সিরিয়াল কিলার হচ্ছে সে ব্যক্তি যে নির্দিষ্ট বিরতিতে দুই বা তার অধিক ব্যাক্তিকে খুন করেছে কোনোরকম উদ্দেশ্য ছাড়া, শুধুমাত্র সাইকোলজিক্যাল কারণে। সেই প্রাচীনকাল থেকেই যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে দেখা মিলেছে কুখ্যাত সব সিরিয়াল কিলারদের। আজকে আপনাদের সাথে সামনে তুলে ধরবো এমন কিছু সিরিয়াল কিলারদের পরিচয় যাদের দ্বারা হারিয়েছে সবচেয়ে বেশী প্রাণ। এই খুনিদের সবারই একটি মিল আছে, এদের সবার আবাসভূমি ছিলো ল্যাটিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়াতে।
দ্য বিস্ট- লুইস গারাভিতো
সিরিয়াল কিলারদের তালিকা তৈরি করলে সবার উপরে থাকবে লুইস গারাভিতোর নাম। কলম্বিয়ার এই সিরিয়াল কিলার এবং ধর্ষক পরিচিত পেয়েছিলো ‘দ্য বিস্ট’ নামে। জানা যায়, লুইস মোট তিনশরও বেশী খুনের সাথে জড়িত যেটি ইতিহাসে যেকোনো সিরিয়াল কিলারের চেয়ে বেশী। এর মাঝে আদালত ১৪৭টি খুনের প্রমাণ পেয়েছে। সেসময়ে কলম্বিয়ার একটি বড় সমস্যা ছিলো আবাসন। এই সুযোগটিই কাজে লাগায় এই মানুষরূপী পশু। লুইসের টার্গেট ছিলো বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পথশিশুরা। লুইসের লালসার স্বীকার বেশীরভাগ ভিক্টিমই ছিলো ১ থেকে ১৬ বছর বয়সী ছেলে।
একটি এটেম্পটেড ধর্ষণ কেসে ২২ এপ্রিল, ১৯৯৯ সালে কলম্বিয়ার পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয় লুইস গাভারিতো। জেরা করতে গিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয় ঘটনাস্থলে অন্য কেউ এসে উপস্থিত না হলে ছেলেটিকে মেরে ফেলতো। তাই পুলিশ ধারণা করে এই লোকই হতে পারে ‘দ্য বিস্ট’। লুইস প্রথমে স্বীকার না করলেও তাকে ভিক্টিমদের কাহিনী শোনালে সে কান্নায় ভেঙে পরে। লুইসের স্বীকারোক্তি কলম্বিয়া বিচার বিভাগের জন্য যথেষ্ট ছিলো না বলে প্রমাণের খোঁজে তদন্ত চালিয়ে যেতে থাকে পুলিশ। লুইসের চোখে একটি বিরল সমস্যা ছিলো যেটি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমার মানুষদেরই হয়। তাই তার চশমা অন্য সাধারণ চশমার চেয়ে একটু ব্যতিক্রমভাবে ডিজাইন করা ছিলো। পুলিশ একটি গণকবরে এরকম একটি চশমা পায়। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে লুইস মদের বোতল, আন্ডারওয়্যার এবং কিছু সময়ে তার পরিহিত জুতা ফেলে এসেছিলো যেসব জায়গায় খুন করেছিলো সেসব জায়গায়। ভিক্টিমের পায়ুপথেও লুইসের DNA পাওয়া যায়। প্রিজনে লুইসের চোখ পরীক্ষা করে চশমার সাথে মিল পাওয়া যায় এবং ক্রাইম সিনে পাওয়া DNA এর সাথেও লুইসের DNA পুরোপুরি মিলে যায়। কারোই আর বুঝতে বাকি থাকে না এই হচ্ছে কুখ্যাত খুনি ‘দ্য বিস্ট’।
১৭২টি কেসের মাঝে লুইস ১৩৮টিতে দোষী সাব্যস্ত হয়। ১৩৮টি খুনের জন্য মোট ১৮৫৩ বছর ৯ দিন জেল খাটার কথা থাকলেও কলম্বিয়ার আইন অনুসারে কাওকে ৪০ বছরের বেশী জেল দণ্ড দেয়ার বিধান নেই। ভিক্টিমদের বডি উদ্ধার কাজে পুলিশকে সাহায্য করার জন্য লুইসের জেল সময় আরো কমিয়ে ২২ বছর করা হয়। বর্তমানে লুইস কলম্বিয়ার একটি জেলে আছে যেটির ঠিকানা জনসাধারণের কাছে গোপন রাখা হয়েছে। ২০২১ সালে লুইসের ২২ বছর সাজা শেষ হয়ে যাবে এবং রিলিজ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে কলম্বিয়ার আইনে শিশু অপরাধের জন্য কমপক্ষে ৬০ বছর জেল দন্ড দেয়ার বিধান থাকায় ২০২১ সালে লুইস গারাভিতোকে রিলিজ দেয়া হবে কিনা সঠিক বলা যাচ্ছে না।
