স্ট্রেঞ্জার থিংস সিরিজের অজানা যত দিক (সিজন ১-৩)

অরিজিনাল সিরিজ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে নেটফ্লিক্সের কোন সিরিজকে বসানো যায়? এমন প্রশ্ন করা হলে নানাজনের কাছ থেকে নানারকম উত্তর আসাটাই স্বাভাবিক। কেউ নার্কোসের কথা বললে, অন্য কেউ বলবে ডেয়ারডেভিলের নাম। কেউ ডার্কের পক্ষ নিলে কেউ আবার সাফাই গাইবে মানি হাইস্টের। কেউ বা মাইন্ডহান্টারের। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে বন্ধুত্ব, কিশোর অ্যাডভেঞ্চার, ভিন্ন ডাইমেনশন, হরর এলিমেন্ট, থ্রিল এবং আশির দশকের নস্টালজিয়াকে পুঁজি করে নির্মিত নেটফ্লিক্সের অরিজিনাল কন্টেন্ট ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’- এর কদর দর্শকমহলে সর্বদাই অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। সিরিজটির তুমুল জনপ্রিয়তা অন্তত সেটাই প্রমাণ করে। স্ট্রেঞ্জার থিংসকে বলা হয় নেটফ্লিক্সের ‘তুরুপের তাস’। এই এক সিরিজের চালে নেটফ্লিক্স তাদের জনপ্রিয়তার হাওয়া নিয়ে ঠেকিয়েছে পর্বত চূড়ায়। বাস্তবতা এবং পরাবাস্তবতার মিশেলে তৈরি এই সিরিজ এতটাই দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে যে, রিলিজের সাথে সাথে দর্শকরা তা বিঞ্জ ওয়াচ দিয়ে একবসায় খতম করে ফেলে। সিনে পাড়ায় ঝড় তোলার এই টিভি সিরিজের প্রথম তিন সিজনের অজানা কিছু দিক নিয়েই আজকের এই আলোচনা।

স্ট্রেঞ্জার থিংস সিরিজের প্রথম তিন সিজনের পোস্টার; Image Source: Netflix.

প্রত্যাখ্যান

নেটফ্লিক্সের আইকনিক এই সিরিজ নির্মাণ করেছেন যমজ ভাই ম্যাট ডাফার ও রস ডাফার। তবে শুরুর দিকে পথচলাটা এত মসৃণ ছিল না। সিরিজের বিশ পৃষ্ঠার খসড়া নিয়ে বিভিন্ন আমেরিকান কেবল নেটওয়ার্কের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তারা। কিন্তু ১৫-২০ বার তাদেরকে বিভিন্ন অজুহাতে প্রত্যাখ্যান করা হয়। প্রত্যেক নেটওয়ার্কই চাইত কাহিনির ফোকাস বাচ্চাদের থেকে উঠিয়ে পুলিশ অফিসার জিম হপারের উপর নিয়ে আসা হোক, যেখানে জিম হপার আধিভৌতিক ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে অনুসন্ধান করবেন। বহু কাঠ-খড় পোড়ানোর পর ডাফার ব্রাদারস নেটফ্লিক্সকে তাদের এই পরিকল্পনা পরিবেশন করলে ২৪ ঘণ্টার ভেতরই গ্রিন সিগনাল দেয় নেটফ্লিক্স। নেটফ্লিক্সের মাধ্যমে না এসে অন্য কোনো টেলিভিশন নেটওয়ার্কে এই সিরিজ আসলে হয়তো এর নামা রাখা হতো ‘স্ট্রেঞ্জ অ্যাডভেঞ্চার অভ জিম হপার’।

ডাফার ব্রাদারস; Image Source: The Sun.

