১৯৪৮ সালের ১১ই জুন। পোর্ট-ডি-বুক সমুদ্র বন্দর থেকে ৪,৫০০ টন কার্গো নিয়ে একটি জাহাজ যাত্রা করে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে। জাহাজটিতে ছিল ৯৪০ জন ইহুদী স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধা, ৫,০০০ রাইফেল এবং ৫০ লাখ বুলেটসহ বিপুল পরিমাণ অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র। তবে অস্ত্রগুলো ইসরায়েলে যাচ্ছিল দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়ন কিংবা দেশটির প্রতিরক্ষাবাহিনী আইডিএফের কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতসারেই। কারণ ফ্রান্স থেকে জাহাজটি ইসরায়েলে পাঠানোর দায়িত্বে ছিল ইহুদীদের গুপ্ত সন্ত্রাসী সংগঠন ইরগুনের একটি শাখা। আর তাদের পরিকল্পনা ছিল অস্ত্রগুলো শুধুমাত্র ইরগুনের সদস্যদের কাছে বিতরণ করার মাধ্যমে ইরগুনকে ইসরায়েলের ভেতর সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা এবং ভবিষ্যত ইসরায়েলে ইরগুনের প্রাধান্য নিশ্চিত করা। আর সেটি করতে গিয়েই সংঘটিত হয়েছিল ইসরায়েলের ইতিহাসের প্রথম আন্তঃবাহিনী খণ্ডযুদ্ধ।
ইহুদীদের সবচেয়ে কুখ্যাত দুটি সন্ত্রাসী সংগঠন ছিল ইরগুন ও লেহি। শুধু আরবরা না, এদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল শতাধিক উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ কর্মকর্তাও। অনেকের মতে, এই সন্ত্রাসী হামলাগুলোই ব্রিটিশদেরকে উচ্ছেদ করে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেছিল। https://t.co/VRptd9kaST
— Toha (@toha_mht) July 8, 2018
১৯৪৮ সালের ১৪ই মে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই গঠিত হয় ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষাবাহিনী আইডিএফ তথা ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স। আর এর কিছুদিন পরেই, জুনের ৭ তারিখে গঠিত হয় ইসরায়েলের তিনটি প্রধান গোয়েন্দা বিভাগ- আমান, শিনবেত এবং পলিটিকাল ডিপার্টমেন্ট (পরবর্তীতে মোসাদ), যাদের উপর আমরা আলোচনা করেছি আমাদের এই সিরিজের পূর্ববর্তী পর্বে। আইডিএফ তথা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠিত হয়েছিল প্রধানত ইহুদীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা সশস্ত্রবাহিনী হাগানার সদস্যদেরকে নিয়ে। তবে এর অধীনে অন্যান্য কিছু বাহিনী থেকে আসা কয়েকটি স্বতন্ত্র ব্রিগেডও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল ইহুদীদের চরমপন্থী সন্ত্রাসী সংগঠন ইরগুন।
সে সময় ইরগুনের প্রধান ছিলেন মেনাচেম বেগিন, যিনি পরবর্তীতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে তখনও পর্যন্ত বেগিন তার অধীনস্ত ইরগুনকে সম্পূর্ণ আইডিএফের নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে দিতে রাজি ছিলেন না। তার পরিকল্পনা ছিল ইরগুনকে আইডিএফের অধীনে স্বতন্ত্র একটি ব্রিগেড হিসেবে, অথবা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বাহিনী হিসেবে পরিচালনা করা। আর সে উদ্দেশ্যেই ইরগুনকে শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে ইরগুনের ইউরোপ শাখার সদস্যরা ইউরোপের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে ইসরায়েলে পাঠানোর উদ্দেশ্যে অস্ত্রশস্ত্র এবং স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধা জোগাড় করতে থাকে। আর তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জেস বিদুঁ।
