ান যখন পশ্চিমে ‘ওয়াডেন অব দ্য নর্থ’ ভ্রমণে যায়, তার সাথে ছিল ছয় ড্রাগন। তার নিজের ‘ভার্মিথর’, তার স্ত্রী অ্যালিসানে টারগেরিয়ানের বাহন ‘সিলভারউইং’, এবং বাকি চারটি ড্রাগনের নাম উল্লেখ নেই।
৯৪ এসিতে, প্রথম জ্যাহেরিসের আমলে ভ্যালেরিয়া থেকে আসা ড্রাগন ব্যালেরিয়ন অবশেষে পূর্ণবয়স্ক হয়ে মারা যায়। তাই সে সময়ে একমাত্র বৃহৎ ড্রাগন হিসেবে বেঁচে থাকে ভ্যাগার। ১২৯ এসিতে, ভ্যাগার আকৃতি ও স্বভাবে প্রায় ব্যালেরিয়নের মতো ভয়ংকর হয়ে ওঠে। একই সময়ে শুরু হয় টারগেরিয়ান গৃহযুদ্ধ।
বইতে টারগেরিয়ান এ গৃহযুদ্ধকে নামকরণ করা হয়েছে ‘ড্যান্স অব দ্য ড্রাগনস’ নামে। রাজা ভিসেরিস টারগেরিয়ানের মৃত্যুর পর তার সিংহাসনের দাবিদার ছিল তার প্রথম স্ত্রীর বড় মেয়ে রায়েনারা টারগেরিয়ান ও দ্বিতীয় স্ত্রীর বড় ছেলে দ্বিতীয় এগন টারগেরিয়ান। বৃদ্ধ রাজা ভিসেরিসের বড় সন্তান ছিলেন রায়েনারা। তাই রাজার মৃত্যুর পর সিংহাসন নির্ধারিত হয়েছিল তার বড় মেয়ের জন্য। কিন্তু প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর, ভিসেরিস দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী ছেলে সন্তানের জন্ম দিলেও পূর্বের নিয়ম বহাল থাকে। বেঁচে থাকতে ভিসেরিস খেয়াল করেননি, তার পরিবার দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে।
রাজার মৃত্যুর পর বেঁকে বসে এগনের মা ও মৃত রাজার হ্যান্ড অটো হাইটাওয়ার । এগনকে বোঝানো হয়, রায়েনারা সিংহাসনে বসলে তার বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় থাকবে। তাকেই হতে হবে সাত রাজ্যের নতুন রাজা। বলে রাখা ভালো, অটো হাইটাওয়ার ছিলেন রাজা ভিসেরিসের শশুর মানে তার দ্বিতীয় স্ত্রী অ্যালিসান্ট হাইটাওয়ারের বাবা। তাই, অবশ্যই তিনি নিজের মেয়ের পক্ষ নেবেন। সাথে চতুর লর্ড কমান্ডার ক্রিস্টন কোল। স্মল কাউন্সিলের “মাস্টার অব কয়েন” লর্ড ব্রিজব্রেরি রায়েনারাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা তুললে, ক্রিশ্চিয়ান কোল বিনা বাক্যে তার গলায় ছুঁরি বসিয়ে দেয়।
ড্রাগনপিটে রাজা নির্বাচিত করা হয় এগনকে। সে বিয়ে করে বোন হেলায়েনা টারগেরিয়ানকে। প্রিন্সেস রায়েনারা তখন ড্রাগনস্টোনে। পরবর্তীতে সবকিছু জেনে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তার তখন অল্পবয়সী পাঁচ ছেলে। তার স্বামী ডেমন টারগেরিয়ান ওয়েস্ট্রোসের অন্যতম ভয়ংকর মানুষ। সাথে দ্বিতীয় রেইনিস টারগেরিয়ানের মত ড্রাগনরাইডার এবং তার স্বামী কার্লিস ভেলারিয়ন। রায়েনারা ও দ্বিতীয় এগনের এই দ্বন্দ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। শুরু হয় বিভিন্ন জায়গায় অভ্যন্তরীণ লড়াই।
