দ্য রেড টার্টল (২০১৬): অদ্ভুত কচ্ছপের পিঠে সিনেমার দ্বীপ

নির্জন দ্বীপে একাকী
পায়ের ছাপ রাখি ভিজে বালুর বুকে
ক্লান্ত পদচারণায় ডাহুকের মত
রাতের আঁধার ঘনঘোর হলে!
বন্ধুরা সবাই চলে গেছে কোন এক সময় 
ডেকে ডেকে মোরে ফিরে যেতে লোকালয়!
ওপারে শস্যখেত হলুদ সম্ভার,
এপারে একাকী আমি নিরাড়ম্বর!

কবি গোলাম রহমানের ‘নির্জন দ্বীপে’ কবিতার এ অংশের ভাবের সাথে আমাদের গল্পের দ্বীপে নির্বাসিত হওয়া নামহীন নায়কের জীবন ও নিয়তি অনেকটাই মিলে যায়। এই নামহীন নায়ক এবং সে যে দ্বীপে আটকে পড়েছে, সেটা কেন্দ্র করেই এগিয়ে যায় ‘দ্য রেড টার্টল’ সিনেমার গল্প। দর্শক মুগ্ধ হয় পরিচালকের চলচ্চিত্র নির্মাণের মুন্সিয়ানায়।

ট্রপিক্যাল আইল্যান্ড বা ক্রান্তীয় অঞ্চলের দ্বীপের কথা উঠলেই আমাদের স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে সামুদ্রিক বাতাস, বেলাভূমি এবং সমুদ্রতটে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের ছবি। বালি, মালদ্বীপ বা এ ধরনের দ্বীপসমূহের নয়নাভিরাম দৃশ্য আমরা প্রায়শই টিভি পর্দায় দেখি ঐসব দেশের পর্যটন শিল্পের বিজ্ঞাপনে। এছাড়া ‘ডক্টর নো’ (১৯৬২), ‘দ্য ব্লু লেগুন’ (১৯৮০) বা ‘ইট প্রে লাভ’ (২০১০) এর মতো সিনেমাগুলোতেও আমরা এমন দ্বীপের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছি।

দৈনন্দিন জীবনের ধরাবাঁধা রুটিন থেকে মুক্তি পেতে এসব দ্বীপে ভ্রমণ করতে যায় মানুষ। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে খুঁজে পায় প্রগাঢ় শান্তি এবং জীবনে এগিয়ে চলার রসদ। প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে ভুলে যায় যাপিত জীবনের দুঃখ, জরা ও গ্লানি। আজকে আমরা যে সিনেমা নিয়ে আলোচনা করছি, তার গল্পেও ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে এমনই এক উঁচু টিলা, বেলাভূমি এবং সবুজে আবৃত ট্রপিক্যাল আইল্যান্ডের।

কিন্তু এ গল্পের নায়ক দ্বীপের এমন মোহনীয়তা উপভোগ করতে সেখানে যায়নি, বরং সে আটকা পড়েছে সেখানে। আর তার চোখে এই সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ দ্বীপ ধরা দিচ্ছে মৃত্যু উপত্যকা রূপে। মূলত বাচ্চারা টার্গেট অডিয়েন্স হলেও পরিবেশ ও তার ভারসাম্য রক্ষার গুরুত্ব, পরিবেশের উপর জীবের নির্ভরতা ইত্যাদি বিষয়বস্তু রূপকের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছে সিনেমায়; বর্ণিত হয়েছে অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকার মন্ত্র। যা সকল শ্রেণির দর্শকদের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। প্রকৃতি নিয়ে নির্মিত অন্যান্য সিনেমার তুলনায় এর বিষয়বস্তু আরো গভীর।

