মরক্কোতে পর্তুগিজ আক্রমণ এবং ব্যাটল অব দ্য থ্রি কিংসের সমাপ্তি | শেষ পর্ব

পর্তুগিজ মার্চ

২৯ জুন, ১৫৭৮।

যাত্রা শুরু করলো পর্তুগিজ বাহিনী। সেবাস্টিয়ানের নির্দেশ অনুযায়ী রসদ নেয়া হলো ছয়দিনের। পর্তুগিজ রাজার ধারণা মরক্কান সামরিক শক্তি ধুলোয় মিশিয়ে দেয়ার জন্য এটা যথেষ্ট সময়! তবে শীঘ্রই টের পাওয়া গেল- যতটা সহজ মনে হয়েছিলো ততটা সহজ নয় ব্যাপারটা। অজানা-অচেনা রুক্ষ ভূমিতে চলতে হচ্ছিল খুব ধীরে, ফলে যত দ্রুত মার্চ করবেন ভেবেছিলেন সেবাস্টিয়ান সেটা সম্ভব হচ্ছিলো না। অচিরেই খাবার-দাবারের অপ্রতুলতা দৃশ্যমান হতে থাকে, সাথে যুক্ত হয় তীব্র গরম। বর্ম আর ভারী অস্ত্রশস্ত্র টানতে টানতে কাহিল হয়ে পড়ে সৈনিকেরা। অনেকা ভার কমাতে অতিরিক্ত অস্ত্র ফেলে দেয়।

মরক্কান অবস্থান

দোসরা আগস্ট কাজার-এল-কাবির শহরের উত্তর-পশ্চিমে উঁচু জায়গায় ঘাঁটি করলো মরক্কান সেনারা। তাদের অবস্থান ছিলো বেশ সুরক্ষিত। সামনে রোদতপ্ত কৃষিজমি, যার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট্ট ওয়ারুর নদী। আরো কয়েক কিলোমিটার দূরে লৌক্কোসের শাখা, মাখাজেন (Makhazen)। মাখাজেনের অদূরে পাহাড়শ্রেণী, যার পেছন থেকে এগিয়ে আসছিলো পর্তুগিজরা। নদী পার হয়েই আক্রমণ করাই তাদের জন্য সহজতর, কারণ মরক্কান ক্যাম্পের ডানে পাহাড়, আর বামে সর্পিল লৌক্কোস নদী প্রাকৃতিক সুরক্ষার কাজ করছে। 

লৌক্কোস পার হয়ে লারাশ যাবার প্ল্যান করেন সেবাস্টিয়ান; Image Source: esearchgate.net/figure

পর্তুগিজদের ইচ্ছে ছিলো এল-আদিব গ্রামের কাছে মাখাজিনের ওপর দিয়ে নির্মিত রোমান আমলের সেতু ধরে পার হয়ে সোজা কাজার-এল-কাবিরের দিকে যাওয়ার, পর্তুগিজে যার নাম আলকাজার। তবে তাদের প্ল্যান আঁচ করতে পেরে মরক্কান জেনারেলরা আগেই হাজারখানেক অশ্বারোহী পাঠিয়ে দিয়েছিলেন সেখানে। সেবাস্টিয়ান তাদের সুরক্ষিত অবস্থান দেখে হামলা না করার সিদ্ধান্ত নেন। মুলয় মোহাম্মদের অনুচরেরা জানালো আরেকটু সামনে অগভীর একটা জায়গা আছে, সেখানে দিয়ে নিরাপদে পার হওয়া সম্ভব।

উদ্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে শিবির ফেললেন সেবাস্টিয়ান। তার ইচ্ছে পরদিন নদী পার হয়ে শত্রুর মুখোমুখি হওয়া। সন্ধ্যায় জেনারেলদের সাথে আবার বলসেন তিনি, ব্যাখ্যা করলেন তার পরিকল্পনা। নদী পার হয়ে লৌক্কোসের অববাহিকা অঞ্চলে প্রবেশ করবেন তিনি, এগিয়ে যাবেন মেচারা-এন-নাজমা (Mechara en-Nedjma ) নামে এক জায়গার দিকে। সেখান দিয়ে লৌক্কোস অতিক্রমের পর পরবর্তী গন্তব্য লারাশ। পথিমধ্যে কোথাও আল-মালেক বাধা দেবার চেষ্টা করলে তাকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে।