রায়েনারা অন্যতম শক্তি ছিলো ড্রাগন। তার প্রত্যেক ছেলে ড্রাগন চালাতে জানত। তাদের নিজস্ব ড্রাগনও ছিল। আর ড্রাগনস্টোনে ছিল অতিরিক্ত ছয় ড্রাগন। কিন্তু অন্য পক্ষের ড্রাগন ছিল মাত্র চারটি। তবে এই চারটি বড়,পরিণত ও ভয়ংকর। রায়েনারা সন্তানরা ড্রাগন নিয়ে বের হয় বিভিন্ন রাজ্যে লর্ডদের সাথে আলোচনা করে তাদের শক্তি বৃদ্ধি করতে।
রায়েনারার প্রথম স্বামীর সন্তান ছিল প্রিন্স লুসিরিস। হ্যারেনহালে হামলার পর তিনি ড্রাগন অ্যারাক্সেসকে নিয়ে উড়ে এসেছিলেন স্ট্রর্মস এন্ডে, সৈন্য একত্র করতে। কিন্তু এসে দেখলেন তার আগেই দ্বিতীয় এগনের ভাই এইমন্ড টারগেরিয়ান তার ড্রাগন ভ্যাগার নিয়ে হাজির। লর্ড বোরোস ব্যারাথিওন ততক্ষণে এগনের পক্ষ নিয়ে ফেলেছে। এক চোখে পাথর বসানো এইমন্ড ঘৃর্ণার চোখে লুসিরিসকে দেখলেন। লড়াইয়ের প্রস্তুতি ছিলো না। কিন্তু এইমন্ড বাধ্য করলো। ভ্যাগার অ্যারাক্সের থেকে আকৃতিতে পাঁচগুণ। বৃষ্টি ও মেঘময় আকাশে দানব ভ্যাগারের অতর্কিত হামলায়, লুসিরিস বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। অ্যারাক্সের খন্ডিত দেহের পাশে লুসিরিসের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় তিনদিন পর। আগুন ও রক্তের এই অহিংসের খেলা মাত্র শুরু।
নিজের ছেলের মৃত্যুর পর রায়েনারা শিক্ষা নিয়েছিলেন। কিন্তু এই মৃত্যু রাজ্য দখলের থেকে প্রতিশোধের হয়ে উঠলো। রায়েনারা ও ডেমন সেই প্রতিশোধই নিলেন। স্বামী ডেমনের পরামর্শে এগনের সন্তানকে দুই গুপ্তচর দিয়ে হত্যা করা হয়। নিজের চোখের সামনে, বড় সন্তান হত্যা হতে দেখেন হেলায়েনা। হেলায়েনা শোকে পাথর হলেও, এগনের মাথায় রক্ত চেপে বসে। আগুন ও রক্তের এ লড়াইয়ে নতুন করে যোগ হয় সহিংসতা।
ব্যাটেল অ্যাট রুক’স নেষ্ট লড়াইয়ে প্রথমবারের মত সম্মুখে আসেন এইমন টারগেরিয়ানের মেয়ে প্রিন্সেস রেইনিস ও দ্বিতীয় এগন। এগনের সাথে ছিলেন এইমন্ড ও তার ড্রাগন। মেইলিস, সানফ্রাই ও ভ্যাগারের ভয়ংকর সম্মুখ লড়াই। আসলে এই যুদ্ধ এগনের পাতা ফাঁদ ছাড়া কিছু ছিল না। মূলত কোলের সৈন্যবাহিনীর বিপক্ষে লড়াইয়ের সময় এগন ও এইমন্ড হামলা করেন। যুদ্ধে ড্রাগনফায়ারে পুড়ে মারা যান রেইনিস ও তার ড্রাগন মেইলিস। মেইলিসের রক্তাক্ত মৃতদেহের পাশে দেহভস্ম পরে থাকে। ধারণা করা হয় তা রেইনিসের,কিন্তু শুধুমাত্র ভাঙা হাড় দেখে তো আর মানুষ শনাক্ত করা যায় না! তবে এগন এবং তার ড্রাগন সানফ্রাইকে মারাত্মকভাবে আহত করেন রেইনিস। সানফ্রাই এর একটি পাখা ভেঙে আলাদা হয়ে যায়। পোড়া ও গুরুত্বর জখম পাওয়া এগন চাপা পড়েন সানফ্রাইয়ের দেহের নিচে।
