সম্মিলিত ডায়েট
হার্ডেনবার্গ মারা গেছেন অনেক আগেই। কিন্তু জাতীয় ডায়েটের জন্য শেষ বেলাতে তিনি একটি চূড়ান্ত চাল দিয়ে গিয়েছিলেন। তার সমর্থনে ১৮২০ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রণীত এক আইনে বলা ছিল- রাষ্ট্রীয়ভাবে বড় অঙ্কের অর্থ ধার করতে গেলে প্রুশিয়ার তিন সামাজিক শ্রেণীর থেকে সেই প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়া লাগবে। তিন শ্রেণীর অনুমোদন নিতে গেলে তাদের একসাথে বসাতে হবে, যা মিলে যায় জাতীয় ডায়েটের ধারণার সাথে। চতুর হার্ডেনবার্গ এভাবে সরকারকে বাধ্য করতে চেয়েছিলেন শাসন প্রক্রিয়াতে সংস্কার আনতে। ফলে প্রুশিয়ার কর্মকর্তারা খুব হিসেব করে পয়সা খরচ করতেন, যাতে ধার করতে না হয়। ছোটখাট পরিমাণ ধার তারা করছিলেন বটে, তবে তা সরাসরিভাবে সরকারের নামে নয়। কিন্তু রেলপথের প্রসার ঘটতে থাকলে এর ব্যয়ভার বহনে বড় আকারের লোন দরকার হয়ে পড়ে।
১৮৪৪ সালের ডিসেম্বরে উপদেষ্টাদের সাথে আলোচনাতে চতুর্থ ফ্রেডেরিক উইলিয়াম সম্মিলিত বা ইউনাইটেড ডায়েটের ধারণা উপস্থাপন করলেন। তিনি ইউনাইটেড কমিটি উঠিয়ে দেবার ঘোষণা দিলেন। সমমনা মন্ত্রী আর্নিম পরের বছরের মে’ মাসের মধ্যে এই বিষয়ক একটি রূপরেখা জমা দেন। তার প্রস্তাব ছিল দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় ডায়েট। উচ্চকক্ষে থাকবে ৫০ জন বনেদি অভিজাত (নতুন আইনে তাদেরই অভিজাত বলা হত যাদের কাছে টানা দশ বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি আছে, ফলে বনেদি বংশগুলো আবার গা ঝাড়া দিয়ে উঠছিল)।নিম্নকক্ষে থাকবে ৭০ জন, তিনটি বড় প্রদেশ থেকে দশ দশ করে ত্রিশ, আর পাঁচটি ছোট প্রদেশের প্রতিটি থেকে আসবে আটজন করে। নিম্নকক্ষের সদস্যরা প্রতিনিধিত্ব করবে তিনটি প্রধান সামাজিক শ্রেণীর। উচ্চ এবং নিম্ন উভয় কক্ষের লোকেরা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হওয়া লাগবে।
১৮৪৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি প্রস্তাব আইনগত বৈধতা পেল। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে অধিবেশন বসে বার্লিনের রাজকীয় প্রাসাদে।উদ্বোধনি বক্তব্যে রাজা আরেকবার তার ক্ষমতার বিরোধিতা সহ্য করা হবে না বলে হুশিয়ারি উচ্চারন করেন। ডায়েটের আহবায়ক ছিলেন রাজা নিজে, আর এর স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা ছিল না বললেই চলে। মূল কাজ ছিল সত্যিকার অর্থে রেলপথ নির্মাণে রাষ্ট্রীয়ভাবে ধার করবার প্রস্তাব অনুমোদন করা। কিন্তু তা উপেক্ষা করে ডায়েটের ক্ষমতা বর্ধিত করতে লিবারেলরা একযোগে হট্টগোল করতে থাকে। তারা যতটা সংঘবদ্ধ ছিল, রক্ষণশীলরা ছিল ততটাই ছন্নছাড়া। ২৬ জুন পর্যন্ত চলা অধিবেশনের পর লিবারেলদের চাপে ডায়েট রেলপথের সম্প্রসারণের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ধারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
এরপর সমালোচনার ঝড় বয়ে গেলে রাজা আশ্বস্ত করলেন যে ভবিষ্যতে ডায়েটের ক্ষমতা বর্ধিত করা হবে। তিনি ডায়েটের নিজ ক্ষমতায় সভা করবার অধিকার দিতে অস্বীকৃতি জানালেও প্রতি চার বছরের মধ্যে অন্তত একবার হলেও অধিবেশনের কথা দিলেন।
ছোট হলেও উল্লেখ করা প্রয়োজন এই অধিবেশনে গোঁড়া রক্ষণশীল এক ব্যক্তি বক্তব্য রেখেছিলেন ইহুদি ও লিবারেলদের বিষোদগার করে। তিনি ছিলেন ধর্মীয়ভাবে চূড়ান্ত রক্ষণশীল গারলেখ ভাইদের দলের লোক। তাদের মূল কথা ছিল রাষ্ট্র হবে ক্রিশ্চিয়ান, আর রাজার ক্ষমতার উৎস হচ্ছেন ঈশ্বর, জনগণ নয়। এই ব্যক্তির বক্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছিল তিনি লিবারেলপন্থী নীতি মন থেকে ঘৃণা করেন। ভদ্রলোকের নাম?অটো ভন বিসমার্ক!
