ল্যাটিন আমেরিকা বলতে সাধারণত উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের এমন অঞ্চলগুলোকে বোঝায়, যেখানকার জনগণ ল্যাটিন ভাষা থেকে উদ্ভূত স্প্যানিশ এবং পর্তুগিজ ভাষা ব্যবহার করে থাকে। ল্যাটিন আমেরিকার মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দশটি, মধ্য আমেরিকার ছ’টি, ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের তিনটি ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের একটি রাষ্ট্র রয়েছে।
ল্যাটিন আমেরিকার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ
২০১৯ সালে বলিভিয়ার প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস কথিত ‘সেনা-গণ অভ্যুত্থান’ এর কারণে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে মেক্সিকোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। ২০০৬ সাল থেকে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মোরালেস গত বছরের ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা দেন। সেই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে বিরোধীদলগুলো ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে। প্রেসিডেন্ট মোরালেস পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার পর মার্কিন ঘনিষ্ঠ বলিভিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা ও সিনেটের ডেপুটি স্পিকার জিনাইন অ্যানেজ নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন, যাকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে ভেনিজুয়েলায় অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং লাগামহীন মূল্যস্ফীতির কারণে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হলে, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা জুয়ান গুইদো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন। এর ফলে দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়। ফলে সহিংসতার আশঙ্কায় দেশটি থেকে অনেক মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয়ের আবেদন করতে থাকে। এতে করে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে ভেনিজুয়েলা থেকে আসা শরণার্থী এবং রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীদের ঢল নামে।
রাশিয়া, চীন ও ইরানসহ কয়েকটি দেশ বলিভিয়া এবং ভেনিজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধানে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, জাতিসংঘ সবসময়ই দু’পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহবান জানিয়ে আসছে। ল্যাটিন আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বামপন্থী নেতারা সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ববাদী নীতির কঠোর সমালোচনা করে আসছেন। মূলত এসব জাতীয়তাবাদী এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বামপন্থী নেতার হাত ধরেই ল্যাটিন আমেরিকায় মার্কিন বিরোধী রাজনীতির সূত্রপাত। ল্যাটিন আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী আচরণের একটা সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যার সূচনা হয়েছিল ‘মনরো ডকট্রিন’ নামক একটি নীতির মধ্য দিয়ে।
মনরো ডকট্রিনের ইতিহাস
মনরো ডকট্রিন মূলত ১৮২৩ সালের ২রা ডিসেম্বর, ৫ম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেমস মনরো কর্তৃক ঘোষিত একটি পররাষ্ট্র নীতি, যেটি অনুসারে ল্যাটিন আমেরিকার যেকোনো বিষয়ে ইউরোপের কোনো দেশের যেকোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা উপনিবেশ স্থাপনের প্রক্রিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিকট অবৈধ হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এ ধরনের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তথা এ ধরনের প্রক্রিয়া প্রতিহত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয়ভাবে বাধা দেবে।
গত বিংশ শতকের শুরুতে ২৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট মনরো ডকট্রিনে আরও কয়েকটি বিষয় যুক্ত করেন, যার ফলে ল্যাটিন আমেরিকার কোনো দেশ যদি মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গিতে ভুল পথে চালিত হয়, তবে সেই দেশকে শাসন করার অধিকারও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থাকবে। এ নীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ল্যাটিন আমেরিকাকে বহির্বিশ্বের হস্তক্ষেপ থেকে দূরে রাখতে এবং সেখানে তার একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা রাখতে চেয়েছিল। মনরো ডকট্রিন ঘোষিত হওয়ার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ল্যাটিন আমেরিকায় আগ্রাসন শুরু করে।