মনস্টার অফ দ্য আন্দেস
পেদ্রো লোপেজ নামে কলম্বিয়ার এই কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার পরিচিত ছিলো ‘মনস্টার অফ দ্য আন্দেস’ নামে। ১৯৬৯-১৯৮০, এই সময়ের মাঝে তার নিজের দেশ কলম্বিয়াসহ পেরু এবং ইকুয়েডরে প্রায় ৩০০ মেয়েকে ধর্ষণ এবং খুনের জন্য দায়ী করা হয় এই মানুষরূপী পশুকে। ১৯৮০ সালে আম্বাতো জেল থেকে রয় ল্যাটনার নামে এক ফ্রিল্যান্স ফটোসাংবাদিক পেদ্রোর একটি ইন্টারভিউ প্রকাশ করলে বিশ্ব দরবারে বেশ পরিচিতি পায় ঠান্ডা মাথার এই খুনি।
ল্যাটনারের ইন্টার্ভিউ অনুসারে পেদ্রো ‘মনস্টার অফ আন্দেস’ নামে পরিচিতি পায় যখন সে কলম্বিয়ান পুলিশকে একটি গনকবরের ঠিকানা বাতলে দেয়। কবর খুঁড়ে প্রায় ৫৩ জন ৯ থেকে ১২ বছর বয়সী মেয়ের লাশ পাওয়া যায়। ১৯৮৩ সালে পেদ্রোকে ইকুয়েডরে ১১০টি খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তারপরে সে কলম্বিয়া এবং পেরুতে আরো ২৪০টি খুন করেছে বলে স্বীকারোক্তি দেয়।
কলম্বিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলাকালে পেদ্রোর বাবা মিদারদো রেয়েস ছিলো কলম্বিয়ান কনজারভেটিভ পার্টির একজন সদস্য। এক রাতে পেদ্রোর বাবা রেয়েস এবং তার মায়ের মাঝে ঝগড়া হওয়ার পর রেয়েস তার স্ত্রীকে ফেলে বেনিলদা নামে এক পতিতার সাথে রাত কাটায়। ফলে বেলিনদা নামে সেই পতিতার গর্ভে আসে পেদ্রো লোপেজ। পেদ্রো ৩ মাসের গর্ভবতী থাকাকালীন বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত হয় তার বাবা। প্রায় ৬ মাস পরে সান্তা ইসাবেল নামে কলম্বিয়ার এক জায়গায় জন্ম হয় পেদ্রোর।
৮ বছর বয়সে ছোটবোনের সাথে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার দায়ে ওর মা ওকে ঘরছাড়া করে। ঘর থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর পেদ্রো পাড়ি জমায় কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতায়। সেখানে রাস্তা থেকে একটি লোক ওকে ধরে নির্জন এলাকায় এক বাড়িতে নিয়ে যায় এবং ক্রমাগত ধর্ষণ করে। ১২ বছর বয়সে আমেরিকান এক পরিবার পেদ্রোর দায়িত্ব নেয় এবং তাকে একটি এতিমখানায় ভর্তি করায়। এক পুরুষ শিক্ষকের যৌন লালসার স্বীকার হওয়ার দরুণ ২ বছর পরে পেদ্রো সেখান থেকে পালিয়ে আসে। তারপর সে যুক্ত হয় গাড়ি চোর চক্রের সাথে এবং গাড়ি চুরির দায়ে জেলে থাকাকালীন পেদ্রো জানায় সে গ্যাং রেপের স্বীকার হয়েছিলো।
জেল থেকে বের হওয়ার পর পেদ্রো পেরুতে শুরু করে তার হত্যাযজ্ঞ। পেরুতে প্রায় ১০০টি হত্যার পর একটি মেয়েকে অপহরণের সময় স্থানীয় উপজাতিদের হাতে আটক হয় সে। উপজাতিরা যখন পেদ্রোকে মেরে ফেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো, তখন ভাগ্যের সহায়তায় সেখানে একটি আমেরিকার মিশনারি দল এসে পৌঁছায়। উপজাতিদেরকে বুঝিয়ে তারা পেদ্রোকে বিভাগীয় পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু এখানেও ঘটে আশ্চর্য এক ঘটনা। কিছুদিন পরেই পুলিশ ছেড়ে দেয় পেদ্রোকে। পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়েই পেদ্রো কলম্বিয়াতে এবং পরবর্তীতে ইকুয়েডরে ফিরে এসে নিজের হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে।