ইরগুনের সদস্যরা আলতালেনা নামক একটি জাহাজে করে ৯৪০ জন যোদ্ধা এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ইসরায়েলে পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে। ফরাসী সরকারের সাথে ইরগুনের একটি গোপন চুক্তির আলোকে অস্ত্র ক্রয়ের জন্য ইরগুনকে ১৫৩ মিলিয়ন ফ্রাঙ্ক সাহায্য দেয় ফ্রান্স। ফ্রান্সের সাথে ইরগুনের ঠিক কী চুক্তি হয়েছিল তা জানা না গেলেও ফ্রান্সের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফের বক্তব্য অনুযায়ী, ইরগুন ফ্রান্সকে আশ্বস্ত করেছিল যে, তারা ইসরায়েলের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে পারলে ফ্রান্সকে বিভিন্ন ব্যাপারে সুযোগ-সুবিধা প্রদান করবে। ইরগুনের প্রতিনিধি শ্যামুয়েল এরিয়েল ফ্রান্সের কাছে এমন দাবিও করেছিলেন যে, তারা সশস্ত্র পদ্ধতিতে ইসরায়েলের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে ইচ্ছুক।
ইরগুন প্রথমে চেষ্টা করেছিল আলতালেনা জাহাজটিকে গোপনে ইসরায়েলের কোনো বন্দরে ভেড়াতে। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা সম্ভব না হওয়ায় মেনাচেম বেগিন নিজেই বেন গুরিয়নের নেতৃত্বাধীন সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদেরকে জাহাজটির আগমন সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি দাবি জানান, জাহাজটিকে নিরাপদে ইসরায়েলের বন্দরে ভিড়তে দিতে হবে, এর অস্ত্রশস্ত্রের ২০% সরাসরি ইরগুনের সদস্যদেরকে এবং বাকি ৮০% আইডিএফের অধীনস্থ ইরগুন ব্রিগেডগুলোকে দিতে হবে। কিন্তু বেন গুরিয়নের পক্ষে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে বিশেষ একটি বাহিনীকে শক্তিশালী করার এই দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। ফলে তিনি ইরগুনের কাছ থেকে জোরপূর্বক জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন। বাধা দিলে ইরগুন সদস্যদেরকে গ্রেপ্তার এবং তাদের উপর গুলি চালানোরও নির্দেশ দেন তিনি।
জুনের ২০ তারিখে আলতালেনা জাহাজটি ইসরায়েলের কাফার ভিতকিন বন্দরে এসে পৌঁছে। ইরগুনের সদস্যরা যখন জাহাজটি থেকে অস্ত্র খালাসে ব্যস্ত, তখন বেন গুরিয়নের নির্দেশে আইডিএফের আলেক্সান্দ্রোনি ব্রিগেডের কমাণ্ডার ড্যান ইভেন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেন। তিনি আইডিএফের চিফ অফ স্টাফের তরফ থেকে ইরগুনের প্রধান মেনাচেম বেগিনের হাতে একটি চিঠি দেন, যেখানে বেগিনকে অস্ত্রসমেত জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ আইডিএফের হাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য মাত্র ১০ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। বেগিন আত্মসমর্পণ করতে রাজি না হলে একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলা এই খণ্ডযুদ্ধে আইডিএফের দুই জন নিহত, ছয় জন আহত এবং ইরগুনের ছয়জন নিহত, আঠারোজন আহত হয় এবং তীরে থাকা ইরগুন সদস্যরা আইডিএফের হাতে পরাজিত হয় এবং গ্রেপ্তার হয়।
গোলাগুলি থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে মেনাচেম বেগিন জাহাজে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং জাহাজটিকে নিয়ে তেল আবিবের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। তেল আবিব ছিল ইরগুন সদস্যদের শক্ত ঘাঁটি, ফলে জাহাজটি পৌঁছার আগেই সেখানে অবস্থিত আইডিএফের অধীনস্থ ইরগুন সদস্যরা তাদের ঘাঁটি ত্যাগ করে দলে দলে সমুদ্র তীরে এসে জমা হতে থাকে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে, গৃহযুদ্ধ এড়ানোর উদ্দেশ্যে