অবতরণিকা
একুশে ফেব্রুয়ারি। আমাদের ভাষা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষার জন্য রক্ত দেবার এ ইতিহাস, আমাদের পরম গর্বের ইতিহাস। ১৯৫৩ সাল থেকে এ দিনে আমরা ভাষাশহীদদের স্মরণ করে আসছি; তার পাশাপাশি ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর ২০১০ সাল থেকে পুরো বিশ্ববাসীর কাছেই একুশে ফেব্রুয়ারি আজ স্ব-স্ব ভাষা ও সংস্কৃতির গুরুত্ব মূল্যায়ণে এক অনন্য স্মরণীয় দিন।
আমরা অনেকেই হয়তো জানি, বাংলা ভাষার জন্য এরপরও প্রাণত্যাগ করতে হয়েছে ভারতের আসাম রাজ্যে বরাক উপত্যকায় যথাক্রমে ১৯৬১ সালে ১৯ মে; ১৯৭২ সালের ১৭ আগস্ট এবং ১৯৮৬ সালের ২১ জুলাই তারিখে। এখন প্রশ্ন হলো, শুধু বাংলা ভাষার জন্যই কি শহীদদের আত্মত্যাগ? এমন অন্য কোনো ভাষা কি নেই, যার জন্য কাউকে বিসর্জন দিতে হয়নি কোনো প্রাণ?
হ্যাঁ। আমাদের কাছাকাছি এরকম একটি ভাষা আছে, তার নাম ‘বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা’, যার জন্য ঝরাতে হয়েছে কয়েকটি প্রাণ। তাদের একজন সুদেষ্ণা সিংহ। আসুন, একটা গল্প দিয়ে শুরু করি।
সুদেষ্ণা’র গল্প: ‘বুলু’ কাহিনী
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি। আসামের বরাক উপত্যকা, যার ঠিক নিচেই সুরমা উপত্যকা, সেখানে কচুবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এক শিশুকন্যা, নাম তার সুদেষ্ণা সিংহ। গ্রামবাসীরা আদর করে তার ডাকনাম দেয় ‘বুলু’।
যতদূর জানা যায় এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেন সুদেষ্ণা; পরিবারের সহায়-সম্বলহীন সামর্থ্যকেই চিরসঙ্গী করে নিয়ে তাঁর ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা। এভাবে কেটে যায় বত্রিশটি বছর। ১৯৯৬ সাল। একদিন আসামের ‘বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী’ অধ্যুষিত এলাকায় ডাক আসে ‘ইমার ঠার’ আন্দোলনের। বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষায় ইমার ঠারের অর্থ ‘মায়ের ভাষা’। দলে দলে বিষ্ণুপ্রিয়াভাষী মানুষ জড়িয়ে পড়ে এ আন্দোলনে। নিজ ভাষার অস্তিত্ব রক্ষায় রেল অবরোধ কর্মসূচীতে অংশ নিতে অন্য সবার মতো সুদেষ্ণাও মার্চের (বাংলা চৈত্র মাস) এক কাঠফাটা দিনে বিদায় নেন মায়ের কাছ থেকে। কিন্তু কে জানতো, সেই বিদায়ের দিনটিই হবে সুদেষ্ণার চিরবিদায়ের দিন! গল্পের বাকিটা একটু পরেই বলা যাক, ঘুরে আসি ইতিহাস থেকে।
বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা আন্দোলন
ভারতের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব এবং বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে বসবাসকারী এক প্রান্তিক জাতির নাম বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী। ব্রিটিশ শাসনামলের প্রাক্কালে ইঙ্গ-বর্মী যুদ্ধের পর মণিপুর থেকে এরা উত্তর-পূর্ব ভারত, বার্মা ও বাংলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। সেই মণিপুরীদেরই একটি অংশ এই বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী। এছাড়া রয়েছে মৈতেয় মণিপুরী, পাঙন মণিপুরী।
বর্তমানে ভারতের আসাম রাজ্যভুক্ত হাইলাকান্দি, কাছাড়, পাথারকান্দি, করিমগঞ্জ, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মণিপুর রাজ্যে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী সম্প্রদায়ের অধিকাংশের বসবাস। বাংলাদেশে মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলাতেও এ জাতির বসতি চোখে পড়ে।