অডিশন

মূল চরিত্র তথা কিশোরদের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ৯০৬ জন বালক এবং ৩০৭ জন বালিকা অডিশন দিয়েছিল। সবার প্রথমে কাস্ট করা হয়েছিল ডাস্টিনের চরিত্রে অভিনয় করা গেটন ম্যাটার‍্যাজোকে। তার অডিশন টেপ দেখেই ডাফার ভ্রাতৃদ্বয় তাকে ডাস্টিন চরিত্রের জন্য নির্বাচিত করেন। উইলের বায়ার্সের চরিত্রে অভিনয় করা নোয়াহ স্ন্যাপ গিয়েছিল এক গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে। সেখানেই সে নির্বাচিত হওয়ার সুসংবাদ শুনতে পায়। লুকাসের চরিত্রে অভিনয় করা ক্যালেব ম্যাকলাফলিন মূলত একজন স্টেজ পারফর্মার। সে ব্যালেড ট্যাপ ডান্সের পাশাপাশি জ্যাজেও ওস্তাদ। তাই রোল পাবার জন্য তাকে তেমন কষ্ট করতে হয়নি। অসুস্থতার কারণে মাইক চরিত্রের অভিনেতা ফিন ওলফহার্ড নিজের বিছানা থেকেই অডিশন টেপ পাঠিয়েছিল। ভাগ্যক্রমে, এরপরেও সে রোল পেয়েছিল। ইলেভেন চরিত্রে অভিনয় করা মিলি ববি ব্রাউনের কাহিনিটা একটু অন্যরকম। খ্যাতনামা হরর গল্পলেখক স্টিফেন কিং বিবিসি’র Intruders (2014) টিভি সিরিজে ছোট্ট মিলির অভিনয় দেখে এতটাই অভিভূত হয়েছিলেন যে, টুইটারে তিনি মিলিকে নিয়ে এক প্রশংসামূলক পোস্ট করে বসেন। এরপরই ডাফার ভ্রাতৃদ্বয়ের নজর আটকে যায় মিলির উপর। বব চরিত্রে অভিনয় করা ব্রিটিশ অভিনেতা অস্টিন প্রথমে সাংবাদিক ও কন্সপিরেসি থিওরিস্ট মুরে বাউম্যানের চরিত্রের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন।

বিবিসি’র Intruders (2014) টিভি সিরিজে মিলি; Image Source: BBC.

ইলেভেনের অনুপ্রেরণা

ডাফার ভ্রাতৃদ্বয় ইলেভেন চরিত্রের অনুপ্রেরণা নিয়েছেন ১৯৮২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত স্টিভেন স্পিলবার্গের E.T. সিনেমা থেকে। E.T সিনেমার এলিয়েনের কাছে ইলেভেনের মতো টেলিকাইনেসিস পাওয়ার ছিল। প্রথমদিকে তাকেও বাচ্চাদের মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয়। E.T. আর ইলেভেনের কাপড়-চোপড়ের মাঝেও বেশ কিছু সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। প্রথম সিজনেই ইলেভেনের কাহিনি শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। অর্থাৎ প্রথম সিজনের পর থেকে তাকে আর রাখা হবে না, এমনটিই ছিল ডাফার ভ্রাতৃদ্বয়ের পরিকল্পনা। কিন্তু এই শো রাতারাতি আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা অর্জন করায় নেটফ্লিক্স তাদেরকে বলে দেয় মিলির ক্যারেক্টার এগিয়ে নেওয়ার জন্য। শো-র কাজ শুরু করার পূর্বে বাচ্চা এবং লেখকদের প্রোডাকশন কোম্পানি থেকে বলা হয়েছিল ‘The Goonies and Poltergeist’ ফিল্মের মতো ক্লাসিক হলিউড ফিল্মগুলো একটু ঝালাই করে নিতে। এসব ধাঁচের মুভি স্ট্রেঞ্জার থিংস নির্মাণের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। সত্তর এবং আশি দশকের বিভিন্ন মুভির ছাপ রয়ে গেছে এই সিরিজে।

স্ট্রেঞ্জার থিংসে্র সাথে ই.টি সিনেমার মিল; Image Source: Amblin Entertainment/Netflix.