বর্তমানে লন্ডনে বসবাসকারী ডাচ অ্যানিমেটর মাইকেল ডুডোক ডি উইটের এক দশকের পরিশ্রমের ফলাফল ‘দ্য রেড টার্টল’। ফ্রান্সের প্যারিস এবং অ্যাংগুলেমে অবস্থিত প্রাইমা লিনেয়া স্টুডিওজের একদল অ্যানিমেটর এর চরিত্রগুলোকে নিজেদের হাতে এঁকেছেন। কাগজের বদলে তারা ব্যবহার করেছেন ইলেকট্রনিক ট্যাবলেট। ২০০১ সালে ফাদার অ্যান্ড ডটার নামক অ্যানিমেটেড শর্ট ফিল্মের জন্য অস্কার জেতা মাইকেলের এটি প্রথম ফিচার ফিল্ম। ‘দ্য রেড টার্টল’-এর মতো তার সেই প্রজেক্টও ছিল সংলাপবিহীন। 

বিস্তৃত দ্বীপে আটকে পড়া নাবিকের গল্প; Image Source: cartoonbrew.com

এটাই টোকিওভিত্তিক অ্যানিমেশন পাওয়ার হাউজ স্টুডিও ঘিবলি’র প্রথম কাজ, যা জাপানের বাইরে নির্মিত হয়েছে। এই স্টুডিও অস্কারজয়ী জাপানি ফিল্মমেকার হায়ায়ো মিয়াজাকির নিজস্ব প্রতিষ্ঠান; যারা ‘স্পিরিটেড অ্যাওয়ে’ (২০০১), ‘হাওল’স মুভিং ক্যাসল’ (২০০৪), ‘মাই নেইবার টটোরো’ (১৯৯৮), ‘প্রিন্সেস মনোনোকে’ (১৯৯৭)-এর মতো প্রকৃতি ও রূপান্তর বিষয়ক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে। মাইকেল নিজেও কাজ করার ক্ষেত্রে জাপানি ক্যালিগ্রাফি এবং গ্রেট মিয়াজাকির দ্বারা অনুপ্রাণিত৷ যা প্রতিফলিত হয়েছে মুভির লুক এবং স্টোরিতে।

ফলে এই ফ্রেঞ্চ-বেলজিয়ান-জাপানি প্রজেক্টে দর্শকরা ইস্ট-মিটস-ওয়েস্ট ধরনের স্পর্শ পাবেন। তবে অ্যানিমের ক্ষেত্রে আমরা যে ক্যারেক্টারদের বড় বড় চোখ দেখে অভ্যস্ত, এখানে তার থেকে ভিন্ন পথে হেঁটেছেন দেদক। এখানকার ক্যারেক্টারদের চোখ অনেকটা কিংবদন্তি বেলজিয়ান কার্টুনিস্ট হের্জের টিনটিনের চরিত্রগুলোর মতো। যার মাধ্যমে এই প্রজেক্টের ইস্ট-মিটস-ওয়েস্টের ব্যাপারটি আরো ভালোভাবে বোঝা যায়। 

এই কাজের জন্য তাকে নির্বাচন এবং মেন্টর করেছেন ইসাও টাখাহাতা এবং তোশিও সুজুকি। এছাড়াও এখানে অ্যানিমেশন সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করেছেন জ্যাঁ-ক্রিস্টোফ লাই, যিনি আগে ‘দ্য ট্রিপলেটস অফ বেলভিল’ (২০০৩)-এ কাজ করেছেন। প্যাসকালে ফেরানের সাথে মিলে এর চিত্রনাট্য লিখেছেন মাইকেল নিজে। ২০১৬ সালের ১৮ মে, কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ৮০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই মুভি বক্স অফিসে আয় করেছে ৬.৬ মিলিয়ন ডলার। এর আইএমডিবি রেটিং ৭.৫ ও রটেন টমাটোজে অডিয়েন্স স্কোর ৮১% এবং টমেটোমিটারে ফ্রেশনেস ৯৩%। 