ভারতের মণিপুরসহ আসামের বরাক ও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা, এমনকি বাংলাদেশেও ‘কে মণিপুরী আর কে নয়’- তা নিয়ে একটি আন্তঃজাতিগত দ্বন্দ্ব বিদ্যমান ছিলো। মণিপুরীদের আদিভূমি মণিপুরের সিংহভাগ আধিবাসী মৈতেয়। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর সদস্য হবার কারণে এবং বাংলা-অহমিয়ার সাথে সাদৃশ্যের জন্য বিষ্ণুপ্রিয়াদের ভাষাকে ‘মণিপুরী ভাষা’ হিসেবে অনেক মৈতেয় স্বীকৃতি দিতে নারাজ।
অন্যদিকে ভারতের জাতীয় নথিপত্রসমূহে দুই জনগোষ্ঠীকেই ‘মণিপুরী’ হিসেবে দেখানো হলেও ‘মণিপুরী’ ভাষা হিসেবে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বিষ্ণুপ্রিয়া। ২০০৭ সালের ৮ মার্চ ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশে বিষ্ণুপ্রিয়া ‘মণিপুরী’ ভাষা হিসেবে তার মর্যাদা ফিরে পায়। যা-ই হোক, এ আলোচনায় বিরতি দিয়ে আবার ফিরে যাওয়া যাক ইতিহাসে।
১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর ভারতের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের সকল ভাষাভাষীর প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষায় শিক্ষাগ্রহণের মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু আসামে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরীদের এই অধিকার দীর্ঘদিন ধরে না থাকায় জন্ম নিয়েছিল সম্ভবত সবচেয়ে দীর্ঘ এক ভাষা আন্দোলনের। আসামের বরাক উপত্যকায় বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত ১৯৫৫ সালে। সে বছর ‘নিখিল বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী মহাসভা’ মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের সাত দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে, পরে যা ‘সত্যাগ্রহে’ রূপ নেয়। দশকের পর দশক ধরে এ আন্দোলন ব্যাপক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে, অথচ নিজ ভাষার স্বীকৃতি মেলেনি বিষ্ণুপ্রিয়াদের।
১৯৯২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রবিশংকর সিংহ, কুলচন্দ্র সিংহ প্রমুখের নেতৃত্বে ‘বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী গণসংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয় । ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ এ সময়টুকুর মাঝে আসাম ও ত্রিপুরায় অসংখ্যবার রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ, গনঅনশন, বিক্ষোভ কর্মসূচি এগুলো পালিত হতে থাকে। অনশনগুলো ২৪ ঘণ্টা থেকে শুরু করে ৪৮ ঘণ্টা এমনকি ১০১ ঘণ্টাব্যাপী পালিত হয়েছিল।
শেষ অবধি জনতার সংগ্রামে টনক নড়লো সরকারের। ১৯৯৫ সালের ২৬ মে প্রাথমিক স্তরে বিদ্যালয়গুলোতে বিষ্ণুপুরী মণিপুরী ভাষা চালু করে ত্রিপুরা সরকার। আসামে এ দাবি তখনো গৃহীত হয়নি, তাই মার্চ মাসে গণসংগ্রাম পরিষদ লাগাতার রেল অবরোধের কর্মসূচির ডাক দেয়। এসব ঘন ঘন কর্মসূচী পালনের ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়ে বরাক উপত্যকা। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এই বরাক উপত্যকাতেই একদিন আসে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরীদের সুদীর্ঘ ভাষা আন্দোলনের বিস্তৃত ইতিহাসে এক গগনবিদারী রক্তক্ষয়ী দিন!
