একটি ক্রিকেট ম্যাচের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। একবার একদল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার সিদ্ধান্ত নিল, তারা ২০ ওভারের একটি ম্যাচ খেলবে। প্রথমেই তারা দু’দলে বিভক্ত হয়ে গেল। আফ্রিকার ঐতিহ্যধারী প্রাণীর নামানুসারে দল দুটির নাম ছিল- রাইনোস (গণ্ডার দল) এবং গরিলাস (গরিলা দল)। ২০১৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় সেই ম্যাচ। খেলায় সাবেক আফ্রিকান বোলার মাখায়া এনটিনি, ব্রিটিশ প্রমিলা ক্রিকেটার হিথার নাইট, সাবেক বোলার অ্যাশলি গিলসের মতো কিংবদন্তীরা ছিলেন। ছিলেন হাল আমলের সেরা খেলোয়াড় স্টিভেন স্মিথ।
টি-২০ ম্যাচ খেলার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাঠে খেলা গড়ালো ১০ ওভার প্রতি ইনিংস করে। যারা ধৈর্য ধরে এতক্ষণ পড়লেন, তারা হয়তো ভ্রূ কুঁচকে প্রশ্ন করছেন, কিলিমাঞ্জারো পর্বতের আলোচনায় হঠাৎ ক্রিকেট আসলো কেন? এর উত্তর, এই ক্রিকেট ম্যাচটি খেলা হয়েছিল আফ্রিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কিলিমাঞ্জারোর চূড়ায়। প্রায় ৫,৭৩০ মিটার উচ্চতায় খেলা এই ক্রিকেট ম্যাচটি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ জায়গা করে নিয়েছে ‘সর্বোচ্চ উচ্চতায় খেলা ক্রিকেট ম্যাচ’ হিসেবে।
ক্যানসার নিরাময়, রুয়ান্ডা ক্রিকেট স্টেডিয়াম ফাউন্ডেশন এবং আফ্রিকার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অর্থায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত এই ক্রিকেট ম্যাচের ভেন্যু কিলিমাঞ্জারো হওয়ার কারণ এই পর্বত পুরো মহাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে। আফ্রিকার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং হাজারো লোকগাথার সাথে সম্পৃক্ত এই পর্বতশৃঙ্গ যুগ যুগ ধরে সগৌরবে দণ্ডায়মান।
আফ্রিকা মহাদেশের তানজানিয়ার উত্তরে কেনিয়ার সীমান্ত ঘেঁষে অবস্থিত মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো একটি আগ্নেয় পর্বত। শিরা, মাওয়েনজি এবং কিবো- এই ৩ আগ্নেয়গিরির ভৌগোলিক অবশেষ হিসেবে বছরের পর বছর ধরে গঠিত হয়েছে এই পর্বত। ভূগোলবিদদের ধারণা অনুযায়ী, প্রায় ৩০ লাখ বছর পূর্বে এই পর্বত গঠিত হয়েছে। মাউন্ট কিলিমাঞ্জারোর সর্বোচ্চ চূড়ার উচ্চতা ৫,৮৯৫ মিটার। এটি আফ্রিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর মাধ্যমে ৭ মহাদেশের ৭ সর্বোচ্চ শৃঙ্গের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এই পর্বত।
স্থানীয়দের নিকট এর চূড়ার একটি সুন্দর নাম রয়েছে- ‘উহুরু’। সোয়াহিলি ভাষার এই শব্দের অর্থ হচ্ছে মুক্তি বা স্বাধীনতা। মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো বাস্তবেও স্বাধীন। পৃথিবীর বেশিরভাগ পর্বত কোনো না কোনো পর্বতমালার অংশ। যেমন ধরা যাক মাউন্ট এভারেস্টের কথা। হিমালয় পর্বতমালার শত শত পর্বতের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট। কিন্তু মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো কোনো পর্বতমালা বা রেঞ্জের অন্তর্ভূক্ত নয়। মুক্তভাবে দণ্ডায়মান পর্বত চূড়ার তালিকায় এটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে কিলিমাঞ্জারোর মতো মুক্ত পর্বতগুলো গঠিত হয় বলে ধারণা করা হয়।
