সচিব ও সিনিয়র সচিব
সচিব ও সিনিয়র সচিব পদ দুটো খুব একটা আলাদা নয়। কার্যাবলি দুটো পদেরই এক। কিন্তু পদমর্যাদার দিক থেকে সিনিয়র সচিবের অবস্থান সচিবের উপরে। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে সংশোধনী আনার ফলে প্রশাসনে সিনিয়র সচিবের পদ সৃষ্টি করা হয়।
একসময় সেনাপ্রধানের পদ ছিল মেজর জেনারেল। পরে একে জিয়াউর রহমান লেফটেন্যান্ট জেনারেলে উন্নীত করেন এবং আরো পরে একে জেনারেলে উন্নীত করা হয়। সামরিক আমলাদের পদমর্যাদা বাড়ানো হলেও বেসামরিক আমলারা আগের পদেই থেকে যান। সেনাপ্রধান পদটি যখন মেজর জেনারেল ছিল তখন সচিব ও মেজর জেনারেল পদ দুটো একই মর্যাদায় ছিল এবং এটি নিয়ে কোনো বিতর্কের জন্ম হয়নি।
কয়েক বছর আগে বেসামরিক আমলাদের পদমর্যাদাকে কিছুটা উন্নীত করার উদ্দেশ্যে সরকার সিনিয়র সচিব পদটি সৃজন করা হয় এবং একে তিন তারকা জেনারেল বা লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদায় রাখা হয়েছে। একজন কর্মকর্তা তিনবছর সচিব পদে চাকরি করার পরে সিনিয়র সচিব পদের জন্য উপযুক্ত হন। পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল পদটিও সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্যসচিব
মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে ইংরেজিতে বলা হয় কেবিনেট সেক্রেটারি। তাকে আরেকটি নামে ডাকা হয় ‘সচিবদের সচিব’। প্রশাসনে সবচেয়ে সিনিয়র কর্মকর্তা হলেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব। সোজা বাংলায় সবচেয়ে বড় কেরানি। তার পদমর্যাদা তিন বাহিনীর প্রধান ও মুখ্যসচিবের সাথে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের বারো নম্বর ক্রমে।
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণের ভেতর থেকে সরকার চুক্তি ভিত্তিতে মন্ত্রীপরিষদ সচিব পদে নিয়োগ প্রদান করে থাকে। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের প্রতিটি আমলারই স্বপ্ন থাকে প্রশাসনের এই পদটিতে যাওয়ার।
মন্ত্রীপরিষদ সচিবের মতো আরেকটি পদ আছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। মুখ্যসচিব বা চীফ সেক্রেটারি। প্রধানমন্ত্রী যেকোনো ব্যাপারে মুখ্যসচিবের পরামর্শ গ্রহণ করেন। সরাসরি সরকার প্রধানের সাথে সম্পর্ক থাকায় মুখ্যসচিব পদটিও অত্যন্ত সন্মানজনক ও আকর্ষণীয়।
ডিসি ও ইউএনওদের নিয়োগ
মাঠ প্রশাসনে নিয়োগের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা হয়। সহকারী/সিনিয়র সচিব বা কমিশনার পদে কোনো কর্মকর্তা ছয় বছর চাকরি করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হওয়ার যোগ্য হন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পরে তাকে মাঠ পর্যায়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা এডিসি হিসেবে নিয়োগ দান করা হয়। এডিসি হিসেবে চাকরির পরে মাঠ পর্যায়ে ডিসি অথবা মন্ত্রণালয়ে উপসচিব হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড এ নিয়োগ সম্পন্ন করে থাকে। আগে ডিসি হওয়ার বয়স ছিল সর্বোচ্চ ৫০ বছর যেটি এখন কমিয়ে ৪৫ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ডিসি হওয়ার শর্ত আরোপ করা হয়েছে– মাঠ পর্যায়ে ইউএনও হিসেবে কমপক্ষে ৫ বছর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে ২ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকা।
