হেনরি ফোর্ড অটোমোবাইল শিল্পে বিপ্লব নিয়ে এসেছিলেন। তার ‘ফোর্ড মোটর কোম্পানি’ বিশাল ব্যাপ্তি ছড়াতে শুরু করেছিল গত শতাব্দীর বিশের দশক থেকে। তখন তিনি একটি উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাস্তবায়নের চিন্তা করেন। তিনি ব্রাজিলের আমাজন বনের গভীরে একটি শহর স্থাপন করেন, যার নাম দেয়া হয় ‘ফোর্ডল্যান্ডিয়া’। সেখানে স্থাপন করা হয় রাবারের কারখানা।
যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট থেকে যন্ত্রপাতি ও কারখানা পরিচালকদের সেখানে পাঠানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল ব্রাজিলের রাবার গাছ থেকে আঠা উৎপন্ন করে সেগুলো জাহাজে করে ডেট্রয়েটে নিয়ে আসা এবং ফোর্ড মোটর কোম্পানির গাড়ির চাকা ও অন্যান্য অংশ তৈরিতে এগুলো ব্যবহার করা। হেনরি ফোর্ড শুধু আমাজনে একটি কারখানাই নয়, সেখানে নিজের একটি আলাদা সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। ব্রাজিলিয়ান কর্মীদের উপযুক্ত বেতন, বাসস্থান, খাবার ও বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিয়ে একটি শহর গড়ে তুলেছিলেন। সেখানে ছিল আলাদা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, টেলিফোন, হাসপাতাল, করাত-কল, চার্চ ইত্যাদি।
কিন্তু তার এই প্রকল্প মারাত্বকভাবে ব্যর্থ হয়। ফোর্ডল্যান্ডিয়া শহর স্থানীয় কর্মীদেরও জীবনযাত্রা বদলাতে সাহায্য করেনি, হেনরি ফোর্ডের নিজের কোম্পানিও উপকৃত হয়নি। বরং দুই দশক পর ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে আমাজন থেকে সরে আসেন হেনরি ফোর্ড। বর্তমানে এটি একটি পরিত্যাক্ত শহর। ভাঙাচুরা স্থাপনা ও যন্ত্রপাতি আজও জানান দেয় হেনরি ফোর্ডের ব্যর্থতার কথা।
গত শতাব্দীর প্রথম দিকে রাবার শিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ঐতিহাসিকভাবে রাবার শিল্পে বিশ্বে একক আধিপত্য ছিল ব্রাজিলের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাবার রপ্তানিকারক দেশ ছিল ব্রাজিল। রাবার শ্রমিকরা আমাজন বনের গভীরে গিয়ে রাবার গাছ খুঁজে বের করত। তারপর সেগুলো থেকে আঠা সংগ্রহ করে তাপ দিয়ে ফুটানো হতো। এরপর বলের আকারে এনে রাবারগুলো বিক্রি করা হতো। এই রাবারগুলো কারখানায় নিয়ে যাওয়া হতো পণ্য উৎপাদনের জন্য। রাবার শ্রমিকরা বছরের কিছু সময় রাবার সংগ্রহের কাজ করত, বাকি সময়টা রাবার চাষ করত।
কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় শুধু রাবার বাগানের মালিকরাই লাভবান হতো। শ্রমিকদের জন্য প্রায় কিছুই ছিল না। রাবার শিল্পের বিকাশ ঘটার সাথে সাথে পর্যাপ্ত শ্রমিকের চাহিদাও বেড়ে যায়। ফলে তারা দেশীয় জনগণকে দাস প্রথার মাধ্যমে কাজ করায়। এমনকি যে শ্রমিকরা কাজ করে পারিশ্রমিক পেত, তাদের পারিশ্রমিকের অঙ্কটাও যথেষ্ট ছিল না।
ব্রাজিলের এই আধিপত্যে লাগাম টেনে ধরেন ব্রিটিশ অনুসন্ধানকারী হেনরি উইকহাম। তিনি ব্রাজিলে আসেন আমাজন জঙ্গলে ভাগ্যের সন্ধান খুঁজে পাওয়ার আশায়। ১৮৭৬ সালে তিনি ব্রাজিল থেকে প্রায় দশ হাজার রাবার বীজ লুকিয়ে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসেন। মূলত, তখন রাবার বীজ রপ্তানি সম্পর্কীয় আইন ছিল না বললেই চলে। কিন্তু উইকহাম রপ্তানি সম্পর্কিত ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে নেন। প্রতিটি বীজ ছিল পৌনে ইঞ্চি লম্বা। তিনি জানতেন না তার এই রাবার বীজ চোরাচালানই একসময় রাবার শিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