বাস্তব জীবনে ডাস্টিন

সিরিজের অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র ডাস্টিনকে শারীরিক কিছু প্রতিবন্ধকতার জন্য স্কুলে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। আসল ব্যাপার হলো, বাস্তবেও তার কিছু শারীরিক সমস্যা বিদ্যমান। রোগটি হলো Cleidocranial dysplasia। এই রোগের ফলে বাচ্চাদের হাড়, দাঁতের পরিপূর্ণ বিকাশ ব্যাহত হয়। এই অস্বাভাবিকতার জন্য তাকে কিছু মুভি এবং সিরিজের অডিশন থেকেও খালি হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ডাফার ভ্রাতৃদ্বয় ভাবলেন- একে সমস্যা হিসেবে না নিয়ে ডাস্টিন চরিত্রের একটা অংশ হিসেবে চালিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এজন্য তাকে ডাস্টিন চরিত্রের জন্য নিয়ে নেওয়া হয়। অবশ্য এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য গ্যাটেন মোট চারবার নিজেকে অপারেশনের ছুড়ি-কাঁচির নিচে সমর্পণ করেছে। সে CCD Smiles নামে এক দাতব্য সংস্থার সাথেও যুক্ত, যারা এই রোগে আক্রান্ত বাচ্চাদের সাহায্য করে থাকে।

বাঁ থেকে রবিন, স্টিভ, এবং ডাস্টিন; Image Source: Netflix.

আপসাইড ডাউন

স্ট্রেঞ্জার থিংসে মূল আকর্ষণই তৈরি হয়েছে প্যারালাল ইউনিভার্সের আপসাইড ডাউনকে ঘিরে। এই আপসাইড ডাউন থেকেই উঠে আসা ডেমোগর্গন, মাইন্ড ফ্লেয়ার, বিষাক্ত লতাসহ বহু খতরনাক জীব-জন্তু হকিন্সের গোছানো পরিবেশে তৈরি করেছে মহা বিশৃঙ্খলা। ডাফার ব্রাদারস ভ্যারাইটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আপসাইড ডাউনের আসল নাম হলো ‘Netherworld’ যার অর্থ ‘লুকোনো দুনিয়া’। সিরিজের মূল স্ক্রিপ্ট লেখার আগে ডাফার ব্রাদারস এই নেদারওয়ার্ল্ড নিয়ে ৩০ পেজের বিস্তারিত এক ডকুমেন্ট লিখেছিলেন, যেখানে এই দুনিয়ার ভয়ংকর সকল প্রাণী, এবং বিষাক্ত পরিবেশের বর্ণনা ছিল।

আপসাইড ডাউন; Image Source: Netflix.

স্টিফেন কিং

ডাফার ব্রাদারস ছিলেন আমেরিকান লেখক স্টিফেন কিংয়ের পাঁড় ভক্ত। এজন্য স্ট্রেঞ্জার থিংস সিরিজের বিভিন্ন জায়গায় স্টিফেন কিংয়ের বিভিন্ন ইস্টার এগ এবং রেফারেন্স ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। ডাফার ভাতৃদ্বয় চেয়েছিলেন ওয়ার্নার ব্রাদারসের ‘It’ মুভি পরিচালনা করতে। কিন্তু যেকোনো কারণে আর সেটা আর হয়ে ওঠেনি। তবে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানোর জন্য ‘It’ মুভির পেনিওয়াইজের এক ইস্টার এগ দেওয়া হয়েছিল স্ট্রেঞ্জার থিংস সিরিজে। সিরিজের এক এপিসোডে বব উইলকে বলেছিল, ছেলেবেলায় মা-বাবার সাথে ম্যাইন শহরে থাকাকালীন ভয়ানক এক ক্লাউন তাকে তাড়া করে বেড়াত। সময়টা ছিল ‘৫০ এর দশক। পেনিওয়াইজের কাহিনিও ওই শহর এবং ওই সময়েরই উপর ভিত্তি করেই গড়ে তুলেছিলেন স্টিফেন কিং।

পেনিওয়াইজ; Image Source: Warner Bros.

নিজস্ব মতামত

এই সিরিজের কুশীলবরা শুধু নিজ চরিত্রে অভিনয়ই করেননি, বরং কোনো কোনো জায়গায় চরিত্রকে স্ক্রিপ্টের বাইরে নিজের মতো করেও দেখিয়েছেন। যেমন, ডেভিড হারবার ছিলেন ইন্ডিয়ানা জোনস সিরিজের অনেক বড় একজন ভক্ত। সেজন্য তিনি ডাফার ভাইদের জানান, তিনি ইন্ডিয়ানা জোনসের মতোই হ্যাট পরতে চান। ডাস্টিনের করা ‘গরররর’ আওয়াজের আইডিয়াটা দিয়েছিল গ্যাটেন নিজেই। ডেমোগর্গন হত্যার প্রস্তুতির সময় লুকাসকে মাথায় কাপড়ের একটা পট্টি বাঁধতে দেখা যায়। এই আইডিয়া দিয়েছিল লুকাস চরিত্রে অভিনয় করা ক্যালেব নিজে।

লুকাস; Image Source: Netflix.