খসড়া নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে– উপসচিবদের মধ্য থেকে ডিসি নিয়োগ দেওয়া হবে। একজন ডিসি এক জেলায় তিন বছরের বেশি এবং একাধিক জেলায় চার বছরের বেশি থাকতে পারবেন না। বিভাগীয় কমিশনার পদে যুগ্মসচিবদের মধ্য থেকে নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। একজন বিভাগীয় কমিশনার দুই বছরের বেশি কোনো বিভাগে থাকতে পারবেন না। তবে একাধিক বিভাগে তিন বছর থাকতে পারবেন।
যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিবে পদোন্নতি প্রাপ্তদের প্রেষণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে সরকার চাইলে এ মেয়াদগুলোর হেরফের করতে পারবে। সরকার অতিরিক্ত সচিবদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থীদের সচিব পদে নিয়োগ দেবে। কমপক্ষে তিন বছর সচিব পদে চাকরির পরে একজন কর্মকর্তা সিনিয়র সচিব হওয়ার যোগ্য হবেন। মুখ্যসচিব ও মন্ত্রীপরিষদ সচিব নিয়োগের ক্ষেত্রেও এ বিধিটি প্রযোজ্য হবে পাশাপাশি বিবেচনা করা হবে তার মাঠপর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতা।
সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড
সরকারি উচ্চ পর্যায়ের অফিসারদের পদোন্নতি ও বেতন স্কেলের বিষয়ে নিরীক্ষণ করে সুপারিশ প্রদানের জন্য ১৯৭২ সালে তৎকালীন সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) অধীনে একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। এ বোর্ড সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, বিভাগ ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তাদের চাকরির ইতিহাস বিবেচনা করে তাদের পদোন্নতি ও বেতন স্কেলের ব্যাপারে সুপারিশ প্রদান করে থাকে।
মন্ত্রীপরিষদ সচিব বোর্ডের চেয়ারম্যান হন। জনপ্রশাসন সচিব হন বোর্ডের সদস্য সচিব। ২০০২ সালের পদোন্নতি নীতিমালার অধীনে উপসচিব থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের পদোন্নতিও সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের এখতিয়ারে দেওয়া হয়। বোর্ডের যেকোনো সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী পুনর্মূল্যায়নের ক্ষমতা রাখেন।
পদমর্যাদার লড়াই
বাংলাদেশে আমলাতন্ত্রের ইতিহাস ও ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। অনেক দিনের বিবর্তনের ফলে আমলাতন্ত্র আজ এ অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। একসময় প্রশাসনে সর্বোচ্চ পদ বিবেচেনা করা হতো সচিব বা সেক্রেটারিকে। এখন সচিবের উপরেও আরেকটি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে সিনিয়র সচিব। পদমর্যাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে আগে গ্রেড-১ এর পদ বা সচিব পদকে কেন্দ্র করে তুলনা করা হতো এখন গ্রেড–১ এর উপরে সুপার গ্রেড নামে আরেকটি গ্রেড সৃষ্টি করা হয়েছে।
পদমর্যাদার সনদ বা ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বার বার সংস্কারের ফলে আজকের অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। ১৯৭৪ সালের ১১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার প্রথম একটি ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স জারি করেছিলেন। পরে ’৭৫ এর ১৬ অক্টোবর ও ’৮৬ এর ১১ সেপ্টেম্বর এটি সংশোধন করা হয়। দুই বছর পরে ১৯৮৮ সালের ২ অক্টোবর এটি সংশোধন করে রাষ্ট্রীয় ও আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারের সব ক্ষেত্রে প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুরু হয় সামরিক আমলাদের একচ্ছত্র আধিপত্য।