ইংল্যান্ড থেকে উইকহামের রাবার বীজগুলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইউরোপীয় কলোনিগুলোতে চলে আসে। এগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া উল্লেখযোগ্য। এসব দেশের উষ্ণমণ্ডলীয় পরিবেশে রাবার গাছের ফলন খুব ভালো হয়। কারণ, সেখানে তখনো ব্রাজিলের মতো ক্ষতিকর রোগ বা ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের বিবর্তন হয়নি। ধীরে ধীরে ইউরোপিয়ান কলোনির রাবার শিল্প ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে যায়। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ব্রাজিল রাবার শিল্পে তার একক আধিপত্য হারিয়ে ফেলে।
ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা তখন রাবার শিল্পে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করল। তারা তখন রাবারের মূল্য নির্ধারণ করার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিল। যেহেতু বিশ্বে রাবার বাণিজ্যে তাদেরই একক আধিপত্য, তাই এর বাজার মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতাও তাদের হাতে চলে আসলো। এতে হেনরি ফোর্ড ভীত হয়ে পড়েন। কারণ, ইউরোপীয়রা যদি রাবারের দাম বাড়িয়ে দেয়, তাহলে তার গাড়ি নির্মাণে চাকা, নল ইত্যাদির খরচ বেড়ে যাবে। ফলে গাড়ির দামও বাড়িয়ে দিতে হবে। এতে গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ার ভয় ছিল।
ফোর্ড মোটর কোম্পানির গাড়ি নির্মাণে প্রয়োজনীয় কাঠ, কাঁচ, লোহা থেকে শুরু করে প্রায় সব কাঁচামালই তারা নিজেরা সরবরাহ করত, শুধু আঠা বাদে। হেনরি ফোর্ড তখন নিজের আঠা উৎপাদনের কেন্দ্র তৈরি করতে চাইলেন। কিন্তু রাবার তার নিজের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে জন্মে না। অন্যদিকে ব্রাজিলও চাচ্ছিল তাদের হারানো সিংহাসন ফেরত পেতে। দুই পক্ষেরই প্রয়োজনীয়তায় ফোর্ড ব্রাজিল সরকারের কাছ থেকে আমাজন জঙ্গলের ছয় মিলিয়নেরও বেশি একর কিনে নেন।
১৯২৮ সালে ফোর্ড কোম্পানি আমাজনের তাপাজস নদীর মাধ্যমে জাহাজে মালামাল পাঠানো শুরু করে। একই সাথে শহরের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য আমেরিকান ব্যবস্থাপকদের পাঠানো হয়। তারপর শহর নির্মাণ করার জন্য স্থানীয় শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়া হয়। তারা ফোর্ডল্যান্ডিয়া গড়ে তোলার জন্য বন পরিষ্কার করা শুরু করে।
কিন্তু শুরু থেকেই শ্রমিকদের অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। খালি গায়ে কাজ করা শ্রমিকদের গায়ে পিঁপড়া, ভীমরুল, বিছা, পিট ভাইপার সাপ আক্রমণ করত। শেষ পর্যন্ত শ্রমিকরা রেইন ফরেস্টের মাঝখানে পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়। সেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইউরোপীয় কলোনির মতো কাছাকাছি ঘনভাবে রাবার গাছ লাগানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, তাদের এই পদ্ধতি আমাজনের জন্য উপযুক্ত ছিল না।
