‘মরুদ্যান’ বলতেই আমাদের চোখে ভেসে উঠে বিস্তীর্ণ, শুষ্ক, রূক্ষ, ধুলিময়, উত্তপ্ত মরুভূমির মাঝে এক টুকরো জমি, যেখানে কোনো পানির উৎসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ছোট একখন্ড বনভূমি ও ক্ষুদ্র মনুষ্যবসতি। প্রাণহীন বিশাল মরুভূমির মাঝে একটি মরুদ্যান নিঃসন্দেহে প্রাণ জুড়ানো ও আশা জাগানিয়া এক দৃশ্য। আবার, মানুষেরা নিজের প্রয়োজনে বনভূমি উজাড় করে ফেলে। বিস্তীর্ণ এলাকাকে বৃক্ষশূন্য করে ফেলার পর যখন সেখানে সামান্য একটু বনভূমি অবশিষ্ট থাকে, সেটাকেও তখন মরুদ্যানের মতোই দেখায়। তবে দেখতে সুন্দর হলেও এই ‘মানবসৃষ্ট মরুদ্যান’গুলো আমাদের মনে আশার সঞ্চার করে না, বরং আশঙ্কা জাগায়; ‘মানবসৃষ্ট’ শব্দটাই যেন ভালো কোনো কিছুর সাথে যায় না।
ইথিওপিয়ায় এমনই অনেক মানবসৃষ্ট মরুদ্যানের দেখা পাওয়া যাবে, যেগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইথিওপিয়ার বিস্তীর্ণ উত্তরাঞ্চল জুড়ে। ‘চার্চ ফরেস্ট’ হিসেবে পরিচিত এসব বিচ্ছিন্ন বনভূমি ইথিওপিয়ার একসময়কার সমৃদ্ধ বনাঞ্চলের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
চার্চ ফরেস্ট: বিপন্ন এই বনের নামের পেছনের ইতিহাস
নাম শুনেই অনুমান করা যায়, এই বনাঞ্চলগুলোর সাথে কোনো না কোনোভাবে চার্চ বা গির্জা জড়িত আছে। আসলে ঠিক তা-ই; আপনি যদি কখনো ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলে বেড়াতে যান, তাহলে সেখানে খন্ড খন্ড অসংখ্য ছোট বনের দেখা পাবেন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আবিষ্কার করবেন, সেসব বন সাধারণত কোনো একটা গির্জাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এবং সেই গির্জাটি ছোট বনভূমিটির ঠিক মাঝে অবস্থান করছে। এর পেছনের ঘটনা জানতে হলে ইতিহাসের পাতা খানিকটা ঘাটতে হবে।
আফ্রিকার কথা মনে হলেই আমাদের কল্পনায় যে কয়েকটা ব্যাপার ভেসে উঠে, তার মধ্যে বিস্তীর্ণ বন-জঙ্গল ও প্রাণীবৈচিত্র্য অন্যতম। আর ঐতিহাসিকভাবেই ইথিওপিয়া আফ্রিকার সমৃদ্ধ বনাঞ্চলের অন্যতম অংশীদার। বৃহত্তর ‘আফ্রোমন্টেন বন’ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলের বনভূমি। এ অঞ্চলটি প্রাণীবৈচিত্র্যের জন্য গোটা পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক স্থান।
প্রায় পঞ্চম শতাব্দী থেকেই ইথিওপিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে উঠতে থাকে ছোট-বড় গির্জা। প্রাচীনকাল থেকেই গির্জাগুলোকে ঘিরে রেখেছিলো সুবিশাল বনভূমি। কিন্তু সেটা ইতিহাস, মাত্র কয়েক শতাব্দী পূর্বে শুরু হয় বনভূমি নিধনের আয়োজন। সেই সুবিশাল বনভূমির যেটুকু অবশিষ্ট আছে, তার বেশিরভাগই ঐ প্রাচীন গির্জাগুলোকে ঘিরে টিকে রয়েছে। এজন্যই এ খন্ডায়িত বনভূমিগুলোর নাম হয়েছে ‘চার্চ ফরেস্ট’।
মোটামুটি সপ্তদশ বা অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যেই গোটা দুনিয়ার আর্থ-সামাজিক অবস্থায় রাতারাতি পরিবর্তন ও গতিশীলতা এসে যায়। দ্রুত বাড়তে থাকে জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিধি। তখন থেকেই পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের মতো ইথিওপিয়ার বনভূমির উপরেও মানুষের কুঠারের আঘাত পড়তে শুরু করে; বিপন্ন হতে থাকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভারসাম্য। বিস্তীর্ণ বনভূমি সাফ করে গড়ে তোলা হয় কৃষি জমি ও মানব বসতি।
