দামাস্কাস ইস্পাত: বাস্তব জগতের অবিনশ্বর ভ্যালিরিয়ান ইস্পাত

কিংস ল্যাণ্ডিং জুড়ে আজ উৎসবমুখর পরিবেশ। আর উৎসব হবেই না কেন? যেন তেন কোনো উৎসব নয়, স্বয়ং রাজা জফ্রির বিয়ের উৎসব। আর এই উৎসব উপলক্ষ্যে ওয়েস্টরেসের বড় বড় প্রদেশ থেকে রাজার অনুগত শাসকগণ বহু মূল্যবান উপহার নিয়ে হাজির হয়েছেন। কিন্তু শত শত উপহারের মাঝে রাজার একটি উপহার বেশ পছন্দ হলো। আর সেটি ছিল একটি তলোয়ার। রাজার পিতামহ লর্ড টাইউইন ল্যানিস্টার স্বয়ং রাজা জফ্রির বিয়ে উপলক্ষ্যে এই উপহার পেশ করেছেন। সোনা, রূপার কারুকার্যখচিত খাপে আবদ্ধ তলোয়ারটি দেখে যেন লুফে নিলেন রাজা।

মুহূর্তের মধ্যে তিনি তা খাপমুক্ত করে নিজের হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখা শুরু করলেন। সাথে সাথে উৎসবমুখর রাজসভায় পিনপতন নীরবতা নেমে আসলো। সবাই জফ্রির হাতের তলোয়ারের দিকে একপলকে তাকিয়ে থাকলেন। রাজা জফ্রি তলোয়ারটি নিজের মাথার উপর তুললেন। যেন বিশ্বজয় করে দেশফেরত সংগ্রামী সেনাপতি নিজের বিজয়ের ঘোষণা দিচ্ছে। রাজার এমন অঙ্গভঙ্গিতে সভাসদদের মাঝ থেকে একজন বাহবা দিয়ে উঠলো। তার দেখাদেখি অনেকেই রাজার প্রশংসা শুরু করে দিলো। রাজা জফ্রি অতিথিদের প্রশংসায় অভিভূত হয়ে গেলেন। তিনি তলোয়ার হাতে নিয়ে অসতর্কভাবে কসরত প্রদর্শন শুরু করে দিলেন।

গেম অফ থ্রোন্সের জগতে অবিনশ্বর ভ্যালিরিয়ান ইস্পাতের তৈরি তলোয়ার; Source: Game of Thrones

রাজার এমন অসতর্কতায় যেন শিহরে উঠলেন সভাসদ এডাম মারব্রাণ্ড। তিনি বিনীতভাবে বলে উঠলেন, “জাঁহাপনা, একটু দেখেশুনে কসরত করুন। এটি যেন তেন তলোয়ার নয়। এটি দুর্লভ ভ্যালিরিয়ান ইস্পাতে তৈরি তলোয়ার।” রাজা জফ্রি তার কথায় একটুও ভয় পেলেন না। উল্টো উদ্ধতস্বরে বলে উঠলেন, “আমি জানি। ভ্যালিরিয়ান ইস্পাত আমার কাছে কোনো নতুন চমক নয়।” এই বলে যেই না সামনে রাখা একটি বইকে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করলেন, তা সমান দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেলো।1

ভ্যালিরিয়ান ইস্পাতে নির্মিত তলোয়ার; Source: Game of Thrones

গেম অথ থ্রোন্সের ভক্তদের নিকট ভ্যালিরিয়ান ইস্পাত কোনো নতুন কিছু নয়। উপন্যাসের পাতায় কিংবা নাটকের পর্দায় যখন ওয়েস্টরসের যোদ্ধারা ভ্যালিরিয়ান ইস্পাতে নির্মিত ধারালো তলোয়ার নিয়ে ছুটে যান ক্ষিপ্রগতিতে, তখন পুরো যুদ্ধের রোমাঞ্চে বুঁদ হয়ে পড়ে ভক্তরা। ভ্যালিরিয়ান ইস্পাতের কোনো তুলনা হয় না। এই ইস্পাতে নির্মিত তলোয়ার যেমন ধারালো, তেমনি তা অন্যান্য তলোয়ারের তুলনায় ওজনে বেশ হালকা হয়। সেই তলোয়ারের ধার কখনো ক্ষয়ে যায় না। একবার তলোয়ার নির্মাণ করার পর তা আর কখনো ধার করার প্রয়োজনও পড়ে না।