১৯৮০ সালে ইকুয়ডেরের একটি বাজারে একটি মেয়েকে অপহরণ চেষ্টার সময়ে বাজার ব্যবসায়ীরা তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। আবারো পুলিশের হাতে আটক হয় পেদ্রো । ১৪ বছর জেল খাটার পর ভালো ব্যবহারের জন্য ইকুয়েডর সরকার তাকে জেল থেকে মুক্ত করে দেয়। কিন্তু আধ ঘন্টা পরে ইলিগ্যাল ইমিগ্রিশনের দায়ে আবারো পুলিশের হাতে আটক হয় পেদ্রো এবং তাকে কলম্বিয়া পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২০ বছর বয়সী এক মেয়েকে খুনের দায়ে পেদ্রোকে কলম্বিয়াতে আইনের আওতায় আনা হয় এবং পরবর্তীতে তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন ঘোষণা করে বোগোতার একটি পাগলা গারদে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ১৯৯৮ সালে হাসপাতাল অথরিটি পেদ্রোকে মানসিকভাবে সুস্থ বলে ঘোষণা করে এবং তাকে রিলিজ করে দেয়া হয়। সেই থেকে পেদ্রোর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে ২০০২ সালে আরেকটি নতুন খুনের আসামী হিসেবে পেদ্রোকে গ্রেফতার করার জন্য ইন্টারপোল কলম্বিয়ার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে।
ড্যানিয়েল কারমাগো বারবোসা
উপরের দুজনের মতোই এই সিরিয়াল কিলারের জন্মস্থান ছিলো কলম্বিয়া। এটি বিশ্বাস করা হয় যে ড্যানিয়েল বারবোসা ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ এই দশ বছরে মোট ১৫০টি কম বয়সী মেয়েকে ধর্ষণ এবং হত্যা করে কলম্বিয়া এবং ইকুয়েডরে।
অনেক অল্প বয়সেই মাকে হারিয়ে সৎমার সাথে বসবাস শুরু করে বারবোসা। সৎমা তাকে খুবই নির্যাতন করতো এবং মানুষের সামনে হাসির পাত্র বানানোর জন্য ওকে মেয়েদের কাপড় পরিয়ে রাখতো। কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতাতে চুরির দায়ে ১৯৮০ সালে প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হয় বারবোসা।
পারিবারিকভাবে বিয়ে করা বউ এবং দুটি বাচ্চা থাকলেও অন্য আরেকটি মহিলার সাথে বিবাহ বহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে বারবোসা এবং তাকে বিয়ে করার পরিকল্পনা করে। কিন্তু সেই মহিলা কুমারী নয় এটি জানার পর বারবোসা তার সাথে সম্পর্ক ছেদ করতে চায়। পরবর্তীতে বারবোসা তার প্রেমিকা কুমারী মেয়েদেরকে তার কাছে নিয়ে আসবে যৌন লালসা মেটানোর জন্য এই শর্তে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে রাজি হয়। তার প্রেমীকা কম বয়সী মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করে বাসায় ডেকে নিয়ে আসতো এবং কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিতো। মেয়েগুলো অবচেতন হয়ে গেলে তাদেরকে ধর্ষণ করা হতো। এভাবে একে একে ৫টি মেয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। কিন্তু তখনো কাওকে খুন করেনি এই সিরিয়াল কিলার। ঝামেলাটা বাদে যখন একটি ভিক্টিম তার যৌন নির্যাতনের কথা পুলিশের কাছে রিপোর্ট করে। বারবোসা এবং তার প্রেমিকা দুজনকেই আটক করে আলাদা আলাদা জেলে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রথমে বারবোসাকে ৩ বছরের জেল দেয়া হলেও পরবর্তীতে আরেক বিচারক তাকে ৮ বছরের সাজা প্রদান করে। সাজা বাড়ানোয় ক্ষোভে ফেটে পরে ড্যানিয়েল বারবোসা। ৮ বছর সাজা ভোগ করার পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারো স্বাধীনতা লাভ করে এই খুনী।