ল্যাটিন আমেরিকায় এর প্রভাব
১৮৯৮ সাল থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে মার্কিন প্রশাসন অন্তত ৪১ বার ল্যাটিন আমেরিকায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অযাচিত হস্তক্ষেপ বা আগ্রাসন চালিয়েছিল। ১৮৪৬ সালে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধে আমেরিকা বর্তমান সময়ের ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাদা, ওয়াইয়োমিং, ইউটাহ, কলোরাডো, অ্যারিজোনা এবং নিউ মেক্সিকো শহরগুলোর পুরোপুরি বা অংশবিশেষ দখল করে নেয়। পরে যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে প্রায় ৫ লক্ষ বর্গ মাইলের এই এলাকাগুলো মেক্সিকোর কাছে থেকে ক্রয় করে।
মার্কিন অভিযাত্রী উইলিয়াম ওয়াকার ১৮৫৫ সালে তার সেনাবাহিনী দ্বারা নিকারাগুয়া দখল করে নিজেকে সেখানকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৮৫৬ সালে তৎকালীন কলম্বিয়ার উপনিবেশ পানামার জাতীয়তাবাদীদের হাত থেকে প্রশান্ত-আটলান্টিক রেলপথকে রক্ষা করার জন্য মার্কিন প্রশাসন পানামায় আগ্রাসন চালায়। ১৮৯৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে হাভানা পোতাশ্রয়ে ইউএসএস মাইন বিস্ফোরণের দ্বারা ধ্বংসের ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র স্পেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ১৯৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর একটি তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, উক্ত বিস্ফোরণটি ছিল নিছকই একটি দুর্ঘটনা।
স্পেনের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র গুয়াম, পুয়ের্তোরিকো, ফিলিপাইন ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ দখল করে নেয়। ১৯০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিউবার ব্যাপারে নিজের একচ্ছত্র অধিকার ঘোষণা করে। পানামা খালের উপর আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ১৯০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়ার কাছ থেকে পানামার স্বাধীনতা অর্জনের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। কলম্বিয়ার সাথে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র পানামার স্বাধীনতা সংগ্রামে সহযোগিতা করার জন্য দশটি যুদ্ধ জাহাজ পানামায় পাঠায়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল পানামা খালের কর্তৃত্ব অর্জন করা। ১৯০৫ সালে প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে প্রহরীর ভূমিকায় অধিষ্ঠিত হয় এবং ডমিনিকান রিপাবলিককে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে।
১৯১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নিকারাগুয়ায় আক্রমণ চালায় এবং মার্কিন প্রশাসন কিউবায় বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের দমন করতে নগ্ন হস্তক্ষেপ করে। ১৯১৪-১৮ সালে মেক্সিকান বিপ্লবের সময় মেক্সিকোর রাজতন্ত্রের পতনের সংগ্রামে অংশ নেওয়া পাঞ্চো ভিলা আর এমিলিয়ানো জাপাটার মতো জাতীয়তাবাদী নেতাদের দমনে যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য প্রেরণ করে। এসময় যুক্তরাষ্ট্র পোরফিরিও দিয়াজকে সমর্থন জানায়, টানা ৩০ বছর ধরে দেশ শাসন করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক স্থাপন করেছিল। এ সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ১৯১৩ সালে ফ্রান্সিসকো মাদেরোর বিরুদ্ধে গোপন সামরিক অভ্যুত্থানের চক্রান্তে সাহায্য করে এবং জেনারেল ভিক্টোরিয়ানো হুয়েরতোকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে।
১৯১৬-২৪ বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে ডমিনিকান রিপাবলিক আক্রমণ করে। এসময় যুক্তরাষ্ট্র স্বৈরশাসক রাফায়েল ট্রুজিলোকে সমর্থন দেয়, যার বিরুদ্ধে হাইতিতে গণহত্যার অভিযোগ ছিল। ফলে ডমিনিকান রিপাবলিক যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রিত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। ১৯৫৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র গুয়েতেমালার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বামপন্থী প্রেসিডেন্ট আরবেঞ্জ গুজম্যানকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করতে সহায়তা করে।
