যারা আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে কিছুমাত্র খোঁজখবর রাখেন, আইএসআইএস বা ইসলামিক স্টেট নামটির সাথে তারা বিলক্ষণ পরিচিত। ২০১৪-তে ইরাক-সিরিয়ার বিরাট অংশ দখল করার পর কথিত এই খেলাফতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলেছে প্রায় পাঁচ বছর। সবরকমের নৃশংসতা নিয়ে দেখা দিয়েছে যুদ্ধ, প্রাণ আর মান হারিয়েছে অগণিত মানুষ।
যা-ই হোক, আইএস এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইরাকের সরকারি সেনাদলের লেজে-গোবরে অবস্থা বারবার বিভিন্ন মিডিয়ায় উঠে এসেছে। বিদেশী সাহায্য আর কয়েকটি সরকারি বিশেষায়িত বাহিনীর সাথে তাল মিলিয়ে লড়াইটা কিন্তু করেছে বিভিন্ন গোষ্ঠী যারা ‘মিলিশিয়া’ নামে পরিচিত। কুর্দিদের পেশমারগা, শিয়াদের বদর ব্রিগেডসহ বিভিন্ন মিলিশিয়া বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই আইএস পরাস্ত হয়।
কিংবা ধরা যাক ইরান সমর্থিত ইরাকি মিলিশিয়াদের নিয়ে ওঠা বিস্তর অভিযোগ। ইরাক, কলম্বিয়া, সিরিয়াসহ নানা দেশে আমরা দেখতে পাই এরকম নানা ধারার সশস্ত্র গোষ্ঠী, এরা সরকারি তনখা পায়, অস্ত্র পায়, সমর্থন ঠিকই পায়, কিন্তু মূলধারার সশস্ত্র বাহিনী হিসেবে পরিচিত না। তো কেন এসব মিলিশিয়া সৃষ্টি হয়? রাজনীতিকেরা এদের ওপর কেন নির্ভর করে? আজকের আলাপ এই রাষ্ট্রীয় মিলিশিয়াদের নিয়ে, প্রেক্ষাপট হচ্ছে ইরাক।
মিলিশিয়া কারা?
মিলিশিয়া হচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, মূলত সরকারের অনুমোদন নিয়ে এসব বাহিনী গঠিত হয়। ইরাকসহ বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে লাতিন আমেরিকা আর এশিয়ার গৃহযুদ্ধে মিলিশিয়ারা বিস্তর নিরপরাধ মানুষকে হত্যার জন্য দায়ী। সরকারি সমর্থন পেলেও পুরোদস্তুর সরকারি না হওয়ায় এদের অপকর্মের জন্য সরকারকে দোষী করা কঠিন। মিলিশিয়া গঠিত হয় নানা উদ্দেশ্যে। কখনো সেনাবাহিনীর উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেতাদের বিরুদ্ধে ভারসাম্য রাখবার জন্য, কখনো সরকারবিরোধী গেরিলাদের একহাত দেখে নেওয়ার জন্য। ইতিহাসজুড়েই বিভিন্ন দেশে মিলিশিয়া বাহিনী গঠিত হয়েছে।
ইরাকি মিলিশিয়া
ব্রিটিশ ও রাজতন্ত্রী ইরাক
অটোমান আমলে ইরাকের সমাজ মূলত গোষ্ঠী নির্ভর ছিল। বিভিন্ন উপজাতীয় নেতারাই ছিল গ্রামভিত্তিক এসব গোষ্ঠীর হর্তাকর্তা। তুলনায় শহরের আকার ছিল ছোট, শহুরে কর্তাদের নিয়ন্ত্রণও ছিল নগণ্য। প্রথম মহাযুদ্ধে অটোমানরা পরাস্ত হলে লিগ অব নেশনস ইরাকের নিয়ন্ত্রণ ভার তুলে দেয় ব্রিটিশদের হাতে। ইরাকে একটি আধুনিক রাষ্ট্র গঠন করে ইরাকিদের হাতে নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়াই ছিল এর উদ্দেশ্য, অন্তত কাগজে-কলমে। কিন্তু কাজটা দেখা গেল যথেষ্ঠ কঠিন।
আধুনিক রাষ্ট্র গঠন করতে হলে শক্তিশালী সরকার চাই। দেশে শক্তি প্রয়োগের অধিকার ও কেবল সরকারের হাতেই থাকবে, এমনটাই দস্তুর। কিন্তু ইরাকে এমন কোনো শক্তি ছিল না যারা অসংখ্য জাতি আর ধর্ম অধ্যুষিত দেশটি এককভাবে পরিচালনা করবে। ব্রিটিশরা সিরিয়া থেকে হাশেমাইট সুলতান ফয়সালকে ১৯২১ সালে ইরাকের গদিতে বসালো বটে, কিন্তু তার ক্ষমতা ছিল অত্যন্ত সীমাবদ্ধ। ১৯২০ সালের ইরাকি বিপ্লব বা ১৯৪২ সালের অ্যাংলো-ইরাকি যুদ্ধের। ফলে এটা তখন নিশ্চিত যে শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় বাহিনী ছাড়া দেশটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর নয়।