১৯৭৩ সালে কোনোপ্রকার কাগজপত্র ছাড়া ভ্রমণের দায়ে ব্রাজিলে আবারো গ্রেফতার করা হয় বারবোসাকে। কলম্বিয়াকে থেকে কাগজপত্র যেতে যেতে দেরি হওয়ায় বারবোসা সে যাত্রায় বেঁচে যায়। ব্রাজিল পুলিশ তাকে রিলিজ করে দেয় এবং কলম্বিয়াতে ফিরে আসে বারবোসা। নিজের দেশে ফেরার সে ফুটপাতে টেলিভিশন মনিটর বিক্রি করা শুরু করে। একদিন একটি স্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আর যৌন লালসা আটকে রাখতে পারেনি এই নরপশু। ৯ বছরের একটি মেয়েকে অপহরণ করে। এবার আর ঝুঁকি নিতে চায়নি সে। ফলে ধর্ষণ করার পরে মেয়েটিকে প্রাণে মেরে ফেলে, যাতে সে কারো কাছে মুখ না খুলতে পারে। এটিই ছিলো বারবোসার প্রথম খুন।
ভিক্টিমের পাশে ফেলে যাওয়া টিভি মনিটর উদ্ধার করতে গিয়েয ১৯৭৪ সালে আবারো গ্রেফতার হয় বারবোসা। যদিও এটি বিশ্বাস করা হয় বারবোসা মোট ৮০ টি খুনের সাথে জড়িত, তবে নয় বছর বয়সী একটি মেয়েকে ধর্ষণ এবং খুনের দায়ে তাকে কাঠগড়ায় উঠানো হয়। যদিও বারবোসাকে প্রথমে ৩০ বছরের জন্য জেলের সাজা দেয়া হয়, তবে সেটি কমিয়ে ২৫ বছর করা হয়। ১৯৭৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর কলম্বিয়ার জরজানা আইল্যান্ডে অবস্থিত একটি কারাগারে বন্দী হয় বারবোসা।
কয়েক বছর কারাভোগের পর ১৯৮৪ সালে সুকৌশলে জেল থেকে পালিয়ে যায় এই কুখ্যাত খুনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরেও না পেয়ে ধারণা করা হয় সে সাগরের পানিতে ভেসে গেসে এবং হাঙ্গর তাকে খেয়ে ফেলেছে। কিন্তু আদতে সে বেঁচে ছিলো এবং কুইতো নামে ইকুয়ডের এক জায়গায় এসে পৌছায়। সেখান থেকে সে লস রিওস নামে ইকুয়ডের একটি প্রদেশের শহর কুইভেদোতে পাড়ি জমায়। এসে পরেরদিনেই একটি ৯ বছরের মেয়েকে অপহরণ করে এবং মেরে ফেলে। তারপরের দিনেই একই শহর থেকে ১০ বছরের একটি মেয়ে নিখোঁজ হয়। এভাবে ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৬ এই দুই বছরে একে একে ৫৪টি মেয়ে বারবোসার হাতে ধর্ষণ এবং খুনের শিকার হয়। পুলিশের ধারণা ছিলো কোনো গ্যাং হয়তো এই কাজটি করছে। কারো ধারণাই ছিলো না একা একজন মানুষ এতগুলো খুন করতে পারে।
১৯৮৬ সালে এলিজাবেথ নামে নয় বছরের একটি মেয়েকে খুন করার কিছুক্ষণ পর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় বারবোসা। পুলিশ তখন অত্র এলাকার আশেপাশে টহল দিচ্ছিলো এবং বারবোসার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তারা তাকে দাঁড় করিয়ে তল্লাশী চালায়। বারবোসার সাথে থাকা ব্যাগে তার ভিক্টিমের কিছু রক্তমাখা জামাকাপড় পায় এবং সাথে ক্রাইম এন্ড পানিশম্যান্ট নামে দস্তভয়স্কীর লেখা একটি বইও পাওয়া যায়।
প্রথমে পুলিশকে ভুয়া নাম বললেও বারবোসার হাত থেকে পালিয়ে যাওয়া একটি মেয়েকে তাকে চিনতে পারে। পুলিশের আর বুঝতে বাকী থাকে না বারবোসাই হচ্ছে সিরিয়াল কিলার এবং মেয়েদের নিখোঁজ হওয়ার পিছনে মূল হোতা। পরবর্তীতে বারবোসা ইকুয়েডরে মোট ৭২টি মেয়েদেরকে খুনের দায় স্বীকার করে। তার জবানবন্দী থেকে দেয়া ঠিকানা অনুসারে পুলিশ একটি গণকবরের সন্ধান পায় এবং অনেকগুলো পচে যাওয়া লাশ উদ্ধার করে। গ্রেফতার হওয়ার পরে বারবোসাকে অনুতপ্ত হতে দেখা যায়নি।
ইকুয়ডরে বারবোসাকে ২৫ বছরের জেল দেয়া হয় যা সেই দেশের নিয়ম অনুসারে সর্বোচ্চ সাজা। জেলে থাকাকালীন সময়ে বারবোসা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে বলে জানা যায়। কারাগারে তার সঙ্গী ছিলো উপরে উল্লেখিত আরেক সিলিয়ার কিলার পেদ্রো লেপোজ ওরফে মনস্টার অফ আন্দেস। নভেম্বর ১৯৯৪ সালে কারাগারে নিজেই খুনের স্বীকার হয় কুখ্যাত এই খুনি।