১৯৫৯ সালের ১লা জানুয়ারি, কিউবান বিপ্লবের মাধ্যমে মার্কিন সমর্থিত ফুলগেনসিও বাতিস্তার স্বৈরশাসন উৎখাত করে কিউবায় ফিদেল কাস্ত্রো ক্ষমতা দখল করার পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ গোপন নথিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে যে, কাস্ত্রো-ইজম গোটা ল্যাটিন আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ভীতি থেকে মার্কিন প্রশাসন সবসময় চেষ্টা করেছে ল্যাটিন আমেরিকায় যেকোনো মূল্যে প্রভাব ধরে রাখার জন্য। ১৯৬১ সালে ইকুয়েডরে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত বামপন্থী প্রেসিডেন্ট জোসে মারিয়া ভেলাসকোকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
১৯৬২ সালে কিউবার মিসাইল সংকটের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য আক্রমণ রুখে দিতে ফিদেল কাস্ত্রো তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে কিউবায় মিসাইল স্থাপনের অনুমতি দেন। ফলে দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। ১৯৬৪ সালে ব্রাজিলের ২৪ তম প্রেসিডেন্ট বামপন্থী নেতা জোয়াও গোলাল্ট মার্কিন মদদপুষ্ট সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। ১৯৭৩ সালে মার্কিন সমর্থিত সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে চিলির মার্কসবাদী প্রেসিডেন্ট সালভাদর গুইলার্মো আলেন্দে গোসেন্সকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটিতে সামরিক শাসন জারি করেন আউগুস্তো হোসে রামোন পিনোচে উগার্তে।
- মার্কিন প্রশাসন ১৯৮০ সালে এল সালভাদরে সামরিক অভ্যুত্থানে সহায়তা করে।
- ১৯৮১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান প্রশাসন নিকারাগুয়ার কন্ট্রা বিদ্রোহীদের সহায়তা করে, যারা দীর্ঘ নয় বছর লড়াই করে প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষকে হত্যা করে।
- ১৯৮৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র গ্রানাডায় সামরিক অভিযান পরিচালনা করে।
- ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র মাদকবিরোধী অভিযানের অজুহাতে পানামায় সামরিক বাহিনী প্রেরণ করেছিল।
- ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র কিউবার বিরুদ্ধে জৈব অস্ত্র আধুনিকায়নের অভিযোগ তুলে দেশটিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল।
- ২০০৯ সালে হন্ডুরাসের সামরিক অভ্যুত্থানে মার্কিন প্রশাসনে সমর্থন দিয়েছিল।
২০১২ সালে মার্কিন প্রশাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ গোপন মার্কিন নথি ফাঁসকারী উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে লন্ডনে অবস্থিত ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ইকুয়েডরের তৎকালীন বামপন্থী প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র বামপন্থী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো শাসিত ভেনিজুয়েলার উপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করে। ২০১৬ সালে ব্রাজিলের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফকে বিতর্কিত অভিশংসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপসারণ এবং ডানপন্থী নেতা মিশেল তেমারকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে মার্কিন প্রশাসন সহযোগিতা করে।
পরিশেষ
এভাবে ল্যাটিন আমেরিকায় নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে ঊনবিংশ, বিংশ এমনকি একবিংশ শতকে এসেও বিভিন্ন অপরাজনীতি বজায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ল্যাটিন আমেরিকায় বেশ কয়েকটি সামরিক অভ্যুত্থানে মদদ দিয়েছে, গোটা দুনিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে সামরিক শাসনকে ‘গণতন্ত্র’-এর স্বীকৃতি দিয়েছে, মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে কার্যত সব ল্যাটিন আমেরিকার দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর প্রবল চেষ্টা করেছে। ল্যাটিন আমেরিকার ক্ষমতাসীন বামপন্থী নেতাদের বেকায়দায় ফেলতে যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই কলকাঠি নাড়ছে।
প্রকৃতপক্ষে, ল্যাটিন আমেরিকায় মার্কিন স্বার্থবিরোধী প্রায় প্রতিটি সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ উসকে দিতে বা সামরিক শক্তিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে মার্কিন প্রশাসন সবসময়ই চেষ্টা চালিয়ে গেছে। এভাবে মনরো ডকট্রিনের মাধ্যমে ল্যাটিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র এসব আগ্রাসনের ভিত্তি রচনা করে। এসব কারণে মনরো ডকট্রিনকে ল্যাটিন আমেরিকায় মার্কিন আধিপত্যবাদের নিদর্শন হিসেবে বিবেচনা করা যায়।