কিলিমাঞ্জারো পর্বতের নামের উৎস নিয়ে ইতিহাসবিদরা নিশ্চিত নন। প্রচলিত ধারণা মোতাবেক, সোয়াহিলি ভাষার ‘কিলিমা’ এবং চাগা ভাষার ‘এনজারো’- এই দুই শব্দের সন্ধির মাধ্যমে কিলিমাঞ্জারো শব্দের উৎপত্তি। এই দুই শব্দের অর্থ যথাক্রমে ‘পর্বত’ এবং ‘সাদা’। বরফে আচ্ছাদিত কিলিমাঞ্জারোর চূড়ার ‘সাদা’ রং থেকে এমন নামকরণ। কিলিমাঞ্জারোর আরও একটি প্রচলিত অর্থ রয়েছে। চাগা ভাষায় বিদ্যমান একটি শব্দকে ইউরোপীয়রা ‘কিলিমাঞ্জারো’ উচ্চারণ করতো। সেই শব্দের শাব্দিক অর্থ ছিল ‘আরোহণ করতে ব্যর্থ’।
ইতিহাসের পাতায় কিলিমাঞ্জারোর সর্বপ্রাচীন অন্তর্ভূক্তি পাওয়া গেছে টলেমির লেখনীতে। সেখানে আকাশের বুকে তুষার দ্বীপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তানজানিয়ার এই শৃঙ্গকে। তুষারগলা পানির মাধ্যমে উর্বর হওয়া পর্বতের পাদদেশে বহু প্রাচীনকাল থেকে নানা যাযাবর জাতি বসতি গড়েছিল। এই অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিকরা পেয়েছেন প্রাচীন কৃষিনির্ভর সমাজের নানা নিদর্শন। তবে কালের বিবর্তে এসব নিদর্শন এখন তেমন একটা চোখে পড়বে না। এছাড়া এই অঞ্চল চীনা এবং আরব বণিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ৭ শতক পূর্বের চীনা পণ্ডিতরা এই পর্বতের কথা উল্লেখ করেছেন তাদের পাণ্ডুলিপিতে।
আধুনিক যুগে কিলিমাঞ্জারো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধ রচনা করেছেন জোহান রেবমান নামক একজন যাজক। ১৮৪৯ সালে প্রকাশিত সেই পাণ্ডুলিপি তৎকালীন পণ্ডিত সমাজে খুব একটা সমাদৃত হয়নি। ১৮৮৫ সালে এই পর্বতটি জার্মান উপনিবেশের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। জার্মান নথিতে একে ‘জার্মান মুলুকের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রথম ইউরোপীয় হিসেবে একে জয় করেন হান্স মেয়ার। ১৮৮৯ সালে তিনি এই পর্বতের কিবো অংশের চূড়ায় উঠেন। পরবর্তীতে এটি ব্রিটিশ উপনিবেশের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়। ১৯৬১ সালে তানজানিয়ার স্বাধীনতা লাভের পূর্ব পর্যন্ত এটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। স্বাধীনতার একযুগ পর ১৯৭৩ সালে একে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ১৬৬৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের কিলিমাঞ্জারো জাতীয় উদ্যান নির্মাণ করা হয়।
ছাই, লাভা এবং শিলা দিয়ে গঠিত এই পর্বতটি একটি ‘স্ট্র্যাটোভলকানো’। পূর্বে উল্লেখ করা ৩ আগ্নেয়গিরির মধ্যে শিরা এবং মাওয়েনজি এখন মৃতপ্রায়। এর ফলে এই দুটি থেকে অগ্ন্যুৎপাত ঘটার কোনো সম্ভাবনা নেই ভবিষ্যতে। কিন্তু অপর আগ্নেয়গিরি কিবো এখন সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। যদিও সর্বশেষ ১০ হাজার বছরে এখানে অগ্ন্যুৎপাত ঘটেনি, তবে ভবিষ্যতে ঘটবে না এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিলিমাঞ্জারোর আগ্নেয়গিরি থেকে সর্বশেষ বড় রকমের অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল এখন থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার বছর আগে। কিবোর অবস্থান শিরা এবং মাওয়েনজির মাঝখানে। এটি কিলিমাঞ্জারোর সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি এবং এর চূড়াই আফ্রিকার সর্বোচ্চ চূড়া হিসেবে পরিচিত। আজ থেকে প্রায় ৪ লাখ ৬০ হাজার বছর পূর্বে গঠিত হয়েছে এই চূড়া। মাওয়েনজির উচ্চতা ৩,৮২৫ মিটার। এটি আফ্রিকার ৩য় সর্বোচ্চ চূড়া হিসেবে চিহ্নিত। অপর আগ্নেয়গিরি শিরাকে এখন আর শৃঙ্গ হিসেবে গণ্য করা হয় না। এটি অনেকটাই মালভূমির মতো। তবে এককালে এখানে ১৬ হাজার ফুট উঁচু চূড়া ছিল বলে ধারণা করা হয়।