মুভিতে মাইকেল আমাদেরকে জাহাজডুবিতে পড়া একজন নাবিকের কাহিনী দেখান। যার জাহাজ ডুবে গেলেও ভাগ্যক্রমে সে সমুদ্রতটে এসে পৌঁছেছে। এখন তাকে এই সতেজ বনভূমি, ঘন জঙ্গল এবং পাথুরে দেয়ালে ভরা দ্বীপে বেঁচে থাকার পথ খুঁজতে হবে। এখানে পরিচালক গতানুগতিক সার্ভাইভাল সিনেমা থেকে দূরে সরে প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্ককে দেখিয়েছেন। বারকয়েক ল্যান্ডস্কেপে দ্বীপটি দেখানো হয়েছে। এটি দেখতে অনেকটা কচ্ছপের পিঠের মতো। এরকমই এক কচ্ছপ পরে দেখতে পাবে দর্শক। এক্ষেত্রে দ্বীপের আকৃতি অনেকটা ফোরশ্যাডো বা পূর্বাভাসের মতো কাজ করেছে যেন।

এই চলচ্চিত্রে কোনো সংলাপ নেই, আছে কেবল আনন্দ আর দুঃখ বোঝাতে নায়কের করা কিছু সহজাত শব্দ। তবুও এই নাম না জানা দুর্ভাগা নাবিকের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড আমরা দেখতে থাকি মগ্ন হয়ে। প্রথমেই আমরা তার সম্পর্কে যে ব্যাপার অনুধাবন করতে পারি, সেটি হলো আবার অন্য মানুষের সাথে মেলামেশা, মিথস্ক্রিয়াকে সে আকুলভাবে কামনা করে। এই কামনা এতটাই তীব্র যে একাকিত্বের নিষ্পেষণে সে প্রতিদিন গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে ওঠে, নিজের যন্ত্রণা-ক্লেশের অভিযোগ জানায় অদৃষ্টের কাছে।

দ্বীপে নির্বাসিত হওয়ার পর প্রথম যে প্রাণীর সাথে তার দেখা হয়, সেটি সৈকতে বসবাসকারী এক কাঁকড়া, যেটি তার দাঁড়া দুটো ক্রমাগত নাড়াতে থাকে। আরো কিছু সঙ্গীসাথীসহ এই কাঁকড়ার আচরণ সিনেমার ন্যারেটিভের জটিলতার মধ্যে দর্শককে কিছুটা কমিক রিলিফ দেবে। দ্বীপে কী কী আছে তা ঘুরে-ফিরে দেখার সময় হঠাৎ করে নাবিক পানিভর্তি এক গুহার ভেতরে গিয়ে পড়ে। প্রথমে বেশ ভয় পেয়ে গেলেও শেষপর্যন্ত জয় হয় তার ইচ্ছাশক্তি ও হার না মানা মানসিকতার। সে ঐ গুহা থেকে জীবিত বেরিয়ে আসে। 

এত দুর্দশার মাঝেও দুর্ভাগা নাবিকের ঘুমের ভেতর স্বপ্ন উঁকি মারে। তার প্রাণবন্ত স্বাপ্নিক জীবনে সে দেখতে পায় একটি সেতু, যা সমুদ্রের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত অবধি বিস্তৃত। এই সেতুর উপর দিয়ে বাতাসে ভাসতে ভাসতে সমুদ্র পাড়ি দিতে পারে আমাদের নাবিক। এছাড়াও তার স্বপ্নে আসে স্ট্রিংয়ের বাদ্যযন্ত্রে ধ্রুপদী সঙ্গীতের সুর তোলা এক চতুষ্টয়। ঘুম ভাঙার পরও সৈকত জুড়ে  যাদেরকে খুঁজে ফেরে সে। এই নান্দনিক নরক থেকে সভ্য সমাজে ফেরার আকুলতায় দ্বীপে বিদ্যমান বাঁশ দ্বারা একটি ভেলা বানানোর কথা চিন্তা করে সে, এরপর বাঁশ সংগ্রহ করে কাজেও নেমে পড়ে পুরোদমে। 