শিয়ারা সুন্নী শাসন মানতে চাইলো না। উত্তরের চির বিদ্রোহী কুর্দি আর আসিরীয়রা তো ছিলোই। ফলে শক্তিশালী একটি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা ফয়সাল আর ব্রিটিশরা অনুভব করেছিল। কিন্তু ইরাকি সরকারি সেনাদের হাল-হকিকত ছিল হতাশাজনক। এরই ফলে, মূলত ব্রিটিশ অর্থ সহায়তায় আসিরীয় ক্রিষ্টানদের মধ্যে শক্তিশালী কিছু দল গড়ে তোলা হয়, এদের কাজই ছিল ইরাকি সেনাদলকে সহায়তা করা। ফয়সাল সিংহাসনে বসবার ১১ বছরের মধ্যে প্রায় ১৩০ বার এসব আসিরীয়দেরকে ডাকা হয়েছে ইরাকি বাহিনীকে সাহায্য করবার জন্য। ১৯৩২ সাল নাগাদ দেখা যাচ্ছে সরকারি সেনাদলের ১৫ হাজার রাইফেলের বিপরীতে জনগণের কাছে লাখখানেক রাইফেল। কাজেই আধুনিক ইরাক রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকেই মিলিশিয়ারা ওদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিচরণ করে এসেছে বললে ভুল হবে না। ১৯৫৮ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ফয়সাল নিহত হলে রাজতন্ত্র লোপ পায়।
প্রজাতন্ত্রী ইরাক
১৯৫৮ সালে আবদ এল-কারিম কাসিম আর আল নাসেরের সেনারা বাগদাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ইরাককে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়। ইরাকে সে আমলে সবথেকে জবরদস্ত রাজনৈতিক দলটি ছিল ইরাকি কম্যুনিস্ট পার্টি। শিয়া সমর্থিত কম্যুনিস্ট দলটি সুন্নী প্রধান সরকারি সেনাদের পছন্দ করতো না। আবার ইরাককে যারা প্রজাতন্ত্রে রূপ দিল, সেই কাসিম আর নাসেরের মধ্যেও দ্বন্দ ছিল প্রকট। এর ফলাফল হলো এই যে, কাসিমের সমর্থনে কম্যুনিস্টরা আধা সামরিক দলবল গড়ে তুললো, এরা নিজেরাই আদালত বসিয়ে শহর গ্রামে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত হলো।
ইরাকের অপর দলটি ছিল বাথ পার্টি, এদের মূলমন্ত্র ছিল আরবদের এক করে একটি সংযুক্ত আরব ভূমি সৃষ্টি করা। মিশরের নাসেরের অনুকরণে এরাও ধর্মনিরপেক্ষ আরব ভূমির স্বপ্ন দেখতো। সেনাবাহিনীর নাসেরপন্থী অফিসারেরা এদের কাজে লাগাতেন। এই দুই দলের রেষারেষিতে ইরাকের অবস্থা হয়ে পড়লো সঙ্গীন। কুর্দিস্তানেও একইভাবে সরকার সমর্থিত আর সরকার বিরোধী মিলিশিয়াদের রেষারেষি অব্যাহত ছিল। স্বাধীনতাকামী কুর্দিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী কাসিম দাঁড় করালেন ন্যাশনাল ডিফেন্স ব্যাটালিয়ন। সত্তরের দশক পর্যন্ত এই সেনা-মিলিশিয়া-গেরিয়াল চক্রের সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে।
কম্যুনিস্টদের মতো বাথ দলের লোকেরাও নিজস্ব মিলিশিয়া গঠন করেছিল, অবশ্যই সরকারি সেনাদলের প্রত্যক্ষ মদতে। ন্যাশনাল গার্ড নামে পরিচিত এই মিলিশিয়ারাই এবারে রাস্তাঘাটে কম্যুনিস্টদের বেধড়ক মার দিয়ে ক্ষমতা হাতে নিল। কাসিম সেনাদলের বিরোধী অফিসারদের ঠান্ডা রাখবার জন্য ইরাকি কম্যুনিস্ট মিলিশিয়াদের তোয়াজ-তুষ্টি করতেন, বাথদের জন্য একই কাজ সরকারি সেনাবাহিনীও করতে লাগলো। ১৯৬৩ সালে সেনা সমর্থিত এক অভ্যুত্থানে কাসিম নিহত হন।
