বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশ থেকে সত্তরের দশকে টানা ২১টি বছর ধরে পৃথিবী সাক্ষী হয়েছিল এক অবিরত প্রাণক্ষয়ের। ১৯৫৪ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ চীন সাগর তীরের এক বিস্তীর্ণ জনপদে বয়ে গিয়েছিল অবিরাম এ রক্তের স্রোতধারা। সেই রক্তপাতের দুটো পক্ষ ছিল; এক পক্ষ মুক্তি চায়, অন্য পক্ষ চায় মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে গলা টিপে ধরতে। ইতিহাস সাক্ষী, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে সে যুদ্ধে জয় হয়েছিল মুক্তিকামী মানুষেরই। অনাগত কাল ধরে মানুষের স্বাধীনতার স্বপ্নে প্রেরণা যোগানোর ইতিহাস তৈরি করা সেই জনপদের নাম ভিয়েতনাম।
ভিয়েতনামের যুদ্ধের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। একের পর এক অন্যায় শাসনের বিরুদ্ধে লড়ে গেছে এ অঞ্চলের মানুষ। ‘দ্বিতীয় ইন্দোচীন যুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যায়িত সর্বশেষ যুদ্ধ, যেটি ‘ভিয়েতনাম যুদ্ধ’ বলেই সর্বাধিক পরিচিত, এ লেখাটি মূলত সেটি নিয়েই। তবে এ যুদ্ধের পটভূমি বোঝার জন্য এর আগের প্রথম ইন্দোচীন যুদ্ধ নিয়ে সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করা প্রয়োজন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্দোচীন অঞ্চলের পূর্ব প্রান্তের দেশ ভিয়েতনাম উনিশ শতকের শেষ দিক থেকে ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান ভিয়েতনাম আক্রমণ করে এর কর্তৃত্ব নিলেও ফরাসী ঔপনিবেশিক শাসন তখনও সমাপ্ত হয়নি। তখন জাপান আর ফ্রান্স ক্ষমতা ভাগাভাগি করে এ অঞ্চলে শাসন চালিয়ে যেতে থাকে। চীন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রবাদপ্রতীম নেতৃত্ব হো চি মিন ১৯৪১ সালের মে মাসে গঠন করেন ‘ভিয়েত মিন’, যার অর্থ হলো ‘ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংঘ’। জাপান ও ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির জন্যই এই সংগঠন গড়ে তোলেন আংকেল হো।
১৯৪৩ সালের শেষ দিকে জাপানের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে ভিয়েত মিন, এর নেতৃত্বে ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসের এক দুর্ধর্ষ সমরনায়ক জেনারেল ভো নগুয়েন গিয়াপ। ১৯৪৫ সালের মার্চে জাপান ভিয়েতনামী বাও দাইকে রাজা বানিয়ে ভিয়েতনামকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করে। জাপান ও ফ্রান্সের ক্রমাগত শোষণের ফলস্বরূপ ১৯৪৪-৪৫ সালে ভিয়েতনামে এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়, যাতে প্রায় ৪ থেকে ২০ লক্ষ মানুষ কেবল অনাহারেই মৃত্যুবরণ করে। এ দুর্ভিক্ষের কারণে মানুষ আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে, বাড়তে থাকে ভিয়েত মিনের সদস্য সংখ্যা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হতে থাকে, জাপান ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। জাপানের আত্মসমর্পণ যখন আসন্ন, সে সময় আগস্টের ১৪ তারিখে ভিয়েত মিন গোটা ভিয়েতনাম জুড়ে বিভিন্ন অঞ্চলের দখল নেয়া শুরু করে। ইতিহাসে ‘আগস্ট বিপ্লব’ নামে পরিচিত এ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বরে হো চি মিন হ্যানয় শহরে ভিয়েতনামের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ভিয়েতনামের নতুন নামকরণ করা হয় ‘ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব ভিয়েতনাম’ (ডিআরভি)। বাও দাই ক্ষমতাচ্যুত হয়, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয় হো চি মিনকে।