তেসরা আগস্ট মাখাজিনের ধারে এলেন সেবাস্টিয়ান। সেনাদের বেশিরভাগ পার হলেও স্রোত বেড়ে যাবার জন্য আর্টিলারির বড় একটা অংশ রেখে আসতে হয়। ততক্ষণে তার চরেরা মরক্কান সেনাঘাঁটির খবরাখবর নিয়ে এসেছে। শত্রু সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বলে আপাতত আক্রমণের চিন্তা বাদ দিলেন সেবাস্টিয়ান, ওয়ারুর আর মাখাজিনের মাঝে ক্যাম্প করে সেদিনটা কাটিয়ে দিলেন।

সংঘর্ষের সূচনা

চৌঠা আগস্ট।

সূর্য ওঠার পর দেখা গেলো অনেকটা মুখোমুখি দুই বাহিনী, তবে কারো মধ্যেই লড়াই শুরু করার আগ্রহ নেই। নদীর অপর তীর থেকে কামান দেগে শত্রুদের ক্ষয়ক্ষতি করবার চেষ্টা করলেন সেবাস্টিয়ান। তিনি সেনাদের অনেকটা চতুর্ভুজের মতো করে সাজালেন, মাঝখানে রাখলেন মালামালের বহর। সকাল দশটার দিকে পর্তুগিজরা ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে থাকে মরক্কান অবস্থানের দিকে।  তাদের সামনে কেবল ছয়টি কামান, যার দায়িত্বে পেড্রো ডি মেস্কিটা (Pedro de Mesquita)। মনে মনে নিজের ভাগ্যকে অভিসম্পাত করছেন তিনি, আর্জিলা থেকে ছত্রিশটি কামান নিয়ে বের হলেও দুর্গম রাস্তা আর নদীর কারণে ফেলে আসতে হয়েছে ত্রিশটি।

কামানের পেছন পেছন যাচ্ছিলো সেনাবাহিনীর অগ্রবর্তী দল। এরা সেবাস্টিয়ানের সেরা সৈন্য। বামে আলফনসো ডি আগুইলিয়ারের ইতালিয়ান আর কাস্টিলিয়ান রেজিমেন্ট, ডানে মার্টিন অব বারগ্যান্ডির জার্মান দল, আর মধ্যভাগে আলভারো পাইরেজ ডি ট্যাভোরার সেনারা। দুই বাহুতে আরো রাখা ছিলো পদাতিক সেনাদের বিশেষ দল, এবং তাদের সামনে সেবাস্টিয়ান এবং মুলয় মোহাম্মদের অশ্বারোহীরা।  প্রতিপক্ষ অশ্বারোহীদের থেকে সুরক্ষিত রাখতে তাদের সামনে ওয়াগন জাতীয় গাড়ি দিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা। তার পেছনে পর্তুগিজ বন্দুকধারীরা ওঁত পেতে বসে আছে।   পশ্চাৎভাগের নিরাপত্তার জন্য মাস্কেটিয়ার বাহিনী প্রস্তুত।

কামান দিয়েই আরম্ভ হয় যুদ্ধ। এরপর গোলাগুলি আরম্ভ করে বন্দুকধারীরা। কিছুক্ষণ পর গুলিবর্ষণ স্তিমিত হয়ে যায়, এবার অগ্রসর হতে থাকে সৈন্যরা। আল-মালিকের সেনারা সংখ্যাধিক্য কাজে লাগিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সাফল্য পেতে থাকে। তবে পর্তুগিজ সৈনিকেরা নিজেদের শৃঙ্খলা বজায় রাখে, এবং নিজেদের লম্বা লম্বা বর্শা বা পাইক উঁচিয়ে ধরে পেছনে ঠেলে দিতে থাকে শত্রুদের। মরক্কান বন্দুকধারীরা চেষ্টা করেও তাদের ব্যুহ ভেদ করতে ব্যর্থ হয়। উল্টো একপর্যায়ে পর্তুগিজদের চাপে মরক্কানরাই বেসামাল হয়ে পড়ে। দ্রুতই তাদের ব্যুহ ভেঙে যায়, এদিক সেদিক পালাতে থাকে দলছুট অনেক সেনা।