বাথ ইরাক
১৯৬৮ সালে বাথ পার্টি খোলাখুলিভাবে ইরাকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। বাথ নেতারা ভাল করেই জানতেন ইরাকের সরকারি সেনাদলের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করা যায় না। কাজেই আগেকার ন্যাশনাল গার্ডের আদলে গড়া হলো ইরাকি পপুলার আর্মি। আলাদা প্রশিক্ষণ, আলাদা নেতৃত্ব; সবমিলিয়ে নিয়মিত সেনাদলের পাশাপাশি বাথ কর্মীদের একটা সরকার সমর্থক সশস্ত্র দল হিসেবে গড়ে তোলা হয়। ১৯৭৯ সালে সাদ্দাম হুসেন ক্ষমতায় এসে বাথ মিলিশিয়াদের আরো শক্তিশালী করে তোলেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল ব্যাপী ইরান-ইরাক যুদ্ধে কিন্তু পপুলার আর্মি মোটেও সন্তোষজনক কিছু করে দেখাতে পারলো না। ১৯৮৮ সাল নাগাদ পপুলার আর্মির সদস্য সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছালেও নিয়মিত বাহিনীর তুলনায় তারা ছিল অত্যন্ত দুর্বল আর বিশৃঙ্খল।
১৯৯১ এর কুয়েত যুদ্ধে মর্মান্তিক পরাজয়ের পর সাদ্দাম হুসেন স্বয়ং আবার মিলিশিয়াদের ওপর ঝুঁকে পড়েন। গঠিত হয় ফেদাইয়ীন সাদ্দাম নামের নতুন মিলিশিয়া। পাশাপাশি শেখদের কাছে অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছে দেওয়া হয়, তারাও নিজেদের পছন্দমাফিক মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তোলে। এর পেছনে বহুবিধ কারণ ছিল। একের পর এক ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে ইরাকি সেনাদলের হাল হয়েছে নাজুক, সাদ্দামের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না, অতীতেও তো তারা অনেকগুলো অভ্যুত্থান করেছে। পালটা জবাব হিসেবে শেখদের হাতে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে একটা ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টাই ছিল উদ্দেশ্য। এর ফল কিন্তু ভাল হয়নি। ২০০৩ সাল পর্যন্ত এসব মিলিশিয়ারা ইরাকের সর্বত্র ঘুরঘুর করেছে, নিজেদের মধ্যে মারামারিও করেছে বিস্তর। সেনাবাহিনীর তুলনায় প্রশিক্ষণ আর শৃংখলায় বিপুল ঘাটতি থাকায় মিলিশিয়ারা কিন্তু হুমকি হিসেবেই থেকে গেল।
আধুনিক ইরাক
ইরাক যুদ্ধের সময় খোদ মার্কিনরাই কুর্দি পেশমারগাসহ কিছু কিছু সাদ্দাম বিরোধী মিলিশিয়াদের সমর্থন দিয়েছিল। যুদ্ধের পর আগের সেনাবাহিনীকে ভেঙ্গে দেওয়া হলে ব্যাঙের ছাতার মতো সর্বত্র অসংখ্য মিলিশিয়া দল গড়ে উঠলো। কুর্দিরা তো অস্ত্র উঁচিয়ে ছিলোই, দক্ষিণে দেখা দিল মুকতাদা আল সদরের মাহদী আর্মি। আবার পবিত্র শহর নাজাফের গ্র্যান্ড আয়াতোল্লাহ আলি আল-সিস্তানি এই সদরের বিরুদ্ধে নিজের শিয়া সমর্থকদের নিয়ে পালটা মিলিশিয়া গড়েন। উত্তরের সুন্নী অধ্যুষিত অঞ্চলে আল কায়েদার পাশাপাশি সাদ্দামের সেনাদল এবং প্রাক্তন বাথ মিলিশিয়ারাও নিজেদের বাহিনী গড়ে তোলে। খোদ বাগদাদেই ১৭টি মিলিশিয়া কাউন্সিল ছিল। উল্লেখ্য, এরা সবাই মার্কিন বিরোধী এমন নয়; বরং অনেক নেতা মার্কিন সাহায্যপুষ্ট হয়ে নিজের নিজের সশস্ত্র অনুসারীদের দিয়ে পুলিশ আর সেনাবাহিনী ভর্তি করে ফেলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি ২০০৬ এর দিকে এসব মিলিশিয়াদের বাতিল করে দেওয়ার একটা উদ্যোগ নিয়েছিলেন, কিন্তু তুমুল অস্থিতিশীলতা, নিরাপত্তাহীনতা, সরকারি সেনাদলের অক্ষমতার কারণে সেসব প্রচেষ্টা আলোর মুখ দেখেনি। ২০০৬ সালে সামারার বিখ্যাত আল-আসকারি মসজিদে বোমা হামলা হলে এই সুন্নী আর শিয়া সমর্থিত দলগুলো অন্তত ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইরাক জুড়ে হানাহানি চালিয়ে যায়।
২০১৪ সালে মাত্র হাজার দেড়েক আইএস যোদ্ধা মরুভূমি ফুড়ে উদয় হয়, মসুলের বিরাট সরকারি গ্যারিসন কর্পূরের মতো উবে যায়। নিয়মিত বাহিনীর এই লজ্জাজনক ব্যর্থতার পর প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি তার সমর্থক মিলিশিয়াদের একজোট করে বাধা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সাথে নাজাফের সেই গ্র্যান্ড আয়াতোল্লাহ আলী আল সিস্তানির ডাকে গঠিত হয় পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স। এদের ভেতরে শিয়া মিলিশিয়ারা তো ছিলোই, সাথে ইরাকি তুর্কোমান (ইরাকবাসী তুর্কি জনগণ), কিছু সুন্নী আরব আর অবশ্যই পেশমারগাও যোগ দেয়। পাশের দেশ ইরানও মূলত শিয়া মিলিশিয়াদের মধ্যে সুযোগমতো প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়িয়ে নেয়।
২০১৫ সালে এই মিলিশিয়াদের বিরাট জোটটিকে সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ড স্ট্রাকচারের মধ্যে আনা হয়। আর একথা তো আজ পরিষ্কার যে বিপুল মার্কিন সাহায্য পাওয়ার পরেও ইরাকি সেনাদের যে হাল মসুলে হয়েছিল, তাতে বাগদাদের পতন ছিল সময়ের ব্যাপার। শেষমেষ এই বিরাট মিলিশিয়া আর সরকারি সেনাদলের যৌথ আক্রমণে আইএস এর পতন হয়। উল্লেখ্য, এই মিলিশিয়াদের মধ্যে বেশ কিছু ভাগ আছে; কেউ সিস্তানির ফতোয়া শুনে যোগ দিয়েছে, কেউ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র বাহিনী হিসেবে আগে থেকেই ছিল। এর সাথে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া আর ২০০৩ থেকে মার্কিন বিরোধী সংঘর্ষে লিপ্ত যোদ্ধারা তো আছেই।
মিলিশিয়ারা ভাল না মন্দ?
মিলিশিয়ারা ভাল না খারাপ এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। মূলত ইরাক রাষ্ট্রটির উত্থান থেকেই মিলিশিয়াদেরকে ব্যবহার করা হয়েছে, কখনো সরকারি উদ্দেশ্য সাধনে, কখনো নিয়মিত সেনাদলের ব্যর্থতা ঢাকবার জন্য। ইরান-ইরাক যুদ্ধ বা কুর্দিস্তানের যুদ্ধে নিয়মিত সেনাদল হিসেবে মিলিশিয়ারা চরম ব্যর্থ হলেও মার্কিন বিরোধী সংগ্রাম বা আইএস বিরোধী যুদ্ধে, হালকা অস্ত্রে সজ্জিত গেরিলা ইউনিট হিসেবে এই মিলিশিয়ারাই খুব দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের যে রমরমা অবস্থা, এটা বহু দশকের ইরাকি বৈশিষ্ট্য এবং দুর্বল আর গোষ্ঠীদ্বন্দে জর্জরিত ইরাক সমাজে এই মিলিশিয়ারা রাজনৈতিক ঘুটি হিসেবেই বরাবর ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। সেনাবাহিনীর অস্থিতিশীলতার ফলে সরকারগুলো বারবার মিলিশিয়াদের দিকে ঝুঁকেছে, মিলিশিয়ারাও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে কোনো কসুর করেনি, সৃষ্টি হয়েছে অদ্ভুত দুষ্টচক্র।