লবণের ব্যবহার

প্রথম সিজনের সপ্তম এপিসোডে ইলেভেনের টেলিকাইনেসিসের দৃশ্যে সেন্সরি ডেপ্রিভেশন ট্যাঙ্কে ভেসে থাকার জন্য ১,২০০ পাউন্ড বা ৫৪০ কিলোগ্রাম লবণ ব্যবহার করা হয়েছিল। তৃতীয় সিজনে দেখানো স্টারকোট মলের দৃশ্য শুট করা হয়েছে গুইনিট প্লেস মলে। ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করা এই মল বর্তমানে আমেরিকার জর্জিয়ায় অবস্থিত।

সেন্সরি ডেপ্রিভেশন ট্যাঙ্কে ইলেভেন; Image Source: Netflix.

সুজি পু-ডাস্টিবানের গান

সিরিজের ডাস্টিবান আর সুজির প্রেম-রসায়ন উপেক্ষা করার কোনো উপায় নেই। সিজন ২ এর শেষে এসে একসাথে তাদের গাওয়া সেই গানের কথা মনে আছে? গানটি ছিল মূলত ১৯৮৪ সালে মুক্তি পাওয়া The Never Ending Story সিনেমার থিম সং। তবে শুরুতে পরিচালকদের ইচ্ছা ছিল লর্ড অভ দ্য রিংস সিনেমার ‘দ্য এন্ট অ্যান্ড দ্য এন্টওয়াইফ’ গানটা ব্যবহার করবেন। কিন্তু নেটফ্লিক্সের প্রতিদ্বন্দ্বী অনলাইন স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম অ্যামাজন প্রাইম তখন ‘লর্ড অভ দ্য রিংস’ এর স্বত্ব কিনে ফেলায় সেই পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে হয় ডাফার ব্রাদার্সকে।

সুজি এবং ডাস্টিন; Image Source: Netflix.

ইলেভেনের ছাপ

দ্বিতীয় সিজনের শুরুর দিকে কিছু এপিসোডে অসংখ্য জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ইলেভেন তথা এগারো (১১) এর রেফারেন্স। চ্যাপ্টার ওয়ানে মাইক ইলেভেন কল করেছিল ৭:৪০ এ। এখানে, ৭+৪+০ = ১১। ঠিক এই এপিসোডেই হপার ইলেভেনের কাছে ফিরে আসার প্রতিজ্ঞা করে ৫:১৫ তে। ৫+১+৫ = ১১। দ্বিতীয় চ্যাপ্টারে মাইক ইলেভেনকে ফোন করেছিল বছরের ৩৫৩ নাম্বার দিনে। ৩+৫+৩ = ১১।

ইলেভেন; Image Source: Netflix.

পরিসংখ্যান

প্রথম সিজন হিট হবার পর স্ট্রেঞ্জার থিংসকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দ্বিতীয় সিজনের প্রিমিয়ারে মোট ৮.৮ মিলিয়ন দর্শক সিজনটি দেখেছিল। ২৪ ঘণ্টায় দেখেছিল ৩ লক্ষ ৬১ হাজার দর্শক। নেটফ্লিক্সে দ্বিতীয় সিজন মুক্তির পর ৩.৭ মিলিয়ন টুইট জেনারেটের মাধ্যমে স্ট্রিমিং শো হিসেবে সর্বোচ্চ টুইট পাওয়ার রেকর্ড চলে যায় স্ট্রেঞ্জার থিংসের দখলে। শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই প্রথম তিন দিনে দ্বিতীয় সিজনের প্রথম এপিসোড দেখেছিল ১৫.৮ মিলিয়ন লোক। পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙে ২০১৯ সালে তৃতীয় সিজন মুক্তি পাবার এর প্রিমিয়ারে দর্শক সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ মিলিয়ন। এর মধ্যে ১৮ মিলিয়ন দর্শক বিঞ্জ ওয়াচ দিয়ে একটানা খতম করেছিল এই সিরিজের সকল এপিসোড।