বেন গুরিয়ন জাহাজটিকে তেল আবিবে পৌঁছার আগেই বোমা মেরে সমুদ্রে ডুবিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু একাধিক পাইলট ইহুদী হয়ে ইহুদী যোদ্ধাসমেত জাহাজের উপর বোমা বর্ষণ করতে অস্বীকৃতি জানালে ঐ পরিকল্পনা বানচাল হয়ে যায়। ফলে মাঝরাতে আলতালেনা জাহাজটি যখন তেল আবিব বন্দরে পৌঁছে, তখন বেন গুরিয়নের নির্দেশে ইসরায়েলের ভারপ্রাপ্ত চিফ অফ স্টাফ ইগায়েল ইয়াদিন জোরপূর্বক জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার উদ্দেশ্যে তেল আবিব সমুদ্র সৈকতে বিপুল সংখ্যক আইডিএফ সেনার সমাবেশ ঘটান।
তেল আবিব সৈকতে উপস্থিত আইডিএফ সেনাদের মূল নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক হাগানা নেতা ইৎজাক রাবিন, যিনি পরবর্তীতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২১ তারিখ রাতের বেলা আলতালেনা জাহাজটি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বন্দরে নোঙ্গর করার উপক্রম করলে রাবিনের নির্দেশে আইডিএফের সদস্যরা জাহাজটিকে লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ শুরু করে, ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সমুদ্র সৈকতে উপস্থিত আইডিএফ এবং ইরগুন সদস্যদের মধ্যেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। আইডিএফের ছোঁড়া একটি গোলা এসে পড়ে জাহাজের উপর, যার ফলে জাহাজটির একাংশে আগুন ধরে যায় এবং জাহাজটি ডুবতে শুরু করে। গোলাগুলি চলা অবস্থাতেই জাহাজটিতে অবস্থান করা স্বেচ্ছাসেবকদের অনেকে জীবন রক্ষার জন্য পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মেনাচেম বেগিন প্রথম থেকেই আলতালেনা জাহাজটির অস্ত্রগুলো ইরগুনের হাতে তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তিনি যখন বুঝতে পারেন যে বেন গুরিয়ন কিছুতেই তা হতে দিবেন না, তখন তিনি তার অনড় অবস্থান থেকে সরে আসেন। তিনি বুঝতে পারছিলেন, এই মুহূর্তে তিনি যদি সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করেন, তাহলে সদ্য জন্মগ্রহণ করা ইসরায়েল রাষ্ট্রটি দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রটির অস্তিত্বই বিপন্ন হতে পারে। ফলে আলতালেনার স্বেচ্ছাসেবীদেরকে তিনি গুলিবর্ষণ না করার এবং সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন।
বেন গুরিয়নের সাথে একমত হতে না পারলেও গৃহযুদ্ধ এড়ানোর জন্য বেগিন চেয়েছিলেন আপাতত আলতালেনার দাবি ছেড়ে দিয়ে আরবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মনোনিবেশ করা। তার লক্ষ্য ছিল আইডিএফের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার পরিবর্তে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পৃথকভাবে আরবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া। তবে তার নির্দেশে সাদা পতাকা উত্তোলন সত্ত্বেও আইডিএফ আলতালেনার সদস্যদেরকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করার পূর্ব পর্যন্ত গুলিবর্ষণ অব্যাহত রাখে। দীর্ঘ আলোচনার পর পরদিন ২২ জুন বিকেল বেলা উভয় পক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়। ততক্ষণ পর্যন্ত চলা এই খণ্ডযুদ্ধে নিহত হয় আরো দশ ইরগুন সদস্য এবং একজন আইএফ সেনা। আর আলতালেনা জাহজটি তার বাকি অস্ত্রশস্ত্র সমেত সমুদ্রের পানি নিমজ্জিত হয়।