এই ইস্পাতের তৈরি তলোয়ারের এমন বহুমুখী গুণের কথা শুনে মনে প্রশ্ন জাগে, ‘কী এমন জাদুকরি ফর্মুলায় তৈরি সেই তলোয়ার? ঠিক কীভাবে নির্মিত হয় এই তলোয়ার?’ কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর কোথাও নেই। তাই নতুন করে এই তলোয়ার বানানো অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু পুরাতন ভ্যালিরিয়ান তলোয়ার গলিয়ে বেশ সতর্কতার সাথে নতুন তলোয়ার নির্মাণ করা যায়। ইচ্ছে করলে দুটো তলোয়ার একসাথে জুড়ে দিয়ে বড় তলোয়ারও বানানো যায়। আবার একটি বড় তলোয়ার থেকে অনেকগুলো ছোট তলোয়ারও নির্মাণ করা যায়।

আলোচনার এই পর্যায়ে গেম অফ থ্রোন্সের কাল্পনিক জগত থেকে বেরিয়ে আসা যাক। ভ্যালিরিয়ান ইস্পাতের কথা জানার পর মনে প্রশ্ন জেগেছিলো, ‘উপন্যাসের ভ্যালিরিয়ান ইস্পাতের ন্যায় বাস্তবে কিছু আছে নাকি?’ এর উত্তর হবে ‘হ্যাঁ’। বরং বাস্তবের সেই শক্তিশালী ইস্পাত থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই ঔপন্যাসিক জর্জ মার্টিন সৃষ্টি করেছেন অক্ষয় ভ্যালিরিয়ান ইস্পাত। আর সেই ইস্পাতের নাম দামাস্কাস ইস্পাত।

দামাস্কাস ইস্পাত পরিচিতি

প্রাক-শিল্পযুগে অস্ত্র তৈরির জন্য সবচেয়ে মূল্যবান এবং টেকসই ধাতুর নাম ছিল দামাস্কাস ইস্পাত। ধারালো অস্ত্র তৈরির জন্য এই ইস্পাতের কোনো জুড়ি নেই। উত্তপ্ত পেটা লোহার উপর বিশেষ উপায়ে বিভিন্ন ধাতুর শংকর প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাচীন যুগের কামাররা দামাস্কাস ইস্পাত তৈরি করতে পারতো। যদিও এই ইস্পাত তৈরির আসল মন্ত্র বেশ আগেই হারিয়ে গিয়েছে, তাই এর সঠিক প্রস্তুতপ্রণালী বর্তমানে কারো জানা নেই। তবে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর উপাদানসমূহ সম্পর্কে বিশদ তথ্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে। দামাস্কাস ইস্পাত মূলত একধরনের কার্বন-লৌহের শংকর, যার মাঝে কার্বনের পরিমাণ ১.৮%। দামাস্কাস ইস্পাত মূলত তলোয়ার তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতো। তবে সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের জন্য ছোট অস্ত্র তৈরির কাজেও এর ব্যবহার করা হতো। এই ইস্পাতের নামের সাথে দামাস্কাস শহরের নাম যুক্ত হওয়ায় মনে হতে পারে, এই ইস্পাতের উৎপত্তিস্থল বুঝি সিরিয়ার দামাস্কাস শহর। যদিও কোনো এক সময়ে দামাস্কাস ইস্পাত দামাস্কাস শহরে তৈরি হতো বলে জানা যায়, কিন্তু এর উৎপত্তিস্থল হিসেবে দামাস্কাসের নাম নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দামাস্কাস ইস্পাতের তৈরি তলোয়ার; Source: Poshland