গত বছরের ২০ জুলাই মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ সংশোধনের মাধ্যমে নতুন একটি ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স জারি করে। কিন্তু গোল বাঁধিয়েছে সুপ্রীম কোর্ট। সুপ্রীম কোর্ট জুডিশিয়াল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের আবেদন আমলে এনে জেলা জজকে সচিবের পদমর্যাদা দানের নির্দেশ প্রদান করেছে। এটি বর্তমান ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের সাথে সাংঘর্ষিক।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স মোট ২৫টি ক্যাটাগরিতে কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা অনুসারে সাজানো হয়েছে। প্রথমে রয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি। তিনি রাষ্ট্রের প্রথম নাগরিক। রাষ্ট্রের অভিভাবকও বটে। তার নিচে রয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি সরকারের প্রধান। তিনে রাখা হয়েছে স্পিকার ও প্রধান বিচারপতিকে। আগে প্রধান বিচারপতিকে চার নম্বরে রাখা হলেও বর্তমানে তিনে স্পিকারের সাথেই রাখা হয়।
পদমর্যাদার ক্রমে কোনো আমলার প্রসঙ্গ এসেছে প্রথম বারো নম্বর ক্রমে। সেখানে মন্ত্রীপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও তিন বাহিনীর প্রধানগণকে একসাথে রাখা হয়েছে। তেরোতে সংসদ সদস্যদের রাখা হয়েছে। পনের নম্বরে আবার আমলাদের প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। সিনিয়র সচিব, আইজিপি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সামরিক বাহিনীর তিন তারকা জেলারেল, সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজকে রাখা হয়েছে। ক্রম ষোলতে সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর মেজর জেলারেল পদও সচিব পদমর্যাদায় রাখা হয়েছে। আগে জেলা ও দায়রা জজদের অতিরিক্ত সচিবের পদে রাখা হলেও সুপ্রীম কোর্ট রায় দেয় তাদের ১৬ নম্বর ক্রমে সচিব পদমর্যাদায় রাখার জন্য। বিষয়টি ব্যাপক সমালোচিত হয়। এমনকি সংসদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন সাংসদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সুপ্রীম কোর্টের এ রায়কে পক্ষপাতদুষ্ট ও অনৈতিক বলে উল্লেখ করেন।
ভারতে সামরিক আমলাদের পদমর্যাদা বেসামরিক আমলাদের থেকে উপরে নয়। সেখানে যুগ্মসচিব ও মেজর জেলারেল পদকে এক মর্যাদায় রাখা হয়েছে। উপরন্তু পরম্পরা অনুসারে যুগ্মসচিবরা সেখানে বেশি প্রভাব ও মর্যাদা ভোগ করে থাকেন।
সচিবালয়ে অতিরিক্ত অফিসার
১৯৮০ সালে বাংলাদেশে ক্যাডার সার্ভিসের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৮টি তে। অভিযোগ উঠে সচিবালয়ে ও প্রশাসনের বড় বড় পদগুলোতে পাকিস্তান আমলের সিএসপিদের উত্তরসূরি প্রশাসন ক্যাডারদের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৯ তে তৎকালীন সামরিক সরকার সচিবালয় ও প্রশাসনের উচ্চতর পদগুলো পরিচালনার জন্য সব ক্যাডারে যোগ্যতম প্রার্থীদের নিয়ে সিনিয়র সার্ভিসেস পুল গঠন করে। পরবর্তীতে আমলাদের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে সরকার পুলটি ভেঙে দেয়।
পাকিস্তান আমলে সচিবালয়ের দুই-তৃতীয়াংশ পদ সিএসপিদের জন্য সংরক্ষণের নিয়ম ছিল। অন্য ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের অভিযোগ ছিল এতে বিশেষজ্ঞ ক্যাডার এবং প্রশাসন ব্যতীত অন্য ক্যাডাররা তাদের স্ব স্ব বিভাগ বা অধিদপ্তরেই পদবঞ্চিত হচ্ছে। সেই পরম্পরা ভাঙতে নতুন একটি নিয়ম করা হয়েছে।