তবে গির্জাগুলো ছিলো খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের জন্য পবিত্র এক স্থান। এ অঞ্চলের মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশ হিসেবে বিশিষ্ট কিছু আচার-রীতির কল্যাণে গির্জার পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চল খানিকটা রক্ষা পেয়ে যায়। গির্জার আশেপাশের গাছপালাকে গির্জার পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হতো। এছাড়া গির্জা রক্ষকরা বিশ্বাস করতেন, তারা কেবল মানবতারই সেবক নন, বরং সৃষ্টিকর্তার সকল সৃষ্টির সেবা করা তাদের দায়িত্বের মাঝে পড়ে। তাই বনভূমি রক্ষার মাধ্যমে অন্যান্য প্রাণীদের জীবন রক্ষাকে তারা গুরুত্বের সাথে নিতেন। আঞ্চলিক মানুষ ও ধর্মযাজকদের এ ধরনের মানসিকতার প্রভাবে সেখানকার বনভূমি পুরোপুরি বিলীন হয়ে যায়নি। এ থেকে বোঝা যায় ‘চার্চ ফরেস্ট’ নামের সার্থকতা।
কেন মূল্যবান এই চার্চ ফরেস্ট
আপাতদৃষ্টিতে চার্চ ফরেস্টের প্রকৃত গুরুত্ব বোঝা না গেলেও এটি রক্ষা করার গুরুত্ব অপরিসীম। একটি দেশের মোট ক্ষেত্রফলের তিন ভাগের এক ভাগ, অর্থাৎ ৩৩% বনভূমি থাকাটা অত্যন্ত প্রয়োজন। আর পাহাড়ি এলাকার ক্ষেত্রে এই পরিমাণ হওয়া উচিত ৪৫%। তবে আধুনিক যুগের জনসংখ্যা, কৃষি ও শিল্পায়নের কথা বিবেচনা করেও সে পরিমাণটা কোনোভাবেই ২৫% এর কম হওয়া উচিত না। একসময় ইথিওপিয়ার বনভূমির পরিমাণ ছিলো দেশটির মোট ক্ষেত্রফলের প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি। কিন্তু তা কমতে কমতে আজ প্রায় ৫% এ এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল মরুতে পরিণত হচ্ছে। সেইসাথে জীববৈচিত্র্যও বিপন্ন হচ্ছে।
মূলত যে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই বনাঞ্চল উজাড় করা হলো, সেই কৃষিকাজই বাধাগ্রস্থ হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে। এ ব্যাপারটি মোটামুটি সবাই জানেন যে, যেকোনো প্রকার ফলনের জন্য পরাগায়ন একটি অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। আর এই পরাগায়নে নানান প্রকার কীটপতঙ্গ, পাখি, এমনকি পশুরাও ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে শুধুমাত্র ফসলের জমি থাকলেও সেখানকার পরিবেশে সেসব প্রাণীদেরকে আশ্রয় দেওয়ার মতো যথেষ্ট উদ্ভিদ বা বন যদি না থাকে, তাহলে পরাগায়নে সহায়ক সেসব প্রাণীদের অভাবে গোটা অঞ্চলের কৃষিজ ফলন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ইথিওপিয়াতেও ঠিক সেরকমটিই হতে যাচ্ছে। বিষয়টা অনেকটা আম ও ছালা, দুটোই হারানোর মতো। এছাড়াও বনভূমির অভাবে বহু অঞ্চল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে উঠছে এবং পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে, যা অন্যান্য প্রাণীর পাশাপাশি মনুষ্যবসতির জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
চার্চ ফরেস্টের বর্তমান অবস্থা
ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলের বনভূমি হ্রাস পেতে পেতে এমন একটি পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যে, ইতোমধ্যে মানুষের টনক নড়ে গেছে। আরেকটু শুদ্ধভাবে বলতে গেলে, সেই এলাকার মানুষজন বাধ্য হয়েছে নড়েচড়ে বসতে। কারণ ইতোমধ্যে বন উজাড় করার কুফলগুলো দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো কেউ যদি ‘পরিবেশগত বিপর্যয়’ ও ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন’ এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে উদাসীন হয়ে থাকেন, তাহলে তার উচিত হবে ইথিওপিয়া ভ্রমণে গিয়ে এসব চার্চ ফরেস্ট ও সেখানকার জনজীবন স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করা। কেননা, এটি ক্ষুদ্র পরিসরে পরিবেশ বিপর্যয়ের একটি জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ।
