প্রতিদিনের ছুটে চলার পথে যত মানুষের সাথে আমাদের দেখা হয়, কথা হয়, অর্থনৈতিক লেনদেন হয়- তাদের কতজনের খবর আমরা রাখি? বাসার একটা ছোট্ট পানির কল ঠিক করার জন্য যখন আমরা রোদে ঘুরে ঘুরে মানুষ খুঁজে নিয়ে আসি, এরপর অল্প কিছু টাকা দিয়ে তাকে বিদায় দেই, কখনও কি ভাবি- এই লোকটা সারাদিন কীভাবে কাজ খোঁজে, কীভাবে খায়, কীভাবে সংসার চালায়? কখনও কি ভাবি, সে কীরকম মর্যাদা নিয়ে এই শহরে বসবাস করছে? কিংবা যারা বেকার, তারা কি কখনও ভেবেছি এমন কোনো সুযোগের কথা, যার মধ্য দিয়ে আমরা নিজেদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আদায় করে নিতে পারি উপযুক্ত মজুরি, উপযুক্ত সম্মান?
বিশ্বব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশের ১৪.৮ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন গড়ে ১৭০ টাকারও কম আয় করেন। ভাবা যায়! এই মুহূর্তে দেশের প্রায় ২৬ লাখ ৮০ হাজার কর্মক্ষম মানুষ মাথায় বয়ে নিয়ে চলেছেন বেকারত্বের অভিশাপ। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের জন্য এই তথ্যটি ভয়ানকই বটে!
দেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকায় চোখ বুলালেই নজরে পড়বে কত শত অসহায় মুখ। কাজের অভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে কত মানুষ। তাদের আছে কাজ করার আগ্রহ, আছে মেধা; অথচ অভাব রয়েছে সুযোগের। ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্ন হলে হয়তো একটা কাজ কেউ জুটিয়ে ফেলতে পারে, তখন আবার দেখা যায় তারা পাচ্ছে না যথেষ্ট সম্মানী, পাচ্ছে না একজন কর্মজীবী মানুষের প্রাপ্য উপযুক্ত মর্যাদা।
গ্রাম থেকে প্রতিনিয়ত ভাগ্য বদলের আশায় ঢাকায় আসছে অসংখ্য লোক। তাদের অনেকের হয়তো শিক্ষাগত যোগ্যতার অভাব, কিন্তু অল্প চেষ্টাতেই তারা অর্জন করতে পারেন নানারকম কারিগরি দক্ষতা। তারা যেসব কাজ জানেন- টিভি-ফ্রিজ ঠিক করা হোক, কিংবা বাসা বদল, লন্ড্রির কাজ, বাসা-বাড়ি পরিস্কার- এরকম অসংখ্য কাজ কিন্তু আমাদের প্রতিদিনকার জীবনেরই অংশ। একটু চিন্তা করলেই আমরা বুঝতে পারি এসব কাজের প্রয়োজনীয়তা আর এই লোকগুলোর মাহাত্ম্য।
একদিকে কাজ জানা অনেক লোক যেমন এই ঢাকা শহরেই আছেন, তেমনি এই শহরেই অনেক মানুষ প্রতিদিন এসব কাজের জন্য দক্ষ লোক খুঁজে বেড়াচ্ছেন। আমাদের দেশের কাজের বাজারের পরিস্থিতি এখন মোটাদাগে এটাই। এখানে একদিকে চাকরি রয়েছে, নতুন নতুন কর্মসংস্থান প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে; কিন্তু অন্যদিকে যাদের কাজ দরকার তারা কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না এবং তাদের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনারও খুবই অভাব।
কেমন হতো, যদি কাজ আর কর্মীর মাঝে সম্পর্কের সেতু তৈরি করার জন্য কোনো প্ল্যাটফর্ম থাকত? যাদের দক্ষ লোক দরকার তারা সেখানে লোক খুঁজবে আর যাদের কাজ দরকার তারা খুঁজবে কাজ? কেমন হতো যদি এই অজস্র দক্ষ লোককে অভাব কপালে নিয়ে আর ঘুমাতে না হতো? কাঁধে ব্যাগ আর হাতে বাক্স নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে না হতো? যদি তারা নিজেদের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পেত? আর যদি কাজের মান অনুযায়ী পেত যথার্থ সম্মাননা?