সিলিসিয়ান শ্রমিক বিদ্রোহ
সিলিসিয়া ছিল কাপড়ের কারখানার জন্য বিখ্যাত। পিটারসোয়াল্ডো (Peterswaldau) আর ল্যানেনউইলাও (Langenbielau) শহরে ছিল অনেক এরকম কারখানা। জোয়ান্সিগা ভাইয়েরা এখানকার বিরাট শিল্পপতি, যাদের অধীনে কাজ করে বহু শ্রমিক। কিন্তু বেতন-ভাতা আর অমানবিক আচরনের অভিযোগে লাঠিসোঁটা নিয়ে ১৮৪৪ সালের চৌঠা জুন রাতে একদল শ্রমিক পিটারসোয়াল্ডোতে জোয়ান্সিগা ভাইদের কারখানায় ব্যাপক ভাংচুর চালায়। পরদিন আরো কিছু অস্ত্রপাতি নিয়ে তারা হাজির হলো ল্যানেনউইলাওতে আরেক ধনী পরিবার ডিরিজদের বাড়িতে। এ সময় তাদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩,০০০।
বাড়ির কর্মচারীরা তাদের অর্থ দিয়ে সরিয়ে দিতে চাচ্ছিল। এদিকে খবর পেয়ে ততক্ষণে মেজর রোসেনবার্গের নেতৃত্বে একদল সৈন্য এসে উপস্থিত। ক্রুদ্ধ শ্রমিকেরা হামলা করতে যাচ্ছে ভেবে মেজর গুলিবর্ষণের আদেশ দেন। তিনবার গুলি চালানোর পর ১১ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ছিল এক মা ও তার সন্তান, একটি ছোট্ট মেয়ে আর কিছু নিরীহ পথচারী। রাগে উন্মক্ত জনতার তাড়া খেয়ে সৈনিকেরা পালিয়ে গেল। ডিরিজ পরিবারের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়।
জুনের ৬ তারিখ কামানসহ অতিরিক্ত সৈন্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। কয়েক জায়গায় জনতা বিক্ষোভের চেষ্টা চালালেও তাদের কঠোরভাবে দমন করা হয়। পঞ্চাশজন গ্রেফতার হলো, তাদের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা প্রদান করা হয়। তবে এই বিদ্রোহ মনে করিয়ে দিল প্রুশিয়ার ধনী আর গরিবের বৈষম্য কী পরিমাণে বেড়েছে, এবং জনতার মধ্যকার ক্ষোভ যেকোনো ছুতোয় বিস্ফোরিত হতে পারে।
১৮৪৮ সালের বিপ্লব
১৮৪৮ ইউরোপের ইতিহাসে একটি মাইলফলক বছর বলা যায়। ইউরোপের অনেক দেশে এই বছর মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নেতৃত্বে জনতা রাস্তায় নেমে আসে, দাবি জানায় প্রতিনিধিত্বশীল একটি শাসন ব্যবস্থার যা গণতন্ত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। নাগরিকদের নিজেদের অধিকার আদায় করে নেবার এই প্রয়াস ছিল রাজতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। ফ্রান্সে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভের প্রথম বলি ছিলেন ফরাসি রাজা লুই ফিলিপ। বিপ্লবের সূত্র ধরে নেপোলিয়নের মতাদর্শের সমর্থক দল, বা বোনাপার্টিস্টরা সেখানে প্রাধান্য বিস্তার শুরু করে এবং প্রতিষ্ঠিত হয় সেকেন্ড রিপাবলিক। ফরাসি বিপ্লবের রিপাবলিকের নাম ছিল ফার্স্ট রিপাবলিক।
এই বছরেই নেপোলয়নের ভ্রাতুষ্পুত্র লুই নেপোলিয়ন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের পদে অধিষ্ঠিত হন, কয়েক বছর পর তিনি সেনা সমর্থনে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন হিসেবে ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করেন।