এই সেই লাল কচ্ছপ; Image Source: wallpaperaccess.com

 

এভাবে বাঁশের তৈরি একটি ভেলায় সে ভেসেও পড়ে সমুদ্রে। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরই হঠাৎ কোনো অদৃশ্য শক্তির আঘাতে তার ভেলা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। ফিরে এসে হতাশায় পর্যবসিত আমাদের নায়ক। হয়তো ভাবে এই সুন্দর দ্বীপেই মনুষ্যসঙ্গ ছাড়া তার জীবনের সমাপ্তি ঘটবে। আর মৃত্যু এখানে দূরবর্তী কোনো বিষয়ও নয়। কেননা দ্বীপের ঐ কাঁকড়াগুলো একটা মরা কচ্ছপের বাচ্চাকে খাবারে পরিণত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পর সেগুলোর একটি নিজেই সীগালের খাদ্যে পরিণত হয়।

যা-ই হোক, আবারও আশায় বলীয়ান হয়ে নাবিক ভেলা তৈরি করে এবং আবারও কিছুদূর পাড়ি দেওয়ার পর তার ভেলা ভেঙে যায়। কয়েকবার এমন হওয়ার পর সে তার শত্রুকে দেখতে পায়, যে তাকে বারবার দ্বীপত্যাগে বাধা দিচ্ছে। আর তার এই শত্রু হলো এক অতিকায় লাল রংয়ের কচ্ছপ। কচ্ছপটি বারবার তার ভেলা ভেঙে দিলেও শারীরিকভাবে কোনো ক্ষতি করে না।

নিজের ভাগ্য এবং ঐ কচ্ছপের প্রতি প্রচণ্ড ক্রোধ নিয়ে সে ফিরে আসে দ্বীপে। কচ্ছপও তার পেছনে পেছনে ডাঙায় উঠে আসে। একে ডাঙায় দেখে নাবিক তার হিতাহিত বোধ হারিয়ে ফেলে এবং বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করে কচ্ছপকে হত্যা করে। রাগ কিছুটা কমে এলে সে কী গর্হিত কাজ করে ফেলেছে, তা বুঝতে পারে আর অনুশোচনার আগুনে দগ্ধ হয়। এই জায়গায় এসে দর্শক স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ এর ‘দ্য রাইম অভ দ্য এনশিয়েন্ট ম্যারিনার’ কবিতাটি পড়ে থাকলে তার সাথে চরিত্রের ভাবগত মিল পাবেন। কচ্ছপটি হত্যা করার পর গল্পে রূপকথার প্রভাবের দিকটি আরো প্রকটভাবে প্রকাশিত হয় এবং প্রেক্ষাপটে একজন নারীর আগমন ঘটে, যা মুভির দ্বিতীয় থিমের দিকে নিয়ে যায় আমাদেরকে। এতটুকু পড়ে পাঠকের মনে হতে পারে স্পয়লার সব তো দিয়েই দিচ্ছি! কিন্তু পুরো গল্প জেনে গিয়ে এ সিনেমা দেখতে বসলেও তেমন একটা সমস্যা হবে না; কেননা এর মূল সৌন্দর্য পরিচালকের স্টোরিটেলিং এবং গল্প বলার জন্য সৃষ্ট পরিবেশের মধ্যে।  