লুসিরিস যখন তার ড্রাগন নিয়ে ব্যারাথিওন পরিবারের সাথে সন্ধি করতে গিয়েছিল, প্রিন্স জ্যাকেরিস তার ড্রাগন ভার্মেক্সকে নিয়ে উড়ে গিয়েছিল উত্তরে। অ্যারিন, ম্যান্ডারলিন, বোরেল, স্যান্ডারল্যান্ড পরিবার রায়েনারার দলে যোগ দেয়। জ্যাকেরিস স্টার্ক পরিবারকেও রাজি করতে পেরেছিল। উইন্টারফেলের স্টার্করা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জানায়, “আইস অ্যান্ড ফায়ার” একত্র হবে রায়েনারা জন্য। গৃহযুদ্ধের শেষের দিকে এই প্রতিশ্রুতিই ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
“ব্যাটেল অব দ্য গালেত” সংগঠিত হয়েছিল নৌবহর সাথে নিয়ে। প্রিন্স জ্যাকেরিস ও দুই ড্রাগন মারা যায়, সাথে আহত হয় একটি। এ যুদ্ধে লড়েছিলেন তৃতীয় এগন, তার “স্ট্রমক্লাউড” ড্রাগন নিয়ে। সাথে ছিলেন ভাই ভিসেরিস। আহত ড্রাগন নিয়ে যুদ্ধের ময়দান থেকে কোনমতে বেঁচে ফেরে রায়েনারার ছেলে এগন। জ্যাকেরিস তার ভাইকে বাঁচাতে নিজের ভার্মেক্সস ড্রাগন নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল প্রতিপক্ষের সামনে। কিন্তু তার ধারণা ছিলো না প্রতিপক্ষের যুদ্ধবহর ড্রাগন আক্রমণ সামলানোর প্রস্তুতি নিয়ে আসবে। স্ট্রমক্লাউড ও ভার্মেক্সকে হারায় তারা। এগন ড্রাগনস্টোনে ফেরার পর স্ট্রমক্লাউডকে হাজারো তীর ও বর্শায় বিদ্ধ শরীর নিয়ে ফিরতে দেখা যায়। ঘন্টাখানেকের পর মারাও যায় এগনের ড্রাগন। স্ট্রমক্লাউডের এমন মৃত্যুর পর এগন আর ড্রাগন চালাননি। তবে, এগন ফিরলেও ভিসেরিস টারগেরিয়ান এ আক্রমণের পর থেকে নিখোঁজ হন।
টানা দুটি আক্রমণে হেরে বসে রায়েনারা। সাথে তাদের ড্রাগনের মৃত্যু ও সৈন্য হারানো। এমন সময় এগনের বিপক্ষে তারা সরাসরি আক্রমণ চালান। রায়েনারা ও ডেমন তাদের ড্রাগন নিয়ে কিংস ল্যান্ডিং আক্রমণ করে দখল নিয়ে নেয়। কিন্ত এগন ও এইমন্ডকে পাওয়া যায় না। স্মল কাউন্সিল রায়েনারার হাতে তুলে দেয় এগনের স্ত্রী হেলায়েনা ও মা অ্যালিস্যান্টকে। এগন পুরো শহর থেকে গায়েব। রায়েনারা এসে দখল করেন সিংহাসন। টারগেরিয়ান পরিবারের ইতিহাসে প্রথম নারীর স্পর্শ পায় আয়রন থ্রোন।