চার্চ ফরেস্টকে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা মানুষ দিন দিন উপলব্ধি করতে পারছে। ফলে সচেতনতা বাড়ছে। আর এ কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে চার্চ ফরেস্টগুলোকে দীর্ঘদিন যাবত রক্ষা করে আসা গির্জাগুলো। গির্জা এবং তার পার্শ্ববর্তী বনগুলোকে ঘিরে মানুষের মনে যে ধর্মীয় বিশ্বাস ও পবিত্র অনুভূতি কাজ করে, সেটাও সহায়ক হচ্ছে এক্ষেত্রে।
বন নিয়ে ভাবনা
চার্চ ফরেস্ট যে অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, সেই বৃহত্তর অঞ্চলেরই একজন বাসিন্দা অ্যালেমেয়্যু ওয়াসি। তিনি ছোটবেলা থেকে এই চার্চ ফরেস্টগুলোকে এক অন্য দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পর্যবেক্ষণ করে আসছেন। প্রকৃতি তাকে খুব টানতো এবং বন ও বনকে ঘিরে গড়ে উঠা বাস্তুতন্ত্র তাকে কৌতূহলী করে তোলে। এ আগ্রহ থেকেই তিনি বন ও বাস্তুবিদ্যার উপর উচ্চশিক্ষা লাভ করেন এবং পরবর্তীতে তিনিই ইথিওপিয়ার এ বিপন্ন বনাঞ্চলের উপর আন্তর্জাতিক দৃষ্টি নিয়ে আসতে সক্ষম হন। বর্তমানে তিনি মার্কিন জীববিজ্ঞানী ম্যাগ লোম্যানের সাথে মিলে চার্চ ফরেস্ট সংরক্ষণ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এবং তারা ইতোমধ্যে কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
তারা দুজন ‘ট্রি ফাউন্ডেশন’ নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে তহবিল গঠন করে চার্চ ফরেস্ট সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিলীন হতে থাকা একটি বনকে পরিবেশের সাথে যুদ্ধ করে টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু ঠিক এই চ্যালেঞ্জকেই লোম্যান ও ওয়াসি অত্যন্ত সুচারুভাবে মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। তাদের প্রথম লক্ষ্য বনভূমির পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণ ও এর ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলো নিখুঁতভাবে চিহ্নিত করা। তারা দেখলেন:
- মূলত কৃষি জমি সম্প্রসারণ করতে গিয়ে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।
- যেটুকু বন অবশিষ্ট আছে, বিভিন্ন প্রকার গবাদি পশু সেটুকুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে। তারা চারাগাছ ও কচিপাতা খেয়ে গাছ ও বনের বৃদ্ধিকে ব্যাহত করছে।
- মানুষজন বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন গৃহস্থালীর কাজ ও লাকড়ি হিসেবে ব্যবহারের জন্য গাছ ও গাছের ডালপালা কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
- আরেকটি বড় সমস্যা হলো ইউক্যালিপটাস ও এ জাতীয় কিছু আগ্রাসী উদ্ভিদের অনুপ্রবেশ। ইউক্যালিপটাস গাছ অন্যান্য উদ্ভিদের তুলনায় অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এজন্য এই বনাঞ্চলকে বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে এবং গাছ থেকে দ্রুত কাঠ-লাকড়ি ইত্যাদি পাওয়ার আশায় কোনো একসময় এখানকার মানুষেরা ব্যাপকভাবে ইউক্যালিপটাস লাগানো শুরু করেছিলো। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হলো; তাদের জানা ছিলো না, ইউক্যালিপটাস জাতীয় উদ্ভিদগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পায় ঠিকই, কিন্তু বিনিময়ে মাটি থেকে অত্যাধিক মাত্রায় পানি ও পুষ্টি উপাদান শোষণ করে নেয়। অন্য ভাষায়, এরা টিকে থাকা ও বংশবিস্তার করার জন্য অন্যান্য উদ্ভিদের সাথে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয় এবং শেষ পর্যন্ত এরাই টিকে থাকে। ফলে অন্যান্য উদ্ভিদ, যেগুলোর কিছু আবার বিপন্ন প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত, সেগুলোর সংখ্যা আরও দ্রুত কমতে শুরু করে।
- বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে এবং ভূমিক্ষয় বেড়ে যাচ্ছে। যা দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশকে আরও বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তারা দেখলেন, উত্তর ইথিওপিয়ার বেশ কিছু জায়গায় চাষযোগ্য জমির নিচে পাথরের অস্তিত্ব আছে, যেগুলো জমির উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়।
এসব সমস্যা মোকাবেলার জন্য খুব সামান্য কিছু বিকল্পই হাতে রয়েছে। লোম্যান এবং ওয়াসি সেই বিকল্প উপায়গুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করার প্রয়াস হাতে নিলেন, যেন বন রক্ষা করতে গিয়ে কারো জীবনযাত্রা ব্যহত না হয়। কেননা, এখানকার বনভূমির উপর অনেকেরই জীবিকা নির্ভর করছে। তাই তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থ এমনভাবে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করা হলো, যেন বন রক্ষার পাশাপাশি মানুষের কল্যাণও সাধিত হয়। বর্তমানে তাদের হাতে নেওয়া প্রকল্পের আওতায় যে কাজগুলো করা হচ্ছে সেগুলো হলো:
- এলাকার বেকার লোকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে চাষযোগ্য মাটি থেকে পাথর উত্তোলন করে সেগুলো দিয়ে চার্চ ফরেস্টগুলোর চারিদিকে বেষ্টনী গড়ে তোলার, যেন গবাদিপশু বনের ক্ষতি করতে না পারে। এতে বেকারদের ছোটখাট কর্মসংস্থান হচ্ছে, আবার বনভূমির জন্যও সেটা উপকারী। সেই সাথে কৃষি জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- গির্জার যাজকদেরকে সাথে নিয়ে কাজ করছেন লোম্যান ও ওয়াসি। যাজকদের কাছ থেকে ভালো সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে এ ব্যাপারে। বিভিন্ন সময়ে ছোটখাট কর্মশালার মাধ্যমে তাদেরকে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে কীভাবে বনগুলো সংরক্ষণ ও নতুন করে বনায়ন করা যায়।
- বন রক্ষাকে সেখানকার সামাজিকতার একটা অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে আসছেন তারা, যেন পরবর্তী প্রজন্মও এ ধারাটি বজায় রাখে।
- সেখানকার যেসব প্রাণীবৈচিত্র্য এখনো অবশিষ্ট আছে, তা নিয়েও গবেষণা চালানো হচ্ছে, যেন সেগুলোকে রক্ষায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়।
কোনো একটি বিশেষ অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষের কারণে বিনষ্ট হলে কী ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, তার নিদর্শন ইথিওপিয়ার চার্চ ফরেস্ট। আমরা ভুলেই যাই, মানুষসহ সকল ধরনের জীব প্রকৃতিরই সন্তান। স্বার্থপরের মতো আমরা শুধুমাত্র নিজের চিন্তাটুকুই করি। কিন্তু মা কখনো তার একটি সন্তানকেও বঞ্চিত হতে দিতে চান না। তাই জীববৈচিত্র্যের বড় একটি অংশকে হুমকির মুখে ফেলে আমরা মানুষেরাই শুধু প্রকৃতির মাঝে বীরদর্পে টিকে থাকবো- এরকম চিন্তা করাটা খুব বড় একটি ভুল।