অন্তত ২০ দিন এই নতুন সরকার ছিল গোটা ভিয়েতনামে দায়িত্বরত একমাত্র সরকার। সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখে ভিয়েতনামের দক্ষিণের শহর সায়গন থেকে এই নতুন সরকারকে উৎখাত করে ফরাসি বাহিনী। ভিয়েতনামের উত্তর ও কেন্দ্র তখনও ভিয়েত মিনের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। গোটা ভিয়েতনামের উপর নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য মরিয়া ফ্রান্স উৎখাত হওয়া রাজা বাও দাইয়ের মাধ্যমে এ অঞ্চলে ফ্রান্সের অনুগত সরকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। ফ্রান্স বাও দাইকে প্রধান করে ১৯৪৯ সালের জুনে দক্ষিণ ভিয়েতনামকে কেন্দ্র করে নতুন সরকার ঘোষণা করে। সায়গনকে এর নতুন রাজধানী ঘোষণা দেয়া হয়। এদিকে ভিয়েত মিন বাহিনী পুরনো ঔপনিবেশিক প্রভুদের এ কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে।
চীনে মাও সে তুং এর নেতৃত্বে চীনা বিপ্লবের সাফল্য তখন দ্বারপ্রান্তে। ১৯৪৯ এর শেষ দিকে যুদ্ধে চীনের সহায়তা লাভ করে ভিয়েত মিন বাহিনী। সোভিয়েত ইউনিয়নও দাঁড়ায় তাদের পাশে। ওদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করতে থাকে বাও দাইয়ের অধীনের সেনাবাহিনীকে। ১৯৫০ সালে চীন, সোভিয়েত ইউনয়ন সহ অন্যান্য কমিউনিস্ট ভাবাপন্ন দেশগুলো উত্তর ভিয়েতনাম কেন্দ্রিক ‘ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব ভিয়েতনাম (ডিআরভি)’কে স্বীকৃতি দেয়। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ কমিউনিস্ট বিরোধী দেশগুলো স্বীকৃতি দেয় বাও দাইয়ের সরকারের অধীনে দক্ষিণ ভিয়েতনামকে। দীর্ঘ যুদ্ধের পর অবশেষে ১৯৫৪ সালের মে মাসে দিয়েন বিয়েন ফু-তে ভিয়েত মিন বাহিনী আর ফ্রান্সের মধ্যে সবচেয়ে প্রখর লড়াই সংঘটিত হয়। জেনারেল ভো নগুয়েন গিয়াপের নেতৃত্বে চূড়ান্ত আঘাত করে ভিয়েত মিন বাহিনী। তাতে পরাজিত হয় ফরাসিরা, জয় হয় স্বাধীন ভিয়েতনামের স্বপ্নবাজ যোদ্ধাদের। শেষ হয় প্রথম ইন্দোচীন যুদ্ধ।
কিন্তু ভিয়েতনামবাসীর যুদ্ধ-জীবনের সে এক বিরতি মাত্র। তাদের অদৃষ্টে আরেকটি দীর্ঘ সমরের ক্ষেত্রই প্রস্তুত হচ্ছিল কেবল। প্রথম ইন্দোচীন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ফরাসিরা বিদায় নেবার পরও ঐক্যের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো না, পূরণ হলো না একক ভিয়েতনাম তৈরির লক্ষ্য। বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ফরাসি সরকারের সাথে ভিয়েত মিন এমন এক চুক্তি করতে বাধ্য হলো, যাতে ফ্রান্সের শাসন অবসান হলো ঠিকই, কিন্তু গোটা দেশকে এক করে সাম্যবাদের ধ্বজা ওড়ানোর স্বপ্ন পূরণ হলো না।