ফোর্ডল্যান্ডিয়ায় শ্রমিকদের পরিবারসহ থাকার জন্য বাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। এই বাড়িগুলো ছিল পশ্চিমা ধাঁচের। হেনরি ফোর্ড তার শ্রমিকদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিতেন। তাদের কাজ করার জন্য আট ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। তাদের বিনোদনের জন্য সুইমিং পুল, গলফ কোর্স আর নাচার ঘরের ব্যবস্থাও করেছিলেন। শ্রমিকদের বাচ্চাদের জন্য স্কুল, বয় স্কাউটও ছিল। অনেক স্থানীয় ব্যক্তিরাই ফোর্ডল্যান্ডিয়ার স্কুলের মাধ্যমে প্রথম বারের মতো শিক্ষার আলোর সুযোগ পায়। একটি আধুনিক হাসাপাতালও নির্মাণ করা হয় সেখানে, যার মাধ্যমে শ্রমিকরা বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ পায়।
হেনরি ফোর্ডের উদ্দেশ্য ছিল সেখানে রাবার কারখানার পাশাপাশি তার নিজের আদর্শ ও নীতির একটি আমেরিকান সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়েই শ্রমিকদের সাথে তার সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। হেনরি ফোর্ড আমেরিকান, কিন্তু শ্রমিকরা ব্রাজিলিয়ান। আমেরিকানদের সাথে তাদের সংস্কৃতি ছিল অনেক আলাদা। তাদেরকে আমেরিকানদের মতো জীবনধারায় চালিত করার কারণে শুরু থেকেই ফোর্ডকে ফোর্ডল্যান্ডিয়া নিয়ে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়।
ব্রাজিলিয়ান শ্রমিকরা ভোরে কাজ শুরু করত, সূর্য মধ্য গগণে আসলে কাজে বিরতি নিত। তারপর আবার কাজ করতে আসতো। কিন্তু ফোর্ডল্যান্ডিয়ার কাজ করার সময় ছিল সকাল নয়টা থেকে বিকাল পাঁচটা। শ্রমিকরা এই সময়ে কাজ করে অভ্যস্ত ছিল না। তাই সেটি তাদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়নি। অন্যদিকে শ্রমিকরা তুলনামূলক বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ায় তা দিয়ে আমাজন জঙ্গলে তাদের তেমন কিছু করার ছিল না। শ্রমিকরা কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পরে চলে যেত তাদের নিজেদের জমিতে। সেখানে তাদের ফসল ফলিয়ে পরের বছর আবার ফোর্ডল্যান্ডিয়ায় কাজ করতে আসতো। এগুলো ফোর্ডল্যান্ডিয়ার ব্যবস্থাপকদের অসন্তুষ্ট করে তুলে।
হেনরি ফোর্ড তার স্ত্রী ক্লারার দেখা পেয়েছিলেন একটি নাচের অনুষ্ঠানে। তাই তিনি ফোর্ডল্যান্ডিয়ায় একটি বিশাল নাচের হলঘর তৈরি করেছিলেন। কিন্তু শ্রমিকদের মধ্যে তা জনপ্রিয়তা পায়নি। হেনরি ফোর্ড নিরামিষভোজী ছিলেন। তিনি শ্রমিকদের জন্যও নিরামিষ খাবারের ব্যবস্থা করেন। এটিও বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ব্রাজিলে মদ্যপান তখন বৈধ থাকলেও ফোর্ড সেখানে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ করেন। পতিতাবৃত্তিও নিষিদ্ধ করা হয়। এসব কারণে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হতে থাকে। তখন কিছু স্থানীয় উদ্যোক্তা ফোর্ডল্যান্ডের নিকটবর্তী স্থানেই একটি বার ও পতিতালয় স্থাপন করে। এর নাম ছিল ‘দ্য আইল্যান্ড অব ইনোস্যান্স’। শ্রমিকরা সেখানে চলে যেত বিনোদনের উদ্দেশ্যে। শ্রমিকদেরকে কবিতা আবৃত্তি ও শুধু ইংরেজি ভাষার গানের সেশনে পাঠানো হতো। অর্থাৎ, হেনরি ফোর্ড আশা করেছিলেন তার আদর্শ ও আমেরিকান সংস্কৃতি আমাজনের মানুষ গ্রহণ করবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