সহকারী সচিব ও সিনিয়র সহকারী সচিবের সবগুলো পদ এবং উপসচিব পদের ৭৫ শতাংশ, যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদের ৭০ শতাংশ পদ প্রশাসন ক্যাডারের জন্য সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। সচিব পদে কোনো সংরক্ষণের নিয়ম করা হয়নি। সুপ্রীম কোর্ট অবশ্য যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারদের সংরক্ষণের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন।
বাংলাদেশে প্রশাসনে একটি সমস্যা জটিল হয়ে দেখা দিয়েছে বিগত কয়েক দশক ধরে। পদ ছাড়াই পদোন্নতি। ’৯০ এর দশকে তৎকালীন বিএনপি সরকার প্রশাসনে কর্মরত একটি বিশাল গোষ্ঠীকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পদ না থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি দিয়ে বসে। ’৯৭ তে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে একই ধারা অব্যাহত রাখে। ফলে সচিবালয়ে উদ্বৃত্ত কর্মকর্তার সৃষ্টি হয়। মাঠপ্রশাসনে কর্মকর্তার সংকট দেখা দেয়। নির্দিষ্ট ব্যাচ ধরে ধরে সিনিয়রিটি অনুযায়ী পদোন্নতি দেওয়া শুরু হয়। উপসচিব থেকে সচিব পর্যায়ে প্রয়োজনীয় চেয়ারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ কর্মকর্তার আগমন ঘটে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নতুন নতুন ব্রাঞ্চ তৈরি করে পরিস্থিতির ভারসাম্য আনয়নের চেষ্টা করা হলেও বিষয়টি পুরোপুরি সমাধান করা যায়নি।
অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি
OSD-র পূর্ণরূপ হচ্ছে Officers on Special Duty বা বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। ওএসডি শব্দটির উল্লেখ ব্রিটিশ আমল থেকেই সিভিল সার্ভিসে দেখা যায়। ব্রিটিশদের সময় ওএসডিকে সন্মানের চোখে দেখা হলেও বর্তমান উপমহাদেশীয় আমলাতন্ত্রে একে ফইজত বা দুর্ভাগ্য হিসেবেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে ওএসডি বলতে বোঝায় এমন কর্মকর্তাকে যার পদ আছে কিন্তু দ্বায়িত্ব নেই। তিনি হতে পারেন পদোন্নতি বা পদায়নের জন্য অপেক্ষমাণ অথবা অপরাধের দায়ে বহিষ্কৃত অথবা চলতি দ্বায়িত্ব থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত।
জনপ্রশাসনে উদ্বৃত্ত কর্মকর্তাদের অনেককেই ওএসডি করে রাখা হয়। আবার, অভিযোগ আছে রাজনৈতিক কারণেও অনেকে ওএসডির শিকার হন। ওএসডিদের নিয়মিত হাজিরা প্রদান করতে হয় এবং নির্দিষ্ট জায়গায় বসে দাপ্তরিক দ্বায়িত্ব পালন করতে হয়। তারা বেতন-ভাতাসহ সব ধরনের সরকারি সুবিধাই পেয়ে থাকেন শুধু দ্বায়িত্ব ছাড়া। সচিবালয়ে ওএসডিরা সাধারণত লাইব্রেরিতে বসেই অফিস আওয়ার পার করেন।
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য
Red Tapism বা লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দিয়ে আমলাতন্ত্রে কোনো কার্যসম্পাদনের দীর্ঘসূত্রীতাকে বোঝানো হয়। লাল ফিতা বা Red Tape একটি প্রত্যয় যার অর্থ একটি নির্দিষ্ট আদেশাবলির অন্ধভাবে অনুকরণ। সপ্তদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে এ প্রত্যয়টির উদ্ভব হয়েছিল। তখন রাজকীয় এবং সরকারি ফাইলকে লাল রঙের ফিতা দিয়ে বাঁধা হত।
আমলাদের নিয়মের বাড়াবাড়ি ও আনুষ্ঠানিকতার মাঝে পড়ে ফাইলগুলোর হাত ঘুরে ঘুরে শেষ পর্যায়ে যেতে অনেকদিন লেগে যেত। আমলাতন্ত্রের এ দীর্ঘসূত্রতাকে বোঝাতে ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্য’ প্রবচনটির প্রচলন হয়।