এই সিরিজের সাফল্যের ব্যাপারে শুরু থেকেই নেটফ্লিক্স দারুণ আশাবাদী ছিল। তাই, এই বাজিতে তারা পয়সা ঢালতে কোনো কার্পণ্য করেনি। প্রথম সিজনের প্রতি এপিসোডে তারা খরচ হিসেবে দিয়েছিল ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে। দ্বিতীয় সিজনে তা এপিসোড প্রতি বেড়ে দাঁড়ায় ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা গেম অব থ্রোন্সের এপিসোড প্রতি খরচের থেকে মাত্র ২ মিলিয়ন ডলার কম।

স্ট্রেঞ্জার থিংস সিরিজের কিশোর বাহিনি; Image Source: Netflix.

পারিশ্রমিক

মনে প্রশ্ন আসতে পারে, সিরিজে অভিনেতাদের পারিশ্রমিকের পরিমাণ কেমন ছিল? তাহলে প্রথমে বয়স্কদের দিয়েই শুরু করা যাক। জিম হপারের চরিত্রে অভিনয় করা ডেভিড হারবার প্রথমদিকে এপিসোড প্রতি ৮০ হাজার ডলার করে পেতেন। আর জয়েসের চরিত্রে অভিনয় করা উইনোনা রাইডারকে দেওয়া হচ্ছিল প্রতি এপিসোডে দেড় লাখ ডলার করে। তৃতীয় সিজনে তাদের পারিশ্রমিক বেড়ে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলারে। বাচ্চাদের প্রতি এপিসোডে দেওয়া হতো ২০ হাজার থেকে ২৬ হাজার ডলার পর্যন্ত। যেখানে তৃতীয় সিজনে তা উন্নীত হয় দুই লাখ থেকে আড়াই লাখ ডলারে।

জিম হপার; Image Source: Netflix.

বাস্তব দুনিয়ার স্ট্রেঞ্জার থিংস

স্ট্রেঞ্জার থিংসের মূল প্লট সত্যিকারের এক ইভেন্টের উপর ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে। একে অনেকে আমেরিকা সরকারের অতি গোপন প্রজেক্ট ‘The Montauk Project’ এর সাথে তুলনা করে থাকেন। কন্সপিরেসি থিয়োরিস্টদের ভাষ্যমতে, এই প্রজেক্টের ঘাঁটি গাড়া হয়েছিল আমেরিকার মন্টক এয়ারপোর্ট স্টেশনের ক্যাম্প হিরো ন্যাশনাল পার্কে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এখানে অনেক ছোট বাচ্চাকে ধরে নিয়ে আসা হতো। ইলেভেনের মতোই এদের উপর বিভিন্ন মাইন্ড কন্ট্রোল এবং টেলিকাইনেসিস পরীক্ষা চালানো হতো। এছাড়া এদের মন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বর্ধিতকরণের চেষ্টাও নাকি করা হতো।

এখানেই মন্টক প্রজেক্ট চালানো হয়েছিল বলে ধারণা; Image Source: Steem It.

কন্সপিরেসি মতে, ওখানে মন্টক চেয়ার নামে এক এলিয়েন চেয়ারের অস্তিত্ব ছিল। ওই চেয়ারে বসে যেকোনো কল্পনাকে বাস্তবতায় বদলে দেওয়া যেত। কিন্তু এজন্য চেয়ারে বসা ব্যক্তির থাকতে হবে টেলিকাইনেসিসের ক্ষমতা। ডানকান ক্যামরনকে মন্টক প্রজেক্টের ইলেভেন বলা যেতে পারে। তাঁর দাবি ছিল এমন- তিনি মন্টক চেয়ারে বসে এমন একটি দানবের কথা চিন্তা করেছিলেন যেটা পুরো মন্টক প্রজেক্টকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। তবে, এটা শুধু কন্সপিরেসি থিওরিতেই সীমাবদ্ধ। এর জোরালো কোনো প্রমাণ আজ অবধি পাওয়া যায়নি।

Related Articles

Exit mobile version