অসংখ্য কর্মোদ্যোগী মানুষের এমন স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এগিয়ে এসেছে Sheba.xyz নামের একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তারা তৈরি করেছে অনলাইন সার্ভিস মার্কেট। অনলাইন সার্ভিস মার্কেট হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে যারা সেবা প্রদান করবে এবং যারা সেবা গ্রহণ করবে তারা আসতে পারবে একই ছাদের নিচে। এখান থেকে আপনি যেমন প্রয়োজনমতো সেবা পাবেন, তেমনি সেবাদাতারাও পাবেন নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ।
সোফা ক্লিনিং সার্ভিস থেকে শুরু করে এয়ার কন্ডিশন সার্ভিস, ইলেকট্রিক অ্যান্ড হোম অ্যাপ্লায়েন্স, ইলেকট্রিক্যাল সার্ভিস, প্লাম্বিং ও স্যানিটারি, ফার্নিচার তৈরি ও মেরামত, ওয়াল পেইন্টিং, লন্ড্রি সার্ভিস, বাসাবাড়ি পরিষ্কার, গাড়ি কিংবা ড্রাইভার ভাড়া নেওয়াসহ সব ধরনের সেবাই পাওয়া যাবে Sheba.xyz এর অ্যাপ থেকে। গ্রাহক বাসায় বসেই খুব সহজেই পাবেন এসব সেবা, ইন্টারনেট ব্যবহারে অথবা শুধু একটি ফোন কলেই।
আপনি যদি দেশের সেই স্বপ্নচারী তরুণদের একজন হন, যিনি চান নিজের দক্ষতাকে পরিণত করবেন উদ্যোগে; তাহলে এই মুহূর্তে আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা হলো Sheba.xyz। সেবার অ্যাপ কিংবা সাইটে রেজিস্ট্রেশন করেই যে কেউ হতে পারেন গ্রাহকদের সম্মানিত সেবাদাতা। রেজিস্ট্রেশন করা যাবে মোবাইল নাম্বার, ই-মেইল কিংবা ফেসবুক আইডি দিয়ে। এরপর সেখানে আপনি কী কী সেবা দিতে পারবেন তার তালিকা দিতে হবে। সাথে দেবেন আপনার উদ্যোগের নাম কী হবে সেটা, আর অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য।
Sheba.xyz এর মাধ্যমে যদি কেউ নিজেকে কাজে যুক্ত করেন, তাহলে তিনি পাবেন বিশেষ কিছু সুবিধা। প্রথমেই আসবে সেবার বিশাল সংখ্যক গ্রাহকদের কথা। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ Sheba.xyz এর গ্রাহক হিসেবে আছেন, তাদের সবার কাছেই একজন দক্ষ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারবেন আপনি। আপনি যে এলাকায় থাকেন সেটার আশেপাশে যত জায়গায় আপনার মতো সেবাদাতার দরকার, সবার সাথে এই একটি প্ল্যাটফর্ম দিয়ে যুক্ত হয়ে যাবেন আপনি। Sheba.xyz নিয়মিতই বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপনী কাজের মাধ্যমে যে প্রচার-প্রচারণা চালায়, তার সুফলটাও আসবে আপনার কাছেই। সেই সাথে নিয়মিত প্রশিক্ষণের সুযোগ তো থাকবেই। আর এখানে পারিশ্রমিক নিয়ে আপনাকে আর দর কষাকষি করতে হবে না, এই প্ল্যাটফর্মের পেমেন্টের ব্যবস্থাটা নিশ্চিন্ত এবং নিরাপদ। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, Sheba.xyz আপনার জন্য নিশ্চিত করবে একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনের, একটি সম্মানজনক অবস্থানের।
ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার এক তরুণ আশিকের গল্পটা শোনা যাক। ঢাকায় এসে কয়েক বছর তিনি চাকরি করেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। এক সময়ে যখন উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন দেখছেন, তখন পাশে পেয়েছেন Sheba.xyz-কে। রেন্ট-এ-কার প্রতিষ্ঠান নিয়ে অনলাইনে আসার কথা ভেবছেন তিনি, তৈরি করেছেন নিজের প্রতিষ্ঠান এক্সপ্রেস সল্যুশন। তারপরে যুক্ত হয়েছেন সেবার সাথে। এখন আশিকের প্রতিষ্ঠান থেকে রেন্ট-এ-কারের পাশাপাশি অন-ডিমান্ড ড্রাইভার সেবা পাওয়া যায়। যে কেউ চাইলেই Sheba.xyz অ্যাপের মাধ্যমে চার ঘণ্টা থেকে শুরু করে পুরো সপ্তাহ জুড়ে ড্রাইভার নিয়োগ করতে পারবেন নিজের সুবিধা মতো।
আশিকের মতো এমন সহস্র উদাহরণ রয়েছে Sheba.xyz এর আজকের অবস্থানে আসার গল্পের পরতে পরতে। এই প্ল্যাটফর্মের সাথে বর্তমানে যুক্ত আছেন তিন হাজারের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। এখন সেবার পরিকল্পনা করছে চলতি বছরের শেষ নাগাদ নিজেদের কর্মী বহরে দশ হাজার পেশাজীবীকে সংযুক্ত করার। Sheba.xyz এর সাথে যুক্ত হওয়ার পর একজন উদ্যোক্তাকে প্রথমেই একটি লাইট ইআরপি তথা তার ব্যবসার প্রাথমিকভাবে উন্নতি করার জন্য একটি দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর কারণে শুরু থেকেই একজন উদ্যোক্তা এগিয়ে যেতে পারেন পরিকল্পিতভাবে।
মোটকথা, আজকের দিনে ইন্টারনেটের এমন দুর্দান্ত সুযোগ-সুবিধার সময়ে কারও কর্মহীন হয়ে বসে থাকার আক্ষেপের আর প্রয়োজন নেই। প্রতিদিনের প্রয়োজন মেটাতে আমাদের যাদেরকে দরকার হয়, আর প্রতিদিনের অন্নসংস্থান করতে যারা এই প্রয়োজনগুলো পূরণ করেন- তারা সবাই এখন এক হতে পারছে একই প্ল্যাটফর্মে। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া এখন আর কোনো গল্পকথা নয়, এই মুক্তি এখন আমাদের হাতের মুঠোতেই। আধুনিক জীবনযাত্রার অংশ হতে আসুন Sheba.xyz প্ল্যাটফর্মে, নিজেদের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে যুক্ত হোন এখানে। সেবা নিন, সেবা দিন।