আন্দোলনের চেতনার সাথে প্রুশিয়ান জনগণও একাত্মতা অনুভব করল। বার্লিনের মিউনিসিপ্যাল পরিষদের সভাতে ১৮৪৮ সালের ৯ মার্চ একদল মানুষ ঢুকে পড়ে। দাবি করতে থাকে সাধারণ জনগণের জন্য অধিকতর সুযোগ সুবিধার। এখানে তুমুল বাকবিতণ্ডা অনেকটা বিক্ষোভের পর্যায়ে চলে যায়। বার্লিনের ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটের বাইরে নিয়মিত ছোট ছোট সভা অনুষ্ঠিত হতে থাকে, যা অচিরেই রূপ নেয় অনানুষ্ঠানিক সংসদীয় ব্যবস্থায়। এখানে প্রতিনিধি নির্বাচিত, প্রস্তাব উত্থাপন এবং এর উপর ভোটাভুটি হত।
অন্যান্য জার্মান শহরেও এরকম সভা হতে থাকে (public meeting democracy)। মিউনিসিপ্যাল পরিষদ ১১ মার্চ এসব সভা থেকে আসা কিছু প্রস্তাব পর্যালোচনা করে, যেখানে রাজনীতি, আইন এবং সংবিধান বিষয়ক বহু সংস্কারের দাবি ছিল। ১৩ মার্চ থেকে জনতার সভায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে বলার জন্য শ্রমিকদের আহ্বান করা হয়। তাদের উদ্যোগে শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় একটি শ্রম মন্ত্রণালয় গঠনের প্রস্তাব রাজার কাছে পাঠানো হলো।
এদিকে রাজার মনোযোগ তখন অন্যদিকে। অখন্ড জার্মান রাষ্ট্রের স্বপ্ন প্রুশিয়ার দু’চোখে। অভিন্ন একটি রাষ্ট্রের সমর্থনে জার্মানিতে তখন জার্মান জাতীয়তাবাদের জোয়ার। ১৮ মার্চ রাজা একটি ঘোষণাপত্রে অভিন্ন জার্মান রাষ্ট্র ও ফেডারেল বাহিনীর প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। লিবারেল দল এর পক্ষে ছিল, কিন্তু রাজার ঘোষণা তারা মন থেকে বিশ্বাস করেনি। রাজার কানে জনগণের বিক্ষোভের খবর আসছিল, তিনি আশা করেছিলেন জার্মান জাতীয়তাবাদের ধুয়ো তুলে তিনি তাদের নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবেন। কিন্তু বাস্তবে তা হলো না।
জনতা ক্রমেই উগ্র হয়ে উঠতে থাকলে বার্লিনের পুলিশ প্রধান মিনোটেলি ১৩ মার্চ অতিরিক্ত সেনা শহরে নিয়ে আসেন। সেদিন রাত্রেই প্রাসাদের প্রাঙ্গনে সেনাদের সাথে সংঘর্ষে কয়েজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। পরবর্তী কয়েকদিন সৈনিক এবং জনতা মুখোমুখি অবস্থানে থাকে। বেশ কয়েকবারই তাদের মধ্যে ছোটখাট সংঘাত হয়। এদিকে রাজা ও তার উপদেষ্টারা কীভাবে গণ্ডগোল সামাল দেবেন তা ভেবে জেরবার। বার্লিনের গভর্নর জেনারেল ফুয়ে চান রাজনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান হোক। রাজপুত্র উইলিয়াম আর তার গোঁড়া সমর্থক জেনারেল প্রিতভিটজের দাবি- শক্তি প্রয়োগ করে এই বেয়াদবদের জব্দ করা উচিত।
ইতোমধ্যে সংবাদপত্রের উপর কড়াকড়ি আরোপ করার নির্দেশ আসে। এরই মধ্যে ১৫ মার্চ খবর এলো ভিয়েনাতে জনগণের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন চ্যান্সেলর মেটেরনিখ। উপদেষ্টাদের টনক এবার নড়ল। তাদের পরামর্শে রাজা ১৭ মার্চ প্রুশিয়াতে সাংবিধানিক শাসনের দাবি মেনে নেন এবং সংবাদপত্রের উপর থেকে সকল বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেন।
কিন্তু ১৮ মার্চ প্রাসাদ প্রাঙ্গনে জনতার র্যালি করার একটি সিদ্ধান্ত ছিল আগে থেকেই। সকাল থেকে যখন রাজার সিদ্ধান্ত প্রচার হতে থাকে, তখন সারা বার্লিন জুড়ে আনন্দমিছিল শুরু হয়। প্রাসাদ প্রাঙ্গনে লোকে দুপর থেকেই জমায়েত হতে থাকে উদযাপন করার জন্য। মিনোটেলি দুপুর একটার দিকে রাজার কাছে এসে সতর্ক করলেন যে বড় রকমের সহিংসতার সম্ভাবনা এখনো আছে। রাজা হেসেই তা উড়িয়ে দিলেন। তিনি ও তার উপদেষ্টারা ব্যালকনিতে দাঁড়ালে জনতা তুমুল উল্লাসে তাদের অভিবাদন জানায়।