ভ্যালিরিয়ান ইস্পাতের ন্যায় দামাস্কাস ইস্পাতের অস্ত্রও বেশ ধারালো হতো বলে শোনা যায়। একবার প্রস্তুত করার পর তা পুনরায় নতুন করে ধার দেয়ার কোনো প্রয়োজন পড়তো না। বেশ হালকা ওজনের হওয়ায় ক্ষিপ্রগতিতে শত্রুকে বধ করতে ওস্তাদ ছিল এই ইস্পাতের অস্ত্র। এর নির্মাণকৌশল হারিয়ে যাওয়ায় তা আর পুনরায় তৈরি করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। বেশ কারুকার্যখচিত হাতল এবং শৈল্পিক নকশাখচিত তলোয়ারগুলো দেখলেই হাত দিয়ে স্পর্শ করতে ইচ্ছে হয়।

নকশাখচিত ছুরি; Source: Mad Art Love

দামাস্কাস ইস্পাতের ইতিহাস

দামাস্কাস ইস্পাত ঠিক কখন, কারা প্রস্তুত করা শুরু করেছে তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। প্রাকশিল্পযুগে মধ্যপ্রাচ্যের বিখ্যাত কামারঘর এবং অস্ত্রশালায় দামাস্কাস ইস্পাত প্রস্তুত করা হতো। সেখান থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে তা পাচার করা হতো। পারস্যেও দামাস্কাস ইস্পাতের অস্ত্র প্রস্তুত করা হতো। আরবের বুকে যখন যুদ্ধের দামামা বেজে উঠতো, তখন দামাস্কাস ইস্পাতের তৈরি অস্ত্রের ঝনঝনানিতে রণাঙ্গন মুখরিত হতো। প্রায় আটশো বছর ধরে আরবরা এই ইস্পাতের রহস্য পুরো বিশ্ব থেকে গোপন করে রাখে।

রহস্যময় ইস্পাত মধ্যপ্রাচ্যের সীমানা পেরিয়ে ইউরোপের মাটিতে পদার্পণ করে; Source: Hiconsumption

এই রহস্যময় ইস্পাত মধ্যপ্রাচ্যের সীমানা পেরিয়ে ইউরোপের মাটিতে পদার্পণ করে খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে। আলেকজাণ্ডার দ্য গ্রেটসহ অন্যান্য কালজয়ী যোদ্ধারা দামাস্কাস ইস্পাতের তৈরি অস্ত্রের প্রতি আসক্ত ছিলেন। বর্তমান রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে তখন দামাস্কাস ইস্পাতকে ‘বুলাট’ নামে ডাকা হতো বলে জানা যায়। আলেকজাণ্ডারের মৃত্যুর পর বহু বছর তা ইউরোপের অন্তরালে ছিল। একাদশ শতাব্দীতে ক্রুসেডের জের ধরে পুনরায় ইউরোপে দামাস্কাস ইস্পাত আমদানি শুরু হয়। ক্রুসেড যোদ্ধারা দ্রুত এই ইস্পাতের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়লেন। কারণ, দামাস্কাস ইস্পাত দ্বারা তৈরি অস্ত্রের সাহায্যে বাতাসে ভাসমান পাখির পালককেও দু’টুকরো করা যায়। একবার নির্মাণ করার পর শতবার ব্যবহারের পরেও এর ধারে কোনো ক্ষয় হতো না। দ্রুত ইউরোপের বড় বড় যোদ্ধারের পছন্দের অস্ত্রের নির্মাণ উপাদানে দামাস্কাস ইস্পাতের নাম যুক্ত হয়। এরপর প্রায় কয়েক শতাব্দী যাবত ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দামাস্কাস ইস্পাতের তৈরি অস্ত্রের ব্যবহার বহাল ছিল।