নারীর আগমনের ফলে ‘দ্য রেড টার্টল’ একটি প্রেমের গল্পে পরিণত হয়। এর মাধ্যমে পরিচালক জীবনধারণের ক্ষেত্রে প্রাণীর উপর প্রাণীর নির্ভরশীলতার, মিথস্ক্রিয়ার ব্যাপারগুলোকে তুলে ধরেছেন। তারা দুজনে এই নির্জন দ্বীপে সংসার পাতে, তাদের কোল জুড়ে আসে এক ফুটফুটে শিশু। এই শিশু আবার ছোট থেকে বড় হয়ে পৃথিবী কেমন, তা জানতে সভ্যতার দিকে পাড়ি জমায়। এই জুটি বুড়ো হয় এবং তাদের মধ্যে একজন মারা যায়। এভাবেই এই পরিবারের সদস্যরা মানুষের জীবন চক্রের প্রতিনিধিত্ব করেছে। এছাড়া নাবিক যে সব উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছেড়ে তার সঙ্গিনীকে প্রাধান্য দিয়ে এই দ্বীপে থেকে গেল, তাতে মাইকেল দেদকের নিয়তিকে মেনে নেওয়া এবং মিনিমালিস্টিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ পায়। মানুষকে তিনি প্রাচুর্যের পেছনে না ছুটে পূর্ণতার্জনের দিকে ছুটতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আর এই সবকিছুর মাধ্যমে ‘দ্য রেড টার্টল’ গতানুগতিক অ্যানিমেটেড সিনেমাকে ছাড়িয়ে নিজেকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। 

প্রকৃতি রুদ্রমূর্তি ধারণ করলে প্রকৃতির কোলে বসবাসকারী মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর কী অবস্থা হতে পারে, কেমন করে সাজানো সংসার তছনছ হয়ে যেতে পারে তার উদাহরণও এসেছে এই সিনেমায়। আর এটি এমন এক সময়ে মুক্তি পায় যখন বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং তার ফলাফল নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছিল। এভাবে বাস্তবিক বিষয়বস্তুর আলোচনার মাধ্যমে দেদক প্রাপ্তবয়স্ক দর্শকদের জন্য যেমন রেখেছেন ভাবার অবকাশ, তেমনি কমবয়সী দর্শকদের এখন থেকেই সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। এসব কারণেই এই সিনেমা সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে দু’হাত ভরে।  

সতেজ, দীপ্তিমান ভিজ্যুয়াল সিম্ফোনি; Image Source: wallpaperaccess.com

ডিজনি বা পিক্সারের গতানুগতিক অ্যানিমেশনের ভিড়ে ‘দ্য রেড টার্টল’-এর বাতাসের শব্দ, সবুজে ভরা বাঁশবাগান আলাদা অনুভূতি দেবে দর্শকদের। ওখানে যেমন টাকা-পয়সার ঝনঝনানি আর কে কোন তারকাকে দিয়ে ভয়েস অ্যাকটিং করাতে পারবে, তা নিয়ে হুড়োহুড়ি- এখানে সেটি নেই। সিনেমার মতোই সুন্দর লঁরা পেরেজ ডেল মারের করা ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর; যা আপনার কাছে পৌঁছে দেবে কেন্দ্রীয় চরিত্রের দুঃখ, সুখ, হতাশার অনুভূতিকে, করে তুলবে স্বপ্নাতুর।

মাইকেল দেদকের এই সাহসী ফিচার ফিল্ম ম্যাড়মেড়ে হয়ে যাওয়া অ্যানিমেটেড ফিল্মের ল্যান্ডস্কেপে যেন এক সুবাতাস, যা প্রকৃতি, মিনিমালিজম ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আপনাকে ভাবাবে; নিয়ে যাবে অন্য জগতে। তাই হাতে সময় থাকলে বসে যেতে পারেন স্টুডিও ঘিবলির এই পোয়েটিক অ্যানিমেটেড সিনেমা দেখতে, যার সতেজ, দীপ্তিমান ভিজ্যুয়াল সিম্ফোনি আপনার চোখে এনে দেবে প্রশান্তি এবং বিষয়বস্তুর গভীরতা হৃদয়ে এনে দেবে প্রগাঢ় সুখ। সিনেমা শেষে আপনিও হয়তো জীবনকে দেখবেন ভিন্ন দৃষ্টিতে।

Related Articles

Exit mobile version