প্রিন্স জ্যাকেরিস মৃত্যুর আগে “ড্রাগনসীডস” দের খোঁজ নিয়েছিল। ঠিক টারগেরিয়ার বংশেরও নয় আবার ভ্যালেরিয়ান রক্তের কিছু বৈশিষ্ঠ্য থাকলেও ভেলারিয়ন বংশের নয়। তবে এই দুই বংশের প্রচ্ছন্ন কিছু বৈশিষ্ঠ্য ছিল ড্রাগনসীডদের ভেতর। রায়েনারার দখলে বেশ কিছু ড্রাগন থাকলেও তাদের রাইডার ছিল না। তাই ড্রাগনদের রাইডার যোগাড় করে দিতে জ্যাকেরিস এই ব্যাবস্থা করেছিল। ড্রাগনের রাইডার হতে গিয়ে অনেকেই মারা পরে। কিন্তু হিউ হ্যামার ভার্মিথর, উলফ দ্য হোয়াইট সিলভারউইং, অ্যাডাম অব হাল সীস্মোক ও নেটলস শিপস্টেলারকে পেয়ে যায়। যদিও এখানে অ্যাডাম অব হাল ভেলারিয়ন বংশের সত্যিকারের সন্তান ছিলেন। কিন্তু অধিকাংশই রায়েনারার সাথে একসময় বিশ্বাসঘাতকতা করে বসে।
“ফার্ষ্ট ব্যাটেল অব টুম্বেলেটন” এর বিভীষিকার পর “ফ্যাল অব দ্য ড্রাগনস্টোন” যুদ্ধের সময়ে প্রথমে ভাঙা ও পোড়া অবস্থায় ড্রাগনমাউন্টে পাওয়া যায় “গ্রে ঘোষ্ট” ড্রাগনকে। গ্রে ঘোষ্টের কোন বাহক ছিলো না, কখনও তাকে ওড়ানো হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় এগনের ড্রাগন সানফ্রাই তাকে হত্যা করে। রায়েনারা যখন কিংস ল্যান্ডিংয়ে, এগন সেখান থেকে পালিয়ে ড্রাগনস্টোন দখল করে নেয়। ড্রাগনস্টোনের পতনের সময় সেখানে ছিলেন ডেমন টারগেরিয়ানের মেয়ে বেলা টারগেরিয়ান ও তার ড্রাগন “মুনড্যান্সার”। কিছুটা আহত সানফ্রাইকে নিয়েই মুনড্যান্সারের মুখোমুখি হন এগন। মুনড্যান্সার সানফ্রাই থেকে ছোট হলেও, দ্রুত গতির ছিল। দুই ড্রাগন মারাত্নক আহত হয়। মুনড্যান্সার মারা যায় ড্রাগনফায়ারে। আহত, ক্ষত-বিক্ষত বেলা চলে আসে দ্বিতীয় এগনের কবজায়।
এইমন্ড টারগেরিয়ান ছিলেন দ্বিতীয় এগনের ভাই। ডেমন টারগেরিয়ান ছিলেন রায়েনারা স্বামী। কিংস ল্যান্ডিং থেকে পালিয়ে যাওয়া এইমন্ডকে নিজের মুখোমুখি হবার আহ্বান জানান ডেমন। হ্যারেনহ্যালের প্রাসাদের পাশে তাদের দুই ড্রাগনের ভয়ানক সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। এক পর্যায়ে ডেমন তার ড্রাগন ক্যারাক্সেস থেকে লাফ দিয়ে নামে এইমন্ডের ড্রাগন ভ্যাগারের পিঠে। তার ভ্যালেরিয়ান স্টিলের তরবারি “ডার্ক সিস্টার” সরাসরি ঢুকিয়ে দেয় এইমন্ডের চোখে। যদিও ডেমন বেঁচে ফেরেননি,তার মরদেহও পাওয়া যায়নি। ভয়ংকর আহত ক্যারাক্সেস হ্যারেনহ্যালের দেয়ালের পাশে কোনমতে পৌঁছে মারা যায়। আর ভ্যাগারের সমাপ্তি হয় পানিতে। প্রাচীন এ ড্রাগনের রক্তে গড’স আই হ্রদের পানি রক্তিম হয়ে ওঠে। কয়েকবছর পর পানিতে ভ্যাগার ও এইমন্ডের দেহের অংশ পাওয়া যায়। যদিও সেখানে হাড় ছাড়া কিছু ছিলো না। কিন্তু আগে থেকে এক চোখ অন্ধ থাকা, এইমন্ডের অন্য চোখে কোটরে তখনও দৃশ্যমান ডার্ক সিস্টার।