লুপ্ত ইস্পাতনামা

আজ থেকে প্রায় দু’হাজার বছর পূর্বের ভারতবর্ষে ‘ওটজ’ নামক একধরনের ইস্পাত পাওয়া যেত। সময়ের হিসেবে যা যিশুখ্রিস্টের জন্মেরও বহু পূর্বের ঘটনা বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা। প্রাচীনকালে সেই ওটজ ইস্পাত থেকে প্রস্তুত করা হতো মূল্যবান দামাস্কাস ইস্পাত। অনেকে মনে করেন, এই ওটজ ইস্পাতেরই আধুনিক সংস্করণ হিসেবে আবির্ভূত হয় দামাস্কাস ইস্পাত। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে অষ্টাদশ শতাব্দীতে ধীরে ধীরে ওটজ ইস্পাতের প্রস্তুতপ্রণালী বিলুপ্ত হয়ে যায়। কান টানলে যেমন মাথা আসে, তেমনি ওটজ ইস্পাতের সাথে দামাস্কাস ইস্পাতের প্রস্তুতপ্রণালীও বেমালুম গায়েব হয়ে যায়। কিন্তু পূর্বে নির্মিত ইস্পাতের অস্ত্র এবং যন্ত্রপাতি পৃথিবীতে রয়ে যায়। বহুকাল ধরে সেগুলোই দামাস্কাস ইস্পাতের স্মৃতি বহন করে বেড়াচ্ছিলো।

কিন্তু গবেষকগণ এত সহজে হাল ছেড়ে দেয়ার পাত্র নন। তারা সেই লুপ্ত ইস্পাত প্রস্তুতপ্রণালী পুনরুদ্ধার করার কাজে লেগে গেলেন। বছরের পর বছর ধরে চললো গবেষণা। কিন্তু কোনো সমাধান মিললো না অনেকদিন। এরপর আশার আলো দেখা গেলো ১৯৮১ সালের দিকে। সেই বছর বিখ্যাত পত্রিকা নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক ওয়াল্টার সুলিভান ‘The mystery of damascus stell appears solved’ শিরোনামে এক বিশদ ফিচার প্রকাশ করলেন। সেখানে জানানো হলো, বিখ্যাত স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন বিজ্ঞানী এক বিশেষ সুপার প্লাস্টিক নিয়ে কাজ করার সময় দামাস্কাস ইস্পাত তৈরির প্রস্তুতপ্রণালী আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে।

দামাস্কাসের কামাররা পুরাতন দামাস্কাস ইস্পাত নিয়ে কাজ করছেন; Source: Studiolum 

ফিচারটি অনেকেরই নজর কাড়লো। যদি সত্যি সত্যি দামাস্কাস ইস্পাত নির্মাণের নিয়ম আবিষ্কৃত হয়ে থাকে তাহলে সেটা বেশ চমৎকার একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। সেই দুজন বিজ্ঞানীরা হলেন জেফ্রি ওয়াডওয়ার্থ এবং ওলেগ শেরবি। জেফ্রি এবং ওলেগের দামাস্কাস ইস্পাত তৈরির রেসিপির উল্লেখযোগ্য তিনটি ধাপ হচ্ছে:

  • দামাস্কাস ইস্পাতে সাধারণ ইস্পাতের চেয়ে ২০ গুণ বেশি কার্বন থাকে। তাই ইস্পাত নির্মাণে ব্যবহৃত আকরিক লোহাকে উত্তপ্ত করার সময় প্রচুর পরিমাণে কাঠ কিংবা কয়লা প্রয়োগ করতে হবে। তবে এই ইস্পাতে ক্রোমিয়ামের পরিমাণ নিতান্ত কম।
  • কামারশালায় উত্তপ্ত ইস্পাতের স্তরকে বারবার মিশ্রিত করার মাধ্যমে দামাস্কাস ইস্পাতের ট্রেডমার্ক ছাপ পাওয়া সম্ভব হতে পারে।
  • হাঁপর মারা শেষে ইস্পাতকে বিশেষ সতর্কতার সাথে পানিতে চুবিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে। ছাঁচের মাঝে ইস্পাত শক্ত হওয়া মাত্র তা সংরক্ষণ করতে হবে।

