“আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি, নিজের গবেষণাগারে বসে তরুণ হার্শেল অসাধারণ এক আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। নতুন ধরনের এক টেলিস্কোপের সাহায্যে চাঁদের তিনি বুকে পেয়েছেন নানা প্রাণী, সবুজ গাছপালা আর সাগরের সন্ধান। পৃথিবীর বাইরে প্রাণ আছে কি নেই, এই বিতর্কে চিরকালের জন্য ইতি টেনেছেন তিনি।”
আজ থেকে প্রায় ১৮৭ বছর আগে নিউ ইয়র্ক সান পত্রিকায় প্রকাশিত এক আর্টিকেলের সূচনা হয়েছিলো অনেকটা এভাবেই। আগস্টের ২৫ তারিখ থেকে সিরিজ আকারে প্রকাশিত হয় এই আর্টিকেল। স্যার জন হার্শেল নামে এক নামকরা জ্যোতির্বিজ্ঞানীর উদ্ধৃতি দিয়ে দেয়া হয়েছিলো চমকপ্রদ এক তথ্য। চাঁদ নাকি কলরব করছে প্রাণের কোলাহলে! কী নেই সেখানে? একেবারে নতুন ধরনের জীবজন্তু, এমনকি মানুষের মতো দেখতে ডানাওয়ালা এক প্রাণীও নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছে চাঁদে!
চাঁদে মানুষের পদার্পণ তখনও আরো প্রায় ১৩৪ বছর দূরে। সেখানে কী আছে না আছে তা নিয়ে সাধারণের কৌতূহল ছিলো সীমাহীন। অনেক বিজ্ঞানীই দাবি করতেন পৃথিবীর একমাত্র এই উপগ্রহে প্রাণের উদ্ভব হয়েছে, হয়তো আমাদের মতোই সভ্যতা গড়ে উঠেছে সেখানে! কাজেই সানের এই সিরিজ তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে চারদিকে!
দ্য নিউ ইয়র্ক সান
১৮৩৩ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর প্রথম ইস্যু প্রকাশ করে নিউ ইয়র্ক সান (The New York Sun)। শহরের এক প্রিন্ট ব্যবসায়ী, বেঞ্জামিন এইচ ডে-র হাত ধরে যাত্রা শুরু এই পত্রিকার। ১৯৫০ সালে নিউ ইয়র্ক ওয়ার্ল্ড টেলিগ্রামের সাথে মিলে যায় সান, এর ষোল বছর পর অন্তর্ভুক্ত হয় ওয়ার্ল্ড জার্নাল ট্রিবিউনের অংশ হিসেবে। বছরখানেকের মধ্যেই গুটিয়ে যায় তা।
দ্য নিউ ইয়র্ক সান সূচনা করে তৎকালীন ‘পেনি প্রেস’ ট্রেন্ডের। তখনকার প্রতিষ্ঠিত পত্রিকাগুলো থেকে এক সেন্ট কমিয়ে দাম ধরা হয় পাঁচ সেন্ট। বেঞ্জামিন ডে’র নেতৃত্বে তাদের মানুষের মন যোগানো লেখা লিখতে থাকে সাংবাদিকেরা। ট্যাবলয়েড স্টাইলের পত্রিকার প্রকাশ করতে থাকে আদালতের রিপোর্ট, খেলাধুলা আর স্থানীয় নানা ঘটনার খবর। বিভিন্ন স্ক্যান্ডাল রঙ চড়িয়ে প্রকাশ করে খুব দ্রুতই কাটতি বাড়িয়ে ফেলে তারা, টার্গেট করে মূলত শ্রমিক শ্রেণীর মানুষকে। ১৮৩৪ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে সানের থেকে বেশি নাকি আর কোনো পত্রিকা প্রিন্ট হতো না।
স্যার জন হার্শেল
ট্যাবলয়েড এক পত্রিকা অবিশ্বাস্য এক গল্প প্রকাশ করতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়লো কেন? কারণ সান কাহিনীর সাথে জড়িয়ে নিয়েছিল স্যার জন হার্শেলের নাম। খ্যাতনামা এই ব্রিটিশ বিজ্ঞানীর নাম তখন মোটামুটি সর্বজনবিদিত। তার বাবা, স্যার উইলিয়ান হার্শেলও ছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী, ইউরেনাস গ্রহ আবিষ্কার করেন তিনি।
স্যার হার্শেল কেম্ব্রিজে পড়াশোনা করেছিলেন। তার সহপাঠী ছিলেন চার্লস ব্যাবেজ আর জর্জ পিকক। ব্যাবেজ তো কম্পিউটারের আবিষ্কর্তা হিসেবে ইতিহাসে পাকাপাকি নাম তুলে ফেলেন পরে। পিককও গণিতবিদ আর ধর্মবিশারদ হিসেবে বেশ সুনাম কুড়ান পরবর্তীতে। এই ত্রিরত্ন মিলে ক্যামব্রিজে গণিত নিয়ে একটি সংঘও প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন।