১৯৫৪ সালের ২১ জুলাই জেনেভায় সম্পন্ন হওয়া এ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ফরাসিরা তাদের দীর্ঘ শাসন-শোষণের পাততাড়ি গুটিয়ে নিল ভিয়েতনাম থেকে, আর ভিয়েতনাম আনুষ্ঠানিকভাবে দু’ভাগে ভাগ হলো। এ বিভাজনকে বলা হলো সাময়িক; উত্তর ভিয়েতনামের নেতৃত্বে থাকলেন হো চি মিন, দক্ষিণ ভিয়েতনামে বাও দাই। ঠিক হলো, ১৯৫৬ সালে দুই অংশ মিলিয়ে একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দুই ভিয়েতনাম আবার এক হবে। ‘সেভেনটিন্থ প্যারালাল’ বলে যে সীমানা রেখা দিয়ে উত্তর আর দক্ষিণ ভিয়েতনামকে ভাগ করা হয়েছিল, গোটা ভিয়েত জাতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সেটা বিলুপ্ত করা হবে- এমনটাই আশা করল ভিয়েত মিন। আর তখন পুরো জাতির সামনে ভিয়েত মিনের যে তুমুল জনপ্রিয়তা, তাতে নিশ্চিতভাবেই এই নির্বাচনে জয়ী হতে চলেছিল তারা। কিন্তু ভিয়েতনামের মানুষের সেই বলিষ্ঠ ভবিষ্যতের বিরুদ্ধে দাঁড়াল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আর সহায়ক ভূমিকা নিল ভিয়েতনামেরই একজন। তার নাম দিন দিয়েম নো।
‘ডোমিনো তত্ত্ব’ অনুসারে ভিয়েতনামে কমিউনিজমের প্রতিষ্ঠা গোটা এশিয়াতে সাম্যবাদের জোয়ার বয়ে আনবে- এমন ভয় পেয়ে জেনেভা চুক্তির সাথে সম্মত হলো না যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাতে লাগলেন দক্ষিণ ভিয়েতনামে আবারও নতুন সরকার গঠন করে ভিয়েতনামের ঐক্য ঠেকিয়ে দিতে। ওদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে চলমান স্নায়ু যুদ্ধ (কোল্ড ওয়ার) তখন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছিল। সোভিয়েতের সাথে মিত্রতা আছে এমন যে কারও প্রতি মার্কিন নীতি হয়ে উঠছিল কঠোরতর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ও সাহায্য নিয়ে ১৯৫৫ সালে দক্ষিণ ভিয়েতনামে এক ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে বাও দাইকে সরিয়ে দিয়ে প্রেসিডেন্ট হলো প্রচণ্ড কমিউনিস্ট বিদ্বেষী দিন দিয়েম নো। আর শত্রুর শত্রু বন্ধু, সেই নীতি অনুযায়ী সোভিয়েত মিত্র উত্তর ভিয়েতনামকে শত্রু পরিগণিত করা দক্ষিণ ভিয়েতনামের দিন দিয়েম সরকারকে বন্ধু বানিয়ে নিল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সামরিক বাহিনী ও পুলিশের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলো দিন দিয়েম নো-এর বাহিনীর জন্য, এলো অস্ত্রশস্ত্রও। শুরু হলো এক দীর্ঘ রক্তাক্ত সময়ের।
দক্ষিণ ভিয়েতনামে দিন দিয়েম নো শুরু করল এক নির্মম অত্যাচার। উত্তর ভিয়েতনাম থেকে তার উপর আক্রমণের পরিকল্পনা হচ্ছে এমন প্রোপাগান্ডা ছড়াতে লাগল সে। যারাই উত্তরের ভিয়েত মিন বাহিনীকে সমর্থন করত কিংবা মিলিত সার্বভৌম ভিয়েতনামের দাবিকে সমর্থন করত বলে মনে হতো, তাদেরকে দিন দিয়েম সরকার কমিউনিস্ট বলে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালাতে লাগল। সিআইএর সহযোগিতা নিয়ে খুঁজে খুঁজে দিন দিয়েম নো প্রায় ১ লক্ষ ঐক্যপন্থী ভিয়েতনামীকে গ্রেফতার করল, তাদের অনেকেই নির্মম অত্যাচারের শিকার হলো, অনেকেই বরণ করল মৃত্যু।