পর্তুগিজ পাইকের আঘাতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মরক্কান সারি; Image Source: twcenter.net

সম্মুখযুদ্ধ

পর্তুগিজরা চাপ অব্যাহত রাখলে আল-মালেকের পুরো বাহিনীকেই সম্ভবত পালিয়ে যেতে বাধ্য করতে পারতো তারা। কিন্তু তাদের অগ্রবর্তী সেনারাও সামর্থ্যের শেষ সীমায় এসে পৌঁছেছে। মূল বাহিনী থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছে তারা, চলে এসেছে মরক্কানদের মধ্যভাগে। শত্রুদের উপর চাপ বজায় রাখতে গিয়ে তাদের সারিতেও বেশ কিছু ফাঁকফোকর তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে যেতে থাকলে নিজেরাই ঘেরাও হয়ে যেতে পারে। তাই পর্তুগিজ অফিসার পেদ্রো ডি লোপেজ (Pedro de Lopes) অগ্রযাত্রা বন্ধ করতে নির্দেশ দেন, মনোযোগ দেন দখল করা রণক্ষেত্র ধরে রাখতে। এখানে একটু ভুল করে ফেলেন তিনি, কারণ আরেকটু এগিয়ে গেলেই মরক্কান আর্টিলারি ছিনিয়ে নিতে পারতেন তিনি।

এদিকে তাঁবুতে শুয়ে থাকা আল-মালিক নিজেদের বিপর্যয়ের সংবাদ পেয়ে বেরিয়ে আসেন। তার উপস্থিতি চাঙ্গা করে তোলে সৈনিকদের। তিনি তাদের আহবান জানান শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে। ফলে পালানোর চেষ্টা বাদ দিয়ে নতুন করে সংগঠিত হতে থাকে তারা। কিন্তু এই ধকল নিতে পারেননি আল-মালিক, তাঁবুতে ফিরে যাবার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান তিনি। সেনাদের মনোবল ভেঙ্গে যাবে এজন্য তার মৃত্যুর খবর আপাতত গোপন রাখতে শেষ নির্দেশ দিয়ে যান।

সেবাস্টিয়ানের লোকেরা থেমে যেতে নিজেদের গুছিয়ে নেয়ার সময় পেয়ে যায় মরক্কানরা। তাদের অশ্বারোহী সেনারা কাজে লাগায় পেদ্রোর সারিতে তৈরি হওয়া ফাঁক। সেখান দিয়ে স্রোতে মতো ঢুকে পাল্টা আক্রমণ চালায় তারা। হাতাহাতি মারামারিতে পাইক দিয়ে সুবিধে করতে পারলো না পর্তুগিজরা। দ্রুতই প্রায় সবদিক থেকে মরক্কান সেনারা হামলা করে বসে।

মরক্কান অশ্বারোহীরা যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয়; Image Source: youtube.com

পর্তুগিজ সেনাপতি ডিউক অব অ্যাভিয়েরো (Duke of Aviero) ছিলেন মূল বাহিনীর সাথে। অগ্রবর্তী দলের বেহাল দশা দেখে তিনি পাল্টা পদক্ষেপ নেন। মুলয় মোহাম্মদ এবং নিজের অশ্বারোহীদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। মরক্কান অশ্বারোহীরা হকচকিয়ে গিয়ে রণক্ষেত্র ত্যাগে বাধ্য হয়। এবার অ্যাভিয়েরো নিশানা করেন পদাতিক মরক্কানদের দিকে, আবারো ছত্রভঙ্গ করে দেন তাদের। না থেমে সামনে যেতে থাকেন অ্যাভিয়েরো, পাশ থেকে চাপ সৃষ্টি করেন শত্রুর আর্টিলারির ওপর ।