এদিকে সেনারা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল। তারা প্রাসাদের দরজায় এবং জনতার পেছনে অবস্থান নিয়েছিল। মানুষ তাদের দেখতে পেয়ে জোরাল কণ্ঠে তাদের শহর ত্যাগ করতে বলে। দুপুর দুটোর দিকে রাজা সেনাদের কম্যান্ড তুলে দেন প্রিতভিটজের হাতে। জেনারেল প্রাসাদের চারপাশ খালি করার আদেশ কারি করেন। রক্তপাত এড়াতে অশ্বারোহী সেনাদের নির্দেশ দেয়া হলো তলোয়ার কোষবদ্ধ করে ঘোড়া নিয়ে জনতার দিকে একযোগে আগাতে, তাহলে তারা পিছিয়ে যাবে। এই কাজে অনেক সমস্যা দেখা দিল। চারপাশে এত শব্দে অনেক ঘোড়াই ভীত হয়ে পড়ে, কয়েকজন সৈনিক ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়েও যায়। হট্টগোলে জনতাও তাদেরকে প্রাসাদ প্রাঙ্গন ছেড়ে চলে যাবার আদেশ শুনতে পাচ্ছিল না।
তুমুল এই গণ্ডগোলের মাঝে দুর্ঘটনাক্রমে দুজন সৈনিকের বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে যায়। আবার কোন কোন ঐতিহাসিক দাবি করেছেন উগ্রপন্থী লিবারেলরা সাধারণ জনগণকে উস্কে দিতে গুলি চালিয়ে বসে। যদিও কেউ হতাহত হয়নি, তবে তুমুল চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। জনতাকে শান্ত করবার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলো। প্রাসাদের সামনেই জনতা আর সৈনিকদের সংঘর্ষ ঘটে। উত্তেজনার স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে শহরের আনাচে কানাচে।
রাতারাতি বার্লিনের রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড খাড়া করা হয়, বার্লিন পরিণত হলো যুদ্ধক্ষেত্রে। সেনারা রাস্তায় নেমে বাড়ি বাড়ি ঢুকে পড়ে। ব্যারিকেড হাত দিয়ে অথবা গোলা মেরে উড়িয়ে দেয়া হলো। দালানকোঠার ছাদ আর জানালা থেকে ছোড়া গুলিতে অনেক সৈনিকও নিহত হয়। ফলে তাদের সাথীরা আরও হিংস্র হয়ে ওঠে, সামনে যে পড়ল তাকেই হত্যা করা হলো। অনেক নিরীহ মানুষ এই সময় মারা যায়। সংখ্যার হিসাবে ৩০০ বেসামরিক নাগরিকের সাথে ১০০ সেনা নিহত হয়।
মধ্যরাতে প্রিতভিটজের রাজাকে রিপোর্ট দিলেন। তিনি জানালেন শহরের অনেক জায়গা এমন দুর্ভেদ্য যে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনাদের নিয়ে সেখানে প্রবেশ সম্ভব হচ্ছে না। জেনারেল প্রস্তাব দিলেন শহর খালি করার নির্দেশ জারি করতে। নির্দিষ্ট সময় পর চারিদিক থেকে গোলা মেরে বিদ্রোহীদের মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হবে।
জেনারেলকে বিদেয় করে শান্তভাবে চতুর্থ ফ্রেডেরিক উইলিয়াম হাতে কলম তুলে নিলেন। পরদিন সকালে তার ভাষণ ছড়িয়ে পড়ল সারা বার্লিনে। তিনি বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত হতে অনুরোধ করে তাদের ঘরে ফিরে যেতে বললেন। প্রতিশ্রুতি দিলেন কয়েকটি স্থান ছাড়া শহর থেকে অতিরিক্ত সেনা প্রত্যাহার করা হবে। পরের দিন দুপুরের পর থেকেই সেনারা অভিন্ন ব্যারাকে ফিরে গেল। রাজার এই সিদ্ধান্ত কট্টরপন্থী রক্ষণশীলদের সমালোচনার সম্মুখিন হলেও এর ফলে বার্লিন বোমাবর্ষণ এবং আরো রক্তপাত থেকে রক্ষা পায়। শুধু তা-ই নয়, জনগণের সামনে রাজা তার মর্যাদা ফিরে পান। একে কাজে লাগিয়ে তিনি তার ক্ষমতাকে সুসংহত করতে সচেষ্ট হলেন।