১৯৯৬ সালের ১৬ মার্চ। দিনটি ছিলো শনিবার। এদিন ‘নিখিল বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী স্টুডেন্ট্স ইউনিয়ন’ সবচেয়ে দীর্ঘ ৫০১ ঘণ্টার রেল ও ট্রেন অবরোধ কর্মসূচী ঘোষণা করেছিলো। এ সময় রাজপথে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা আসামের কলকলি ঘাটের গুংঘাঝারি রেলস্টেশনে করিমগঞ্জ (আসাম, বাংলাদেশের সীমান্তে) থেকে আসতে থাকা একটি ডাউন ট্রেন অবরোধ করে। আন্দোলন চলাকালে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই পুলিশ অবরোধকারীদের উপর লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে, ঠিক যেমনটা ঘটেছিল বীর বাঙালির রক্তঝরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মিছিলে।
মুষ্টিবদ্ধ আন্দোলনকারীদের পুরোপুরি নিস্তব্ধ করে দেওয়ার অভিপ্রায়ে আসাম সরকার ভাষার প্রশ্নে রক্ত ঝরাতে বাধ্য করে। সেদিন পুলিশের গুলিতে ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আহত হন শতাধিক বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী। ঘটনাস্থলেই সকাল ১২:১০ ঘটিকায় মারা যান বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী বিপ্লবী নারী সুদেষ্ণা সিংহ। পরে হাসপাতালে নিহত হন আরেকজন বিপ্লবী তরুণ সলিল সিংহ।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আসাম ও ত্রিপুরাজুড়ে গণআন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে। এসবের জেরে পরবর্তীতে সকল দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় আসাম সরকার। ২০০১ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি আসামে বরাক উপত্যকার প্রায় সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (১৫২টি) বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষায় পাঠপঠনের ব্যবস্থা চালু করা হয়। এর ছয় বছর সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক স্বতন্ত্র মণিপুরী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায় বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা।
সুদেষ্ণা’র বাকি গল্প : শেষ বিদায়ের দিন
১৬ মার্চ ১৯৯৬ সাল দিনটি ছিল শনিবার, বাংলা ১৪০২ সনের ২রা চৈত্র। লোঙাই ঘাটের দক্ষিণ পাড়ে কচুবাড়ি গ্রাম। দলে দলে জয়োধ্বনি করতে করতে কচুবাড়িবাসীরা ‘ইমার ঠার’-এর আন্দোলনে যোগ দিতে লাগল। সুদেষ্ণাও ছিল কচুবাড়ি গ্রামের। সে ঘর থেকে বের হবার সময় মায়ের কাছে কিছু টাকার আবদার করেছিলো। কিন্তু দুঃখিনী মায়ের কাছে ছিল না কানাকড়িও।
সুদেষ্ণার সাথে ছিল তাঁর বান্ধবী প্রমোদিনী, বিলবাড়ি গ্রামের এক তরুণী। সুদেষ্ণা অবশেষে প্রমোদিনীর কাছেই দুটি টাকা ভিক্ষা চেয়ে নেয়। সকৌতুকে প্রমোদিনী তার বান্ধবীকে জিজ্ঞেস করে, “কিসের জন্য এ দুটো টাকা? কলকলি ঘাটের এ পথে তো কোনো দোকানপাটও নেই!” সুদেষ্ণা নীরব। প্রমোদিনী দুটো টাকা বেঁধে দেয় সুদেষ্ণার আঁচলে। মিষ্টি হাসিতে সুদেষ্ণা তখন বলেছিল, “এ দুটো টাকা খেয়াপারের জন্য” (মৃত্যুর পর খেয়া পারাপারের মাধ্যমে অন্য জগতে পদার্পণ করতে হয় বলে বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মণিপুরীদের বিশ্বাস)।
প্রাণপ্রিয় বান্ধবী প্রমোদিনীর কাছে সুদেষ্ণার দ্বিধাহীন শেষ কণ্ঠবাণী,
“মোর রকতলো অইলেউ মি আজি ইমার ঠারহান আনতৌগাগো চেইস” (দেখিস, আমার রক্ত দিয়ে হলেও আজকে আমি আমার মাতৃভাষাকে কেড়ে আনবো)।
[শহীদ সুদেষ্ণা’র স্মরণে একটি গীতিকাহিনী হতে সংগৃহীত গল্প, কণ্ঠশিল্পী: বীনা সিনহা]