শ্রমিকদের অসন্তোষের মাত্রা ১৯৩০ সালে চরমে ওঠে। তখন তাদের ডাইনিং হলে ওয়েট সার্ভিস বাদ দিয়ে সেলফ সার্ভিস চালু করা হয়। শ্রমিকরা দাঙ্গা সৃষ্টি করে ফোর্ডল্যান্ডিয়ায় ভাংচুর শুরু করে। এতে হাজার হাজার ডলারের ক্ষতি হয়। ব্যবস্থাপকরা নৌকা করে ফোর্ডল্যান্ডিয়া থেকে পালাতে বাধ্য হয়। পরে ব্রাজিলিয়ান সিকিউরিটি ফোর্সের মাধ্যমে শহরকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু শহর থেকে ব্যবসা সরিয়ে আনার পরিবর্তে একে ব্যবসা সফল করার জন্য সেখানে আরো অর্থ খরচ করা শুরু করেন হেনরি ফোর্ড।
ফোর্ডল্যান্ডিয়ার জন্য শ্রমিকদের বিদ্রোহের চেয়েও বড় সমস্যা ছিল আমাজনের ক্ষতিকর পোকামাকড়। হেনরি ফোর্ড এখানে রাবার গাছ লাগানোর আগে কোনো উদ্ভিদ বিজ্ঞানীর পরামর্শ নেননি। তিনি অহংবোধ ও বিশ্বাসহীনতার কারণে কোনো বিশেষজ্ঞের সাথেই কথা বলেননি। রাবার গাছগুলো কাছাকাছি লাগানোয় কীটপতঙ্গগুলো সহজেই আক্রমণ করত। এতে বেশিরভাগ রাবার গাছই নষ্ট হয়ে যায়। মূলত, রাবার বাগানের মাধ্যমে সেখানে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের বাসস্থান বানানো হচ্ছিল।
কিন্তু এরপরেও ফোর্ড সেখান থেকে সরে আসেননি। বরং ১৯৩৩ সালে নতুন কিছু জমি কেনেন, যার নাম দেন ‘বেলটেরা’। কিন্তু সেটাও কোনো কাজে আসেনি। অন্যদিকে ডেট্রয়েট থেকে আসা আমেরিকানরাও এই গরম পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারেনি। বিশেষ করে তাদের স্ত্রীদের কোনো কাজই ছিল না করার সেখানে।
এমন সময় সিনথেটিক রাবার চলে আসলে ফোর্ডল্যান্ডিয়ার রাবার বাগানের কার্যক্রমই অর্থহীন হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ১৯৪৫ সালে হেনরি ফোর্ড তার কোম্পানির মালিকানা দিয়ে দেন তার নাতিকে। তখন ব্রাজিল সরকারের কাছে ফোর্ডল্যান্ডিয়াকে বিক্রি করে দেন মাত্র ২,৫০,০০০ মার্কিন ডলারে। এতে তার প্রায় ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়। আজকের দিনে যে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
হেনরি ফোর্ড আশা করেছিলেন ফোর্ডল্যান্ডিয়া থেকে ৩৮,০০০ টন আঠা উৎপাদন করতে পারবেন। কিন্তু উৎপাদন করতে পেরেছিলেন মাত্র ৭৫০ টন, যা দিয়ে ফোর্ড কোম্পানির একটি গাড়িও নির্মাণ হয়নি। অদ্ভুত ব্যাপার প্রায় দুই দশক ফোর্ডল্যান্ডিয়ায় অনেক বিনিয়োগ করলেও হেনরি ফোর্ড কখনো ফোর্ডল্যান্ডিয়ায় যাননি।
বর্তমানে ফোর্ডল্যান্ডিয়ায় ভগ্ন কারখানা আর বিলীন হয়ে যাওয়া ফোর্ড কোম্পানির লোগো আঁকা ওয়াচ টাওয়ার যেন এর ব্যর্থতার কথাই জানান দেয় তীব্রভাবে। বর্তমানে ফোর্ডল্যান্ডিয়ায় প্রায় তিন হাজার ব্রাজিলিয়ানের বসবাস। বর্তমানে এখানে চাষী আর স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীরা থাকে। পুরোনো স্থাপনাগুলো এখন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। আমেরিকান ঘরানার বাড়িঘর না থাকলে ফোর্ডল্যান্ডিয়া আর দশটা ব্রাজিলিয়ান মফস্বল শহরই মনে হতো।