১৮১৬ সালে তরুণ হার্শেল বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বাবার সাথে মহাকাশ গবেষণায় লেগে পড়েন। বড় হার্শেলের কাছ থেকে হাতে-কলমে নিয়ে নেন জ্যোতির্বিজ্ঞানের ট্রেনিং। চার বছর পর রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটি (Royal Astronomical Society) প্রতিষ্ঠায় তার ছিলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
ইংল্যান্ড থেকে আকাশের যে অংশ পর্যবেক্ষণ করা যায় না সেটা দেখতে হার্শেল দক্ষিণ গোলার্ধের কোথাও যেতে চেয়েছিলেন। ১৮৩২ সালে তিনি অভিযানের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। পরের বছর নভেম্বরে পরিবার নিয়ে উঠে পড়েন জাহাজে, গন্তব্য উত্তমাশা (Cape of Good Hope) অন্তরীপ। তার মালামালের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই ছিলো একটি বিশাল টেলিস্কোপ।
দু’বছর পর হার্শেলের নাম ভাঙিয়ে সান যখন একের পর এক ভুয়া কথাবার্তা বলে যাচ্ছিলো, তখন তিনি বহু দূরে ব্যস্ত গবেষণায়। ফলে কী হচ্ছে তা নিয়ে একেবারেই বেখবর ছিলেন হার্শেল। আজকের মতো যোগাযোগ ব্যবস্থা তখন অনুপস্থিত। ফলে হার্শেলের সাথে কথা বলে তথ্য যাচাই করার উপায়ও ছিল না।
নিউ ইয়র্ক সানের কাণ্ড
যুক্তরাষ্ট্রে ইতিহাসে ১৮৩৫ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তখনও কিন্তু দাস ব্যবসা পুরোদমে চলছে, তবে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে এই নিয়ে দানা বেধে উঠছে উত্তেজনা। মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আবার সময়টা পয়া, কারণ দেখা দেয়ার সময় হয়ে গেছে হ্যালির ধূমকেতু। কাকতালীয়ভাবে যেদিন সান চাঁদ বিষয়ে প্রথম লেখা ছাপায়, সেদিনই দেখা দেয় ধূমকেতু, কুসংস্কারাচ্ছন্ন অনেক মানুষ একে ধরে নিয়েছিল আর্টিকেলের সত্যতার চিহ্ন হিসেবে।
সানের একেবারে প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছিলো কলামটি, একটি ফুটনোট যোগ করে দেয়া হয়েছিলো সেখানে:
“জ্যোতির্বিজ্ঞানের মহা আবিষ্কার- আজ সকালে আমরা এডিনবার্গ জার্নাল অব সায়েন্স থেকে নেয়া একটি প্রবন্ধের চুম্বক অংশ সিরিজ আকারে প্রকাশ শুরু করছি। আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই স্কটিশ সেই বিজ্ঞানীর কাছে, যিনি যুগান্তকারী এই আবিষ্কার বৈজ্ঞানিক জার্নাল থেকে সাধারণের পাতায় আনতে আমাদের সুযোগ দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই বোঝার সুবিধার্থে খটমটে অনেক কিছুই বাদ দিয়েছি আমরা, তবে তারপরেও যে গল্প আপনারা জানবেন তাতে প্রকৃতই মনে হবে আবিষ্কারের স্বর্ণযুগে বাস করছি আমরা।”
সানের কৌশল ছিল অসাধারণ। কলামে বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে তারা দাবি করেছিল- স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ জার্নাল অব সায়েন্সের লেখাই ছাপাচ্ছে তারা, তাদের লেখকেরা এর সাথে যুক্ত নন। আবিষ্কর্তা হিসেবে জুড়ে দিয়েছিলো স্যার জন হার্শেলের নাম, যিনি খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী। তবে সেই মুহূর্তে তার সাথে যোগাযোগ করা ছিলো দুষ্কর। সানের লেখায় উল্লেখ করা হয় মূল প্রবন্ধটি লিখেছেন ড. অ্যান্ড্রু গ্র্যান্ট, যিনি কিনা স্যার হার্শেলের সহকারী।