“স্ট্রোমিং দ্য ড্রাগনপিট” এর হামলা, যাকে বলা হয় টারগেরিয়ান গৃহযুদ্ধের সবথেকে বড় ঘটনা। কিংস ল্যান্ডিংয়ের পতনের পর হেলায়েনা বন্দী ছিলেন। বন্দী থাকা অবস্থায় নিজের ঘরের জানালা দিয়ে লাফিয়ে, মেইগর’স হোল্ডফার্সে তার আত্মহত্যার পর গর্জে ওঠে কিংস ল্যান্ডিংয়ের বাসিন্দারা। কারণ, গৃহযুদ্ধের সময়ে গুজব রটে যায় হেলায়েনাকে রায়েনারার নির্দেশে খুন করা হয়েছে। রায়েনারার বিপক্ষে বিদ্রোহ ঘোষনা করে, হেলায়েনার মৃত্যুর প্রতিশোধ চায় সাধারণ জনগণ। তখন তাদের নজরে আসে ড্রাগনপিট। তারা মনে করে সবকিছু জন্য ড্রাগনপিটে রাখা এই প্রাণীগুলো দায়ী।
ড্রাগনপিটে তখন ছিল চার ড্রাগন : ড্রিমফ্রাই, মরঘুল, ট্রায়ারেক্স, স্রাইকস। এদের ভেতর সবথেকে বড় ও পরিণত ড্রাগন একমাত্র ড্রিমফ্রাই। কিন্তু তার বাহক হেলায়েনা মৃত। হামলায় প্রচন্ড ক্ষয়ক্ষতি হয়। মৃত্যু নেমে আসে পুরো কিংস ল্যান্ডিংয়ে। মানুষ মরতে শুরু করে কাতারে কাতারে। কিন্তু গর্জে ওঠা বাসিন্দারা ড্রাগন হত্যা করেই শান্ত হবে।
প্রথমে মারা যায় ট্রায়েরেক্স এরপর মরঘুল। ট্রায়ারেক্স কিছু সময় টিকে থাকলেও চেইন ভেঙে পালিয়ে যাবার মত বড় সে ছিল না। একমাত্র ড্রিমফ্রাই পেরেছিল। সে নিজেকে মুক্ত করে দাঙ্গায় আসা প্রতিপক্ষকে ড্রাগনফায়ারে পোড়াতে শুরু করে। অল্প সময়েও সে হামলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। একসময় একটি তীর গিয়ে সোজা বেঁধে তার চোখে। এক চোখ অন্ধ হবার পর, ব্যাথায় পাগল হয়ে ওঠে সে। ড্রাগনপিটের উপরে কাঁচ ভেঙে পরে, দাঙ্গায় একসময় তারও সমাপ্তি ঘটে।
এর মাঝে, রায়েনারার ছেলে জোফরি বোকামি করে ফেলে। ড্রাগনপিটের ড্রাগন বাঁচাতে সে রওনা হয় মায়ের ড্রাগন সাইরেক্সকে নিয়ে। ড্রাগনপিটে তার নিজের ড্রাগনও চেইন দিয়ে বাঁধা ছিল।কিন্তু সাইরেক্স জোফরিকে পিঠ থেকে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে সাইরেক্সকেও আর জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়নি।জোফরির মৃত্যুর মাধ্যমে রায়েনারার প্রথম স্বামী লিওনরের সকল সন্তানের মৃত্যু ঘটে। সাথে তাকে কিংস ল্যান্ডিং থেকে পিছু হটতে হয়।
কিংস ল্যান্ডিং হারিয়ে, নিজেদের দলের অধিকাংশ ড্রাগন মারা যাবার ফলে, রায়েনারা তার লড়াইয়ে অনেক পিছিয়ে পরে। আসলে এই গৃহযুদ্ধের সময় নিজেদের মানুষের কাছে রায়েনারাই সবসময় ধোঁকার স্বীকার হয়েছে। স্বামী ডেমন মারা গেছে, দ্বিতীয় ভিসেরিসের খোঁজ নেই। রায়েনারা পক্ষের সবাই নিজেদের দলনেতাবিহীন অবস্থায় আবিষ্কার করে। এগনের নিরুদ্দেশ ও এইমন্ডের মৃত্যুর আয়রন থ্রোনে বসার জন্য তখন এগিয়ে ছিলেন দ্বিতীয় এগনের ভাই প্রিন্স ডেরন টারগেরিয়ান। এইমন্ড ও ক্রিশ্চিয়ান কোলের মৃত্যুর পর আহত এগন আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কিন্তু রায়েনারাকে ধোঁকা দেওয়া লর্ড হিউজ হ্যামার নিজে রাজা হতে চেয়েছিলেন। তার দখলে ছিলো পুরনো ও বড় ড্রাগন “ভার্মিথর।”