পৃথিবীকে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে দুই ভাগ করা বিষুবরেখা থেকে মাত্র ২০৫ মাইল দূরে অবস্থিত এই পর্বত। বিষুবরেখা অঞ্চলে সূর্য লম্বভাবে তাপ দেয় বিধায় তাপমাত্রা বেশি থাকে। এই কারণে প্রাচীন অভিযাত্রিকরা কিলিমাঞ্জারোর চূড়ায় বরফ দেখে বিশ্বাস করতে পারেননি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন পৃথিবীর বরফ যুগের সময় হিমবাহ নিম্নতাপে জমে এর চূড়ায় বরফ সৃষ্টি করেছে। ১৯১২ সালে এর চূড়ায় বরফের আয়তন পরিমাপ করে ১১.৪ বর্গ কিলোমিটার নির্ণয় করা হয়েছিল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বছরের পর বছর ধরে এই বরফের পরিমাণ কমতে থাকে। ২০১১ সালে এর আয়তন প্রায় ৮৫% কমে দাঁড়ায় ১.৭৬ বর্গ কিলোমিটারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৪০ সালের মধ্যে এর বরফ সম্পূর্ণ হারিয়ে যাবে। তবে এর পেছনে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের চেয়ে বন ধ্বংস করাকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন পরিবেশবিদরা। তাই কিলিমাঞ্জারোর বরফ রক্ষা করতে ২০০৮ সালে পর্বতের পাদদেশে প্রায় ৫০ লাখ বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে।
কিলিমাঞ্জারোর আরেকট বিচিত্র বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, পর্বতের পাদদেশ থেকে শীর্ষ পর্যন্ত ৫টি ভিন্ন জলবায়ু স্তর দেখা যাবে। পাদদেশের সন্নিকটে আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ এবং বছরজুড়ে স্থিতিশীল থাকে। প্রায় ১৮০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত চাষাবাদযোগ্য আবহাওয়া বিদ্যমান রয়েছে। এরপর শুরু হয় রেইনফরেস্ট স্তর। এখানের তাপমাত্রা কিছুটা উষ্ণ এবং বায়ু আর্দ্র থাকে। প্রায় ২৮০০ মিটার উচ্চতার পর শুরু হয় জলাভূমি জলবায়ু স্তর। রেইনফরেস্ট থেকে এর বাতাস শুষ্কতর এবং তাপমাত্রা কম। এরপর থেকে প্রতিটি স্তরে তাপমাত্রা কমতে থাকে এবং বাতাস শুষ্ক হতে থাকে। ৪,০০০ মিটার উচ্চতায় শুরু হয় মরু জলবায়ু। এখানে প্রাণের কোনো নামগন্ধ নেই। ৫,০০০ মিটার থেকে পর্বতের চূড়া পর্যন্ত আর্কটিক জলবায়ু স্তর বিদ্যমান। এই স্তরে পাথুরে এবং বরফে আচ্ছাদিত। এমন বিচিত্রভাবে স্তরে স্তরে জলবায়ুর ভিন্নতা একে অনন্য করে তুলেছে।
প্রাচীনযুগ থেকে কিলিমাঞ্জারো পর্বত অঞ্চলে বিভিন্ন জাতি বসবাস করে আসছে। ওয়াকোনিঙ্গো, বান্টু পিগমিসহ আরও কয়েকটি ক্ষুদ্র জাতি এখানে বসতি স্থাপন করেছিল। একসময় উম্বু জাতির আক্রমণে ওয়াকোনিঙ্গোরা এখান থেকে পালিয়ে যায়। এখানে ওয়াঙ্গাসা নামক আরেকটি জাতির স্থাপনা পাওয়া যায়। আদিকাল থেকে এরা কিলিমাঞ্জারো অঞ্চলে বসবাস করছে, এমন দাবি করে এই জাতি। তারপর ৪০০ বছর পূর্বে এখানে ওয়াচাগা জাতির আগমন ঘটে। বহু বছরের যুদ্ধ, বিবাদের পর একসময় এরা সকলে এক নেতার নেতৃত্বে চাগা জাতি হিসেবে একতাবদ্ধ হয়।