ছয় দিনে ছয়টি লেখায় সিরিজ সমাপ্ত করে সান। বলা হয়, উত্তমাশা অন্তরীপে বসে অতিকায় এক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে নিজের গবেষণাগারে বসে চন্দ্রপৃষ্ঠ একেবারে কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন হার্শেল। উল্লেখ করা হয় সবুজ বন, পাহাড়-পর্বত, বিশাল গিরিখাদ আর অটল সাগরের কথা।
চমকপ্রদ সব জীবজন্তুর কথা বর্ণনা করা হয় কলামে। এর মধ্যে ছিল বিভারের মতো দেখতে একধরনের জীব। বাইসন আকৃতির জন্তু, ছাগলের মতো দেখতে বিড়াল, লম্বা ঠোঁটযুক্ত সারস এমন আরো অনেক কিছু উঠে আসে লেখায়। বলা হয় গোলাকার এক অদ্ভুত উভচর প্রাণীর কথাও, সাগরতীরের বালিতে নাকি গড়িয়ে গড়িয়ে সেটা চলতে দেখেছিলেন হার্শেল।
সবচেয়ে চমকপ্রদ আবিষ্কার লুকিয়ে রাখা হয় শেষ সংখ্যা অবধি। চাঁদে নাকি বাস করে মানুষের মতো দেখতে এক প্রাণী। চার ফুট লম্বা এই প্রাণীর মুখ ছাড়া বাকি শরীর তামাটে চুলে ঢাকা। পাখার সাহায্যে উড়ে বেড়াতে পারে এরা। এদেরকে তিনি নাম দেন “Vespertilio-homo”, ল্যাটিন এই শব্দের বাংলা করলে দাঁড়ায় বাদুড়-মানব। গ্র্যান্টের ভাষায় বাদুড়-মানবেরা তৈরি করেছিল এক সভ্যতা। বহু মন্দির নির্মাণ করেছিল তারা, আগ্নেয়গিরির মাঝে বানিয়েছিল রোমান কলোসিয়ামের মতো এক স্থাপনা।
মজার ব্যাপার হলো- এটা যে পুরোটাই গাঁজাখুরি তার চিহ্ন কিন্তু লুকিয়ে রাখা হয়েছিল লেখাতেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যে এডিনবার্গ জার্নালের কথা বলা হচ্ছে, সেটা কয়েক বছর আগেই পাততাড়ি গুটিয়েছে। সুতরাং তাদের চলমান সংখ্যা থেকে নিয়ে প্রবন্ধ প্রকাশ করা অসম্ভব।
শহরে চাঞ্চল্য
স্বাভাবিকভাবে সানের কলামে পুরো নিউ ইয়র্ক জুড়ে শুরু হয় তুমুল শোরগোল। চাঁদ ছাড়া মানুষের মুখে আর কোনো কথা ছিল না। এমনকি অন্যান্য পত্রিকাও সানের লেখা রিপ্রিন্ট করে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহর থেকে শুরু করে সুদূর লন্ডন আর প্যারিসেও ছড়িয়ে পড়ে সানের গল্প। মজার ব্যাপার কি জানেন? বেশ কিছু মিশনারি গ্রুপ চাঁদে কীভাবে ধর্ম প্রচার করবে সেই রূপরেখাও ঠিক করে ফেলেছিল! সানের লেখার উপর ভিত্তি করে “মুনশাইন” নামে এক নাটকও তৈরি হয়ে যায়, যা মঞ্চস্থ হতে থাকে শহরের বিভিন্ন বড় বড় থিয়েটারে (Bowery Theatre)।
কেবল সাধারণ মানুষ নয়, অনেক বিজ্ঞানীও ধোঁকা খান সানের গল্পে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল গবেষক নিউ ইয়র্ক চলে আসেন সানের থেকে আরো তথ্য পাবার আশায়। কর্মচারীরা প্রেস আর অফিসের মধ্যে কয়েকবার দৌড় করায় তাদের, অবশেষে হতাশ হয়ে ফিরে যান তারা। তখনও কিন্তু বুঝতে পারেননি পুরো ব্যাপারটাই একটা প্র্যাঙ্ক!
নিউ ইয়র্ক ট্র্যান্সক্রিপ্টের সম্পাদক আসা গ্রিন (Asa Greene) পরবর্তীতে সেই সময়ের কথা স্মরণ করে বলেন যে, নিউ ইয়র্কের আনাচে কানাচে তখন কেবল স্যার হার্শেলের কথা। কিছু কিছু লোক অবশ্য এই কাহিনী বিশ্বাস করতে রাজি ছিল না, তবে তর্কের সাহসও তারা পায়নি। কারণ, বিপুল জনগোষ্ঠী সানের কলামকে অক্ষরে অক্ষরে বিশ্বাস করেছিল, কেউ ভিন্ন কিছু বললে তাকে পড়তে হতো জনরোষের মুখে। তৎকালীন মেয়র ফিলিপ হোন নিজের ডায়রিতে লিখেছিলেন- যদি সত্যি হয় হার্শেলের আবিষ্কার, তাহলে বলতেই হবে এর থেকে অসাধারণ কিছু আর হতে পারে না।
কার মাথা থেকে বেরিয়েছিল এই গল্প?