দ্বিতীয় টুম্বেলটন লড়াইয়ের ঘটনা। এই লড়াইয়ে মারা যায় ভার্মিথর, সাথে অ্যাডাম ভেরারিয়নের ড্রাগন “সীস্মোক”। অ্যাডাম দ্য হাল ড্রাগনসীডস হয়ে শেষপর্যন্ত রায়েনারার পক্ষে লড়াই করেছিলেন। ভার্মিথর ও সীস্মোকের লড়াইয়ের মাঝে হামলা করেন ডেরন দ্য ডেয়ারিং, দ্য ব্লু কুইন খ্যাত “টেসারিয়ন” ড্রাগন নিয়ে। ক্যারাক্সেস ও ভ্যাগারের পর ভার্মিথর, সীস্মোক ও টেসারিয়নের ভয়ংকর এ লড়াইয়ে তিন ড্রাগনই মারা যায়। প্রথমে ভার্মিথর ও সীস্মোক এবং শেষে টেসারিয়ন। আহত অবস্থায় আকাশ থেকে মাটিতে ছিটকে পরা মরনাপন্ন ড্রাগনের চোখে তীর ছুড়ে হত্যা করেন বেনজিকট ব্ল্যাকউড ও ব্ল্যাকউড পরিবারের বিখ্যাত তীরন্দাজ বিলি বার্নলি। পরবর্তীতে, ডেরনকেও মৃত ঘোষণা করা হয়। কারণ তার মৃতদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
১৩০ এসি, নিজেদের ভেতর এক চক্রান্তের ফলে তৃতীয় এগনসহ রায়েনারা ধরা পরে। তার দখলে কিছুই ছিল না। নিজের মুকুট বিক্রি করে দিয়েছিলেন ব্রাভোসী শীপ কিনতে। তার আশা ছিল ড্রাগনস্টোনে ফিরে, নতুন ড্রাগন জন্ম দেবার শেষ চেষ্টা করবেন। কিন্তু ফিরে এসে তিনি অবাক। স্যার আলফ্রেড ব্রুমি বিশ্বাসঘাতকতা করে। তার অবশিষ্ট সৈন্যকে নির্দয়ভাবে হত্যা করা হয়। তাকে এবং তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হয় দ্বিতীয় এগনের কাছে।
আহত, ক্লান্ত এগনকে দেখে রায়েনারা বলে,
“আশা করেছিলাম তুমি মরে গেছো।”
কুটিল হাসি হেসে এগন উত্তর দেয়,
“তোমার আগে নয়।”
দ্বিতীয় এগন রায়েনারাকে তার অর্ধমৃত ড্রাগন সানফ্রাইকে দিয়ে ছেলের সামনে পুড়িয়ে মেরে, ড্রাগনের খাদ্যে রূপান্তিত করে। পাশাপাশি সে দৃশ্য দেখতে বাধ্য করা হয় তৃতীয় এগনকে। কিছুদিন পর ড্রাগনস্টোনে মারা যায় কুখ্যাত ড্রাগন সানফ্রাই দ্য গোল্ডেন। দ্বিতীয় এগন তখন পরিকল্পনা করে সিংহাসন ও কিংস ল্যান্ডিং দখল করার।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চলা এ লড়াইয়ে দ্বিতীয় এগনও জিততে পারেননি। রায়েনারার মৃত্যুর পর, সিংহাসন নিজের দখলে রাখতে পেরেছিল মাত্র দেড় বছর।গৃহযুদ্ধের এক সময় হ্যারেনহ্যালসহ অনেক বড় শক্তি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু উইন্টারফেল ও ভেইলের মত বড় রাজ্য ছিল রায়েনারার পক্ষে। ভেইল থেকে অ্যারিন সৈন্য ও নর্থের লর্ড ক্রেগান স্টার্ক একসাথে হয়ে দ্বিতীয় এগনকে দমিয়ে দেয়। ড্রাগন হারিয়ে তখন এগনের শক্তি প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। তার স্মল কাউন্সিলও তাকে আত্মসমপর্ণ করে নাইট’স ওয়াচে যোগ দেবার পরামর্শ দেয়।