সেই আকাঙ্ক্ষিত নির্বাচন আর হলো না। আবারও বিদেশী শক্তির মদদপুষ্ট সরকারের বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে হলো ভিয়েতনামের জনগণকে। ১৯৫৭ সালের মধ্যে দক্ষিণ ভিয়েতনামের যারাই দিন দিয়েমের অত্যাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছিল, তারাই পাল্টা লড়াই শুরু করল। সরকারি কর্মকর্তাসহ দিন দিয়েম নোয়ের সমর্থক প্রভাবশালীদের টার্গেট করে হত্যা করতে শুরু করল তারা। যুদ্ধ এড়িয়ে রাজনৈতিক কৌশল দিয়ে জয়ের অনেক চেষ্টা বিফল হবার পর ১৯৫৯ সালের জানুয়ারিতে উত্তর ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টি সিদ্ধান্ত নিল দক্ষিণ ভিয়েতনামের ঐক্য বিরোধী শাসকদের অধীনস্ত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ যুদ্ধের।
১৯৬০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দক্ষিণ ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট মতাদর্শীদের সাথে অ-কমিউনিস্টরাও মিলিত হলো। সেই ঐক্যের ভিত্তি একটাই- দিন দিয়েমের অন্যায় শাসনের অবসান ঘটানো। তারা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (এনএলএফ) নামের একটি সংগঠন গঠন করল। যদিও এনএলএফ নিজেদেরকে একটা স্বায়ত্তশাসিত সংগঠন বলেই দাবি করেছিল এবং এর সদস্য অধিকাংশ দক্ষিণ ভিয়েতনামীই ছিল অ-কমিউনিস্ট, তবুও জন এফ কেনেডির নেতৃত্বাধীন মার্কিন সরকার একে কমিউনিস্ট ভাবাপন্ন উত্তর ভিয়েতনামের অধীনস্ত সংস্থা হিসেবেই ধরে নিল। এনএলএফ এর সদস্যদের ব্যঙ্গ করে ‘ভিয়েত কং’ বা ভিয়েতনামী কমিউনিস্ট হিসেবে চিহ্নিত করতে লাগল যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৬১ সালে দক্ষিণ ভিয়েতনামের ঐক্যপন্থীদের প্রতিহত করার জন্য সামরিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন প্রশাসন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশেও যদি সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে আরও অনেক দেশ তাদের অনুসরণের অনুপ্রেরণা পাবে- এমন ভয় থেকেই কেনেডি প্রশাসন যে কোনো মূল্যে ভিয়েতনামের একত্রীকরণ ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠল। ভিয়েতনামে ভিড়তে শুরু করল একের পর এক মার্কিন সৈন্যবাহী জাহাজ।
এভাবেই ভিয়েতনামের মানুষ শত বছরের ঔপনিবেশিক দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়েও পেল না স্বাধীনতার স্বাদ। এক অন্যায় যুদ্ধে প্রবল সমর্থন দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তিও মিলিত হলো দক্ষিণ ভিয়েতনামের ঐক্যবিরোধীদের সাথে। আর সেই মিলনের শক্তি এতটাই বেশি ছিল যে, কেবল মার্কিন সমর্থনের কারণেই দক্ষিণ ভিয়েতনামের সেনাবাহিনী টিকে থাকতে পারছিল এনএলএফ এর সামনে। এ কারণেই এ দ্বিতীয় ইন্দোচীন যুদ্ধকে ভিয়েতনামী ভাষায় বলা হয় ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ’।
সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বাকি ইতিহাস আমরা জানব এই সিরিজের পরবর্তী পর্বগুলোতে। সেই পর্বগুলোতে থাকছে যুদ্ধবাজ মার্কিন নেতাদের লক্ষ লক্ষ প্রাণ হরণের পরিকল্পনার কথা, থাকছে মার্কিন জনগণের যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের কথা, আর থাকছে ভিয়েতনামের সূর্যসন্তানদের প্রবল লড়াইয়ের মাধ্যমে বিজয়ে ছিনিয়ে আনবার কথা।