আমার মায়ের রক্তে রাঙানো…
বিষ্ণুপ্রিয়ারা শহীদ সুদেষ্ণাকে সম্মান জানিয়ে বলে ‘ইমা সুদেষ্ণা’; ‘ইমা’ শব্দের অর্থ মা। নিজেদের ভাষাকেও তারা ‘ইমার ঠার’ অর্থাৎ ‘মায়ের ভাষা’ বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। ভারতের আসাম প্রদেশের কাছাড় জেলার শিলচরে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার চাইতে গিয়ে ১৯৬১ সালে মে মাসের ১৯ তারিখ যে এগারো জন বীরশহীদ আত্মাহুতি দেন তাদের মধ্যে ছিলেন প্রথম নারী ভাষাশহীদ মাত্র সতেরো বছরের তরুণী কমলা ভট্টাচার্য। আর ৩৫ বছর পর আবারো ‘বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী’ ভাষার স্বীকৃতি আদায়ের আন্দোলনে শহীদ হন বত্রিশ বছর বয়সী সুদেষ্ণা সিংহ। সুদেষ্ণাকেই আদিবাসীদের মধ্যে সর্বপ্রথম ভাষাশহীদ গণ্য করা হয়। পৃথিবীতে এ যাবৎ প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এ দুজন নারীই ভাষার লড়াইয়ে প্রাণ দিয়েছেন।
সুদেষ্ণা সিংহ নিজের মৃত্যুর মাধ্যমে একটি ভাষাকে তার মৃত্যুদশা থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। তাই পৃথিবীর ভাষার ইতিহাসে এবং বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী জাতির ইতিহাসে এ ১৬ই মার্চ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। বাংলাদেশের পূর্বে এবং ভারতের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরীরা কখনোই সুদেষ্ণা এবং তার আত্মত্যাগের কথা ভুলতে পারে না। আসাম সরকারের পাশাপাশি ত্রিপুরা সরকারও এ দিনটিকে ‘ভাষা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারত উভয়প্রান্তের বিষ্ণুপুরী মণিপুরীভাষী মানুষ প্রতিবছর রক্তঝরা এ ১৬ মার্চকে স্ব-ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে ‘শহীদ সুদেষ্ণা দিবস’ হিসাবে পালন করে থাকে।
“ইমার ঠার পুঞ্চি পালক” (মাতৃভাষা অমর হোক)
রাষ্ট্রের বন্দুকের গুলির সামনে দাঁড়িয়ে সুদেষ্ণা সিংহ প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন তাঁর মাতৃভাষার সম্মান, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষায় কথা বলার অধিকার। ১৬ মার্চ ক্যালেন্ডারে শুধুমাত্র একটা দিবস নয়, এটা বাংলাদেশেরও একটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জাতিগত অস্তিত্ব, ‘বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী’দের বেঁচে থাকা। ফেব্রুয়ারির ‘২১’, মে মাসের ‘১৯’ আর মার্চের ‘১৬’ সংখ্যা তিনটি পৃথক হলেও অন্তরে এ তিনটি সংখ্যার একই বোধ ক্রিয়াশীল, পুরোটা ইতিহাস জুড়েই মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ!
২০১৯ সাল ছিল জাতিসংঘ ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী ভাষা বর্ষ’; এ উপলক্ষ্যকে সামনে রেখে পৃথিবীর আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রতিটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীই স্ব-মাতৃভাষার লালন, পালন ও সংরক্ষণে কাজ করে এসেছে, আজ অবধি কাজ করছে। আসুন, সত্যিকার অর্থে মায়ের ভাষাটাকে ভালোবাসি, পাশাপাশি অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ভাষাকে শ্রদ্ধা জানাই। আসুন, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বিভিন্ন ভাষার বিভিন্ন রঙের ছটা ছড়িয়ে যেন ভাষাবৈচিত্র্যের পরিচয় দিতে পারি, বাংলার পাশাপাশি অন্য ভাষার প্রতিও ভালবাসা জানাতে পারি। মাতৃভাষা অমর হোক, ভাষাশহীদরা বেঁচে থাকুক আমাদের হৃদয়ের মণিকোঠায়।