কিন্তু দ্বিতীয় এগন এসব শোনেনি। অনেক প্রাণ ও কৌশলের বিনিময়ে তিনি এ সিংহাসনের দখল নিয়েছেন, এত সহজে কীভাবে তা হাতছাড়া করেন! যে খেলা টারগেরিয়ানরা সবসময় খেলে অভ্যস্ত, অবশেষে সেই চক্রান্তের স্বীকার হন তিনি। এগনের খাবারে বিষ মিশিয়ে তাকে মেরে ফেলা হয়। অনেকের মতে, এই কাজ করেছিলেন, স্বয়ং ক্রেগান স্টার্ক।
দ্বিতীয় এগনের মৃত্যুর পর অবশেষে সমাপ্তি ঘটে কুখ্যাত টারগেরিয়ান গৃহযুদ্ধের। সিংহাসনে বসেন রায়েনারার পুত্র তৃতীয় এগন, তার নামকরণ হয় “এগন দ্য ড্রাগনসবেইন।” লর্ড ক্রেগানকে নিজের “হ্যান্ড অব দ্য কিং” নিযুক্ত করে, বিয়ে করেন দ্বিতীয় এগনের মেয়ে জাহেরা টারগেরিয়ানকে। এগন দ্য ড্রাগনবেইনের রাজত্ব শুরু হবার পর ভিসেরিস ফিরে আসেন। এগন কখনও ভুলে যাননি, যুদ্ধে হারিয়ে ফেরা তার ভাইকে। ভিসেরিস একসময় এগনের হ্যান্ডও নিযুক্ত হন। ইতিহাস বলে, ভিসেরিস একমাত্র ব্যক্তি, যাকে এগন সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করত।
১৩১ এসি, গৃহযুদ্ধ সমাপ্তির পর টারগেরিয়ানদের মাত্র চারটি ড্রাগন জীবিত ছিল। মর্নিং, শিপস্টেলার, ক্যানিবল ও সিলভারউইং। মর্নিং ড্রাগনকে নিজের বাহন করেছিলেন ড্যারেন টারগেরিয়ানের মেয়ে প্রিন্স রায়েনা। লড়াইয়ে ব্যবহার করা সিলভারউইংকে আর ওড়ানো সম্ভব হয়নি। কারণ, সে ক্ষিপ্ত ও বন্য হয়ে উঠেছিল। ক্যানিবল গৃহযুদ্ধের পর হারিয়ে যায়। শিপস্টেলারকে ওড়ানোর চেষ্টা করা হয়নি।
“দ্য লাষ্ট ড্রাগন” নামে সর্বশেষ এক অপরিণত ড্রাগনের উল্লেখ পাওয়া যায় টারগেরিয়ান বংশে। তৃতীয় এগনের আমলে জন্ম নেয়া এ ড্রাগনের কথা উল্লেখ করেন, স্যার আর্নাল অব পেনিট্রি। এটি ছিল টারগেরিয়ান পরিবারের শেষ ড্রাগন। পরবর্তীতে টারগেরিয়ান রাজারা শুধুমাত্র ড্রাগনের কঙ্কাল ও ডিম দেখে তাদের মৃত অতীতকে স্বরণ করেছে। ড্রাগন ছাড়া তার আর কখনও পূর্বের মত শক্তিশালি হতে পারেনি।
বহুদিন পরের কথা। ৩০০ বছর টানা শাসনের পর, টারগেরিয়ানদের পতন হয়েছে রবার্ট ব্যারাথিওনের হাতে। ম্যাড কিং এরিসের দুই সন্তান ভিসেরিস ও ডেনেরিস ধরে রেখেছে বংশের হাল। ইলিয়ো মোর্পাটিস ডেনেরিসের বিয়ে দেয় খাল দ্রগোর সাথে। বিয়েতে তিনি ডেনেরিসকে উপহার দেন তিন ড্রাগন ডিম। এই ডিম থেকে ড্রাগন জন্ম দিতে সক্ষম হন ডেনেরিস। প্রায় ১০০ বছর পর ইসোস মহাদেশ প্রথমবারের মত শুনতে তিন ড্রাগনের সম্মিলিত চিৎকার।