এরকম বেশ কয়েকটি ধাপে দামাস্কাস ইস্পাত পুনরায় নির্মাণের কৌশল বাতলে দেয়া আছে। কিন্তু এই পদ্ধতিটি সর্বজনস্বীকৃত হতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে আর নতুন করে দামাস্কাস ইস্পাত এখনো নির্মাণ করা হয়নি। অনেকে মনে করেন, আর কখনোই পুনরায় দামাস্কাস ইস্পাত নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। নিউইয়র্ক মেট্রোপলিটন জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক মনে করেন, দামাস্কাস ইস্পাত নির্মাণে নাকি ড্রাগনের রক্তের প্রয়োজন রয়েছে! এখন ড্রাগনই বা কোথায় পাবেন, তার রক্ত তো অনেক দূরের কথা।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের পাতায় দামাস্কাস ইস্পাত রহস্য উদ্ধারের ফিচার; Source: NYTimes

দামাস্কাস ইস্পাত প্রাপ্তিস্থান

দামাস্কাস ইস্পাতের নামে তৈরি হচ্ছে শোভনীয় অস্ত্র; Source: Jesse Harber

যেহেতু বর্তমানে নতুন করে দামাস্কাস ইস্পাত নির্মাণের কোনো পথ খোলা নেই, তাই কোনো কলকারখানা কিংবা কামার দ্বারা এই ইস্পাত তৈরি করা আপাতত অসম্ভব। কিন্তু প্রাচীনযুগে ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্র বিশ্বের বিভিন্ন বিখ্যাত জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। মূলত এই ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোই দামাস্কাস ইস্পাতের একমাত্র চিহ্ন। সম্প্রতি দামাস্কাস ইস্পাতের নামে বৈদেশিক বাজারে যেসব ছুরি কিংবা তলোয়ার পাওয়া যায়, তা আসলে সাধারণ ইস্পাতে নির্মিত ছুরির উন্নত সংস্করণ ব্যতীত আর কিছুই নয়। অনেকে শখের বশে হাজার ডলার খরচ করে সেগুলো সংরক্ষণ করতেও পিছপা হয় না। নকল অস্ত্রগুলো তেমন ধারালো হয় না। কিন্তু এর গায়ে বিভিন্ন আঙ্গিকে চোখ ধাঁধানো নকশা করা থাকে, যা বেশ দৃষ্টিনন্দন। বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম এবং বড় বড় জাদুঘরের বিক্রয়কেন্দ্র থেকে এই ইস্পাতের ছুরি কিংবা তলোয়ার কিনতে পাওয়া যায়।

বাজারজাতকৃত দামাস্কাস ইস্পাতের ছুরি; Source: Jesse Harber

পৃথিবীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দামাস্কাস ইস্পাতের ন্যায় এরূপ বহু নিদর্শনের নাম পাওয়া যাবে যা আধুনিক প্রযুক্তিকেও হার মানাচ্ছে। মূলত এসব নিদর্শনের মাধ্যমে প্রাচীনকাল সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের ব্যাপক ঘাটতির দিকে আঙুল তুলে দেখানো হচ্ছে। এভাবে ইতিহাসের রহস্য ঘনীভূত হয়ে পড়ছে নাম না জানা হাজারো দামাস্কাস ইস্পাতের রহস্যজটে। আর সেই রহস্যজট সমাধার নেশায় দিনের পর দিন ছুটে চলছে আধুনিক যুগের বিজ্ঞান।

This is a bangla article about Damascus steel, a real life version of Valyrian Steel. The swords prepared from this steel is very light, yet sharper than anything in the world. They can cut a feather by the blink of an eye and needs no sharpening after preparation. However, the main ingredients of preparing this steel is lost long ago. 

Reference: 

1. Game of Thrones Book III, A Storm of Swords, Chapter 56

All the other references of this articles are hyperlinked.

Feature image: Mad Art Love

Related Articles

Exit mobile version