যুদ্ধবিরতির পরপরই আইডিএফ ইরগুন সদস্যদের বিরুদ্ধে বিশাল অভিযান শুরু করে। ইরগুনকে বিলুপ্ত করা হয় এবং প্রায় ২০০ ইরগুন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের অধিকাংশকেই অবশ্য কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয় এবং আইডিএফের ইরগুন বিভাগগুলো বিলুপ্ত করে তাদেরকে অন্যান্য ব্রিগেডের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া হয়। পাঁচজন নেতৃস্থানীয় ইরগুন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়, কিন্তু ইহুদী জনগণের দাবির মুখে তাদেরকেও দুই মাস পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে যে আটজন আইডিএফ সেনা নির্দেশ অমান্য করে আলতালেনার উপর আক্রমণ করতে অস্বীকৃতি জানায়, সামরিক আদালতে তাদের বিচার সম্পন্ন করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
আলতালেনা জাহাজ নিমজ্জিত করার ঘটনাটি ছিল ইসরায়েলের ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। মেনাচেম বেগিন যদি সেদিন ইসরায়েলের বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজের এবং নিজের সংগঠনের ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন না দিতেন, তাহলে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে ইসরায়েল ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়তে পারত এবং আরবদের বিরুদ্ধে তাদের জয়লাভ কঠিন হয়ে উঠত। আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে আরবরা প্রথম দিকে এগিয়ে থাকলেও পরবর্তীতে যে তারা পরাজিত হয়েছিল, তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে এটিও একটি ছিল যে, জর্ডান, মিসর, ইরাকসহ যে রাষ্ট্রগুলো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের মধ্যে যথেষ্ট ঐক্য ছিল না এবং তাদের নেতাদের অনেকেই ফিলিস্তিনের জন্য নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত ছিল না।
এছাড়াও আলতালেনা সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়নের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ভূমিকাও অনস্বীকার্য। যে মুহূর্তে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে তাদের অস্তিত্বের লড়াই চলছে, ঠিক সে মুহূর্তে ইরগুনের মতো একটি শক্তিশালী সশস্ত্র ইহুদী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদেরকে বিলুপ্ত করা এবং তাদের অস্ত্রবাহী জাহাজকে সম্পূর্ণ ডুবিয়ে দেওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়তো অন্য অনেক নেতার পক্ষেই সম্ভব হতো না। কিন্তু তার সে বিচক্ষণ সিদ্ধান্তের ফলেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ঐক্য নিশ্চিত হয়েছিল। শুধু ইরগুন না, এর কিছুদিন পরেই বেন গুরিয়ন আরেক সন্ত্রাসী সংগঠন লেহির বিরুদ্ধেও প্রায় একই ধরনের অভিযান চালিয়ে তাদেরকে বিলুপ্ত করার নির্দেশ জারি করেন। সে ব্যাপারে আমরা আলোচনা করব এ সিরিজের পরবর্তী পর্বে।
তথ্যসূত্র: Rise and Kill First: The Secret History of Israel’s Targeted Assassinations
এই সিরিজের অন্যান্য পর্বগুলো
(১) সন্ত্রাসী সংগঠন লেহি’র গুপ্তহত্যা (২) উগ্র জায়নবাদের উত্থান (৩) ইহুদীদের নৈশ প্রহরী হাশোমারের ইতিহাস (৪) আইডিএফের পূর্বসূরি হাগানার উত্থান (৫) নাৎসিদের উপর ইহুদী ব্রিগেডের প্রতিশোধ (৬) ফিলিস্তিন থেকে জার্মানদের উচ্ছেদ (৭) যে সন্ত্রাসী হামলাগুলোর মাধ্যমে ইসরায়েলের সৃষ্টি (৮) হাসান সালামা হত্যাপ্রচেষ্টা (৯) পালায়াম এবং ছদ্মবেশী আরব ইউনিটের নাশকতা (১০) গোয়েন্দাবাহিনী আমান এবং শিন বেতের অভ্যুদয় (১২) জাতিসংঘের প্রতিনিধি কাউন্ট বার্নাডোট হত্যাকাণ্ড
ফিচার ইমেজ: Wikimedia Commons