এই দায় দেয়া যায় সানের সম্পাদক রিচার্ড অ্যাডাম লককে (Richard Adam Locke)। ব্রিটিশ এই ভদ্রলোক ক্যামব্রিজের গ্র্যাজুয়েট, তাই হার্শেল সম্পর্কে ভালো ধারণা ছিলো তার। তিনি যখন সানে যোগ দেন তখন পড়তির দিকে কাগজের জনপ্রিয়তা, দিনে যাচ্ছে মাত্র ৮,০০০ কপি। প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাদের থেকে অনেক এগিয়ে।
লক অবশ্য পরবর্তীতে দাবি করেন যে, কেবল একটা স্যাটায়ার হিসেবেই এই লেখা ছাপানো হয়েছিলো, তাদের দূরতম ধারণাতেও ছিলো না যে লোকে এত সহজে বিশ্বাস করে নেবে এটা। স্কটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী থমাস ডিক (Thomas Dick) লেখা প্যারোডি করেছেন বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি, যিনি বিশ্বাস করতেন চাঁদে বায়ুমণ্ডল ও প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে।
সিরিজ চলাকালে লক সুযোগ থাকলেও কিন্তু সবকিছু পরিষ্কার করেননি। কেনই বা করবেন! পত্রিকার কাটতি বেড়ে হয়ে গেছে বিশ হাজার, প্রতিদ্বন্দ্বীরা কুপোকাত!
সত্য উন্মোচন
আগেই বলা হয়েছে, সবাইকে ধোঁকা দিতে পারেননি লক। প্রথম থেকেই সানের গল্পকে যারা ভুয়া মনে করতেন, তাদের অন্যতম ইতিহাস বিখ্যাত লেখক এডগার অ্যালান পো (Edgar Allan Poe)। মানুষ যেভাবে এই কাহিনী বিশ্বাস করছে, সেটা দেখে অত্যন্ত অবাক হন তিনি। সানের গল্প মিথ্যে প্রমাণ হোক সেটা পো চাইতেন বটে, তবে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক কারণে। তিনি মনে করেছিলেন তার পুরনো এক গল্প, যেখানে এক লোক বেলুনে করে চাঁদে গিয়েছিল, সেটা থেকে চুরি করেছেন লক। তবে পরে যখন বুঝতে পারলেন সেরকম কিছু ঘটেনি, তখন বরং লকের লেখনশৈলীর প্রশংসা করেছিলেন।
সানের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী, জেমস গর্ডন বেনেট সিনিয়র প্রথম থেকেই পুরো বিষয়টিকে হোক্স বা ধোঁকাবাজি বলে উড়িয়ে দেন। ৩১ আগস্ট নিজের পত্রিকায় একটি কলামে তিনি তার কথার পক্ষে শক্ত যুক্তি উপস্থাপন করেন। দু’বছর আগেই যে এডিনবার্গ জার্নালের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেছে সেটা তিনিই প্রথম তুলে ধরেন। রূপকথার এই কাহিনী যে লকের মাথা থেকে বেরিয়েছে সেই অভিযোগও উঠে আসে কলামে। পাঁচ বছর পর লক সেটা স্বীকারও করে নেন। তবে গবেষকেরা অনেকেই মনে করেন, সানের অন্যান্য সাংবাদিক হাত লাগিয়েছিলো তার সাথে।
হার্শেল ১৮৩৫ সালের শেষদিকে জানতে পারেন তার নাম দিয়ে কী করা হচ্ছে। মার্কিন এক ব্যবসায়ী তাকে সানের একটি কপি দেখায়। প্রথমে অযাচিত এই খ্যাতি উপভোগ করলেও শীঘ্রই বিরক্ত হয়ে ওঠেন তিনি। লন্ডনের এক ম্যাগাজিনে চিঠি লিখে নিজের দিক পরিষ্কার করার প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেন, তবে অজানা কারণে সেটা আর পাঠানো হয়নি।
সান অবশ্য ১৮৩৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরেই স্বীকার করে নেয় চাঁদ নিয়ে পুরো গল্পই বানোয়াট। লোকে কিন্তু ক্ষেপে যায়নি, বরং মজাই পেয়েছিল। পত্রিকার কাটতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। “দ্য গ্রেট মুন হোক্স” বলে ইতিহাসে ঠাঁই পেয়ে যায় এই ঘটনা।