তবে এখানে মরক্কান সেনারা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। অ্যাভিয়েরোর শক্তি তখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। যদি তিনি প্রথম আঘাতে বড় রকমের ক্ষতি করতে পারতেন, তাহলে বিজয় সম্ভব ছিলো। কিন্তু সেটা করতে পারেননি তিনি। তদুপরি তার হাতে সংরক্ষিত কোনো সেনাদলও নেই যাদের মাঠে নামিয়ে সুবিধে নেয়া যাবে। এই অবসরে মরক্কানদের সংরক্ষিত অশ্বারোহীরা কাজে নামে, হটিয়ে দেয় অ্যাভিয়েরোকে।

সেবাস্টিয়ান অ্যাভিয়েরোর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে মরক্কান বাম বাহুতে আক্রমণ করেছিলেন। তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে যান তিনি, তিন তিনবার ঘোড়া বদল করতে হয় তাকে। এখানেও প্রাথমিক সাফল্য ভেস্তে যায় মরক্কান প্রত্যাঘাতে। সেবাস্টিয়ান দলবল নিয়ে বাধ্য হন পিছিয়ে আসতে।

আল-মালিকের বিজয়

পর্তুগিজরা ফিরে এসেছিলো তাদের প্রাথমিক অবস্থানে। নতুন করে হামলা চালানোর ক্ষমতা নেই তাদের। মরক্কানরা সেটা বুঝে একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে। তাদের অশ্বারোহীরা দু’দিক থেকে ঘিরে ধরে শত্রুদের, ওয়াগনের বাধা পেরিয়ে পৌঁছে যায় ব্যুহের ভেতরে থাকা মালামাল পর্যন্ত। ওদিকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পর্তুগিজ অগ্রবর্তী দল বীরত্বের সাথে লড়াই করে, তবে হার মানতে বাধ্য হয় শত্রুর সংখ্যাধিক্যের কাছে।

মরক্কানদের বারংবার আক্রমণে তছনছ হয়ে যায় পর্তুগিজরা; Image Source: yabiladi.com

চারদিক থেকে মার খেতে খেতে কাহিল হয়ে পড়ে সেবাস্টিয়ানের লোকেরা। যুদ্ধক্ষেত্র ভরে ওঠে আহত-নিহত সৈনিকদের স্তূপে। মার্টিন অব বারগ্যান্ডি, আলফনসো ডি অ্যাগুইলেরাসহ আরো অনেক সেনানায়ক মারা যান। কাটা পড়েন প্রথমসারির অফিসার, সেনাদলের সাথে আসা ধর্মযাজকসহ অনেক নাইট।

মুলয় মোহাম্মদ বুঝে গেলেন পরাজয় আসন্ন। তার অধিকাংশ লোক নিহত, বাকি সাথীদের নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেন তিনি। কিন্তু মাখাজিন পার হতে গিয়ে স্রোতের তীব্রতায় ঘোড়া থেকে পড়ে যান তিনি। সাঁতার জানা ছিল না প্রাক্তন সুলতানের, ফলে ডুবে মৃত্যু হয় তার। অথবা ঘোড়া থেকে পড়ে নিজের বর্মের চাপেই পিষ্ট হন তিনি।

সেবাস্টিয়ানের মৃত্যু আজও রহস্যাবৃত। তার অফিসারেরা অনুরোধ করেছিল পালিয়ে যেতে, আর নাহলে আত্মসমর্পণের। বলা হয়, তিনি বীরের মতো মৃত্যু বেছে নেন। তবে তার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল কিনা তা নিয়েও বিতর্ক আছে। 

সেবাস্টিয়ান নাকি মারা গিয়েছিলেন বীরের মতো লড়াই করে; Image Source: historynet.com

ফলাফল

অনুমান করা হয় ৫,০০০ মরক্কান সেনা হতাহত হয় এই যুদ্ধে, বিপরীতে পর্তুগিজ ক্ষয়ক্ষতি ছিল ভয়াবহ, প্রায় ১১,০০০। তাদের প্রথমসারির বহু অফিসার, নাইট, এবং আরো অনেক মান্যগণ্য লোক মারা যান। বলা হয়, পর্তুগালের সামরিক শক্তি একধাক্কায় কমে যায় বহুগুণ। সেই সাথে বলা হয়, পর্তুগিজরা বাইরের দেশে যত যুদ্ধ লড়েছে, সবচেয়ে ভয়াবহ পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে এখানেই।