এখন পর্যন্ত তানজানিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাতিগোষ্ঠী হিসেবে চাগা জাতির নাম উচ্চারিত হয়। জার্মান উপনিবেশকালে এই জাতির সদস্যরা পশ্চিমা সংস্কৃতির স্পর্শে অনেকটাই নিজস্ব রীতি-ঐতিহ্য থেকে সরে আসে। তবে এখনও এরা নিজেদের চাগা হিসেবে পরিচয় দেয়। চাগা সমাজে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে কলা এবং কফি। বহুকাল ধরে প্রাচীন বিনিময় প্রথা প্রচলিত ছিল এই সমাজে। গত শতক থেকে এরা মুদ্রাভিত্তিক বাণিজ্য করা শুরু করেছে।
পর্বতারোহীদের জন্য আকর্ষণীয় একটি স্থান কিলিমাঞ্জারো পর্বত। প্রতিবছর ৩০ হাজারের বেশি আরোহী কিলিমাঞ্জারোর চূড়ায় উঠার চেষ্টা করেন। অন্যান্য পর্বতশৃঙ্গের তুলনায় কিলিমাঞ্জারো আরোহণ সহজতর হওয়ায় এই আকর্ষণ। কিন্তু জেনে অবাক হবেন, পর্বতারোহীদের প্রায় ৫০% এর চূড়ায় উঠতে ব্যর্থ হয়। এর পেছনে মূলত এর উচ্চতার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া এবং ভুল পথে আরোহণের চেষ্টাকে দায়ী করা হয়। কিলিমাঞ্জারোর চূড়ায় আরোহণের জন্য ক্ষুদ্রতম পথ মারাঙ্গু। কিন্তু এই পথেই যত বিপত্তি ঘটে। অপরদিকে দীর্ঘতম পথগুলোতে চূড়ায় উঠা সহজ হয় বলে অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন পেশাদার পর্বতারোহীরা।
কিলিমাঞ্জারোতে আরোহণ এবং অবরোহণে সবচেয়ে কম সময়ের বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন সুইস আরোহী কার্ল ইগলোফ। তিনি মাত্র ৬ ঘণ্টা ৪২ মিনিটে ২০১৪ সালে এই পর্বতের চূড়ায় উঠে পুনরায় নেমে আসেন। নারী আরোহীদের ক্ষেত্রে এই রেকর্ডধারী হচ্ছেন জার্মানির অ্যান-মেরি ফ্লামারসফিল্ড। তিনি এর চুড়ায় উঠে নেমে আসতে সময় নিয়েছেন ১২ ঘণ্টা ৫৮ মিনিট।
অনেক আরোহী স্থানীয়দের সাহায্য ব্যতিরেকে নিজের খাবারদ্রব্য নিজে বহন করেন। এদের মধ্যে দ্রুততম আরোহণ এবং অবরোহণের রেকর্ডধারী হচ্ছেন তানজানিয়ার সিমন এমটুই। ২০০৬ সালে এই রেকর্ড করতে তার সময় লেগেছে ৯ ঘণ্টা ১৯ মিনিট। অনেকে বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই পর্বতের চূড়ায় উঠেছেন। সবচেয়ে বেশি বয়সে এই পর্বত জয়ের রেকর্ডধারী মার্কিন নারী অ্যান লরিমোর।
৮৯ বছর বয়সে তিনি কিলিমাঞ্জারো বিজয়ী হন। অপরদিকে সবচেয়ে কম বয়সে জয় করেন মার্কিন বালক কোয়াল্টান টেনার। মাত্র ৬ বছর বয়সে এর চূড়ায় উঠেন তিনি। কিলিমাঞ্জারো বিজেতা সকলেই তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে পারেন চূড়ায় সংরক্ষিত একটি ডায়েরিতে। এছাড়া আরও কিছু অদ্ভুত রেকর্ড সম্পৃক্ত আছে এই কিলিমাঞ্জারোকে নিয়ে। উচ্চতম ক্রিকেট ম্যাচ ছাড়াও ২০১৬ সালে কিলিমাঞ্জারোর চূড়ায় পিজ্জা ডেলিভারি দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে পিজ্জা হাট। আফ্রিকার উচ্চতম বৃক্ষের সন্ধান পাওয়া গেছে কিলিমাঞ্জারোতে। সোয়াহিলি এমকুকুসু নামক এই বৃক্ষটির বয়স প্রায় ৬০০। এর বৈজ্ঞানিক নাম Entandrophragma Excelsum.
১৯৮৭ সালে জাতিসংঘ বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভূক্ত করা হয় তানজানিয়া তথা আফ্রিকার অন্যতম গৌরব কিলিমাঞ্জারোকে। এছাড়া এই পর্বত অঞ্চল বিরল প্রজাতির বৃক্ষ জন্মায় যা পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এজন্য ২০০৫ সালে পর্বত পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চলকেও ঐতিহ্যের অংশবিশেষ করা হয়েছে।