নানা নামে ডাকা হয় এই সংঘর্ষকে। ব্যাটল অব ওয়াদি আল-মাখাজিন, ব্যাটল অব আলকাজার, ব্যাটল অব এল-লাজার-এল-কাবির ইত্যাদি। তবে তিন তিনজন নৃপতির মৃত্যুর কারণে এই যুদ্ধ বেশি পরিচিত ব্যাটল অব দ্য থ্রি কিংস নামেই।

পর্তুগিজ পরাজয় ও সেবাস্টিয়ানের মৃত্যুর খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পরে ইউরোপে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মরক্কোর অবস্থান শক্তিশালী হয়। স্প্যানিশরা এরপর আফ্রিকাতে অভিযান চালাতে ইতস্তত বোধ করে, উসমানী সাম্রাজ্যও বিরত থাকে এই অঞ্চলে সামরিক শক্তি প্রয়োগে। তর্কযোগ্যভাবে এখানেই অনেকে খ্রিষ্টীয় ক্রুসেডের শেষ দেখে থাকেন।

আল-মালিকের মৃত্যুর পর তার ভাই মানসুর সাদিয়ান শাসন টিকিয়ে রাখেন। কিন্তু বড় ক্ষতি হয় পর্তুগালের। তাদের গর্বের সামরিক শক্তি ভেঙেচুরে যায়, আর সেবাস্টিয়ান নিঃসন্তান হিসেবে মারা যাওয়ায় উত্তরাধিকার নিয়ে সৃষ্টি হয় জটিলতা। সেই সুযোগ নেন তার চাচা দ্বিতীয় ফিলিপ। আত্মীয় হিসেবে তার দাবি তো ছিলোই, তার সাথে যুক্ত হয় স্প্যানিশ শক্তিমত্তা। প্রাথমিকভাবে কার্ডিনাল হেনরি সিংহাসনে বসলেও শিগগিরি তাকে সরিয়ে রাজা হন তিনি। ফলে নিজেদের স্বাধীনতা খুইয়ে স্প্যানিশ হাবসবুর্গদের একটি অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয় পর্তুগাল। এই অবস্থা বজায় ছিলো বহু বছর।

ফিলিপ দাবি করেছিলেন সেবাস্টিয়ানের মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছিলো মরক্কানরা, তবে এই লাশ সেবাস্টিয়ানের কিনা সেটা নিয়ে দ্বিমত আছে। অনেক গবেষকই মনে করেন পর্তুগিজ রাজার দেহ রণক্ষেত্রের অন্যান্য নিহতদের থেকে কখনোই আলাদা করা যায়নি। বহু বছর অবধি পর্তুগিজদের বিশ্বাস ছিলো সেবাস্টিয়ান মারা যাননি, তিনি লুকিয়ে আছেন। দেশ যখন ভয়ঙ্কর কোনো বিপদে পড়বে, তখনই তার আবির্ভাব ঘটবে। বলাই বাহুল্য, সেরকম কিছু কখনো ঘটেনি।

This is a Bengali language article about the Battle of Alcazar, also known as the battle of the three kings. The article describes the battle and its consequences.
References
• Bartels, E.C. (2007). The Battle of Alcazar, the Mediterranean, and the Moor. In: Stanivukovic, G.V. (eds) Remapping the Mediterranean World in Early Modern English Writings. Early Modern Cultural Studies. Palgrave Macmillan, New York.
• Bovill, E.W. The Battle of Alcazar. London: the Fame. Batchworth Press, 1921.
• Julien, Charles-André. John Petrie, translator. History of North Africa. New York: Praeger Publishers, 1970.
• Encyclopedia Britannica. Battle of the Three Kings.

Feature Image: thehistorynetwork.org

Related Articles

Exit mobile version